শৈশব স্মৃতি|| লুকোচুরি খেলতে যেয়ে মজার ঘটনা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
লুকোচুরি খেলতে যেয়ে মজার ঘটনা
আসলে আমরা যখন বেশ ছোট ছিলাম তখন সবাই মিলে আমার নানু বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। সেখানে যাবার পর দেখা যেত যে আমরা এমন একটা সময় যেতাম যেখানে আমার অন্যান্য খালাতো ভাই বোন সবাই নানু বাড়িতে বেড়াতে আসতো । অর্থাৎ পুরো নানু বাড়িতে বেশ কয়েকজন আমরা একসঙ্গে হতাম। তখন বিভিন্ন ধরনের খেলায় মেতে উঠতাম ।
তবে বেশিরভাগ সময় রাতের বেলা যখন কারেন্ট চলে যেত তখন আমরা লুকোচুরি খেলায় মেতে উঠতাম । অবশ্য তার কারণে বড়দের কাছ থেকে অনেক বকাঝকাও খেতে হতো। গ্রামের বাড়িতে যেখানে সেখানে অন্ধকারে লুকাতাম সেই কারণে। তার পরেও কে শুনত কার কথা । আমরা আমাদের মত খেলেই যেতাম ।
তেমনি একবার সন্ধ্যার পরে কারেন্ট চলে গেল। তখন আমরা সবাই মিলে ঠিক করলাম আমরা লুকোচুরি খেলব । যেই ভাবা সেই কাজ । সবাই মিলে লুকোচুরি খেলার উৎসবে মেতে উঠলাম । তখন আমার নানুবাড়িতে ছোট্ট একটি মেয়ে কাজ করত যে আমাদের সমবয়সী ছিল । ওর নাম ছিল সুরাইয়া। তখন ও আমাদের সঙ্গে খেলতে চাইল । তখন আমরাও ওকে খেলায় নিয়ে নিলাম । তারপর সবাই মিলে লুকোচুরি খেলছি । এভাবে বেশ কিছু সময় কেটে গেল ।
তারপর খেলা চলছেই । হঠাৎ সবাই মিলে আমরা লুকিয়েছি এমন সময় আমার আন্টি ওই কাজের মেয়েকে খুঁজছিল । দীর্ঘ সময় তাকে কোথাও না পেয়ে আমাদের এখানে খুঁজতে এসেছিল । তাকে ডেকেই চলেছে । কিন্তু তখন তো আমরা সবাই মিলে খাটের নিচে লুকিয়ে আছি । কেউ কথা বলছি না । তখন আন্টি খুঁজতে খুঁজতে অনেক ভয়-ভীতিও দেখালো যে, তোকে এত করে ডাকছি তুই কথার জবাব দিচ্ছিস না, যদি তোকে পাই তোকে কিন্তু মাইর দিবো । কিন্তু ও কথা বলছে না। কারণ ও কথা বললে ও আউট হয়ে যাবে, চোর ওকে ধরে ফেলবে । কিন্তু আন্টি যে ওকে মাইর দিবে সেটা ও চিন্তাও করছিল না ।
এভাবে বেশ কিছুক্ষণ আমরা সবাই চুপ করে আছি। হঠাৎ আন্টি খাটের নিচে একজনের চুল ধরে টেনে খাটের নিচ থেকে বের করতে লাগলো আর বলল এই তো পেয়েছি তোকে বেরিয়ে আয় । আজ তোকে মজা দেখাবো । কাজ বাদ দিয়ে খেলছিস আবার কথার উত্তর দিচ্ছিস না । এত সাহস তোর।তখন মজার ব্যাপার হলো আন্টি যার চুল ধরল সে কান্না কণ্ঠে বলে উঠলো আন্টি আমি সুরাইয়া না আমি সোহান । সে ছিল আমার খালাতো ভাই । তখন আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে হেসে উঠলাম । আন্টিও হেসে ফেললো। তখন সুরাইয়াও অন্য জায়গা থেকে হেসে উঠলো ।
এভাবে সেদিনের খেলাটা পন্ড হয়ে গিয়েছিল। সেই মুহূর্তগুলো মনে পড়লে সত্যি ভীষণ মজা লাগে । যদিও পরবর্তীতে সুরাইয়া একটু মার খেয়েছিল খেলার জন্য।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
ছোটবেলার ঘটনা গুলো সত্যি অনেক আনন্দের, এখন মনে পড়লে শুধু হাসি পায়। আসলে কাজের মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে অন্য একজনকে চুল করে টেনে বের করলো।আসলে সেই তো ছোট ছিল তাই হয়তো খেলতে গিয়েছিল।যাইহোক মার খেয়েছে তাতে কি হয়েছে খেলতে তো পেরেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যা আপনি ঠিকই বলেছেন মার খেয়েছে তো কি হয়েছে আমাদের সঙ্গে খেলে তো আনন্দ পেয়েছে বেশ। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে ছোটবেলার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে খুবই ভালো লাগে । ওই দিনগুলো এখন খুব মিস করি ।সেদিন সত্যি খুবই মজা হয়েছিল হাস্যকর একটি ঘটনা ঘটেছিল । অনেক বছর পরে ঘটনাটি আবার মনে করিয়ে দিলেন আপনি ।
আপনিও সেদিন আমাদের সঙ্গে খেলেছিলেন আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম । যাইহোক আপনার ঘটনাটি মনে আছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার শৈশবের স্মৃতি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। আসলে এই ধরনের কত রকমের ঘটনা শৈশবের ঘটে গেল তা এখনো মনে পড়লে হৃদয় শিউরিত হয়ে ওঠে। ছোটবেলার ঘটনা গুলো খুবই আনন্দের। আপনার শৈশবের স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন শৈশবের স্মৃতিগুলো মনে পড়লে সত্যি ভীষণ ভালো লাগে ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে এভাবে লুকোচুরি আমিও ছোটবেলায় অনেক খেলেছি। রাতে কারেন্ট চলে গেলে সত্যি নানাদের বাসাতে লুকোচুরি খেলার মজাই অনেক আলাদা। কাজের মেয়ের সাথে আপনারা বেশ সুন্দরভাবে লুকোচুরি খেলেছেন যেহেতু আপনাদের সমবয়সী ছিল তাই সব থেকে বেশি ভালো হতো। আপনার আন্টি অনেক ডাকার পরেও কোন কথা বলছিল না এটা সত্যি লুকোচুরি খেলার একটি অংশ। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনার কাছে আমার পোস্টটি পড়ে ভালো লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ।আপনার জন্য শুভকামনা।
হাহাহা! আন্টি তাহলে ভুল জায়গায় ধরেছিল তাহলে। সুরাইয়াকে পেলে মাইর দিতো আচ্ছা করে। বাচাঁ তো গেল। নানুর বাড়িতে গেলে আমরাও এভাবে খেলেছি আপু। সত্যি শৈশবের দিনগুলো দারুণ ছিল 🦋
আসলেই ভাইয়া ঘটনাটা সত্যি ভীষণ মজার ছিল। মনে করলে এখনো ভীষণ হাসি পায় ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আন্টি আমি সুরাইয়া না আমি সোহান এটা আসলেই বেশ হাস্যকর ছিল হা হা। ছোটবেলায় আমিও এইভাবে লুকোচুরি খেলেছি। তবে এখন আর সেই সময় কোথায়। সত্যি সেই সোনালী সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না।
ভাইয়া এখন কারোরই সময় নেই সেই আগের মত লুকোচুরি খেলার ।তবে দিনগুলো সত্যি ভীষণ মিস করি ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সন্ধ্যার পর কারেন্ট চলে গেলে লুকোচুরি খেলতে যে কি ভালো লাগতো, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেসব ঘটনাগুলো মনে পড়লে একা একাই হাসি। লুকোচুরি খেলার সময় কতো যে মশার কামড় খেয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গিয়েছে আপু। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে ভাইয়া ছোটবেলার স্মৃতি গুলো হয়ই মধুর যা মনে পড়লেই বেশ হাসি পায়। আপনার কাছে আমার গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।