জেনারেল রাইটিং|| আদর্শ মানুষ হতে হলে প্রয়োজন নিজের বিবেককে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে আবারো হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ একটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। আসলে মাঝে মাঝে ভিন্ন কোন বিষয় নিয়ে লিখতেও বেশ ভালো লাগে। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলে যাচ্ছি মূল বিষয়ে। সাধারণত আমরা মনে করি উচ্চ ডিগ্রী অর্জন করলেই সে শিক্ষিত হয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করলেই শিক্ষিত হওয়া যায় না, ভালো সন্তান হওয়া যায় না কিংবা ভালো একজন মানুষ হওয়া যায় না । ভালো একজন মানুষ হতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন নিজের বিবেককে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা।
একজন আদর্শ মানুষ হতে হলে প্রয়োজন নিজের বিবেককে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা
আমাদের সমাজে শিক্ষিত অসংখ্য মানুষ দেখা যায় ।কিন্তু আদর্শ মানুষ খুব কম দেখা যায় ।যারা নিজের বিবেককে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছে। ডিগ্রিধারী মানুষ তো সমাজে অসংখ্য রয়েছে যা দ্বারা সমাজের তেমন কোন উপকারে আসে না। শুধুমাত্র তারা নিজের চাকরি-বাকরি, ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রেই কাজে আসে। আসলে এখনকার মানুষের শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে উচ্চ ডিগ্রী অর্জন করা। যে ডিগ্রি দ্বারা তারা সমাজের উঁচু লেভেল গুলোতে পৌঁছাতে পারবে। ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার বড় বড় পেশায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে পারবে ।কিন্তু এই উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি মনুষ্য শিক্ষার প্রয়োজন যা মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে তুলবে ।যার দ্বারা সমাজ ও দেশের উপকার হবে।
আসলে আমাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া এবং পরবর্তী প্রজন্ম কেউ সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা ।আর সুশিক্ষা হলো সেই শিক্ষা যা মানুষের বিবেক নৈতিকতার পথে ধাবিত করে । মানুষকে প্রকৃত মানুষ রুপে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। একজন সুশিক্ষিত মানুষের সার্টিফিকেট অর্জনের পাশাপাশি তার মানবিক ,আবেগিক, নৈতিক, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এই গুণগুলো অর্জন করাও প্রয়োজন । কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেখা যায় যে ,ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদেরকে শেখানো হয় বড় হয়ে ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে ।মানে বড় বড় সার্টিফিকেট গুলো অর্জন করতে হবে। কিন্তু মানবিক গুণাবলী অর্জনের কথাটা খুব কমই শেখানো হয়।
উচ্চশিক্ষা বলতে শুধু সার্টিফিকেট উচ্চ হলেই হবে না, মন ও মননশীলতায়ও উচ্চ হতে হবে। তবে সেই শিক্ষা দেশ ও সমাজের কাজে আসবে ।কিন্তু এখনকার সমাজে দেখা যায় যে ,উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের ভোগ বিলাসে এতটাই নিমজ্জিত থাকে যে ,তারা দেশতো দূরের কথা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কথাও তারা ভুলে যায়। অবশেষে সেই উচ্চ ডিগ্রিধারী সন্তানের বাবা মায়ের আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রম। কিন্তু এই উচ্চ ডিগ্রিধারী সন্তানদের যদি মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেত তাহলে আর এমনটি হতো না। কেননা যে বাবা-মা কঠোর পরিশ্রম করে সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলে দেখা যায় যে সেই সন্তানেরা পরবর্তীতে বিদেশে স্থায়ী আবাস গড়ে তুলছে ।তাদের বিবেকে বাবা মায়ের জন্য কোন দায়িত্ববোধ আসে না ।যার কারনে বাবা-মায়ের শোচনীয় অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় ।এমনকি মৃত্যুকালে সন্তানের মুখও দেখতে পারেনা।
তাই মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে উঠতে হলে সর্বপ্রথম নিজের ভেতরের মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে হবে। পুঁথিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। সুশিক্ষা হলো সেই শিক্ষা যা মানুষকে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তোলে। মানুষকে মিথ্যা অন্যায় ও অসৎ পথ পরিহার করতে শেখায়। আর সবাই যদি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে তবেই দেশ ও সমাজ উপকৃত হবে ।আর কোন বাবা মাকে তার শেষ জীবন বৃদ্ধাশ্রমে কাটাতে হবে না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপু আমাদের দেশে শিক্ষিত মানুষ অনেক থাকলেও, সুশিক্ষিত মানুষের বড়ই অভাব। সবাই শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করে সার্টিফিকেট পাওয়ার উদ্দেশ্যে। সেটা শুধুমাত্র তাদের ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করে। কিন্তু ছোটবেলায় শুনতাম একজন শিক্ষিত মানুষ, একটি সমাজের সম্পদ। কারণ শিক্ষিত মানুষের চিন্তা ভাবনা, মনমানসিকতা,ধ্যান ধারণা, মনুষ্যত্ববোধ অন্য রকম থাকে। মোটকথা সমাজের মানুষের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। আসলে তারা সুশিক্ষিত ছিলো বলেই সমাজের উপকারে আসতো। যাইহোক চমৎকার একটি টপিক নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই আপনার মন্তব্যটি পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
শিক্ষিত হলেই মানুষ হওয়া যায় না।একজন ভালো মানুষ হতে গেলে গাদাগাদ সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন পড়ে না।আমার খুব পরিচিত একজন মানুষ আছে যে খুবই বড় পদে চাকরি করে কিন্তু মাকে খুবই অযত্নে রাখে তাকে দেখলে আমার ঘৃণা হয়।এরকম শিক্ষিত সন্তান থেকে কি লাভ!যে শিক্ষা তার বিবেক জাগ্রত করতে পারে না সে আর যাই হোক মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি।বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন যে শিক্ষা মানুষের বিবেক কে জাগ্রত করতে পারে না ।আর যাই হোক সে মানুষ হতে পারে না। আপনার কথাটা বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে সুশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি স্বশিক্ষিত হওয়াও দরকার।সুশিক্ষিত ও শুধু বড়ো বড়ো ডিগ্রিধারী হলে হবে না।নিজের বিবেক,বুদ্ধি কে কাজে লাগিয়ে দেশের ও দশের জন্য ও কিছু করতে হবে।পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হলে মানুষের বিবেক,বুদ্ধি কখনো জাগ্রত হয় না।ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ আপু আমাদের সবারই সুশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি স্বশিক্ষিত হওয়াটা অনেক জরুরী। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।