শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা,আমার বাংলা ব্লগ
আজ - ০১ বৈশাখ| ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- বাংলা নববর্ষ
- আজ ০১লা বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শুক্রবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে......!!
নববর্ষ মানে বাঙালি জাতির কাছে আনন্দের একটা বিষয়। এই আনন্দ গ্রাম বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। ইংরেজি মাসের মত বাংলা মাসে ওপালাক্রমে একের পর এক নতুন মাস এসে হাজির হয়। এই নতুন মাসের প্রথম মাস হচ্ছে বৈশাখ। ইংরেজি মাসকে আমরা যেমন নিউ ইয়ার বলে সম্বোধন করে থাকি ঠিক তেমনি ভাবে বাংলা মাসের প্রথম দিনটাকে আমরা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বলে বিবেচনা করি। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় বাঙালি ইংরেজি মাসকে নিয়ে তেমন একটা বিবেচিত হয় না কিন্তু যখনই এই বাংলা নববর্ষ সামনে এসে হাজির হয় তখন মনে হয় বাঙালির মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ চলে এসেছে। এই নববর্ষের সঙ্গে মিশে রয়েছে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। এই হাজার বছরের ঐতিহ্য বাঙালি পেয়েছে প্রাচীন আমল থেকেই। আমরা বাঙালি আর বাঙালি হিসেবে আমরা নিজেদের কাছে খুবই গর্বিত।
বাঙালি হিসেবে আমরা বরাবরই মাছের সঙ্গে ভাত খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি সেজন্যই হয়তোবা আমাদেরকে নাম দেওয়া হয়েছে মাছে ভাতে বাঙালি। এই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাঙালি বরাবরই পান্তা ভাতের সঙ্গে ইলিশ মাছ খেয়েছে। আগে সময়ে সকলেই পান্তা ভাত খেত অনেকটা দুঃখে কষ্টে কারণ সেই সময়ে মানুষের অনেক রকম অভাব অনটন এর মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হত। অভাব অনটনের মধ্যে দিন পার করতে হতো বিধায় তারা নিত্যদিন পান্তা ভাত সাথে কাঁচা মরিচ খেয়ে জীবনধারণ করত।
যদিও বর্তমান সময়ে পান্তা ভাত খাওয়া বাঙালির তেমন একটা পরিলক্ষিত করা যায় না। শুধুমাত্র এই বিশেষ দিনেই হয়তো বা বাঙ্গালীরা শখের বসে পান্তা ভাত খেয়ে থাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি এটাই মনে করি। তবে যারা বাঙালি এই ঐতিহ্যকে মনে প্রাণের ধারণ করে তারা হয়তোবা মাঝে মাঝেই পান্তা ভাত সাথে কাঁচা মরিচ অথবা ইলিশ মাছ প্রতিনিয়ত খাওয়ার চেষ্টা করে।
ছোটবেলায় এই পহেলা বৈশাখ নিয়ে অনেক রকম ঘটনা ঘটে গিয়েছে যেগুলো এখন শুধুমাত্রই স্মৃতি। এই স্মৃতিগুলো নিয়েই এখন সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে যদিও এখন পহেলা বৈশাখ নিয়ে তেমন একটা মাতামাতি করতে মন চায় না। আসলে আমার মনে হয় একটা সময় পার হবার পরে কেউই আর এসব বিষয় নিয়ে তেমন একটা মাতামাতি করে না। পহেলা বৈশাখ বলতে এখন শুধু এটাই মনে হয় যে পান্তা ভাত আর ইলিশ মাছ খাওয়া। ছোটবেলায় যখন পহেলা বৈশাখ আসতো তখন দেখতাম গ্রামগঞ্জের অনেক স্কুল কলেজ মাঠে অনেক রকম বাদ্যযন্ত্র সহ খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চলে এরকম কিছুই তেমন একটা পরিলক্ষিত করা যায় না তবে সহ অঞ্চলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে সেখানে এখন পর্যন্ত খুব ভালোভাবেই পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা রমনার বটমূলে খুবই সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশের আয়োজন করে গান-বাজনা হয় সকলেই সেখানে গিয়ে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করে। যদিও আমি কখনো পহেলা বৈশাখ রমেনের বট মিলে গিয়ে কাটাইনি।
পহেলা বৈশাখে কেন্দ্র করে এখন গ্রাম অঞ্চলের হাতেগোনা কয়েকটি স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর রমজান মাস থাকায় হয়তো বা সেটাও পালন করা হচ্ছে না। আমার কাছে মনে হয় আস্তে আস্তে এসব কিছু হারিয়ে যাবে, কেউই নিজ উদ্যোগে পহেলা বৈশাখের আনন্দ উৎসব কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাইবে না। যেহেতু বর্তমান সময়ে মানুষ অনেকটাই বেশি শহরকেন্দ্রিক হচ্ছে গ্রাম কেন্দ্রিক মানুষের এসব নিয়ে তেমন একটা মাথা ব্যাথা নেই। মাথা ব্যাথা নেই কারণ এরা বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ একদিন কাজ বন্ধ দিয়ে এসব কিছু পালন করলে তাদের আর্থিক দিক দিয়ে খুবই সংকট দেখা দেবে পাশাপাশি পরিবারেও অনেক বড় একটা চাপ সৃষ্টি হবে।
ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় এই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এমন অনেক পরিবার আছে যেখানে ইলিশ মাছের গন্ধ যায়নি। যদি তারা এই নববর্ষ উৎসব পালন করতে চায় তাহলে তাদেরকে এভাবেই পালন করতে হবে যে পান্তা ভাতের সঙ্গে কাঁচা মরিচ। যদিও পান্তা ভাতের সঙ্গে কাঁচামরিচ এই খাবারটি তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী তারা প্রতিনিয়ত এ ধরনের খাবার খাচ্ছে। নতুন করে নববর্ষ উপলক্ষে এ খাবার তাদের মনে কোন আনন্দ এনে দেয় কিনা সেটা আমার বোধগম্য নয়।
যেহেতু এই নববর্ষ উৎসব বাঙালির হৃদয়ের স্পন্দন ছিল একসময় এখন পর্যন্ত সেটা বিদ্যমান, তাই আমাদের উচিত যেহেতু আমরা উৎসব পালন করব তাই সকলকে নিয়ে একত্রে উৎসব পালন করাই উচিত। সকলের একসঙ্গে করে উৎসব পালন করার মাঝে এক অন্যরকম ভালোলাগা ভালোবাসা আছে। ধনী গরিব নির্বিশেষে আমাদের সকলের উচিত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নববর্ষ উৎসব পালন করা। কিন্তু বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা কি দেখি...?? বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখি যে নববর্ষ উৎসব শুধুমাত্র ধনীরাই জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করছে এখানে গরিব বা মধ্যবিত্তদের কোন হাত নেই। গরিব বা মধ্যবিত্তরা কিভাবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে নববর্ষ উৎসব পালন করবে...?? তারা তো নিজেদের দুবেলা ভাতের যোগান দিতেই অনেক বেশি মরিয়া হয়ে পড়ে। সেখানে নববর্ষ উৎসব পালন করা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
যদিও আমি অনেক বছর হল নববর্ষ উৎসব পালন করি না কেন জানি এসব নববর্ষ উৎসব নিউ ইয়ারের উৎসব জন্মদিনের উৎসব এই সমস্ত উৎসব আমাকে এখন আর আগের মত টানে না। কেন এসব উৎসব আমাকে টানে না আমি সেটা এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনা। তবে এসব উৎসব যে আমাকে টানে না এ নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র দুঃখ নেই কষ্ট নেই। প্রতিদিনের ন্যায় আমার কাছে এই সকল উৎসবগুলো অন্যান্য দিনের মতোই মনে হয় নতুন কিছুই পরিলক্ষিত করতে পারি না যার কারণেই হয়তোবা এসব উৎসবের দিকে নিজেকে ধাবিত করতে পারিনা। তবে যাই হোক বাঙালি হিসেবে আমাদেরকে এই সকল ঐতিহ্য মনে ধারণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।
আমাদের সকলের উচিত নিজেদের এ সকল উৎসবের পাশাপাশি ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলে একত্র হয়ে নববর্ষ উৎসব পালন করা এতে সকলের ভেতরকার ভাতৃত্ববোধ অনেক বেশি শক্ত এবং মজবুত হবে বলে আমার মনে হয়। দিনশেষে আমরা সকলেই মানুষ আর মানুষ হিসেবে একে অপরের সুখে দুখে পাশে থাকা উচিত। সেই সাথে কোন উৎসবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলে একই আনন্দে মেতে উঠা উচিৎ।
এখানেই আমি আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট শেষ করছি। আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে। আজ আর নয়, আবার দেখা হবে নতুন কোন পোষ্টের নতুন ভাবে, নতুন রূপে। সকলেই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন, এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে.....!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
| বিভাগ | সাধারণ লেখালেখি |
|---|---|
| বিষয় | শুভ নববর্ষ |
| পোষ্ট এর কারিগর | @jibon47 |
| অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness

OR







আসলেই ভাইয়া ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া পহেলা বৈশাখের বিষয়গুলো এখন যেন শুধুই স্মৃতি। তবে আগে যেরকম পহেলা বৈশাখ নিয়ে উদযাপনা হতো, মেলা হতো এখন তেমনটা হয় না।
আগের পহেলা বৈশাখ আর এখনকার পহেলা বৈশাখের মধ্যে আমি অনেক অমিল খুঁজে পেয়েছি আগের মতো আর কিছুই নেই।
এজন্যই তো বলি আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম। যেদিন যায় ভালো। আগের পয়লা বৈশাখের কোথায় খুঁজে পাবেন। তবুও আপনাকে শুভেচ্ছা পয়লা বৈশাখের। বেশ সুন্দরভাবে গুছিয়ে আজকে আপনি পোস্টটি করেছেন। আসলে ভাইয়া আগের সেই পহেলা বৈশাখ আগের সেই মেলা এখন আর চোখে পড়ে না।
আপনাকেও পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা আপু, সত্যিই সবকিছু কেমন যেন পাল্টে গিয়েছে আগের মত কিছুই নেই।
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আজকের ব্লগটি সাজিয়েছেন। নববর্ষের প্রথম দিনে গরীব দুঃখি মানুষের পাশে দাড়ালে সব থেকে বেশি ভাল হয়। কারন বছরে কমপক্ষে একদিন হলেও তদের খোজখবর নেওয়া দরকার। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমিও সেটাই মনে করি সবসময়ই গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থাকা উচিত এতে করে আমাদের একে অপরের ভাতৃত্বও অনেক বেশি শক্ত হবে।
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে আসলে অনেক ভাল লাগল। সত্যি ভাইয়া এখন ছোটবেলার মত আর পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় না। পহেলা বৈশাখ এখন শুধু স্মৃতি হয়ে থাকে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ছোটবেলায় পালন করা পহেলা বৈশাখ গুলো এখন শুধুমাত্র স্মৃতি যেগুলো আর কখনোই ফিরে পাবো না। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই ভাইয়া।অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি।বেশ সময় নিয়ে লিখেছেন পোস্টটি।আসলেই পহেলা বৈশাখ বাঙালিদের অন্যতম একটি উৎসব।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ।
পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালি জাতির কাছে এক আনন্দের বিষয় এটা আমরা সকলেই জানি। ধন্যবাদ আপনাকে।