ঐতিহ্যবাহী ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। কয়েক দিন হয়েছে ঢাকায় এসেছি আপুর বাসায়। সেখানে আমার আরেক বোনও এসেছে । তিন বোন মিলে কয়েক দিন বেশ ভালই মজা করছি । একদিন সন্ধ্যায় সবাই মিলে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। অবশ্য যে কয়দিন এসেছি প্রতিদিনই ঘুরতে বের হচ্ছি। সেদিন আমরা সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলাম ।সন্ধ্যার পরে সেখানে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছিলাম ।সেখান থেকে আমার হাজবেন্ড হঠাৎ আমাকে বলল চলো হাজির বিরিয়ানি খেয়ে আসি। সেদিন আমার খুব একটা যাবার ইচ্ছা ছিল না। কেননা ওখান থেকে হাজীর বিরিয়ানি খেতে বেশ কিছুটা পথ যেতে হবে ।তারপরেও সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে রওনা দিলাম হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার উদ্দেশ্যে ।সেই অনুভূতিই এখন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
ঐতিহ্যবাহী ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা
হাজির বিরিয়ানির কথা আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি। আর প্রতিটি শহরেই বেশ কয়েকটি হাজির বিরিয়ানির দোকান থাকে। যেগুলো আসলে সত্যিকারের হাজির বিরিয়ানির সঙ্গে কোন মিল থাকে না ।তারপরেও নামেই সেই দোকানগুলো চলে। তারপর আমরা বেশ কিছু সময় পর কাঙ্খিত সেই হাজির বিরিয়ানির দোকানে যেয়ে পৌঁছালাম ।সেখানে যাবার পর সবার নতুন একটা অভিজ্ঞতা হল। খুবই ছোট্ট একটি দোকান কিন্তু লোকজনে একদম ভরপুর ছিল ।দূর থেকেই দেখা যাচ্ছিল দোকানে ভিড়ের জন্য কোন খালি জায়গা ছিল না ।তারপরেও আমার হাসবেন্ড ও ভাইয়া দুজন মিলে দোকানে গেল। আমরা রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
সেখান থেকেই মূলত আমরা মূল ভিড় লক্ষ্য করছিলাম ।আসলে এই দোকানের সিস্টেম পুরো অন্যরকম। একদল খেতে বসে আরেকদল জায়গা নেবার জন্য ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। সত্যি একটা অস্বস্তিকর ব্যাপার ।তারপরেও কিছু করার নেই। যেহেতু এত দূরে এসেছি হাজির বিরিয়ানি আজকে খেয়েই যাব। যদিও আমার হাজবেন্ড বলছিল পাশে অন্য একটি দোকান আছে যেটি ফাঁকা আছে ।সেখান থেকে খাবো কিনা ।তখন আমরা বললাম এত দূরে এসেছি হাজির বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য, অন্য দোকান থেকে খেলে তো যে কোন জায়গা থেকেই খাওয়া যায় ।কিন্তু আমরা ওখানে খাবার জন্যই দাঁড়িয়ে থাকলাম।
বেশ কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর তারা দোকান থেকে আমাদেরকে আসতে বলল ।কিছু সিট খালি হবে। যেহেতু আমরা লোক ছিলাম নয় জন, সেহেতু আমাদের দুই তিনটা টেবিলের প্রয়োজন ছিল ।তারপর একে একে একটা একটা করে টেবিল খালি হলো আমরা বসলাম ।তবে দূর থেকে দেখে হাজির বিরিয়ানির প্লেট গুলো মনে হচ্ছিল একেবারেই অল্প পরিমাণে ।একেকজনের জন্য পর্যাপ্ত হবে কিনা সেটাই ভাবছিলাম।
তবে যখন বিরিয়ানি সার্ভ করলো তখন মনে হলো মোটামুটি পরিমাণে আছে। যদিও একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য পরিমাণে কিছুটা কম হয়েছে। এখানে প্রতি প্লেট ২৪০ টাকা করে দাম । আমরা হাজির বিরিয়ানির সঙ্গে বোরহানি অর্ডার করেছিলাম ।তারপর কিছু সময়ের মধ্যেই খাবার দিয়ে গেল। এই বিরিয়ানি মুখে দেবার পর বুঝতে পারলাম অন্যান্য হাজির বিরিয়ানির থেকে এই বিরিয়ানির স্বাদ সম্পূর্ণ আলাদা ।সবাই যার যার নিজস্ব ইচ্ছে মত রান্না করে। এটির টেস্ট পুরোই অন্যরকম লেগেছিল। তবে যতটা নাম শুনেছি আমার কাছে অতটা সুস্বাদু লাগেনি। এত কষ্ট করে এত ভিড় ঠেলে এত দূর থেকে এসে এই খাবারটা সত্যি আরো অন্যরকম ভেবেছিলাম।
তবে যাই হোক সবাই মিলে বেশ কিছুক্ষণ বাইরে ঘোরাঘুরি করেছিলাম এবং সবাই বেশ ক্ষুধার্ত ছিলাম। যার কারণে খেতে আরো বেশি ভালো লেগেছিল। আর অনেক জন মিলে একসঙ্গে গেলে অন্যরকম একটা মজা পাওয়া যায় যে কোন জিনিস খেতেই ।তবে সময়টা বেশ ভালই কেটেছিল ।বেশ ভালই লেগেছিল ।তবে সত্যি কারের এই হাজীর বিরিয়ানি না খেলে বুঝতেই পারতাম না অন্যান্য হাজীর বিরিয়ানি আর এই বিরিয়ানির মধ্যে টেস্টের পার্থক্য কতটা ।এটি সম্পূর্ণ আলাদা টেস্ট। এরা এখনো উত্তরাধিকার সূত্রেই রেস্টুরেন্ট টি চালিয়ে যাচ্ছে ।এটি মূলত মূল হাজির বিরিয়ানির দোকান। দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে যতই হাজির বিরিয়ানির দোকান থাক না কেন এটি হচ্ছে বাংলাদেশের মূল হাজির বিরিয়ানির দোকান। যার টেস্ট সম্পূর্ণই আলাদা ।এর সঙ্গে অন্য কারোর কোন তুলনা হবে না।আশা করছি আপনাদের কাছেও আমার এই অনুভূতিটা ভালো লেগেছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
লোকেশন: | নাজিরা বাজার, ঢাকা |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আপু আপনি আজকে আমাদের মেসেজ শেয়ার করেছেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা। হোটেলের এক প্লেট বিরিয়ানি এমনিতেই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য একটু কম মনে হয়। তবে এক প্লেট বিরিয়ানির দাম আপনাদের কাছ থেকে নিয়েছিল ২৪০ টাকা। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া পরিমাণে আর একটু বেশি হলে ঠিক হত। আর দামটাও একটু কম হলে ভালো হতো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপনি সুন্দর একটা মুহূর্তের অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন হাজী বিরিয়ানি খেয়েছি খুব সুস্বাদু ছিল। কিন্তু ঢাকা থেকে চলে আসার পর সেই বিরানির স্বাদ আর নিতে পারেনি যদিও আমাদের এখানে হাজী বিরিয়ানি আছে কিন্তু ঢাকার হাজী বিরানির সাথে কোন মিল নেই। এত সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।
হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন ঢাকার এই হাজির বিরিয়ানির সাথে অন্য হাজির বিরিয়ানির কোন মিলই নেই। রাত আর দিন পার্থক্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
বেশ আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। ভিন্ন স্বাদের ভিন্ন রেসিপি খেতে খুবই ভালো লাগে। ঠিক আপনার মধ্যেও আমারও একটা অনুভূতি রয়েছে আমি কিন্তু বাইরে কোথাও গেলে খিচুড়ি পছন্দ করি। আর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রকার খিচুড়ি আমার খুবই প্রিয়। যাইহোক সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি।
ভাইয়া আপনার খিচুড়ি পছন্দ জেনে ভালো লাগলো। আমারও খিচুড়ি পছন্দ ।তবে মাঝে মাঝে ভিন্ন ধরনের স্বাদ নিতেও হয় অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে বিরিয়ানি খাবার অনুভূতি সত্যি বেশ দারুন। বিরিয়ানি খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে আমার খুব পছন্দের। হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন । খাওয়ার দাওয়াত মুহূর্তগুলো বেশ দুর্দান্ত ভাবে কাটিয়েছেন। দাম একটু বেশি হলেও এই ধরনের খাবারগুলো মান এবং স্বাদ একটু বেশি হয়ে থাকে। হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ ভাইয়া এই বিরিয়ানির দাম বেশি হলেও লোকজনের কোন কিছু যায় আসে না ।প্রচুর ভিড়, ঘরের উপরে দাঁড়িয়ে থাকে লোকজন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনি তানিয়া আপুর বাসায় গিয়েছিলেন নাকি, তৌহিদ আপুর বাসায় গিয়েছিলেন?? বোনের বাসায় গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলেন বুঝতে পারতেছি। ঐতিহ্যবাহী ঢাকার হাজী বিরিয়ানি খেয়েছিলেন দেখে বেশ ভালোই লাগলো। ঢাকার হাজী বিরিয়ানী আমি অনেক আগে খেয়েছিলাম। তখন কিন্তু বেশ ভালো লেগেছিল খেতে। এখন যদিও জানি না কিরকম। যাইহোক আপনারা নয়জন মিলে তাহলে মজা করে খেয়েছিলেন, যদিও নামের মত করে খাবারের স্বাদটা পাননি। আপনাদের খাওয়া দাওয়া করার মুহূর্তের পোস্টটা বেশ ভালোই উপভোগ করলাম।
ভাইয়া আমি তৌহিদা আপুর বাসায় গিয়েছিলাম ।সেখানে তানিয়াও এসেছিল। তবে বিরিয়ানির স্বাদ একেবারেই অন্যরকম। মোটামুটি ভালো লেগেছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।