ক্রিয়েটিভ রাইটিং // ভৌতিক গল্প :- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ৪র্থ পর্ব।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম ভৌতিক গল্প:- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ৪র্থ পর্ব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
ভয় ও আতঙ্কে ঘুমোতে পারেনি, ভরের দিকে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। আচমকা ঘুম ভাঙতে কালকে রাতে বিভীষিকার কথা মনে পড়ে গেল। একটু গভীরভাবে ভাবতে বুঝতে পারলাম আগন্তুক একা ছিল না তার সঙ্গে আরো একজন ছিল। তবে আর যেই হোক এটি মানুষই ছিল। কাল রাতে তার শিকার ছিলাম আমি। আর তাই বারবার আমার ঘরের কাছে এসেই থেমে যাচ্ছিল আগন্তুকের হুংকার। এরই মাঝে দরজারই জোরে জোরে কড়া নাড়ার শব্দ।বাকি রইল না এ বাড়িতে আমারে আর শান্তির ঘুম হবে না। দরজা খুলে দেখি আমার পিসি শাশুড়ি আর কালকে সেই অদ্ভুত পরিচারিকা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে সবাই ভিতরে ঢুকে পড়ল। পিসি শাশুড়ি তোর আগে কটকট করতে করতে বলল, জমিদারের মেয়ে হয়েছে নাকি এত সকাল অব্দি ঘুমোচ্ছ।
এত বেলা পর্যন্ত শুয়ে থাকতে কে শিখিয়েছে? কাল রাতে কোথায় ছিলে?এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করায় খানিকটা হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। কি উত্তর দেবো বুঝতে না পেয়ে মাথা নিচু করে বললাম, আসলে পিসিমা কাল রাত্রে ভালো ঘুম হয়নি তাই বোর্ডের দিকে চোখটা লেগে গিয়েছিল আর সেজন্য ঠিক পাইনি। আমার এই কথাটা শুনে বেশিরভাগ যেন খানিকটা আনমনা হয়ে গেল। আমাকে জিজ্ঞেস করল কেন কেন ঘুম হয়নি রাত্রে। কি হয়েছিল? আসলে বেশি মা কাল গভীর রাত্রে। কে যেন আমার ঘরের সামনে এসেছিল এবং আমার ঘরে ঢোকার জন্য সে প্রাণপণ চেষ্টা করছিল। আমি একা তাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এজন্য সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমার এই কথা শুনে পিসিমা ভঙ্গিমা করে বলল, ঢং করার জায়গা পাওনা। বিয়েতে তেরাত্রি পেরোলো না, আর ঘরে কে আসবে এটাও বুঝতে পারো না। আগে এত কথা বাড়িয়ে লাভ নেই বাপু। এমনিতেই দেরি করে উঠেছ। তাই আর বেশি কথা বাড়াচ্ছি না। আমি বাসন্তীর হাতে জামা কাপড় গুলো রেখে গেলাম স্নান করে এগুলো পড়ে নিও।
স্নান ঘরে যেতেই চোখে পড়লো সেই অদ্ভুত মূর্তির দিকে। খুব অবাক লাগে কেউ স্নানঘরে এমন মূর্তি কেন রাখবে? স্নান শেষে বাইরে এসে দেখি পিসিমা আর কাজের মেয়েটি স্নান ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। পিসি মাকে সামনে পেয়ে প্রশ্ন করলাম, আচ্ছা আপনারা এই বাড়ির স্নান ঘরে এমন অদ্ভুত মূর্তি কেন রেখেছেন। আমার কথা শুনে পিসীমা ভয় পেয়ে গেল। তার মুখে যেন আর কোন কথা সরছে না। তবুও রাজবাড়ীর রক্ত গায়ে বইছে। এই ধাক্কাটা সামনে উঠে আমাকে বলল, শোনো মেয়ে তুমি এই বাড়ির বউ বউয়ের মত থাকবে। এত কিছু কৌতুহল কিন্তু ভালো নয়। কথাটা তিনি আমাকে হুমকির সুরে বললেন। কিন্তু আমার এই অবাধ্য মনকে তো দমিয়ে রাখা যায় না। আমিও মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম। এইবারের অদ্ভুত এই রহস্য আমি উন্মোচন করবই। পিসীমা চলে যেতেই আমার সমস্ত রাগ তুললাম বাসন্তীর ওপর। তুমি বা এমন হা করে দাঁড়িয়ে আছো কেন। দাও জামা কাপড় গুলো দাও পরে উদ্ধার করি। বাড়ি তো নয় যেন পিশাচপুরি। স্নান ঘরে এমন অদ্ভুত মূর্তি কেউ রাখে নাকি! এবারে যে ঘটনাটা ঘটলো তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো শ্রাদ্ধ হয়তো আমার নেই। এই বাড়িতে আমার অবাক হওয়ার মতো জিনিস হয়তো আরো অনেক বাকি আছে।
যে বাসন্তীকে আমার পিসি শাশুড়ি বলেন তিনি বোবা। সে বাসন্তী কথা বলছে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার তার ঠোঁট নড়ছে না। পিসি শাশুড়ির উপর চটে গিয়ে যখন তাকে মনে মনে গালাগাল করতে শুরু করলাম, তখন কোন এক নারী কন্ঠ আমার কানে ভেসে উঠলো। "বৌরানী, তুমি ঠিকই বলেছ এটি বাড়ি নয় পিশাচপুরি।এ এক অভিশপ্ত জায়গা, এর ভয়ানক ইতিহাস যেমন ভয়ংকর, তেমনি বেদনাদায়ক। "ক্ষনিকের জন্য মনে হলো আমার শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেল। আমি বুঝতে পারছিলাম না বাসন্তী কিভাবে কথা বলছে ঠোঁট না নাড়িয়ে নিয়ে।বাসন্তী আবার আমাকে বৌরানী সম্বোধন করে বলল, বৌরানী ভয় পেয়ো না আমি বাসন্তী। আমি কথা বলছি তোমার সাথে। আমি ভয়ে ভয়ে ক্রমশ পিছু হাঁটতে থাকলাম, খাটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতেই বাসন্তী আমাকে ধরতে গেলে আরও ভয় পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। চোখের সামনে একটি কালো বিন্দু বড় হতে হতে ক্রমশে তোমাকে গ্রাস করছে।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভূত ব্যাপারটা বিশ্বাস না করলেও বেশ ভয় করি 😄
আপনার গল্পের আগের পর্ব পড়া হয়নি, হঠাৎ পড়তে এসে কেমন তালগোল পাকিয়ে গেছে। যাইহোক কিছুটা পড়ার পর মনে হলো আমি তো এখন একা থাকি, তাই আর বেশি পড়া ঠিক হবে না 😏
ভাই আপনার মন্তব্য পড়ে বেশ হেঁসেছিলাম। আপনি ঠিক বলেছেন যেহেতু একা থাকেন সেহেতু সব পড়েননি ভালো করেছেন, রাত্রে ঘুম আসতো না ভয়ে 😄। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।