ঈদের আগের রাতে বাজি ফোটানোর মুহূর্ত

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।



বন্ধুরা আজ আবারও আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি মূলত একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আর সেটি হচ্ছে বাজি ফোটানোর আনন্দ।সত্যি ঈদের আগের রাতে বাজি ফোটাতে ভীষণ ভালো লাগে।ছোট বেলায় শুধু আমরা তারা বাজি বাসার সামনের দোকান থেকে এনে ফোটাতাম।কিন্তু এখন হরেক রকমের বাজি পাওয়া যায়।যদিও আমি খুব বেশি বাজির নাম জানি না।বাজি ফোটাতে গেলে ছোট বেলার একটা ঘটনা খুবই মনে পরে।আমরা ঈদের আগের রাতে কয়েক বোন মিলে তারাবাজি ফোটাচ্ছিলাম।ফোটানোর সময় তানজিরা আপু ওর ঈদের একটা ড্রেস আগের রাতে পড়ে তারাবাজী ফোটাতে যেয়ে ওর জামা পুড়িয়ে ফেলেছিল।আপুর খুবই মন খারাপ হয়েছিল আবার সবাই আব্বুর কাছে বকাও খেয়েছিলাম।ছোট বেলার স্মৃতি সত্যি ভীষণ আবেগতাড়িত করে।যাইহোক এবারের ঈদের কথায় আসি।মেয়ে খুব করে বায়না ধরেছিল তার বাবার কাছে বাজি কেনার জন্য।যদিও তার বাবা বাজি ফোটানো নিষেধ বলে বাজি আনতে চায় না।কিন্তু মেয়ের ফুপিও বাজি ফোটাতে চাইলো। তাই দুজনের কথা রাখতে বাজি এনেছিল।সেই গল্পই এখন শেয়ার করব।


ঈদের আগের রাতে বাজি ফোটানোর মুহূর্ত


IMG20240410205704.jpg

মূলত এখন বাজি কেনা বেচা নিষেধ।যার কারণে ইচ্ছে করলেই কিন্তু বাজি কেনা যায় না।আবার কোথায় পাওয়া যায় না জানলেও কেনা মুশকিল।আবার দোকানে যেয়ে জিজ্ঞাসা করলে বাজি থাকলেও ভয়ে বলে বাজি নেই।পুলিশের লোক ভেবে বলতে চায় না। যাই হোক মেয়ের বাবা অনেক খোঁজাখুঁজি করে, বিভিন্ন দোকান ঘুরে, কয়েক জনের থেকে শুনে, শেষ মেশ কয়েক রকমের বাজি কিনে এনেছিল।বাজির মধ্যে ছিল আতশ বাজি,চকলেট বাজি,তাড়াবাজি, চরকি আরো কি কি জানি ।নাম মনে নেই।তবে এই বাজি টি আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে।


IMG20240410205601.jpg

এই বাজিটির নাম টি মনে করতে পারছি না।তবে চমৎকার ছিল।চোখের নিমিষে অনেক ওপরে চলে গেল।বেশ ভালো লেগেছিল দেখতে।এই প্রথম এই বাজি ফুটিয়েছি।মূলত মেয়ে বাজি ফোটানোর জন্য অস্থির হয়ে ছিল সন্ধ্যা থেকে।কিন্তু মেয়ের বাবা বাসায় ছিল না।তাই প্রথমে ভেবেছিলাম আমরা তো সব গুলো ফুটাতে পারবো না।মেয়ের বাবা আসলে ফুটাবো। তাই পরে ফুটাতে চেয়েছিলাম।কিন্তু পরে দেখলাম তার আসতে দেরি হবে ।এর মধ্যে মেয়ের মামা চলে এলো।তার পর সবাই মিলে বাজি ফুটাতে চলে গেলাম ছাদে।আমরা বেশ কয়েকজন ছিলাম।


IMG20240410205940.jpg

আমি মূলত দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম।এই ছবি টি তুলতে গিয়ে বাজি আমার দিকে চলে এসেছিল।খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ভয়ে দৌড় দিয়েছিলাম।তবুও ছবি কিন্তু ঠিকই তুলেছি।


IMG20240410211053.jpg

IMG20240410211051.jpg

IMG20240410211054.jpg

এই বাজিটি ছিল চরকি বাজি।খুবই চমৎকার বাজি টি।ধরানোর পড়ে চরকির মত চারপাশে ঘুরতে থাকে।অসম্ভব ভালো লেগেছিল দেখতে।তবে অনেক দূর পর্যন্ত এর আগুনের ফুলকি চলে এসেছিল।ভয়ে ছোটাছুটি করতে হয়েছিল।


IMG20240410211504.jpg

IMG20240410211507.jpg

এটি ছিল আতশ বাজি।খুবই ভয়ে ভয়ে এটি ফোটানো হয়েছিল।দূর থেকে আগুন দেওয়া হয়েছিল।তারপরেও এটি উপরে না উঠে নিচ থেকেই ফেটে গিয়েছিল।আমরা ভয়ে এদিক সেদিক দৌড় শুরু করলাম।আমার মামাতো বোন আমি ভয়ে চিৎকার করে উঠেছিলাম।আসলে বাজি ফোটানো কিন্তু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।আমি আমার মেয়ের চোখ হাত দিয়ে ঢেকে দৌড়।


IMG20240410210548.jpg

IMG20240410210550.jpg

আর এটি হচ্ছে আমার পছন্দের খুবই সহজ সরল বাজি তরাবাজি।আমরা মেয়েরা সবাই এই বাজি পুড়িয়েছি। এটায় কোন ভয় পাইনি তবে বেশ মজা লেগেছে।আমার মেয়েও পুড়িয়েছে এই বাজি।এই বাজি পোড়ানোর সময় হাত ঘোরালে দেখতে বেশ ভালো লাগে।আমি উঁচু করে ঘুরিয়েছিলাম।দেখতে বেশ ভালো লেগেছিল।


IMG20240410205013.jpg

IMG20240410205110.jpg

IMG20240410205113.jpg

IMG20240410205114.jpg

IMG20240410205012.jpg

আর এই বাজি টিও চমৎকার ছিল।নাম মনে নেই তবে খুবই সুন্দর ।অন্ধকার ছাদে চমৎকার লাগছিল বাজি গুলো পোড়াতে।অনেক দিন পর সবাই মিলে এভাবে বাজি পড়ানো হলো।বেশ মজা হয়েছিল সেই ঈদের চাঁদ রাতে।বেশ আনন্দ করেছি অনেক দিন পর।আশা করছি আপনাদের কাছেও আমার বাজি ফোটানোর মুহূর্ত ভালো লেগেছে।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:OPPO Reno8 T

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  

ওয়াও আপনি আজ আমাদের মাঝে ঈদের আগের রাতে বাজি ফোটানোর মুহূর্ত শেয়ার করেছেন। শৈশবের দিনগুলো মনে পড়ে গেল, আমরা বাজি ফুটিয়েছি পটকা ফুটিয়েছি আগুনের ফুলকা গুড়িয়েছি। অনেক আনন্দ করেছি ঈদের আগের দিন সেগুলো দিন দিন মনে হচ্ছে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এখন আর সেই আনন্দগুলো নেই ফোন নিয়েই ব্যস্ত সব। তবে আপনার বাবা অনেক দোকান ঘোরাঘুরি করার পরে বাজি খুঁজে পেয়েছে। আসলে ঠিক আমাদের এলাকায় বাজি বিক্রি করা নিষিদ্ধ পুলিশে জানতে পারলে সমস্যা করে অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

ভাইয়া আমার বাবা বাজি নিয়ে আসেনি ।আমি লিখেছি মেয়ের বাবা অনেক খোঁজাখুঁজি করে বাজি নিয়ে এসেছে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

ঈদের আগের রাতে দেখছি বাজি ফুটানো নিয়ে অনেক এনজয় করেছেন। তবে আমাদের এখানে এগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পাড়াগাঁয়ের কয়েকটা ছেলেরা চুরি করে ফোটানোর চেষ্টা করে। খুবই ভালো লাগলো আপনাদের এই আনন্দঘন মুহূর্তটা দেখতে পেরে।

 2 months ago 

আপু আমাদের শহরেও বাজি ফোটানো নিষেধ ।তারপরেও অসংখ্য বাজি ফুটতে দেখা যায় ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

ঈদের আগের দিন রাতে বাজি ফোটাতে গিয়ে সবাই দেখছি অনেক বেশি এনজয় করেছেন। সবাই মিলে এই আনন্দটি উপভোগ করার মজাই অন্যরকম। আপনাদের শৈশবে বাজি ফোটানোর মুহূর্তটি এবং তানজিরা আপুর ঈদের জামা পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে ভালো লাগলো। কিন্তু আমার শৈশবে কোন ধরনের বাজে ফোটানোর মুহূর্ত নাই। যাইহোক আপু এত আনন্দঘন মুহূর্তটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপু যেহেতু আপনার শৈশবে বাজি ফোটানোর কোন মুহূর্ত নেই ।তাতে কি হয়েছে? এর পরেরবার ঈদের আগে বাজি ফুটিয়ে দেখবেন ভীষণ ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

এবারে চাঁদ রাতটা দেখছি ভালোভাবেই উদযাপন করেছিলেন বাজি ফুটিয়ে। বাজি ফোটানোর বিষয়টা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সবাই একসাথে বিভিন্ন বাজি ফোটানোর মধ্যে থাকে আলাদা রকম আনন্দ এবং অনুভূতি। আপনারা যেহেতু অনেকজন ছিলেন, সবগুলো বাজি নিশ্চয়ই আনন্দের সাথে ফুটিয়েছিলেন। আসলে এই মুহূর্তটা বছরে একবার আমাদের মাঝে আসে। সেটাকে যদি ভালোভাবে উপভোগ করতে পারি, তাহলে স্মৃতিটা থেকে যায় আজীবন। ছোটবেলায় বাজি ফুটিয়েছিলাম কয়েকবার, এখন আর ফুটানো হয় না।

 2 months ago 

আপু আমিও বেশ কয়েক বছর পর এবার বাজি ফোটানোর আনন্দ উপভোগ করলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

ছোটবেলায় কত যে বাজি ফুটিয়েছি, এটা বলা মুশকিল। ঈদ আসলেই ঈদের আগের দিন অথবা দুইদিন আগে চলে যেতাম বিভিন্ন রকম বাজি কেনার জন্য। প্রায় এক হাজার টাকার বাজি তো কেনা হতোই। সারারাত বাজি ফোটাতাম। সেই আনন্দটা সবথেকে আলাদা ছিল। মেয়ের এরকম আবদারে বাবাকে তাহলে বাজি আনাই লেগেছে। আর সন্ধ্যার পরে সবাই একসাথে ছাদে গিয়ে সুন্দর করে বাজি ফাটিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এখানে তো দেখছি অনেক রকমের বাজি ছিল।

 2 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া এখানে বেশ কয়েক রকমের বাজি ছিল এবং বেশ আনন্দ করেছি। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে ঈদের আগের রাতে বাজি ফোটানোর মজা একেবারে আলাদা৷ আমরা সবসময় ঈদের আগের রাতের বেলা বাজি ফোটানোর প্ল্যান করে থাকি৷ একেবারে সন্ধ্যাবেলা চাঁদ দেখার পর থেকে বাজি ফোটানো শুরু হয়৷ আর আজকে আপনার কাছ থেকে এরকম একটি মুহূর্ত দেখে খুব ভালো লাগলো৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 2 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া চাঁদ দেখার পর থেকেই বাজি ফোটানো মূলত শুরু হয়। আর বেশ মজা লাগে উপভোগ করতে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

আমরাও প্রতিবছর করে থাকি৷ অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।

 2 months ago 

ঠিকই বলেছেন এই বাজি ফুটানোর সাথে ছোট বেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে । আসলে আপুর সেই ঘটনাটা মনে পড়লো এখনো হাসি পায় । আগেকার দিনের কথা গুলো মনে পড়লে সত্যিই কেমন যেন হয়ে যায় মনটা । আবার যদি পুনরায় সেই দিনগুলো ফিরে পেতাম সেটা তো আর কোনদিন সম্ভব না । তারপরও আপনি অনেকদিন পরে ঈদের আগের রাত্রিটা অনেক সুন্দর করে কাটালেন ।।চরকি বাজি চরকি বাজি তারাবাজি সবকিছু মিলিয়ে তো দেখছি দারুন সময় উপভোগ করেছেন । ভাগ্যিস মেয়ে তার বাবার কাছে বায়না ধরে ছিল তা না হলে তো মিস করতেন ।

 2 months ago 

হ্যাঁ আপু অনেকদিন পর বাজি ফুটিয়ে সত্যি ভীষণ মজা পেয়েছিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 65157.25
ETH 3492.49
USDT 1.00
SBD 2.44