জেনারেল রাইটিং :- পণ্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে ঋণের সম্পর্ক।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো এক দুঃখী মানুষের জীবন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ... |
---|
আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ। দেশের আয়তনের চেয়ে জনসংখ্যা অধিক বেশি। আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই হচ্ছে দারিদ্র নীচে বসবাস করছে। মানুষের অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে জীবনযাত্রা পার করছে। দরিদ্র পরিবার থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের জীবনযাত্রা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। পণ্যদ্রব্য যে দাম তাতে মানুষের আয়ের থেকেও বেশি। কোন মানুষের মাঝে যদি ২০ হাজার টাকা আয় করে তবে তার মাসে খরচ হয়ে যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। মানুষের সব সময় ঘাটতে দেখাচ্ছে। আয়ে কিছু টাকা সঞ্চয় করবে এমন তারা কখনোই করতে পারছে না। একদিকে যেমন সঞ্চয় করতে পারছে না অন্যদিকে তেমন ঋণের বোঝা মাথায় চেপে বসছে। আর এর ফলে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। মানুষের খাবারের দ্রব্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এটাই হল মানুষের ঋণের বোঝার মূল কারণ। আমাদের দেশে তেমন কর্মসংস্থান নেই। দেশের অধিকাংশ মানুষ দিন আনে দিন খায়। আর এর মধ্যে তো আমি আবারও বলছি রয়েছে ঋণ।
আমি যতটুকু জানি আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যে কোন একটা ব্যাংক থেকে বা যে কোন একটা সমিতি থেকে তারা ঋণ নিয়ে তাদের জীবনযাত্রা পরিচালনা করছে। তারা সেখান থেকে ঋণ নিয়ে হয় ছাগল কিংবা গরু কিনবা চাষ কাজে সেসব টাকা গুলো লাগিয়ে তাদের জীবনযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি আমাদের নিজের গ্রামের কথা বলছি বহু মানুষ এই ঋণের মধ্যে জড়িত। তারা বছরে বা মাস চুক্তিতে তারা ঋণ নেয় এবং তারা শোধ করে আবারো তারা ঋণ নেই। তারা কোনভাবে ঋণ থেকে নিজেকে সরে আনতে পারছে না। আরে ঋণ থেকে সরে না আসার কারণ আমার দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা হল উচ্চ দ্রব্য পণ্যের দাম। প্রশ্ন আসতে পারে যে কেন উচ্চ পণ্যদ্রব্য দামের জন্য মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে? একটা সময় মানুষ ঋণ নিয়েছে সেই ঋণ দিয়ে মানুষ গরু বা ছাগল কিনেছে। আর সেই গবাদি পশু গুলো ছয় মাসে এক বছর তারা বাড়িতে পুষে বিক্রি করেছে এবং সেখান থেকে কিছু লাভ হংস পেয়েছে। যেহেতু পণ্যদ্রব্য দাম কম সে তো তারা খুব সহজেই সে টাকা দেয় তাদের জীবন সংসার পরিচালনা করেছে। কিন্তু যখনই পূর্ণ দ্রব্য দাম বেড়ে গেছে তখনই মানুষের ঋণের বোঝা বেড়ে গেছে। আপনি কোন সমিতি থেকে যদি এক লক্ষ টাকা ঋণ নেন, তাহলে তাকে এগারো হাজার টাকা বছরের সুদ দিতে হয়। কিন্তু যখন আপনি ওই ঋণের টাকা পরিবারের জন্য খরচ হয়ে যাচ্ছে তখন আপনি সুদ দিতে অপারগ হয়ে আছেন। তখনই আপনার সংসারে চলছে ঝামেলা। আপনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
আমাদের গ্রামে অনেক মানুষের ঋণের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। তারা ব্যাংক এবং সমিতি থেকে লোন নিয়ে থাকে। এভাবে তারা এর সাথে অনেক দিন যাবত সম্পৃক্ত। যখন পণ্যদ্রব্য দাম কম ছিল তখন তাদের কোন সমস্যা হয়নি যখন এর দাম বেড়ে গেছে তখনই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। আমাদের গ্রামে ভিটাপাড়া বলে একটা পাড়া রয়েছে। ওই পাড়াতে অধিকাংশ মানুষ এই ঋণের সাথে জড়িত। এইতো কিছুদিন আগেই শুনলাম এক ভাই ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পেরে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। সে রেশ না কাটতে কাটতে এই ধরনের ঘটনা গুলো আরো তিন চারটা পরিবারের সাথে ঘটে গেছে। সমিতির লোকজন আসে তাদের বাড়িতে টাকা পেতে কিন্তু তারা তো টাকা দিতে পারে না। এই বিষয়ে যখন তাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় আপনার তো টাকা নেন এগুলো তো আপনার কোন না কোন কাজে ইনভেস্ট করেন, তাহলে সেখান থেকে তো আপনারা মুনাফা পান। তাহলে কেন আপনাদের এই সমস্যা? এই প্রশ্নের উত্তরে বলে তখন চাল কিনেছি ২০ টাকা কেজি এখন চাল কিনে ৬০ টাকা কেজি। এক হালি ডিম কিনেছি ১২ টাকা থেকে ১৫ টাকা। এখন এক হালি ডিম কিনতে হয় ৬০ টাকা। তখন দশ থেকে বিশ টাকায় অনেক গুলো সবজি কিনতে পেরেছি। আর এখন ১০০ টাকায় সবজি কিনতে পারছি না। ১ কেজি গোস্ত কিনে খেয়েছি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর এখন এক কেজি গোশতের দাম ৭৫০ টাকা। পন্য দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে কিন্তু আমাদের ওই টাকা দিয়ে তো জীবনযাত্রা মান বাড়াতে পারি নাই। আর এর জন্যই আমাদের অবস্থা এমন।
উনাদের কথা শোনার পরে মনে হয়েছে যে অবশ্যই তাদের কথায় যুক্তি আছে। কে দশ বছর ধরে সমিতি থেকে লোন নেয়। তাদের কথামতো এতদিন তো আমাদের এ ধরনের সমস্যা হয়নি। তাহলে এখন কেন এই সমস্যা হচ্ছে। আপনাদের যে কথা গুলো বলেছি এই গুলোর জন্য আমাদের এই সমস্যাটা বেড়ে চলেছে, আর তা হলো পন্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে। মানুষের টাকা ইনকামের চেয়ে যখন তার পরিবারের খরচ বেড়ে যাবে তখন মানুষ অসহায় পড়বে। বর্তমানে অনেক মানুষ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। জানিনা আমাদের দেশের মানুষ কবে এ থেকে রেহাই পাবে। আপনারা এ ধরনের ঘটনা গুলো হয়তোবা এখনো শুনতে পারছেন অহরহ, ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বর্তমান সময়ের সমাজ বা দেশের জন্য ঋণ হয়ে গেছে একটা অভিশাপ। আরে অভিশাপ থেকে মানুষ ইচ্ছা করলে বের হতে পারছে না।
ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1702178843472306330?t=hHOaB_89xfjUWqZKdUpQZg&s=19
অধিকাংশ মানুষের মুখে এখন শোনা যায় তারা ঋণী। আর ঋণী না হয়েও তো উপায় নেই। বর্তমানে বাজারদরের যে উর্ধগতি,আর এই উর্ধগতিতে মানুষজন নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য ইনকামের পাশাপাশি ঋণ করে বসে আছে। এখন বিষয় হচ্ছে অনেকে ঋণটা যথাযথভাবে পরিশোধ করতেও পারছেনা। অনেক সময় বেতনের সাথে খরচের সাথে টিকে উঠতে না পেরে, ঋণ পরিশোধ করা হয়না।আর সবমিলিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যাই হোক অনেক বাস্তবিক একটি চিত্রপট তুলে ধরেছেন আপনার আজকের ব্লগের মাধ্যমে ধন্যবাদ।
ভাই আমাদের এদিকের মানুষজন এত পরিমান ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে তার এখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আর এই বিষয়টি হচ্ছে মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি বলে। ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্য করেছেন আপনি।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া। সত্যি বলতে গেলে বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে কোন কিছুই কেনা গরীবদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। প্রতিটি জিনিসের দাম প্রায় দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণ হতে চলেছে। বর্তমান জিনিসের এরকম দাম বৃদ্ধি পাবার কারণে অনেক মানুষ অনেক টাকা ঋণ হয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ।এরকম পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পণ্যদ্রব্য দাম বেশি বলে ঋণগ্রস্ত মানুষ গুলো আরো বেশি ঋণী হয়ে পড়ছে। এবং তারা ঋণ পরিশোধ না করতে পারায়, তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির পরিস্থিতি খারাপ, যা দেশের মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারনে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, মানুষ আর ভালো ভাবে চলতে পারছে না। এদেশের পরিস্থিতি আর ভালো হবেনা মনে হয় 😕
মধ্যবিত্ত মানেই কষ্টের জীবন।
ভাই মধ্যবিত্ত মানুষের যে কি অবস্থা আসলে তারা না পারছে প্রকাশ করতে না পারছে সইতে। কথায় বলে না পাটার তলে হাত পড়ে গেছে। বেরও করতে পারছেন আবার থাকলে হাতে লাগছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাপারটাই এমন দাঁড়িয়েছে।
পুরো বিশ্বের মধ্যে এমন একটা সমস্যা সৃষ্টি হবে সেটা হচ্ছে যে খাদ্য সমস্যা। মানুষের প্রচুর টাকা থাকবে কিন্তু খাবার কিনে খাওয়ার মত খাবার পাবে না। আপনি ঠিক বলছেন বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষ ঋণের সাথে জড়িত। তাছাড়া বাজারে গেলে বুঝা যায় জিনিসের দাম কেমন বেড়েছে। খুব সুন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেয়ার করলেন ভালো লেগেছে পড়ে।
আসলে আপু আমরা শেষ জামানার মানুষ তো। আর এই সময় আমাদের অনেক ভোগান্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে সময় উপযোগী বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনি একদম ঠিক বলেছেন এখন প্রায় অধিকাংশ মানুষের মুখে শোনা যায় তারা যেকোনো পর্যায়ে ঋণ হয়ে গেছে। ঠিক বলেছেন গবাদি পশু কিছু কিছু মানুষ কিনে পালন করছে কিন্তু সেগুলো বিক্রয় করার সময় তারা কোন লাভের মুখে দেখতে পারছে না কারণ খাবারের দাম আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঋণ নেয়ার ফলে ওই ঋণের দ্বারা যে কাজ করছে ওই কাজ থেকে তারা লাভ অংশ বের করতে পারছে না বিধায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর বর্তমানে কোন দ্রব্য দাম বেশি। সব মিলে সমস্যা তাই দেখে ঘিরে রেখে।
দেশের অবস্থা যেমন হয়ে গিয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবন যাপন করা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। কেননা এখানে যত টাকায় উপার্জন করা যাচ্ছে না কেন খরচের পরিমাণটা তার থেকেও বেশি। কয়দিন পরে তো মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।
আসলে দেশের অবস্থা থেকে দেশের মানুষের অবস্থাটা করুন হয়ে গেছে। যেদিন মানুষ মানুষের কথা ভাববে সেদিন থেকে মানুষ এবং দেশের অবস্থা দুটাই উন্নতি হবে।