শৈশব স্মৃতি || গ্রামের ক্ষেত থেকে তরমুজ ও শসা চুরি করে খাওয়া
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
গ্রামের ক্ষেত থেকে তরমুজ ও শসা চুরি করে খাওয়া
আসলে আমার শৈশব স্মৃতি বলতে বেশিরভাগ আমার দাদা বাড়িতে কাটানো মুহূর্তগুলোই মনে পড়ে ।কেননা ওখানে যখনই ছুটিতে বেড়াতে যেতাম তখন বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে সময় কাটাতাম। আমার চাচাতো বোনের সঙ্গে গ্রামের মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়াতাম । তখন আমার মনে হতো গ্রামের মানুষের জীবন তো আনন্দের। তাদের কোন কিছু কিনে খেতে হয় না । আশেপাশের বিভিন্ন ক্ষেত থেকে বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি তুলে নিয়ে আসতে পারে। নিজেদের টাকা-পয়সা খরচ করে কিনতে হয় না । ছোট ছিলাম তাই মাথার মধ্যে এই ধারণা ছিল । তখন আমার চাচাতো বোনকে বলতাম তোমাদেরই তো ভালো তোমরা সবকিছু ক্ষেত থেকে উঠিয়ে এনে খেতে পারো ।তোমাদের টাকা লাগেনা । তখন আমার বোন হেসে বলেছিল দূর বোকা এগুলোতো অন্যদের ক্ষেত ।অন্যের ক্ষেত থেকে শাকসবজি তোলা যায় নাকি। তারপরও যেন মাথায় কিছু ঢুকতো না।
এমনি আবোল তাবোল গল্প করতে করতে আমরা তিনজন গ্রামের বিভিন্ন সবজির ক্ষেত ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম । আমি ,আমার চাচাতো বোন ও আমার এক বোন ছিল সঙ্গে । আমরা বিভিন্ন ক্ষেত ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ একটি তরমুজের ক্ষেত দেখতে পেলাম। তখন আমার চাচাতো বোন বলল আমরা এখান থেকে তরমুজ উঠিয়ে নিয়ে দূরে যেয়ে খাই চল । তারপর আমিও রাজি । তারপর আমরা তিনজন মিলে অনেক কষ্টে একটি তরমুজ ছিড়লাম । তরমুজটি ছেড়ার পর দেখতে পেলাম দূরে তরমুজের মালিক আসছে ।দেখামাত্রই আমরা দৌড় শুরু করলাম । ভাগ্যক্রমে লোকটি আমাদের দেখতে পাইনি । তারপর আমরা একটু দূরে এসে তরমুজটি ভেঙে তিনজন মিলে খেয়ে নিলাম । সত্যি মজার ছিল সেই দিনগুলো।
আমার আরো এক চাচাতো বোন যে কিনা আমাদের থেকে বড় ছিল, সে আমাদের ছোটদের নিয়ে বাইরে যেতে চাইতো না । আমার বড় বোন ও আমার চাচাতো বড় বোন ওরা দুজন মিলে ঘুরতে যেতে চাইত । আমরাও পিছু লেগে থাকতাম ওদের সঙ্গে ঘোরার জন্য। একবার ওদের পেছন পেছন আমরাও ক্ষেতে ঘুরতে গেলাম । ওদের সঙ্গে তখন আমরা বেশ কয়েকজন ছিলাম । বেশ কিছুদূর যেতে যেতে আমরা একটি শসার খেত দেখতে পেলাম। সেখানে যেয়ে সবাই হুরমুড় করে শসা তুলতে শুরু করলাম । শসা তুলে একটু মুছে নিয়ে সবাই খেতে শুরু করে দিলাম । এরই মধ্যে দেখতে পেলাম দূর থেকে শসা ক্ষেতের মালিক ছুটে আসছে আর চিৎকার করছে । আর বলছে এই ক্ষেত থেকে শসা চুরি করে কারা? দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা । এই দেখে সবাই হুর মুড়িয়ে পালাতে শুরু করলাম । বেশ আনন্দ হয়েছিল সেই দিনটাতে। চুরি করে কোন কিছু খাওয়ার মধ্যেও কিন্তু ভীষণ মজা ছিল শৈশবে । সেই জিনিসগুলো বেশ আনন্দ করে করতাম । যদিও এখন এগুলো শুধুই স্মৃতি । তবে মনে পড়লে ভীষণ ভালো লাগে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
চুরি করে কোন কিছু খাওয়ার মাঝে সত্যি অনেক আনন্দ আছে। তবে সেটা একা একা কখনো হয় না। গ্রামের বাড়িতে গেলে যখন সব ভাইবোনগুলো একসাথে থাকা হয় তখন এই কাজগুলো বেশি করা হয়। আপনি আপনার বোনের সাথে ঘুরতে গিয়ে তরমুজ চুরি করে খেয়েছেন আর এরপর শসা চুরি করে খেয়েছেন জেনে সত্যি অনেক মজা পেলাম। আসলে শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় অনেক মজার হয়।
আসলে আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন একা একা কোন কিছু খাওয়ার মধ্যে আনন্দ নেই। সবাই মিলে খাওয়ার মধ্যে অনেক আনন্দ থাকে ।আর চুরি করে খেলে তো কোন কথাই নেই ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ছোটবেলার এমন অনেক স্মৃতি আছে অন্যের জমি থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি করে খাওয়া বা অন্যের গাছ থেকে ফলমূল চুরি করে খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনার পোস্টটি পড়ে আমিও যেন কিছুক্ষণের জন্য ছেলেবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু ছোটবেলার সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনিও ছোটবেলায় এভাবে চুরি করে খেয়েছেন জেনে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।
শৈশবের স্মৃতি মনে হলেই বেশ ভালো লাগে ।সেই সাথে মন খারাপ হয় ,এইভেবে যে সেই সময়ে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। কি মজার ছিল সে দিনগুলো। ছোট বেলায় কতকিছু যে চুরি করে খেয়েছি। আপনার শৈশবের স্মৃতি পড়ে সেই সকল দিনের কথা ্মনে পরে গেলো। অনেক ধন্যবাদ আপনার শৈশবের স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।
আপু তাহলে আপনিও আমার আমার মত চুরি করে খেয়েছেন ।সত্যি জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ।আসলে ছোটবেলার মধুর স্মৃতিগুলো সত্যিই ভোলার নয় ।ধন্যবাদ আপনাকে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ঘটনাটি ঘটে চুরি করা হয়ে যায় আর মালিক পেছন থেকে এসে বলে চুরি করে কারা ওখানেই দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা হা হা হা। আপনার ছোটবেলার মজার কাহিনী টা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তিন বোন মিলে একসাথে চুরি করেছিলেন হি হি হি।
হ্যাঁ ভাইয়া ছোটবেলায় চুরি করে খাওয়ার মধ্যেও কিন্তু ভীষণ মজা রয়েছে ।আপনি কখনো খেয়েছেন কিনা জানিনা। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ছোটবেলার এই স্মৃতিগুলো আসলেই এখনো মনে পড়লে বেশ মজা লাগে। অন্যের ক্ষেত থেকে এভাবে বিভিন্ন জিনিস চুরি করতে খেতে আসলেই ভালো লাগতো। বেশি ভালো লাগতো যখন লোকগুলো দেখে তাড়া করতো তখন। তখনতো আর এত কিছু বুঝতাম না যে অন্যের ক্ষেত থেকে এভাবে খাওয়া ঠিক না। আখ চুরির কথা ভুলে গিয়েছেন নাকি? যাই হোক পুরনো স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ আপু আখ চুরির কথা তো আমি ভুলে গিয়েছি ।এখনো মনে পড়ছে না ।আপনি একদিন শেয়ার করবেন তাহলেই মনে পড়ে যাবে ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
শৈশবের স্মৃতিগুলো সত্যি অসাধারণ হয় আপু। বিশেষ করে চুরি করে কোন কিছু খাওয়ার মধ্যে সত্যি যেন অনেক মজা পাওয়া যায়। আপনারা তিন বোন মিলে তরমুজ চুরি করে খেয়েছেন। এবং এরপর শসা ও চুরি করে খেয়েছেন। বেশ ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু শৈশব তো শৈশবই । তখন আমরা কত কিছুই না করেছি ।যে স্মৃতিগুলো মনে করলে আজও ভীষণ ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, শৈশবে অন্যের ক্ষেত থেকে চুরি করে ফলমূল খাওয়ার মজাই ছিল ভিন্ন রকম। আর এই মজাটা শুধু তারাই উপভোগ করতে পেরেছে, যারা শৈশবে অন্যের জিনিস চুরি করে খেয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে আমি যেন আমার শৈশবে চুরি করে খাওয়ার মজার ঘটনাগুলো মনে করছিলাম। কতইনা সুন্দর ছিল সেই সব দিনগুলি। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু তরমুজ ও শশা চুরি করে খাওয়ার মজার স্মৃতিটুকু তুলে ধরার জন্য।
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন সেই দিনগুলো সত্যিই অনেক মজার ছিল আপনারও যেহেতু এই অভিজ্ঞতা আছে তাহলে তো বুঝতেই পারছেন কতটা মজার ছিল সেই দিনগুলি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এ তো দেখি আমার চেয়ে বড় চোর। ভাইরে ছোটবেলা যে চুরি করে খেতে গিয়ে কত মাইর খাইছি। ভালোই লাগে অন্যের জিনিসগুলো চুরি করে মজা করে খেতে। আর এসমস্ত জিনিস বারবার হাতছানি দিয়েই ঢেকে যায় আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি স্মৃতিময় পোস্ট করার জন্য।
আপু ছোটবেলায় চুরি করতে গিয়ে আবার মার ও খেয়েছেন ? আমি অবশ্য মার খাইনি । তবে চুরি করতে বেশ ভালই লাগে ।ধন্যবাদ।