শৈশব স্মৃতি || কাজিনদের সঙ্গে গাছ থেকে খেজুর পেড়ে খাওয়া

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।



বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।


cousins-7333792_1280.jpg

source

কাজিনদের সঙ্গে গাছ থেকে খেজুর পেড়ে খাওয়া


আসলে আমরা ছোটবেলা থেকেই শহরে থাকি ।আমার যখন তিন চার বছর বয়স তখনই আমরা শহরে চলে আসি । তবে মাঝে মাঝে দাদু বাড়িতে গ্রামে বেড়াতে যেতাম । সেখানে বেশ আনন্দের সময় কাটাতাম । মাঠে ঘাটে পথে প্রান্তর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম । সে দিনগুলো ছিল সত্যি ভীষণ আনন্দের। তেমনি একবার স্কুল ছুটিতে আমরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েক দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছিলাম । ভীষণ আনন্দ হচ্ছিল ।কারণ তখন গ্রামে বেড়াতে যাবার কথা শুনলে আনন্দের সীমা থাকত না। আমরা গ্রামে বেড়াতে গেলে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতাম । আর গ্রামের বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে বেড়াতাম । আবার কখনো কখনো প্রজাপতি, ফড়িং এর পেছনে ছুটে বেড়াতাম সেগুলো ধরার জন্য। সত্যি শৈশব ছিল অন্যরকম আনন্দের।


একবার আমরা যখন দাদু বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন খেজুর পাকার সময় ছিল । গ্রামের খেজুরের গাছগুলোতে পাকা পাকা খেজুর ছিল । কোন কোন গাছ ছিল অনেক বড় আবার কোন কোন গাছ একটু ছোট ছিল । তাই আমরা কয়েকজন কাজিন মিলে চিন্তা করলাম খেজুরের গাছ থেকে খেজুর পেড়ে আনবো । এই চিন্তা থেকে আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম খেজুর আনার জন্য । আগেকার দিনে ফসলের মাঠগুলোর পাশ দিয়ে খেজুরের গাছ থাকতো । তাই আমরা ওই ফসলের মাঠের দিকেই গেলাম খেজুর সংগ্রহের জন্য।


বেশ কিছুদূর হাঁটার পর আমরা একটা ফসলের মাঠের পাশে একটা খেজুর গাছ দেখতে পেলাম। যেখানে পাকা পাকা খেজুর ধরেছিল। গাছটি বেশ বড় ছিল না আবার একেবারে ছোট ছিল না। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা ওই খেজুর গাছ থেকেই খেজুর পারব কিন্তু আমি তো গাছে উঠতে পারি না। আমার চাচাতো বোন যারা গ্রামে থাকতো ও মোটামুটি গাছে উঠতে পারে ।ওই গাছে ওঠার সিদ্ধান্ত নিল। আর আমরা নিচ থেকে টুকাবো। সেই সিদ্ধান্ত থেকেই ও গাছে উঠলো । তারপর পাকা পাকা খেজুর গাছ থেকে হাত দিয়ে পারতে থাকল ।আর আমরা নিচ থেকে খেজুর টুকাতে লাগলাম। এভাবে বেশ কিছু খেজুর আমরা কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসলাম।


তারপর খেজুরগুলো আমরা ধুয়ে ফেললাম। তারপর সবাই একটি একটি করে বেতের ঝুরি নিয়ে যার যার ভাগের খেজুর বেতের ঝুরিতে রাখলাম। আমাদের বাড়িতে একটি আম গাছ আছে , যেই আম গাছের একটি ডাল নিচের দিকে ঝুঁকেছিল। তবে আম গাছটি বেশ মোটা ছিল ।তারপর সবাই মিলে ঠিক করলাম আমরা সেই আম গাছের ডালে বসে বসে খেজুর খাব।এই চিন্তা থেকে সবাই আম গাছে ওঠার চেষ্টা করলাম। আমার কাজিন তো খুব দ্রুতই উঠে পড়ল । কিন্তু আমিও আমার বোন আমরা খুব কষ্টে গাছে উঠলাম।


তারপর হাতে বেতের ঝুড়ি ,যার মধ্যে খেজুর নিয়ে গাছের ডালে বসলাম। সবাই মিলে এখন পা দুলাতে দুলাতে খেজুর খাবো । ভাবতেই খুব আনন্দ হচ্ছিল।কিন্তু যেই আমি ঝুড়ি থেকে খেজুর হাতে নিতে গিয়েছি ওমনি আমার খেজুরের ঝুড়িটা মাটিতে পড়ে গেল। দুঃখে আমার কান্না এসে গেল। এত কষ্ট করে গাছে উঠলাম আর সব খেজুর মাটিতে পড়ে গেল। তারপর গাছ থেকে নেমে গেলাম । আর গাছে উঠে আমার খেজুর খাওয়া হলো না । বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। সেই দিনগুলো মনে পড়লে এখনো ভীষণ ভালো লাগে । আসলে শৈশব মানেই আনন্দ মধুর দিন ।যা এখন আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 11 months ago 

আসলে আপু গাছ থেকে খেজুর পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে আপনার এই শৈশবের স্মৃতিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আর আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। শৈশবকালে আপনি কাজিনদের সাথে খেজুর পেড়ে খেয়েছেন এবং খুবই দুর্দান্ত একটা সময় উপভোগ করেছেন আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে। শৈশবের এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

আসলে শৈশবেr স্মৃতিগুলো সত্যি অনেক মজার এবং আনন্দের হয়ে থাকে যা মনে পড়লে এখনো ভীষণ ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

গ্রামের পরিবেশে ঘোরাফেরা করতে খুবই ভালো লাগে। শৈশবের স্মৃতিগুলো খুবই মধুর আপু। যেহেতু শহর থেকে যেতেন আরও বেশি মধুর ছিল আপনাদের জন্য। অবশেষে খেজুর গুলো পড়ে গেল শুনে তো অনেক বেশি খারাপ লাগলো। যেহেতু এত কষ্ট করে খেজুর পারলেন। ধুয়ে নিলেন সেই খেজুর নিচে পড়ে গেল। গল্পটি পড়ে বেশ ভালই লাগলো অনেক ধন্যবাদ।

 11 months ago 

হ্যাঁ আপু শৈশবে গ্রামে যেতে কি যে ভীষণ ভালো লাগতো তা বলে বোঝাতে পারবো না। দারুন ছিল সেই দিনগুলি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45