গল্প|| মিথ্যে ভালোবাসা দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের সামনে গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি । দুদিন আগে একটি গল্প লিখেছিলাম যার প্রথম পর্ব এর আগে শেয়ার করেছিলাম। তাই আবার আজ গল্পটির দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আসলে একটি গল্প এক পর্ব পড়ার পর দ্বিতীয় পর্ব খুব তাড়াতাড়ি না পড়তে পারলে আমার কাছে ভালো লাগে না । যার কারণে তাড়াতাড়ি গল্পটি আবার শেয়ার করলাম । কেননা বেশ কিছুদিন পর শেয়ার করলে দেখা যায় যে অনেকের গল্পটি মনে থাকে না এবং সেভাবে আনন্দ পাওয়া যায় না । তাই আজকে আবার গল্পটির দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হলাম । আশা করছি আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে গল্পটিতে চলে যাচ্ছি।
মিথ্যে ভালোবাসা দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব
এভাবে বেশ কিছুদিন তাদের সম্পর্ক চলতে থাকে। তবে তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র ফোনে কথা বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে । আর কলেজে দূর থেকে দেখা-সাক্ষাৎ । কলেজে কখনো সামনাসামনি তাদের কথাও হয় না । দূর থেকে যেটুকু দেখা হয় সেটুকুই। নিতু অবশ্য অনেক বার তাকে বাইরে দেখা করার কথা বলেছে কিন্তু ছেলেটি খুব একটা রাজি হয়নি । তবে ছেলেটি নিতুদের বাসার খুব কাছাকাছি থাকতো । মাঝে মাঝে নিতুকে ফোন দিয়ে নিতুদের বাসার ছাদে যেতে বলতো । আর ছেলেটি রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে যেত । যাবার সময় নিতুকে দেখে যেত। এভাবেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল।
বেশ কিছুদিন পর ছেলেটি একদিন নিতুকে ফোনে তার বান্ধবীর নাম্বার চাইল । নিতু অবাক হয়ে বলল ওর নাম্বার দিয়ে তুমি কি করবে । তখন ছেলেটি বলল আমি তোমার বান্ধবীকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করি । তুমি যদি ওর নাম্বার আমাকে না দাও তাহলে আমি আর কখনো তোমার সঙ্গে কথা বলবো না । একথা শুনে তো নিতু আকাশ থেকে পড়লো । ছেলেটিকে বলল তোমাকে আমি কখনোই ওর নাম্বার দিব না । তখন ছেলেটি বলল তুমি না দিলে কি হবে আমি ঠিকই বের করব । আর আমি ওর সঙ্গে কথা বলব দেইখো, তারপরে তোমাকে বলবো।
তারপর কয়েকদিন গালিবের সঙ্গে নিতুর কথা হলো না। তারপর হঠাৎ করে একদিন গালিব নিতুকে ফোন দিয়ে বলল আজ তোমার বান্ধবীর সঙ্গে অনেকক্ষণ ফোনে কথা বলেছি । এ কথা শুনে তো নিতু ভীষণ কষ্ট পেয়ে ফোন রেখে কান্না করতে করতে তার বান্ধবীকে ফোন দিল ।নিতু তার বান্ধবী কে বলল তোর সঙ্গে কি গালিবের কথা হয়েছে? নিতুর বান্ধবী তো অবাক হয়ে গেল গালিবের সঙ্গে আমার কেন কথা হবে । তখন নিতু সব কিছু তার বান্ধবীকে খুলে বলল । তখন তার বান্ধবী বলল আমি তোকে আগেই বলেছিলাম ওকে আমার একদম পছন্দ না । তুই আমার কথা শুনিস নি, এখন দেখ কত বড় বেয়াদব । তুই কোনদিন ওকে আমার নাম্বার দিবি না।
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল । নিতু আর গালিবের আর কথা হয় না । নিতু আবার একদিন গালিব কে ফোন দেয় । তখন নিতু জানতে চায় গালিব তাকে ভালোবাসে কিনা । তখন গালিব বলে আমি তোমাকে কখনোই ভালোবাসিনি । তুমি আর আমি কি কখনো বাইরে কোথাও দেখা করেছি? করিনি তো ,আমরা জাস্ট কথা বলেছি। একে কি ভালোবাসা বলে? নিতু তো একদম অবাক এতদিন গালিব তাকে ভালোবাসার অনেক কথা শুনিয়েছে। আজ সে একি বলছে । যদিও এটা সত্যি তারা কখনো বাইরে কোনদিন দেখা করেনি । তাতে কি হয়েছে নিতুর ভালোবাসা তো সত্যি ছিল।
তারপর নিতু গালিবকে জানায় তুমি আমার সঙ্গে এমন করলে আমি মরে যাব। কিন্তু গালিব বলে এতে আমার কিছু যায় আসে না । এই বলে ফোন রেখে দেয় । তারপর নিতু খুব কষ্ট পায় এবং কিছু ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেয় । তারপর গালিবের বন্ধুকে ফোন করে জানায় সে ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। তারপর গালিব বিষয়টা জানতে পারে । তারপর সে তার বন্ধুকে দিয়ে নিতুর বড় ভাইকে ফোন দিয়ে জানায় যে নিতু ঘুমের ঔষধ খেয়েছে। এর মধ্যে নিতু কয়েকবার বমি করে । তারপর বাসার সবার মধ্যে বিষয়টা জানাজানি হয়ে যায় । তারপর তাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি সবাই মিলে হসপিটালে যায়। তারপর চিকিৎসা দেওয়ার পর নিতু ঠিক হয়ে যায়।
এরপরেও গালিব নিতুর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করে না । তখন নিতু বুঝতে পারে গালিব আসলেই খুবই খারাপ প্রকৃতির একটি ছেলে । সে বড় ভুল করে ফেলেছে । তখন নিতু তার বাবা মাকে বলে তোমরা যার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করবে আমি তাকেই বিয়ে করব । তারপর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই নিতুর বাবা-মা একটি ভালো ছেলে দেখে নিতুর বিয়ে দিয়ে দেয়। তারপর নিতু তার স্বামীর সঙ্গে বেশ ভালই দিন কাটাতে থাকে। এরই মধ্যে একদিন গালিব নিতুর সঙ্গে আবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে । ফোন দিয়ে বলে আমি জানি তুমি আমাকে সত্যি ভালোবাসো । তুমি আমাকে কোনদিন ভুলতে পারবে না । আমি তোমার সঙ্গে আবার কথা বলতে চাই । তখন নিতু বলে দেখো এখন আমার বিয়ে হয়েছে । আমি আর তোমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না । একটা সময় তোমাকে ভালোবেসে অনেক কষ্ট পেয়েছি । নতুন করে আর পেতে চাই না। আমাকে আর ফোন করে ডিস্টার্ব করবে না । এভাবে করে নিতু তার মোবাইল নাম্বার পাল্টে ফেলে। আর কোনদিন নিতু গালিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। গালিব শত চেষ্টা করেও আর নিতুর নাগাল পায়নি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে বর্তমান সময়ের ভালোবাসা বুঝা মুশকিল। তবে নিতু অনেক ভালো কাজ করেছে তার বাবা মার পছন্দ মতো বিয়ে করে। আর গালিবকে ও উচিত শিক্ষা দিল বিয়ের পরে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আমার গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপু শেষ পর্বটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। গালিব এমন করবে বুঝতে পারিনি।যাই হোক নিতু তার মা-বাবার পছন্দে বিয়ে করে নিয়ে ভালো ই করেছে।গালিব আবার এলেও নিতু যে তাকে পাত্তা দেয়নি, এটা খুব ভালো করেছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর এই গল্প টি শেয়ার করার জন্য।
আপু পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।ভালো থাকবেন শুভকামনা রইল।
এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। এখন দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আরো বেশি ভালো লাগলো। শেষ পর্যন্ত নিতুর বান্ধবীর কথাই সত্যি হলো। কারণ গালিব নিতুর বান্ধবীকেই পছন্দ করতো। হয়তোবা নিতুর মাধ্যমে নিতুর বান্ধবীর সাথে গালিব সম্পর্ক স্থাপন করার প্ল্যান করেছিল। তবে গালিব নিতুর সাথে খুবই বাজে কাজ করেছে। কিন্তু নিতুর বিয়ের পর নিজের মোবাইল নম্বর পাল্টে ফেলে খুব ভালো কাজ করেছে। আশা করি নতুন কোনো গল্প নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ভাই আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আবারো চেষ্টা করবো নতুন কোন ভালো গল্প নিয়ে হাজির হতে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এটা ঠিক মিথ্যে ভালোবাসা বেশিদিন টিকে থাকে না। নিতু ভালো কাজ করেছে তার বাবা-মার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পরে যোগাযোগ না রেখে গালিবকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন আসলে এ ধরনের ছেলেদের সঙ্গে এরকম কাজই করা উচিত। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনার শেয়ার করা মিথ্যা ভালোবাসার প্রথম গল্পটিও আমি পড়েছিলাম আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। এই গল্পে শেষ পর্যন্ত নিতুর বান্ধবীদের কথায় সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত নিতু তার মা-বাবার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেছে এটা সত্যিই ভালো একটা বিষয়। পরে গালিব আবার এসেছিল নিতুর কাছে কিন্তু নিতে পাত্তা দেয়নি এই বিষয়টি সত্যি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।
ভাই আপনি গল্পটির দুটি পর্বই পড়েছেন জেনে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ।ভালো থাকবেন।
মিথ্যে ভালোবাসা গল্পটার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনি অনেক সুন্দর করে এই গল্পটি লিখেছেন। নিতুর জন্য অনেক বেশি খারাপ লাগলো। আসলে একটা মানুষ যদি আরেকজনকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে তখন সেই মানুষটা তার গুরুত্ব দেয় না। আর যখন সে তার কাছে আসতে চায় তখন অনেক বেশি দেরি হয়ে যায়। এই গল্পটার মধ্যেও এরকমটাই। নিতু ছেলেটাকে এত বেশি ভালোবাসার পরেও ছেলেটা তাকে ঠকিয়ে ছিল।
আসলে কিছু ছেলেই থাকে এরকম মিথ্যে ভালোবাসার অভিনয় করে। পরবর্তীতে অবশ্য উচিত শিক্ষা পেয়েছে ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে এখন বেশিরভাগ জায়গায় এরকমটাই দেখা যায়। এখন তো সবাই ফেক লাভ নিয়েই অনেক বেশি ব্যস্ত। গালিব নিতুকে এরকম ভাবে ঠকিয়েছে যা কিন্তু নিতু একেবারেই বুঝতে পারেনি প্রথমে। নিতুর বান্ধবী নিতুকে অনেকবার বলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু এতবার বলার পরেও নিতু বুঝতে পারেনি, কিন্তু সবশেষে নিতু স্পষ্টভাবেই বুঝতে পেরেছিল। সবশেষে নিতু বাবা-মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে ভালোই করেছে।
হ্যাঁ ভাইয়া পরবর্তীতে ছেলেটিকে ভুলে নিতু যে নতুন করে সংসার করেছে সেটিই আসল বিষয়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।