ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আপনারা হয়তো হেডলাইন দেখেই বুঝতে পারছেন আজ আমি ঝড়ের দিনে আমার মামার বাড়িতে কাটানো কিছু মুহূর্ত নিয়ে হাজির হয়েছি । আজ খুব সকালবেলায় আমি আমার মামার বাড়িতে এসেছি । আগের দিন থেকেই ঠিক ছিল যে আজকে আমার নানু বাড়িতে থাকব । সেজন্য সকাল সকাল রওনা দিয়ে চলে এসেছি । আমি ,আমার মেয়ে আর আমার ভাই আমরা তিনজন মিলে নানু বাড়িতে এসেছি । গ্রামে আসার পর দেখি ভীষণ গরম । গরমে প্রায় অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম আমরা । আমার মেয়ে তো আমার মামাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে এই গরমের মধ্যে বেশ খেলছিল আর ঘেমে যাচ্ছিল । কিন্তু হঠাৎ করে আবহাওয়া পুরো পরিবর্তন হয়ে গেল । দুপুরের দিকে হঠাৎ চারিদিক অন্ধকার করে শুরু হলো তুমুল ঝড় বৃষ্টি । শুধু বৃষ্টি নয় শিলাবৃষ্টি ।
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
একে তো দীর্ঘদিন পর মামার বাড়িতে আসা তারপর আবার এরকম ঝড় বৃষ্টি ,সত্যি বেশ সৌভাগ্যের বিষয় মনে হলো আমার কাছে । একটা সময় যখন আমার নানুবাড়িতে আসতাম তখন নানু বাড়িতে বেশ কিছুদিন থাকতাম এবং আমের সময় এরকম ঝড় বৃষ্টি হতো। তখন আমরা ঝড়ের দিনে আম কুড়াতাম । দীর্ঘদিন হয়েছে ঝড় বৃষ্টির দিনে এরকম নানু বাড়িতে এসে থাকা হয় না ।কিন্তু এবার হঠাৎ করেই প্ল্যান হলো আর আমরা আশার পর ঝড় বৃষ্টি শুরু হলো । সত্যি বেশ ভালো লাগছিল । বার বার কবি জসীম উদ্দিনের মামার বাড়ি কবিতাটি মনে পড়ছিল, ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ ।
প্রথমে প্রচন্ড বাতাস বইতে শুরু করলো । তারপর আম গাছগুলো থেকে টুপটুপ করে আম পড়তে শুরু করলো । যদিও আমার আম কুড়ানো হয়নি । তবে আমার মামি বেশ কিছু আম কুড়িয়ে ছিল সঙ্গে আমার মেয়েও কুড়িয়েছিল । সে বেশ আনন্দ পেয়েছিল । কেননা এর আগে কখনো এরকম আম কুড়ায়নি । আসলে এখনকার বাচ্চারা আগের দিনের বাচ্চাদের মত এ ধরনের আনন্দ থেকে বেশ বঞ্চিত থাকে । এবার আমার মেয়ে সেই সুযোগ পেয়েছে দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো ।
আমার নানুর বাড়িতে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে ।যখনই বাতাস বইতে শুরু করল তখনই কৃষ্ণচূড়া ফুলে সারা উঠান রঙিন হয়ে উঠল । সে এক চমৎকার দৃশ্য ।সমস্ত উঠান জুড়ে কৃষ্ণচূড়া উড়ে উড়ে পড়ছিল দারুন লাগছিল দেখতে । বেশ কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল ।তুমুল বৃষ্টি সঙ্গে বড় বড় শিলা ছিল । বাচ্চারা শিলা কুড়িয়ে বেশ আনন্দ পাচ্ছিল । যদিও আমি মেয়েকে বৃষ্টির পানি ধরতে দিতে চাচ্ছিলাম না কারণ ও এটার সঙ্গে অভ্যস্ত নয় । অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যায় ।তারপরেও কোন কিছু না শুনেই বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করতে থাকলো । যদিও বারান্দার উপরে শিলা চলে আসছিল । আমার মেয়ে বৃষ্টিতে গোসল করার জন্য বেশ বায়না ধরেছিল । কেননা আমার মামাতো ভাই বৃষ্টিতে ভিজছিল । তাকে দেখে ওর খুব ইচ্ছে করছিল ।কিন্তু সেটা দেইনি কারণ ওর ঠান্ডার সমস্যা আছে ।
আমি যখন জানালা দিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছিলাম তখন একটি কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি জানালার উপর এসে পড়ল । তারই একটি ফটোগ্রাফ তুলে নিলাম । আর সেটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম । এই বিষয়টি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল ।
জানালা দিয়ে বাইরে বৃষ্টির দৃশ্য গুলো দেখতে সত্যিই চমৎকার লাগছিল । তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল এই সময় ফুলের গাছগুলো বৃষ্টিতে স্নান করছিল , সে এক অপরূপ দৃশ্য । আসলে বৃষ্টিতে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সেজে ওঠে । আর গাছ গুলো এতটা সজীব হয়ে ওঠে যে দেখতেই বেশ ভালো লাগে । বেশ ভালো একটি মুহূর্ত কাটিয়েছি আজকে আমার নানু বাড়িতে । সেটিই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম । আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে ।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
| ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
|---|---|
| ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।










ইস ঝড়ের দিনে মামার বাড়িতে আম কুড়ানোর মজাটাই অন্যরকম। আপনি এমন একটা মুহূর্তে মামার বাড়ি গিয়ে পৌঁছেছেন এবং সেই মুহূর্তে ঝড় বৃষ্টি শুরু হল এবং আম কুড়ানোরও পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল বিষয়টি দেখে আমার কাছে খুব খারাপ লাগছিল, এরকম একটি সুযোগ যদি আমি পেতাম। যাইহোক আপু আপনার মেয়ে আম কুড়ানোর সুযোগ পেয়েছে বিষয়টি আসলে খুবই ওর জন্য অনেক আনন্দদায়ক ছিল। তবে এটা খুবই ভালো করেছেন যে ওকে বৃষ্টিতে ভিজতে না দিয়ে। তারপর বৃষ্টি হওয়ার সময় জানালা দিয়ে বাইরের যে পরিবেশটা আপনি ফটোগ্রাফি করে আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন সত্যিই অসাধারণ ছিল, আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মামার বাড়ির আম কুড়ানোর অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে আপু এই অনুভূতিগুলো সত্যিই অনেক মজার যা বলে বোঝানোর মত না । সবারই জীবনে এরকম স্মৃতি কম বেশি রয়েছে । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।
সত্যি আপু আমরা যতটুকু দেখেছি বা মজা করেছি এখনকার বাচ্চারা তার ছিটে ফোটা দেখেনি বা করেনি।মামার বাড়িতে অনেক দিন পর গেলেন আর এই দিনটিতেই ঝড়,বৃষ্টি হলো।তাইতো কবি জসীমউদ্দিনের কবিতা মামার বাড়ি কবিতার মতো সবকিছুই মিলে গেলো।খুব ভালো লাগলো আপনার মামা বাড়ি যাওয়ার অনুভূতি গুলো পড়ে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলেই আপু আপনি ঠিকই বলেছেন এখনকার বাচ্চারা অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয়ে থাকে । যাই হোক আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।
আপনার টাইটেল পড়েই বুঝতে পেরেছি আপনি আপনার মামার বাড়িতে গিয়ে কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছেন। মামার বাড়িতে খুব সকালবেলায় চলে গিয়েছিলেন। খুব বেশি গরমের কারণে একেবারেই অস্থির হয়ে পড়েছিলেন প্রথমে। কিন্তু দুপুরের দিকে অনেক ঝড় বৃষ্টি হওয়ার কারণে ভীষণ ভালো লেগেছে আপনাদের কাছে। সব মিলিয়ে আপনার আজকের পোস্টটা পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনার বাচ্চা আপনার মামীর সাথে আমি কুড়িয়ে ছিল। আসলে এখনকার বাচ্চারা এরকম আনন্দ গুলোর থেকে অনেক বঞ্চিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে খুবই সুন্দর ভাবেই উপস্থাপনা করলেন আজকের পোস্ট।
হ্যাঁ আপু এখনকার বাচ্চারা গ্রামের আনন্দ থেকে সত্যিই বেশ বঞ্চিত হয় । যেখানে আগের দিনে আমরা অনেক আনন্দ করেছি । যাইহোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।