একটি অহংকারী মেয়ের গল্প পর্ব-২(শেষ পর্ব )
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজ আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব সেটি মূলত একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা । আশা করছি আপনাদের কাছে গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
একটি অহংকারী মেয়ের গল্প পর্ব-২(শেষ পর্ব )
বন্ধুরা গত পর্বে লিখেছিলাম নিরব তার বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে যায় এবং তার বোনরা বেশ সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে থাকে । তারপর থেকে----
আসলে নীরব যখন তার বউয়ের কথা মতো তার বোনদের থেকে আলাদা হয়ে গেল এবং বোনদের সঙ্গে কথাবার্তাও কমিয়ে দিল তখন তার বোনরা খুব কষ্ট পেল । যেহেতু নিরব তাদের একমাত্র ভাই ছিল আর ছোটবেলা থেকে তারাই তাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। ভাইয়ের কাছ থেকে এই ধরনের ব্যবহার তারা আশা করেনি । তারপরেও সবকিছু মেনে নিয়ে তারা তাদের মত থাকতে লাগলো । এভাবেই নীরব তার বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার করতে লাগলো । এই ব্যাপারটায় নিরবের বৌ বেশ আনন্দ পেত ।
আসলে নীরবের বউ দেশ চালাক এবং অহংকারী একটি মেয়ে ছিল । সে সব সময় নিরবের মনের মত হয়ে থাকতো । তার সব কথা শুনত এবং নিজেও ইনিয়ে বিনিয়ে নিজের ইচ্ছে গুলো নীরবকে দিয়ে পূরণ করত । নীরব বোকা বুঝতেও পারত না । যাইহোক এভাবে তারা নিজেরা বেশ সুখে শান্তিতে ছিল । কোন অভাব ছিল না , দুঃখ কষ্টও ছিল না । বেশ আনন্দে তাদের দিন কাটছিল । কিন্তু তাদের এই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হলো না ।
আসলে নীরবের বেশ কিছু জটিলতা থাকার কারণে ডক্টর তাকে তিন চার মাস পর পর চেকআপ করতে বলেছিল । কিন্তু নীরব বিষয়টা অবহেলা করেছিল ।কেননা আগে বেশিরভাগ সময় তার বোনরাই তাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেত । বোনদের সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে বোনরাও নীরবের এতটা কাছে ছিল না ,যার কারণে তারা নিয়মিত চেকআপ করাতে নিয়ে যেতে পারেনি । কিন্তু নিরবকে তারা বেশ কয়েকবার বলেছে চেকআপ করানোর জন্য । কিন্তু নিরব বিষয়টা খুব একটা পাত্তা দেয়নি । তার বউও বিষয়টা খুব একটা আমলে নেয় নি । কেননা সে আসার পর তো নীরবকে ভালোই দেখছে।
একদিন নীরব কাজে বের হলে তার কাজের জায়গায় সে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায় । সবাই তখন বাড়িতে খবর পাঠায় । তখন তার বোন বউ ও সবাই মিলে দৌড়ে নীরব এর কাছে যায় এবং নীরবকে নিয়ে হসপিটালে যায় । হসপিটালে যাবার পর দ্রুত তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয় । দেখা যায় যে তার সমস্যাটা তীব্র আকার ধারণ করেছে । তারপরেও তারা তাদের সাধ্যমত ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যায় । কিন্তু সেদিনই নীরব পরপারের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। নীরবের মৃত্যুতে তার বোনরা আকাশ পাতাল প্রকম্পিত করে কান্নাকাটি করতে থাকে । আর নিজেদেরকেই দোষারোপ করতে থাকে কেন আমরা আরো আগে ডাক্তারের কাছে নিয়ে এলাম না । তাহলে হয়তো আমাদের ভাইটিকে বাঁচাতে পারতাম । এদিকে নিরবের বউয়ের মাথায় তো আকাশ ভেঙে পড়ে । তার সকল অহংকার দম্ভ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এক নিমিষেই তার সবকিছু শেষ হয়ে যায় । নীরবের মৃত্যুর পর তার পরবর্তী দিনগুলো খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে কাটতে থাকে ।
আসলে দুনিয়ার অর্থ সম্পদ ক্ষণিকের জন্য । এটা নিয়ে কারো দম্ভ বা অহংকার করা উচিত নয় । কেননা কখন কার অবস্থা কি রকম হয় সেটা কেউ বলতে পারে না । যেটা নীরবের বউয়ের ক্ষেত্রে হয়েছিল। যাইহোক আশা করছি আপনাদের কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
নীরবের বউ চালাক এবং অহংকারী ছিলো জেনে খুব খারাপ লাগলো। আমি এধরনের মানুষদের পছন্দ করি। আসলে কিছু কিছু সহজ সরল ছেলেরা বিয়ের পরে তাদের বউ এর কথা মতো চলে নিজের জীবন খারাপ এর দিকে টেলে দেয়। নিরব এর বউ এর জন্য তার পরিবারে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এবং এজন্য নিরব কে তার জীবন ও দিতে হলো। একজন স্ত্রী এর স্বামী হচ্ছে অহংকার। স্বামী না থাকলে পৃথিবী যে কত কঠিন তা বোঝা যায়। আশাকরি এবার নীরবে স্ত্রী বুঝতে পারবে। নীরবের জন্য দোয়া রইল ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া মনোযোগ সহকারে গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল ।ভালো থাকবেন।
মেয়েটার একেবারেই উচিত হয়নি এতো বেশি অহংকার করা। সে যদি তার হাজবেন্ডের বোনদের সাথে ভালোভাবে সম্পর্ক রাখতো এবং তার হাজবেন্ড কেও দিত তাদের সাথে সম্পর্ক রাখার জন্য, তাহলে তার হাজবেন্ড এতদিনে বেঁচে থাকতো। নিরবের মৃত্যুর কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। সম্পূর্ণ গল্পটা অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন আপনি।
আসলে আপু মানুষ যখন ভালো অবস্থায় থাকে তখন তার কারো কথা মনে থাকে না ।শুধু নিজের চিন্তাই করে ।যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
কিছু কিছু মেয়েদের জন্য ছেলেদের কে পরিবারের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করতে হয়। এরকম ছেলেরা বোকা ছাড়া আর কিছুই নয়। নীরব সেই ভুলটি করেছে। বউয়ের কথা শুনে বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেছে। বোনদের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলে হয়তো নিয়মিত ট্রিটমেন্টটা চালিয়ে যেত। তাছাড়া বোনরাও অভিমান করে নিরবের খুব একটা খেয়াল না নেওয়ার কারণে এরকম একটি অঘটন ঘটে গেল। এরকম অহংকারী মেয়েদের পরিণতি খুব একটা ভালো হয় না। ভালো লাগলো আপু আপনার গল্পটি পড়ে।
আপু মনোযোগ সহকারে আমার পোষ্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আর আপনার কাছে আমার গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার কাছে এরকম গল্প গুলো পড়তে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি দুটি পর্বের মাধ্যমে এই গল্পটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এই গল্পটার শেষে যে এরকম কিছু হবে এটা ভাবতে পারিনি। মেয়েটা এখন বুঝতে পারবে সবকিছু। এত বেশি অহংকার করা তার প্রথম থেকে একেবারে উচিত হয়নি।
আসলে অহংকার করলে তার ফল খুব একটা ভালো হয় না এই গল্পে সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ।আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই অহংকার পতনের মূল। সবকিছুর জন্য নীরবের বউ দায়ী। নীরবের বউ যদি অহংকার না করতো, তাহলে হয়তোবা গল্পটা অন্য রকম হতে পারতো। আগের মতো মিল থাকলে নীরবের বোনেরা চেক-আপ করতে নিয়ে যেতে পারতো। নীরবের বউয়ের জন্য নীরবকে হারালো তার বোনেরা। দারুণ লিখেছেন আপু। খুব ভালো লেগেছে দুই পর্বের এই গল্পটি পড়ে। আশা করি নতুন কোনো গল্প নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন।
ভাইয়া গল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে চেষ্টা করবো আবার নতুন নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হতে।ধন্যবাদ আপনাকে।