মুভি রিভিউ: শিবপুর
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করবো। এই মুভিটির নাম হলো "শিবপুর"। এই মুভিটা সম্পূর্ণ থ্রিলার কাহিনীর উপর ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। এইটার কাহিনীটা এখন আলোচনা করবো।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
❂মূল কাহিনী:❂
কাহিনীটা সাধারণত শিবপুরকে নিয়ে। আর এইটার কাহিনী অনেক বছর কেটে যায়, আর ওখানকার ইনচার্জ হিসেবে ছিলেন সুলতান নামের একজন অফিসার। শিবপুরের কাহিনী নিয়ে তিনি রিটায়ার্ড এর পরে একটা বায়োগ্রাফি বের করতে চেয়েছিলেন আর তার অর্ধেকও লিখেছিলেন। এর মধ্যে একজন রিপোর্টারের সাথে পরিচয় হয় আর তিনি তার কাছ থেকে সেই কাহিনীটা শুনতে চায়,কিন্তু সুলতান সেইটা বলতে চায় না, কারণ তার বায়োগ্রাফি তৈরি করার আগেই যদি জনগণ জেনে যায় তাহলে তার সেই বায়োগ্রাফির কোনো মানে থাকবে না। তারপরেও সেই রিপোর্টার তার পিছু ছাড়ে না, শেষ পর্যন্ত তাকে শিবপুরের ঘটে যাওয়া কাহিনী বলতে চায়। শিবপুরে মূলত রাজনীতি নিয়ে একটা দাঙ্গা সবসময় লেগেই থাকতো, যেটার সাথে পুলিশও নেতা-মন্ত্রীদের সাথে জড়িত ছিল, ফলে সাধারণ জনগণ কোনো সহযোগিতা সেখানকার থানা থেকে পেতো না। ওই এলাকায় মন্দিরা নামের একজন মহিলা আর তার হাসব্যান্ড খুবই সাধারণ ভাবে বসবাস করতো। মন্দিরার হাসব্যান্ড একটা সরকারি অফিসে কাজ করতো আর একদিন এক মন্ত্রীর কিছু চেলা সেখানে গিয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে বলে কিন্তু সে কোনো কিছুর বিনিময়ে কোনো অন্যায় কাজ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
এরপর ওইদিনই অফিস থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে তারই বাড়ির সামনে তাকে গুলি করে মেরে দেয় আর সেটা তার ওয়াইফ মন্দিরা দেখে ফেলে এবং কারা মেরেছে সেটাও তাদের চিনতে পেরেছে। এরপর সেখানকার লোকাল থানায় গিয়ে তাদের নামে মামলা করতে চাইলে তাদের নাম লিখতে মানা করে, শুধু খুন হয়েছে সেইটা লিখতে বলে আর তল্লাশি নেওয়ার কথা বলে। কারণ পুলিশ ঘুষ খেয়ে বসে আছে, তাই তাদের কোনো কেস নেয় না, তার পরিবর্তে উল্টোপাল্টা কথা বলে যায়। যাইহোক, এরপরে তারা একটা উকিল ধরে এই কেসটা হ্যান্ডেল করার জন্য। উকিল কেসটা নিতেও চায়, কিন্তু যেদিন মামলার ডেট পড়ে সেদিন মন্ত্রী সেখানে গিয়ে ভয় দেখিয়ে সেই উকিলকে সরিয়ে দেয় আর এদিকে কোর্টে উপস্থিত না হওয়ার জন্য কেস খারিজ করে দেয়। ফলে তারা একপ্রকার সর্বশান্ত হয়ে যায়। এরপর কোর্টের সামনে তাদের পরিচিত এক সাধারণ অফিসার সে নিজে তদন্ত করতে চায়।
আর সে করতে যায় কিন্তু তাকেও মরতে হয়। এইভাবে এক তরফা শুধু জনগণ আর পুলিশ খুন হতে থাকে, কিন্তু তাদের বলার কেউ নেই বা থামানোর কেউ নেই সেখানে, একটা উশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে ওঠে সেখানে। এরপর মন্দিরা কোনো ন্যায় না পেয়ে সে নিজেই চায় তাদের স্বাস্তি দিতে আর তার জন্য একদিন আরেকটা গুন্ডার কাছে যায় সহযোগিতার জন্য, কারণ তাদের সাথে সেই মন্ত্রীদের আবার খাড়াখাড়ি আছে। কিন্তু তার কাছে অনেক টাকা চায়, আর পরবর্তীতে সে সমস্ত গহনা নিয়ে এসে তাকে দেয় আর তাদের মারার সুপারিশ দেয়। একদিন চায়ের দোকানে তাদের সাহায্যে কুপিয়ে মেরে দেয়। আর এইভাবে দিনের পর দিন খুন করতে করতে মন্দিরা একজন সাধারণ মহিলা থেকে খুনখার হয়ে ওঠে, তার সাথে না কোনো মন্ত্রী পেরে ওঠে না আর কেউ। যার কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছিল তারাও আর তার সাথে পেরে ওঠে না।
একটা বেইমানি রূপে চলে গিয়েছিলো তাদের মধ্যে সম্পর্কগুলো। আর সুলতান নামের একজনের এই শিবপুরে ইনচার্জ হিসেবে পাঠিয়ে দেয়, কারণ সে একজন ইনকাউন্টার স্পেশালিস্ট ছিল আর তাকে ফ্রি হ্যান্ড করে দেয় এইসব থামানোর জন্য। আর সুলতান জানতো মন্দিরা এখানে সবকিছু পরিচালনা করছে, কিন্তু তাকে কিছুই বলেনি বরং তার সাহায্য নিয়ে সেইসব মন্ত্রীদের দুইজন মিলে এক এক করে মেরে ফেলে আর শিবপুর থেকে সন্ত্রাস দূর করতে পারে শেষ পর্যন্ত, কিন্তু মন্দিরা সেখান থেকে চলে যায় অনেক দূরে আর শিবপুরের কাছে সে একজন মৃত বলে ঘোষিত। আর সে কোথায় থাকতো সেইটা সুলতানই একমাত্র জানতো।
❂ব্যক্তিগত মতামত:❂
এই মুভিটা শিবপুরের রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে ঘিরে, যেখানে সবসময়ের জন্য একটা হিংসাত্মক পরিস্থিতির পর্যায়ে ছিল। কেউ কাউকে কোনো কিছুতে সহ্য করতে পারতো না, কেউ কারো জায়গায় গেলে যেন রক্তের খেলায় মেতে উঠতো। একপ্রকার রক্তপিপাসু হয়ে উঠেছিল সবাই আর যার পরিণতি একের পর এক খুন। আর এইসব করতে করতে তাদের এতটাই সাহস বেড়ে গিয়েছিলো যে, পুলিশকেও ছাড় দিতো না, যারা সৎ ভাবে কাজ করতে চাইতো, তাদের ভাগ্যের পরিণতি একটাই ছিল মৃত্যু। আর মন্দিরা নামের এই মহিলা খুবই সাধারণ ঘরের একজন বউ ছিল আর খুবই সাদামাটা। এইসব পরিস্থিতি তাকে অন্য রূপে নিয়ে যায়, যে সে বন্দুক চালাতে বা মানুষ খুন করতে বাধ্য হয়ে যায়। আসলে চারিপাশে মাঝেমধ্যে এমন কিছু পরিস্থিতি খাড়া হয় যে, যেকোনো কাউকে তার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে চেঞ্জ করে দিতে পারে, সেটা যেকোনো কিছু হতে পারে। আর মন্দিরা তার মেয়েকে এইসব পরিস্থিতি থেকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলো আর সেই মেয়েটাই এখন রিপোর্টার হয়ে সুলতানের কাছে এই কাহিনী শুনতে চায়, কিন্তু সে জানে না যে এই কাহিনী তার মাকে নিয়ে আর সুলতানও জানে না যে এইটা মন্দিরার মেয়ে। একদিন খবর পেয়ে সুলতানকে ফোন করে সেই গোপন ঠিকানায় তার মেয়েকে নিয়ে আসতে বলে। এরপর সুলতানকেই মেরে দেয়, আর তার কারণ একটাই ছিল যে, সুলতান যে বায়োগ্রাফিটা লিখছিলো সেটার কিছু কিছু বিষয় বাইরে প্রকাশিত হলে অনেক বড়ো ক্ষতি হয়ে যাবে। আর এটাই ছিল মূলত শিবপুরের মন্দিরাকে নিয়ে কাহিনী।
❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৮/১০
❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
দাদা আপনি অনেক সুন্দর একটা মুভির রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে আজকেও। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম মুভিগুলোর রিভিউ পড়া হয় সব সময়। আর শিবপুর মুভিটার রিভিউ ও অনেক সুন্দর ছিল। কিন্তু এই মুভিটার কাহিনী দেখছি একেবারে অন্যরকম ছিল। রক্তের খেলা খেলতে খেলতে তারা একেবারে ফিশাচ হয়ে গিয়েছে। হিংস্র হয়ে গিয়েছে তারা সবাই অনেক বেশি। মন্দিরা কে নিয়ে দেখছি অনেক কাহিনী হয়েছে এখানে। শেষ পর্যন্ত শিবপুর থেকে সন্ত্রাস দূর করতে পেরেছিল এটা জেনে তো আরো ভালো লেগেছে। আসলে এরকম পরিস্থিতি ছোট থেকে অনেক বেশি বড় হয়ে যায়। যেমন এখানে সবাই খুনে মেতে উঠেছিল। যাইহোক দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সব সময় আমাদের মাঝে বিভিন্ন রকমের মুভি গুলোর রিভিউ ভাগ করে নেওয়ার জন্য। আশা করছি আপনি পরবর্তীতেও অনেক সুন্দর একটা মুভির রিভিউ পোস্ট করবেন। আপনার পরবর্তী মুভির রিভিউ পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
দাদা আমি মুভি দেখতে যেমন পছন্দ করি তেমনি মুভির রিভিউ পোস্ট পড়তেও অনেক বেশি পছন্দ করি। এই মুভিটা যদিও আমার দেখা হয়নি, তবে সর্বপ্রথম আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে দেখে অনেক ভালো লেগেছে দাদা। আপনি সবসময় আমাদের মাঝে মুভির রিভিউ শেয়ার করেন যেগুলো আমি খুব পছন্দ করি। অন্যান্য দিনের মতো আজকের এই মুভি রিভিউটা ও সম্পূর্ণভাবে পড়া হয়েছে এবং খুব ভালো লেগেছে। আসলে এরকম জঘন্য মানুষ কিভাবে হতে পারে আমি তো এটা ভাবছি। কিভাবে মানুষগুলোকে খুন করতে পারে। তাও এটা তাদের আবার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এরকম মানুষ গুলোর কারণে পরিস্থিতি একেবারে জঘন্য হয়ে যায়। তবে পরবর্তীতে দেখছি সন্ত্রাস গুলোকে তাড়ানো হয়েছিল। শেষে যদি এরকম কিছু হয় তখন অনেক বেশি ভালো লাগে। পুরো বিষয়টা বেশ ভালোভাবে পড়লাম এবং অনেক কিছু বুঝতে পারলাম। সময় পেলে আমি অবশ্যই চেষ্টা করব ওই এই মুভিটা দেখে নেওয়ার।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মুভিগুলো আমার কাছে দারুণ লাগে। "শিবপুর"নামের মুভিতে মনে হচ্ছে কোনো মানুষের বাস্তব জীবনের কাহিনীকে কেন্দ্র করে ফুটে উঠেছে।রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনেক জঘন্য ঘটনার কাহিনী পড়ে শিউরে উঠলাম।তাছাড়া মন্দিরার মেয়েই শেষে সাংবাদিক হয়ে এটা জানার পিছনে ছুটছে মানেই গল্পের মোড় পাল্টে গিয়েছিল।ভালো লাগলো দাদা আপনার মুভি রিভিউ পড়ে, ধন্যবাদ আপনাকে।
"শিবপুর" নামক এই মুভিটি যদিও দেখা হয়নি। তবে রিভিউ পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। দারুন একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করেছেন। স্বস্তিকা মুখার্জি এই মুভিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। উনার চরিত্রটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এছাড়া উনি অনেক ভালো অভিনয় করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। আসলে সেই গ্রামটিতে খুনাখুনি লেগেই থাকতো। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারতো না। সামান্য বিষয় নিয়ে রক্তারক্তি হয়ে যেত। আর এই পরিস্থিতিতে সবাই নিজের রূপ বদলে ফেলেছে। এমনকি মন্দিরাও নিজেকে বদলে ফেলেছে। সাধারণ গৃহবধূ হয়েও সেও অনেক হিংস্র হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে মন্দিরা তার মেয়েকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছিল। যাতে করে সে তার মেয়েকে রক্ষা করতে পারে।অন্যদিকে সেই রিপোর্টার মেয়েটাই যে মন্দিরার মেয়ে সেটা প্রথমে কেউ বুঝতেই পারেনি। আর শেষমেষ সুলতানকেও মেরে ফেলা হলো। কারণ তিনি যে বায়োগ্রাফি লিখেছিলেন এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। যেগুলো জন সম্মুখে আনা যেত না। তবে শেষ পর্যন্ত শিবপুর সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছিল জেনে ভালো লাগলো। যাইহোক ভিন্ন ধরনের একটি মুভি রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা।
দাদা শিবপুর মুভির রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কারন অনেক সময় আমাদের সামনে এমন পরিস্থিত দাড়ায় তখন নিজের চেন্জ না করে আর থাকা যায় না। যেমন আজকের মুভির মন্দিরা নামের এই মহিলা খুবই সাধারণ ঘরের একজন বউ ছিল আর খুবই সাদামাটা। এইসব পরিস্থিতি তাকে অন্য রূপে নিয়ে যায়। যেখানে সে বন্দুক চালাতে বা মানুষ খুন করতে বাধ্য হয়ে যায়। আসলে চারিপাশে মাঝেমধ্যে এমন কিছু পরিস্থিতি খাড়া হয় যে, যেকোনো কাউকে তার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে চেঞ্জ করে দিতে পারে, সেটা যেকোনো কিছু হতে পারে। এখানে মন্দিরা একটি বুদ্ধির কাজ করেছে। সে তার মেয়েকে এইসব পরিস্থিতি থেকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর সেই মেয়েটাই রিপোর্টার হয়ে সুলতানের কাছে এই কাহিনী জানতে চায়, কিন্তু সে জানে না যে এই কাহিনী তার মাকে নিয়ে আর সুলতানও জানে না যে এইটা মন্দিরার মেয়ে। এভাবে সুলতান ও তার হাত থেকে রেহায় পায়নি। দারুন একটি মুভি। ধন্যবাদ দাদা।