ঘড়ির কাঁটায় আটকে থাকা সময় ( পর্ব ২ )
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "ঘড়ির কাঁটায় আটকে থাকা সময়" গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করে নেবো। তো নারায়ণ যখন দোকানদার এর কাছে শুনলেন যে, ওই ঘড়িটার সময় আটকে আছে, তখন নারায়ণ হালকা হাসি দিয়ে ঘড়িটাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করল। এর মধ্যেই ওই বন্ধ ঘড়ি অর্থাৎ যে সময়ে আটকে ছিল, সেখান থেকে একবার নড়ে উঠলো। হঠাৎ করে ওই দোকানের সমস্ত স্থান জুড়ে একটা ঝড়ো হওয়ার মতো বয়ে চলে গেলো, হওয়াটা একদম ঠান্ডা। দোকানের আলোগুলোও যেন অলৌকিক ভাবে এক ঝলকে সব নিভে গেলো। নারায়ণ ওখানে কেঁপে উঠলো অর্থাৎ তার সমস্ত শরীর যেন একটা ঝাঁকি মেরে উঠলো। দোকানদার তো ভয়ে কাতর হয়ে গেছে।
দোকানদার তখন নারায়ণকে বললো-তুমি এটা স্পর্শ করলে কেন, সেই ১৯৬২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত এই ঘড়ি বন্ধ আর কেউ স্পর্শও করিনি। এই রাতের অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে নারায়ণ এর মন থেকে এই বিষয়টা মোটেও যাচ্ছিলো না, বারবার ই ঘটনাটা তার মনে পড়তে থাকে। বাড়ি এসে ঘুমানোর সময়েও এই ঘড়ির কথাটা আবার মনে পড়ে যায়, বিশেষ করে ঘড়ির কাঁটার কথা, ওখানে ১২ টা ১০ বেজে ছিল, সেই দৃশ্যটা যেন বারবার তার স্মৃতিতে ভেসে উঠছিলো। এখন অদ্ভুত আর বিস্ময়কর ঘটনা যেটা ঘটলো, সেটা হলো-তার বাড়িতে যে ঘড়িটা আছে, সেটা আবার রাত ১২ টা বাজার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গেলো।
নারায়ণ তখন বাইরে জানালাটা একবার খুললো আর দেখলো বাইরে কুয়াশায় পুরো ঢেকে গিয়েছে আর স্বাভাবিক একটা ঠান্ডা হাওয়া সেই হিসেবে তার ঘরে ঢুকছে। কিন্তু এই কুয়াশা আর ঠান্ডা হাওয়া কোনো স্বাভাবিক নয়, কারণ তখন না শীতকাল না বর্ষার সময়। গ্রীষ্মের সময়ে এই অবস্থা, নারায়ণ তো একটু অবাক হলো এই বিষয়টা নিয়ে। ওই অবস্থায় আবার বাইরে কাকে যেন দেখতে পেলো, নারায়ণ একটু জানালার কাছে যেতেই দেখলো সেই দোকানদার দাঁড়িয়ে আছে। নারায়ণকে ডেকে নিচু স্বরে বলতে লাগে-নারায়ণ! সময়ের দরজা খুলে গিয়েছে, চট জলদি দোকানে ফিরে এসো, তখন আবার রাত ১ টা বেজে গিয়েছে । নারায়ন একটু ভীত অবস্থায় আছে এবং তাও দোকানদারের কথায় সাড়া দিয়ে দরজা খুলে নিচের দিকে গেলো।
এরপর সে তো আরো হতভম্ব হয়ে যায়, কারণ বাইরে গিয়ে সে আর গলি চিনতে পারছে না, যেন সবকিছুই অচেনা অচেনা। কারণ এখানে বিষয়টা এখন এমন একটা ঘটেছে যে, কলেজ স্ট্রিটের যে গলিতে দোকানটা ছিল, সেখানে এখন একটা পুরোনো ইটের বিল্ডিং দেখতে পাচ্ছে এবং ওখানে একটা সাইন বোর্ডে সেই একই লেখা দেখতে পাচ্ছে অর্থাৎ-সেন এন্ড সন্স ( ঘড়ি মেরামত ) আর সাথে সেই সালটাও দেওয়া আছে। সবকিছুই সেই ৬০ বছর আগের মতোই লাগছিলো। সবকিছুই যেন একটা সময়ের ফাঁদে আটকে গিয়েছে, নারায়নও বিষয়টা অনুধাবন করলো যে, সময়ের চক্রে সবকিছু চেঞ্জ হয়ে গেছে।......
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

