গল্প|| প্রাপ্তি (পর্ব- ১)
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
গল্প|| প্রাপ্তি (পর্ব- ১)
গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি কাহিনী। স্বামী স্ত্রীর সংসার ।মোটামুটি বেশ ভালোভাবেই সবকিছু চলছিল। কিছুদিন পর তাদের সংসার আলো করে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আদর করে মা বাবা সন্তানের নাম রাখে ময়না। বাবা-মায়ের বেশ আদর সোহাগে ময়না বড় হতে থাকে।ময়নার বয়স যখন পাঁচ বছর হয় তখন তার বাবা হঠাৎ করেই মারা যায় । ময়নার বাবা মারা যাবার পর থেকে ময়নার মা অনেক কষ্ট করে ময়নাকে বড় করে তোলে। ময়নার মা ছাড়া তাদের আর কেউ ছিলনা ।একমাত্র চাচা ছিল যে তাদের সঙ্গে ভালোভাবে যোগাযোগ রাখত না। বলতে গেলে তারা মা মেয়ে ছাড়া দুনিয়াতে তাদের আর কেউ নেই।
এভাবে সময়ের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ময়নার মা একসময় ময়নাকে বড় করে তোলে। দেখতে দেখতে ময়না বিয়ের যোগ্য হয়ে ওঠে। তারপর ময়নার মা মোটামুটি ভালো চাকরিজীবী ছেলে দেখে ময়নার বিয়ে ঠিক করে। কিছুদিনের মধ্যে ময়নার বিয়ে হয়ে যায়। ময়না চলে যায় তার শ্বশুর বাড়ি। এদিকে তার মা হয়ে যায় একা। ময়নার বিয়ের বেশ কিছুদিন পর একদিন ময়নার মাও মারা যায় ।ময়না তখন সম্পূর্ণ একা হয়ে যায়। তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজন ছাড়া তার আপনজন বলে আর কেউ থাকেনা।
এভাবে দেখতে দেখতে কয়েক বছর কেটে যায়। বিয়ের এই কয় বছর শ্বশুরবাড়িতে ময়না বেশ ভালোই ছিল । তার স্বামী বেশ ভালো একজন মানুষ। ময়নাকে সে বেশ ভালোবাসে। ময়নাও তার স্বামীকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় বিয়ের এতদিনেও ময়না মা হতে পারে নি। এ বিষয়টি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারছিল না। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ময়নাকে কটু কথা বলতে থাকে। ময়না মুখ বুঝে সব কিছু মেনে নেয় । কেননা সে নিজেও জানে সে মা হতে পারছে না। এটা নিয়ে তার মনের মধ্যেও অনেক কষ্ট ছিল ।একটা মেয়ে যখন নিজে মা হতে পারে না তখন তার নিজের মনেই অনেক কষ্ট থাকে। তারপর যদি আসে পাশের লোকজন তাকে কথা শোনায় তখন সেই মেয়েটির আর কিছুই থাকে না।
কিন্তু ময়নার স্বামী ময়নাকে কখনো এ বিষয়টা নিয়ে কিছু বলতো না। সে একটা দিনের জন্যও ময়না মা হতে পারবেনা এটা নিয়ে কখনো তাকে কোন কথা শোনায় নি। বরং তার পরিবারের সবাইকে বলত তারা যেন ময়নাকে এসব খারাপ কথা না বলে। কিন্তু তারপরেও তার পরিবারের লোকজন শুনতো না। তারা তাদের ইচ্ছেমতো ময়নাকে বকাবকি করতে থাকতো । আর ময়না নিরবে চোখের জল ফেলতে থাকত। কেননা তার কিছু বলার বা করার নেই। এখানে সে সম্পূর্ণ নিরুপায়। সে শুধু মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতো। যেন তাকে সৃষ্টিকর্তা একটি সন্তান দান করে। আর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আপু সত্যি বলতে আমাদের সমাজে একেবারে এরকম ঘটনা গুলোই প্রায় ঘটে থাকে। যখন কোলজুড়ে কোন সন্তান না আসে তখন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা নানা ধরনের কথা বলতে থাকে। আর যখন সন্তান বেড়ে যায় তখনও তাদেরকে কথা শুনতে হয়। বলে এত সন্তান দিয়ে কি করবো আমরা। মেয়েরা বাবার বাড়িতে থাকতেই রাজকন্যার মত থাকে। কিন্তু কিছু কিছু শ্বশুরবাড়িতে গেলে কিছু বলতে পারেনা সইতেও পারে না। কিন্তু ময়নার মা বাবা মারা যাওয়ার পরে তার একাকীত্বটা এখন কেউ বুঝতেছেনা। কিন্তু মনের পাশে আছে জেনে তাও ভালো লাগলো। জানিনা পরবর্তীতে ময়নার সন্তান হবে কিনা তাও আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম আপু।
আপু সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।ভালো থাকবেন সবসময়।
ময়নার তো দুনিয়াতে আর কেউ রইল না । ওর বাবা মারা যাওয়ার পর মা মেয়েটাকে নিয়ে ছিল তারপর মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে মা ও চলে গেল এখন তো ময়না একা হয়ে গেল । আর বিয়ের পরে স্বামীর সংসার নিয়ে ভালোই কাটলেও যখন মেয়েদের বাচ্চা হয় না তখন তাদের একটু সমস্যাই হয় । স্বামীরা সাপোর্ট করলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য একসময় সেটাও করা হয় না । ময়না তো দেখছি কষ্টের সময় কাটছে জানি না পরবর্তীতে কি হবে ওর সাথে ।
হ্যাঁ আপু ময়নার জীবনটা এখন বেশ কষ্টে কাটছে। তবে ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয় ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে কিছু কিছু মানুষের দুঃখ কষ্ট মনে হয় কখনোই শেষ হয় না। ময়না ছোটবেলা বাবাকে হারায় এবং বিয়ের পর মা'কে হারায়। একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে তার শ্বশুর বাড়ি। সেই শ্বশুর বাড়িতে যদি ময়না সুখ পেতো, তবুও সে মা বাবা হারানোর কষ্ট ভুলতে পারতো। আসলে আমাদের সমাজের মানুষজন জেনে বুঝে মানুষকে কষ্ট দেয়। সন্তান কেউ চাইলেই পৃথিবীতে আনতে পারে না, যদি আল্লাহ তায়ালা না চায়। এটা জানলেও অনেকে মানতে চায় না। তবুও ময়নার স্বামী যেহেতু ভালো, এটা অবশ্যই ময়নার জন্য ভালো সংবাদ। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আমার পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ।ভালো থাকবেন।