আমাদের আর কারও কাছে হাত পেতে চলতে হবে না ......শেখ হাসিনা
সোমবার ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন,বাণিজ্য যাতে বৃদ্ধি পায় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে “আপনাদের... শুধু নিজেরা আর্থিক স্বচ্ছলতা আনলে হবে না। সাথে সাথে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আপনার উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো একান্তভাবে প্রয়োজন।”
উৎপাদিত পণ্যের জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতেও ব্যবসায়ীদের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।“আমাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমি মনে করি, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত… আমাদের নতুন নতুন পণ্য যেমন উৎপাদন করতে হবে, আমাদের এক্সপোর্ট বাস্কেটটাও বাড়াতে হবে।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকালে উদ্বোধনী বক্তব্যের পর ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। পরে তিনি বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাণিজ্য মেলা চলবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।এবার মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৫৮৯টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ১১২টি বড় ও ৭৭টি ছোট প্যাভিলিয়ন।
থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মরিশাস এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৪৩টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে।
নিজের দায়িত্বের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রধানমন্ত্রিত্ব; এটা তো অল্প সময়ের একটা দায়িত্ব। কিন্তু এই সময়টুকু সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে চাই... যে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কতটুকু গড়ে দিতে পারলাম; সেই ভাবেই কাজ করি।
“এই দেশটি আমাদের, এই দেশটি গড়ে তুলতে হবে আমাদের।”
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরো বলেন, মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশীয় উদ্যোক্তারা যেমন লাভবান হচ্ছে, নতুন পণ্য প্রদর্শনীর সুযোগ পান, অন্যদিকে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা- তাদের রুচি ও চাহিদা পূরণের সুযোগ হয়ে যাচ্ছে এই মেলার মধ্য দিয়ে। ফলে মেলায় পণ্যের মানোন্নয়ন ও বহুমুখী করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
১৯৭১ সালে মাত্র ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশের। এখন তা প্রায় আট লাখ কোটি টাকারও বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের ৪৬তম বৃহত্তম অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উন্নয়ন প্রকল্প প্রায় ৯০ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে করছি। এখন আমদানি ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ আয় থেকে মেটানো হচ্ছে। আমরা সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি। এখন কারও কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশকে আমরা ছাড়িয়ে গেছি।”
ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন তার বক্তব্যে নতুন মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানকে তার নতুন দায়িত্বের জন্য অভিনন্দন জানান। এছাড়া উপস্থিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, “আমরা নামে মাত্র ওয়ানস্টপ সার্ভিস চাই না।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সুভাশীষ বসু।
টাঙ্গাইলটাইমস