শৈশব স্মৃতি ||জীবনে প্রথম বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।



বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।


fishing-6306785_1280.jpg

source

জীবনে প্রথম বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ


এবার আমি আমার শৈশবের যে ঘটনাটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি সেটি আমার নানু বাড়ির একটি ঘটনা । মূলত ছোটবেলায় আমরা যখন নানু বাড়িতে যেতাম তখন সব আন্টিরাও আসত। তখন সব খালাতো ভাই বোন একসঙ্গে হতাম, সবাই মিলে বেশ মজা হত । তখন আমরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম ।বেশ আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে সেই সময় গুলো কেটে যেত।


তেমনি একবার আমরা নানু বাড়িতে গিয়েছি সব খালাতো ভাই বোনরাও এসেছে। তখন আমার নানু বাড়িতে একটি পুকুর ছিল যেখানে মাছ চাষের জন্য মাছ ছাড়া হয়েছিল। প্রচুর মাছ ছিল পুকুরটিতে ।তখন দেখলাম আমার সকল খালাতো ভাইয়েরা একেকজন একেকটি বড়শি নিয়ে মাছ মারতে গিয়েছে ।সঙ্গে আমার মামাও ছিল। সবাই দেখছি বড়শি ফেলার সঙ্গে সঙ্গে মাছ পেয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা আমার কাছে বেশ মজার লেগেছিল। আমরা কয়েকজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। এর মধ্যে আমার কয়েক খালাতো বোন ও বরশি নিয়ে মাছ মারতে বসে গেল। আমার মামার বেশ কয়েকটি বড়শি ছিল। দেখলাম যে আমার খালাতো বোন ও মাছ ধরে ফেলেছে। এই দেখে আমারও মাছ মারতে ইচ্ছা হল।


কিন্তু কাউকে বলার সাহস পাচ্ছিলাম না। কেননা আমি কোনদিনও মাছ ধরিনি। আর মাছ কি করে ধরতে হয় সেটাও জানি না। মাছ ধরতে গেলে যদি মাছ ধরতে না পারি তখন সবাই হাসাহাসি করবে এই চিন্তা থেকে মাছ ধরতে সাহস পাচ্ছিলাম না। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ সবার মাছ ধরা দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না ।আমিও মাছ মারার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলাম।


তখন কেউ একজন আমাকে একটি বরশি দিল। আর বড়শিতে খাবার লাগিয়ে দিল। তখন আমি বড়শি টি পানির মধ্যে ছেড়ে দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখলাম আমার বড়শি ভারি ভারি লাগছে। সে এক অন্যরকম আনন্দ অনুভব করতে লাগলাম।বড়শি আস্তে আস্তে নিচের দিকে যাচ্ছে। তখন আমি বড়শি টাকে টান দিলাম । সঙ্গে সঙ্গে একটা মাছ বড়শির সঙ্গে বেঁধে চলে আসলো । সে কি আনন্দ আমার। চিৎকার করছিলাম আমি মাছ ধরেছি, আমি মাছ ধরেছি। মাছটা কৈ মাছের সাইজ ছিল । তবে কি মাছ ছিল তা মনে নেই । জীবনে প্রথম মাছ ধরতে পেয়ে সে কি আনন্দ হয়েছিল আমার তা বলে প্রকাশ করতে পারবো না ।আসলে আমি যে মাছ ধরতে পারবো এটি আমি চিন্তাও করেছিলাম না। সবার দেখা দেখি আমিও সিপ ফেলেছিলাম। কিন্তু এভাবে যে মাছ ধরে ফেলব সেটি চিন্তাও করিনি ।সত্যি মাছ ধরার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ আছে ।তারপরেও আবার বড়শি ফেলে ছিলাম তখন মনে হয় আর ধরতে পারিনি।


সত্যি শৈশবের সেই মাছ ধরার কাহিনী মনে পড়লে এখনো ভীষণ মজা লাগে ।তারপরে যদিও আর কখনো মাছ ধরার চেষ্টা করা হয়নি ।আর সেই সুযোগও হয়ে ওঠেনি। তবে শৈশবের সেই মাছ ধরার কাহিনী আজও মনে পড়লে ভীষণ ভালো লাগে। জীবনে একবার হলেও অন্তত মাছ ধরতে পেরেছিলাম এটাই অনেক বড় আমার কাছে। তবে নদীতে গামছা পেতে ছোট ছোট পোনা মাছ ধরেছিলাম এটি মনে পড়ে।


যাই হোক আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 10 months ago 

আপু বরশি দিয়ে মাছ ধরার দারুন গল্প লিখে আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার নানুদের পুকুরে আপনার খালাতো ভাই-বোনরা সবাই যখন বরশি দিয়ে মাছ ধরতেছিল তখন আপনারও ইচ্ছা হয়েছিল মাছ ধরা তাই সেখানে প্রথম বরশি দিয়ে আপনি মাছ ধরেছিলেন। প্রথম বরশি দিয়ে আপনি মাছ ধরে চিৎকার করেছিলেন জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আসলে বরশি দিয়ে প্রথম মাছ ধরার গল্পটি সত্যি বেশ দারুণ আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ভাইয়া আমার শৈশব স্মৃতি পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

 10 months ago 

আপু আপনি শৈশবের একটি দারুন পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে আপু বড়শি দিয়ে মাছ ধরে আনন্দটা দারুন। আমি এখনও আমাদের পুকুরে মাঝে মাঝে বরশি দিয়ে মাছ ধরি খুবই ভালো লাগে। তবে আপনার প্রথমবারের মত বরশি দিয়ে মাছ ধরার অনুভূতিটি আজকে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো এবং আপনার পোস্ট পড়েও বোঝা গেল আপনার অনুভূতিটা দারুন ছিল। ধন্যবাদ আপু আপনার শৈশবের এমন একটা অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ কি সেটা আমিও সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

জীবনে যে কাজগুলো কখনো করা হয়নি সেই কাজগুলো যদি ইন্টারেস্টিং হয়ে থাকে ইচ্ছে জাগে কিন্তু চক্ষু লজ্জার ভয়ে অনেক সময় করা হয় না। মাছ ধরার বিষয়টা ঠিক তেমনি। ভাই-বোনদের দেখলেন মাছ ধরতে কিন্তু জীবন আপনি ধরেননি আজকে ধরতে গিয়ে যদি না মাছ ওঠে তাহলে তো আবার লজ্জার বিষয়। আসলে কোন কিছু শেখার আগে পারার আগে ব্যর্থতা হবে এটাই স্বাভাবিক। যাইহোক হিসটোরি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম এবং ভালো লাগলো।

 10 months ago 

ভাই আমার গল্পটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে আমি শুধু পুঁটি মাছ ধরেছিলাম। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যে কি ভালো লাগে, তা বলে বুঝানো যাবে না। আপনি তো প্রথম বার বড়শি দিয়ে মাছ ধরে বেশ আনন্দ করেছিলেন। আসলে এমন মুহূর্ত গুলো সারাজীবন মনে থাকে। খুব ভালো লাগলো আপনার শৈশবের মজার স্মৃতি পড়ে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

আসলে ভাইয়া ঠিকই প্রথমবার বরশি দিয়ে মাছ ধরে যে আনন্দ পেয়েছিলাম সেটি আসলে ভোলার নয় ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59907.23
ETH 2647.48
USDT 1.00
SBD 2.43