গল্প||অভিমান পর্ব -(১)
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
গল্প||অভিমান পর্ব -(১)
শহরের মেয়ে দিয়া ও দিনা । দিয়া বড় আর দিনা ছোট ।তবে দুজন সমবয়সী। খুবই অল্প, মাত্র এক বছর দু মাসের ছোট-বড় । দিয়া দিনার বাবা সরকারি উচ্চ পদস্থ একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তারা চার ভাই বোন ছিল। দুই ভাই দুই বোন ।সমবয়সী হওয়ার কারণে দুই বোনের মধ্যে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। একে অপরকে সবকিছু শেয়ার করত ।সেই ছোটবেলা থেকে দুজনের মধ্যে খুবই মিল। দুই বোন খুবই হাসিখুশি ছিল এবং যে কোন বিষয় নিয়ে দুই বোন এক সঙ্গে জোরে জোরে হেসে উঠতো। তাদের হাসিতে যেন চারিদিক কেঁপে উঠতো ।এভাবেই দিয়া দিনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনা শেষ করে একদম বড় হয়ে উঠলো।
তবে দিয়ার থেকে দিনা একটু বেশি সুন্দরী ছিল। ছোট বোন সুন্দরী হলেও বড় বোনের তা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা ছিল না ।সেটা কখনো সে অন্যভাবে চিন্তাও করেনি। সব জায়গায় দুই বোন একসঙ্গে যেত। হাসি আনন্দে মেতে থাকত। এভাবেই সুন্দর ভাবে তাদের দিনগুলি কাটছিল। এভাবে একটা সময় আসলো দিয়া ও দিনা যখন বিয়ের উপযুক্ত হলো ,তখন দেখা গেল বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রপোজাল আসতে থাকলো ছোট জনের জন্য ।অর্থাৎ দিনার জন্য। প্রথম প্রথম দিয়া ব্যাপারটা কোন আমলেই নিত না ।কিন্তু যতই সময় যেতে থাকলো ততই দিয়ার মনে সামান্য আঘাত লাগতে থাকলো। কেননা দিয়া বড় ছিল ।প্রপোজাল গুলো তারই প্রাপ্য ছিল।
আশেপাশের লোকজন যখন ছোটজনের জন্য প্রস্তাব এসেছে এটা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতো তখন একটু একটু করে দিয়ার মনে আঘাত লাগতে শুরু করলো। কিন্তু তাদের পরিবারের কারোরই ইচ্ছা ছিল না দিয়ার আগে দিনাকে বিয়ে দেওয়ার ।কেননা তারা বড় মেয়ে কে আগে বিয়ে দেবে। যার কারণে ছোট মেয়ের জন্য যতই প্রস্তাব আসুক না কেন তারা সেগুলোকে না করে দিত। এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল। একদিন সবাই মিলে গল্প গুজব করছে, হাসি আনন্দ করছে, এরই মাঝে হঠাৎ করে দিয়া সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেল। দ্রুত তাকে ডক্টরের কাছে নেওয়া হল ।হসপিটাল নেওয়ার পর তার সমস্ত চেকআপ করা হলো ।চেকআপ করে জানা গেল দিয়ার হার্টের মারাত্মক প্রবলেম।
তার হার্ট অ্যাটাক করেছে। তার হার্টের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তারপর দিয়াকে নিয়মিত চেকআপে থাকতে হতো। নিয়মিত অনেকগুলো ঔষধ খেতে হতো ।এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল ।এভাবে অনেক দিন যাবার পর দেখা গেল পরিবারের সবাই চিন্তা করতে থাকল দিয়া তো বেশ অসুস্থ ।এখন তো আর দিয়াকে কেউ সহজে বিয়ে করতে চাইবে না ।কেননা তার হার্টের সমস্যা ।কেউ তাকে এখন বিয়ে করতে চাইবে না তার থেকে ভালো দিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাক । তার অবস্থার উন্নতি হলে তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে। এর মধ্যে দিনাকে বিয়ে দেওয়া যাক।কেননা দুজনেরই বয়স বাড়তেছিল। কতদিন আর এভাবে বসিয়ে রাখবে ।
(চলবে)
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আসলে কোনো বাবা মা চায় না বড় মেয়েকে রেখে, ছোট মেয়েকে আগে বিয়ে দিতে। তেমনি দিয়া এবং দিনার মা বাবাও চেয়েছিল দিয়াকে আগে বিয়ে দিতে। কিন্তু আমরা তো সুন্দরের পূজারী। তাই বেশি সুন্দরী হলেই বিয়ের প্রস্তাব দেই বাসায়। দিয়া হঠাৎ করে এভাবে অসুস্থ হয়ে গিয়েছে, ব্যাপারটা জেনে খুব খারাপ লাগলো। এখন তো মনে হচ্ছে দিনার বিয়ে আগে হয়ে যাবে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি কথাটা ঠিকই বলেছেন আমরা আসলেই সুন্দরের পূজারী ।যার কারণে বড় ছোট না হিসাব করেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আমাদের সমাজে এরকম অনেক বাস্তব গল্প রয়েছে আপু, যেখানে ছোট বোনের চেহারা একটু সুন্দর হওয়ার কারণে শুধুমাত্র তারই বিয়ের সম্বন্ধ আসে, বড় বোনের আর বিয়ের সম্বন্ধ আসে না। তবে হঠাৎ করেই দিয়ার হার্ট অ্যাটাকে, গল্পের মোড় কিছুটা অন্য দিকে চলে গেল। এখন দেখা যাক, পরবর্তী পর্বে কি হয়।
হ্যাঁ ভাইয়া এই ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে অসংখ্য রয়েছে ।বড় বোনের আগে ছোট বোনের বিয়ের প্রস্তাব আসা এবং ছোট বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়া এটি একেবারেই সাধারণ ব্যাপার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
দুই বোন তো ভালই হাসিখুশি করে একসাথে বেড়ে উঠেছে । আবার দু বোন বিয়ের উপযুক্তও হয়েছে একসাথে এক সাথে দুজন বিয়ের উপযুক্ত হলে যে সুন্দর তার জন্যই তো বিয়ের প্রস্তাব মানুষ আনে এটাই স্বাভাবিক । প্রথমদিকে দিয়া মন খারাপ না করলেও পরবর্তীতে ঠিকই তার মনের উপর প্রভাব করত আসলে এরকম হলে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পরবর্তীতে দিয়ার হার্টের সমস্যার কথা শুনে তো খারাপ লাগলো । ভালোই লিখেছেন আপু গল্পটা ভালো লাগছে ।এ ধরনের জীবনের কাহিনী গুলো পড়তে কিন্তু ভালো লাগে ।
আপু আপনার কাছে আমার লেখা গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।