গল্প || মাতৃত্ব পর্ব -১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
গল্প || মাতৃত্ব পর্ব -১
সমাজের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার। সংসারে দুই বোন। দুই বোন একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসে ।দুই বোনের মধ্যে ভীষণ মিল। দুই বোনই একটা সময় বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। তারপর বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। বড় বোনের দুটি বাচ্চাও হয়ে যায়। তারপর ছোট বোনেরও কিছুদিন পর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের বেশ কিছুদিন যাবার পরও ছোট বোন মা হতে পারে না ।একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে তাতে কোন কাজ হয় না। দীর্ঘ কয়েক বছর পর একটা সময় সে জানতে পারে সে আর কখনোই মা হতে পারবেনা।
তারপর সে ভীষণ ভেঙ্গে পড়ে। তার বড় বোন তাকে সান্ত্বনা দেয়। বড় বোনের ছোট বোনের এই অবস্থা দেখে ভীষণ খারাপ লাগে। কারণ বড় বোন ছোট বোনকে ভীষণ ভালোবাসে। কিন্তু ভাগ্যের উপর কারো হাত নেই। তাই বড় বোন ছোট বোনকে সান্ত্বনা দেয়। কিন্তু ছোট বোন কিছুতেই মানতে পারছিল না।সে মানতে পারছিল না যে সে মা হতে পারবেনা। এভাবে চিন্তা করতে করতে সে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে ।এভাবে কিছুদিন কেটে যায়।
ছোট বোনের এই অবস্থা দেখে বড় বোন আর চুপ করে থাকতে পারে না। তখন সে তার হাজবেন্ডের সঙ্গে কথা বলে ডিসিশন নেয় সে আবারও একটি সন্তান জন্ম দেবে । সেই সন্তানটিকে সে তার ছোট বোনকে দিয়ে দেবে। তার হাসবেন্ডও বেশ ভালো মনের মানুষ ছিল। যার কারণে বোনের জন্য তার বউয়ের এই ত্যাগ সে মেনে নিতে রাজি হয়। এটা খুব সহজ কোন ব্যাপার নয়। যে কোন পুরুষ মানুষ ব্যাপারটা মেনে নেবে না।
তারপরেও লোকটি তার বউয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়। তখন বড় বোন তার ছোট বোনকে বলে তার সিদ্ধান্তের কথা। ছোট বোন এতে ভীষণ খুশি হয়। সে তখন চিন্তা করে বোনের বাচ্চা তো তারই বাচ্চা। তখন সেও বিষয়টিতে রাজি হয় ।এভাবে কিছুদিন পর বড় বোন মা হতে চলে। দুই বোনেরই আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো ছিল। টাকা পয়সার কোন সমস্যা ছিল না কারোরই। ছোট বোনের শুধু অভাব ছিল একটি সন্তানের।
তারপর এভাবে দেখতে দেখতে বড় বোন নয় মাস পার করে ফেলে। তারপর আসে সেই মুহূর্ত ।বড় বোন হসপিটালে ভর্তি হয়। ছোট বোন ও সেখানে গিয়ে হাজির হয়। আগে থেকেই তারা কথা বলে রাখে জন্মের পরপরই ছোট বোন বাচ্চাটিকে নিয়ে চলে যাবে ।তার বড় বোন সেই বিষয়টির ব্যাপারে একমত হয়। তারপর বেশ কিছু সময় পর চমৎকার ফুটফুটে একটি রাজকন্যার মত মেয়ে সন্তান জন্ম লাভ করে। তখন বড় বোন সন্তানের মুখ না দেখেই ছোট বোনকে বাচ্চাটি নিয়ে যেতে বলে। আর বলে আমি ওকে দেখবো না, দেখলে মায়ায় পড়ে যেতে পারি। তুমি ওকে এখনই আমার সামনে থেকে নিয়ে যাও ।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপনার গল্পটি পড়ে সত্যি মনের ভিতর থেকে কিরকম যেন একটা অনুভূতি কাজ করছেন। আসলে বড় বোনরা মায়ের মত, সে মায়ের মতই সেক্রিফাইস করেছে ছোট বোনের জন্য। সন্তানের মুখ না দেখেই তাকে দিয়ে দেয়। সন্তানের মুখ দেখলে মায়া জন্মাবে, আসলে বোনের মধ্যে এতটা মায়া হয় সেটা আপনার গল্পটা পড়েরেই জানতে পারলাম। খুবই ভালো লাগলো আসলে মানা হওয়ার যন্ত্রণা একটা মেয়েকে কতটা কষ্ট দেয় সেটা এই মেয়েটাই ভালো বোঝে। দেখা যাক আপনার গল্পটি আগামী পর্বের পড়ার অপেক্ষা রইলাম।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন মা না হওয়ার কষ্ট একটা মেয়েই বোঝে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।
যতই টাকা পয়সা থাকুক সন্তান যেন ঘরের আলো হয়ে থাকে। দুই বোনের মধ্যে ছোট বোনের কোন সন্তান হয় না। আর বড় বোন ছোট বোনকে নিজের সন্তান দিতে রাজি হয়। এই সিদ্ধান্তে সবাই খুশি ছিল এবং সবশেষে বড় বোনের ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান হয় যেটা ছোট বোনকে নিয়ে যেতে বলে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
ভাই আমার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।আপনার জন্য শুভকামনা।
খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে এরকম ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়৷ আপনার এই গল্পের ম মধ্যে যখন ছোট বোনের কোন সন্তান নেই তখন বড় বোন তার সন্তান ছোট বোনকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ যখনই তার সুন্দর একটি কোন সন্তান হয় তখন সে তার সন্তানকে ছোট বোনকে দিয়ে দেয়৷ এর মাধ্যমেই তাদের ভালোবাসার বন্ধন অনেকটাই বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে৷ খুব সুন্দরভাবে তাদের জীবনের নতুন পথ শুরু হয়৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷
ভাইয়া আপনি লিখেছেন এরকম ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। কথাটা ঠিক নয় ।এরকম ঘটনা খুব রেয়ার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আমি এরকম ঘটনা অনেক দেখেছি। তাই বললাম।
আসলে বোনের বাচ্চা মানেই নিজের বাচ্চাই মনে হয়।কিন্তু একেবারে দিয়ে দেওয়া সেটা মন থেকে মেনে নেওয়া বেশ কষ্টকর।তাছাড়া পুরুষ রা মানতে চায় না।যাই হোক গল্পের বাকি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। বেশ ভালো লাগলো।গল্পটা পড়ে।ধন্যবাদ
আপু এত বড় স্যাক্রিফাইস কোন পুরুষ মানুষই মেনে নেবে না ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে বোনেদের ভালোবাসা এরকমটাই হওয়া উচিত। তাদের দুই বোনের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে। বড় বোন আবারও একজন সন্তানের জন্ম দিয়েছিল, শুধুমাত্র নিজের ছোট বোনকে সেই সন্তানটা দেবে বলে। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সেই সন্তানকে একবারের জন্যও দেখেনি, ছোট বোনকে দিয়ে দিয়েছিল। আশা করছি সবকিছু ভালোভাবেই চলবে তাদের সবার জীবনে।
বোনদের মধ্যে ভালোবাসা থাকলেও এত বড় সেক্রিফাইস করার মন সবার থাকে না ভাইয়া ।যাই হোক আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
এই গল্পটা কিন্তু খুবই সুন্দর ছিল। কিন্তু দুই বোনের মধ্যে ছোট বোনের সন্তান কখনোই হবে না শুনে খারাপ লেগেছে। আসলে যে কোন মায়ের কাছেই খারাপ লাগবে এই কথাটা শুনলে। প্রত্যেকটা মেয়ে সন্তান চায় যেন সে মা হয়। যাই হোক বড় বোন আরেকটা সন্তানের জন্ম দিয়েছে শুধুমাত্র নিজের ছোট বোনকে দেওয়ার জন্য, বিষয়টা খুব ভালো লেগেছে। আসলে বড় বোন যদি সন্তানের মুখ দেখত, তাহলে সেই চেহারার মায়ায় পড়ে যেত তাই না দেখে ভালো করেছে। আশা করছি দুই বোন এখন থেকে সুখে থাকবে। তবে পরবর্তী পর্বে কি হতে চলেছে এটা দেখার অপেক্ষায় আছি।
আপু গল্পটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।পরবর্তী পর্বে বাকি অংশ জানতে পারবেন ধন্যবাদ।
দুই বোনের বন্ডিং দেখে আসলেই খুব ভালো লাগলো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন অনেক সময়। তবে বড় বোনের এতো বড় সেক্রিফাইস দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। সবাই কিন্তু এমনটা করে না। বড় বোন যদি এই মহৎ কাজটি না করতো,তাহলে ছোট বোনের জীবনটা একেবারে এলোমেলো হয়ে যেতো। কারণ ছোট বোন তো কখনো মা হতে পারবে না। যাইহোক এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ভাইয়া কিছু কিছু মানুষের মন অনেক বড় ও উদার হয়ে থাকে। যার কারণেই এমনটি হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এক বোনের জন্য আরেক বোনের কতটা পরিমাণ ভালোবাসা থাকলে এরকম একটা বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা গল্পটা না পড়লে বুঝতেই পারতাম না। এখানে তার হাজবেন্ডও বিরাট বড় একটা সাপোর্ট করেছে ।বাচ্চাটাকে তো সে নিয়ে গেল পরবর্তীতে কি হয় সেটা জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ।
হ্যাঁ আপু বোনও যেমন ভালো তার হাসবেন্ড ও আরো বেশি ভালো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।