গল্প|| অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় । মূলত প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -১
শহরের একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। যে পরিবারে মা-বাবা, স্বামী- স্ত্রী নিয়ে বসবাস। বেশ অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে তাদের সংসার চলছিল। একে তো বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। তাদের চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়। এছাড়াও পরিবারের সংসার খরচ চালাতেও বেশ হিমশিম খেতে হয় পরিবারের কর্তাকে।তারই মধ্যে হঠাৎ সংসারে নতুন অতিথির আগমন ঘটে। সবাই ভীষণ খুশি হয় ।কেননা একটা নতুন অতিথি বাড়িতে আসলে সবাই বেশ আনন্দিত হয়।
এরপর সংসারের খরচ আরো বেড়ে যেতে থাকে। সংসার চালানোই যেন দায় হয়ে যায়। পাঁচজন সদস্যের পরিবার চালাতে পরিবারের কর্তা কে বেশ হিমসিম খেতে হয়।এভাবে বেশ কিছুদিন যেতে যেতে একদিন পরিবারের কর্তা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে পরিবারের আয়ের আর কোন মাধ্যম থাকে না। সবাই অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে থাকে। খুবই দুরবস্থার মধ্যে তাদের দিন কাটতে থাকে। এমনি খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে একদিন বাড়িতে বাচ্চাটির খালার আগমন ঘটে। যার কোন সন্তান ছিল না । কিন্তু তার অবস্থা এদের থেকে যথেষ্ট ভাল ছিল।
দুদিন সে এই বাড়িতে থাকার পর তাদের অবস্থা দেখে তার বোনকে সে বলে ,তোমাদের যে আর্থিক অবস্থা তাতে করে তোমরা নিজেরাই খাবার পাওনা। এই বাচ্চাটিকে কিভাবে মানুষ করবে ।এর থেকে ভালো হয় আমাকে দিয়ে দাও ।আমি একে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করব। আর এখানে তোমাদের কাছে থাকলে একে তো রিকশা চালিয়ে খেতে হবে। বোনের এই কথাগুলো শুনে বাচ্চার মায়ের খুবই খারাপ লাগলো।
সেও তখন চিন্তা করতে থাকলো, তাই তো এমন অবস্থার মধ্যে থাকলে আমার বাচ্চা কোনদিনই ভালো অবস্থায় যেতে পারবে না ।এর থেকে ভালো আমার বাচ্চাকে আমার বোনের কাছে দিয়ে দেই অন্তত পেট ভরে খাবার তো পাবে। পড়ালেখা শিখে মানুষের মত মানুষ হতে পারবে। এই চিন্তা থেকে সে তার স্বামীকে বিষয়টা বলে । তার স্বামী প্রথমে একেবারেই রাজি ছিল না। পরবর্তীতে বিভিন্ন জোড়াজুড়ি করার পর তার স্বামীও বিষয়টা বুঝতে পারে। তারপর সেও রাজি হয়।
কেননা তার শ্যালিকার আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট ভালো ছিল সেটা সে জানতো। সে ভেবেছিল নিজেদের মানুষই তো। দরকার হয় আবার কিছুদিন পর যেয়ে নিয়ে আসবে। তারপর দুদিন পর বাচ্চাটিকে তার খালা নিয়ে চলে যায় ।প্রথম প্রথম কিছুদিন পর পর বাচ্চাটির বাবা-মা গিয়ে বাচ্চাটিকে দেখে আসতো।কিন্তু বাচ্চাটির খালার এই বিষয়টা প্রথম থেকেই ভালো লাগতো না ।কেননা তার মনে ছিল অন্য চিন্তা। সে প্রথম থেকেই চিন্তা করত বাচ্চাটিকে সে সম্পূর্ণ নিজের করে নেবে , বোনের কোন পরিচয় তার বাচ্চাকে দেবে না।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আসলে আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যিই তো মহিলাটিকে নিজের মনে করেই বাচ্চাটা দিয়েছে। তবে খালা যে বাচ্চার সাথে এমন করবে তা মেয়েটার বাবা মা বুঝে নি।আসলে অভাবে পড়লে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে?
আপনি ঠিকই বলেছেন অভাবে মানুষকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয় ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
বর্তমান সময়ে এমন অভাব অন্টনের মধ্যে আসলেই যারা অতি দরিদ্র তাদের বাচ্চারা লালন পালন করা খুবই কষ্টকর। যদিও কষ্টের মধ্যে সন্তানটি তার বোনকে দিয়ে দিলেন। কিন্তু তার বোন সন্তানটিকে বড় করবে এত সহজে বড় করবে সেটা কিভাবে মেনে নিল তারা। যেহেতু তার আগে একটাও বাচ্চা ছিল না বোনের। তাই তো সেই নিজের করে নেওয়ার জন্য বাচ্চাকে নিয়ে গেল। আশা করি পরবর্তী পর্বে আরো কিছু জানতে পারবো।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন দরিদ্র মানুষের বাচ্চা লালন পালন করা খুবই কষ্টকর।যার কারণে বোন কে দিয়ে দিতে হলো।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য
পরিবারের উপার্জন ক্ষম ব্যক্তি যদি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তো একেবারে মাথায় বারি পড়ার মতোই অবস্থা হয় । তার ওপর আবার ছোট সন্তান এসে সংসারের খরচ একটু বেড়ে গিয়েছে । খালাতো ভালোই প্রস্তাব দিয়েছিল কিন্তু পরে আবার মনে মনে বাজে চিন্তা শুরু করে দিয়েছে । গল্পটি ভালোই লাগলো ।
আপু আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এমন বাস্তব সম্মত গল্প পড়তে ভীষণ ভালো লাগে আমার। যাইহোক এমন ঘটনা কিন্তু বাস্তবে অহরহ ঘটছে। কিছু কিছু মানুষ একটি সন্তানের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করেও, সন্তান জন্ম দিতে পারে না। আবার কিছু কিছু মানুষ অভাবের তাড়নায় নিজের সন্তানকে অন্যের কাছে দিয়ে দেয়। তবে এটা ঠিক কারো সন্তান কেউ এমনিতেই দিয়ে দেয় না। দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায়,তখন বাধ্য হয়েই দিয়ে দিতে হয়। গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
ভাইয়া এই ধরনের বাস্তব সম্মত গল্প আপনার ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এরকম ঘটনাগুলো এখন প্রতিনিয়ত দেখা যায়৷ আসলে অনেকে আছে যারা অনেক টাকার মালিক। তবে তারা সন্তান জন্ম দিতে পারছে না। তারা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছে। তবে অন্যদিকে যখন গরীবদের টাকা থাকে না তখন তারা অভাবে তাদের সন্তানকে অন্যের কাছে দিয়ে দেয়। অনেক ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া এখন প্রতিনিয়তই এই ঘটনা গুলো দেখা যাচ্ছে। আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। আসলে আল্লাহ পাক সবাইকে সবকিছু দেয় না। যেমন এই ছেলেটির আর্থিক অবস্থা ভালো না। আর ছেলেটির খালার কোন সন্তান ছিল না। তাই নিজের বোন মনে করে ছেলেটি ভালো থাকার আশায় বোনকে দিয়ে দিয়েছিল। তবে আমি মনে করি ছেলেটির খালার এরকম করা উচিত হয়নি। পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন বোন কে বিশ্বাস করেই ছেলেকে দিয়ে দিয়েছিল।আর বোন পড়ে খারাপ আচরণ করে।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
যদিও বাচ্চাটির বাবা-মা অভাবের কারণে বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিজের বোনের কাছে দিয়েছে। কিন্তু বোনের মন মানসিকতা খুবই খারাপ। তার সন্তান নেই বোনের সন্তানকে ভালোভাবে মানুষ করবে ঠিক আছে। কিন্তু বাবা-মার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে দিবে না এটা কেমন কথা। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ আপু মানুষ এমনই খারাপ হয়। শুধু নিজের কথাই চিন্তা করে ,অন্যেরটা দেখেনা ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।