লাইফ স্টাইল :- অসুস্থতা যেন পিছু ছাড়ছে না।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
এইতো গত একমাস আগে গিয়েছিলাম কুষ্টিয়াতে। আর কুষ্টিয়াতে যাওয়া মানেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। একজন মা যখন বাচ্চা প্রসব করে তারপর থেকেই তার শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। একটা মেয়ে মা হওয়ার আগে হয়তোবা এতটা অসুস্থ হয় না যতটা সন্তান হওয়ার পরে একটা মেয়ে অসুস্থ হয়। আমি আমার নিজের স্ত্রীর কথা বলছি, আমি শুনেছি সে নাকি অনেক সুস্থ থাকতো কোন রোগবালা তেমন তার ছিল না। কিন্তু যখনই তার সন্তান পেটে আসলো এরপর থেকে শুরু হলো ডাক্তারের কাছে যাওয়া আসা। আর সন্তান হওয়ার পরে যেন এক একটা রোগ উঠে পড়ে লেগেছে। মাসের প্রথম দিকে যদি ডাক্তার বাড়ি যেতে হচ্ছে তাহলে শেষের দিকে আবারো পুনরায় যেতে হচ্ছে। এভাবে চলছে ডাক্তারের কাছে যাওয়া আসা। আর ডাক্তারের কাছে যা মানে খরচের শেষ নেই ।সব মিলে একটু হাপিয়ে উঠেছি। সব থেকে দুঃখের ব্যাপার হলো আপনি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন অথচ ডাক্তার আপনার রোগ ধরতে পারছে না। আর যদিও ধরতে পারছে তারা ঠিক রকম ওষুধ দিচ্ছে না। প্রশ্ন হল কেন তারা রোগ ধরতে পারছে না তারা দিচ্ছে টেস্ট। আর এটা হল এখন ডাক্তারদের সুন্দর একটা ব্যবসার ব্যবস্থাপন। আর এর মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত কত রোগীকে হয়রানি হতে হচ্ছে এবং কত টাকা যে এরা চুষে খাচ্ছে এর কোন শেষ নেই।
গত বুধবার ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। এর আগে সনো টাওয়ারে চতুর্থ তলায় এক ডাক্তারকে দেখেছিলাম, আমি তার নাম বলবো না। আমার রোগীর পেটে নাড়িতে হয়েছিল পাথর। তিনি চারটা টেস্ট দিলেন, আমি গিয়ে চারটা টেস্ট করে নিয়ে আসলাম। এই চারটা টেস্টের মধ্যে তাকে একটা আল্ট্রাসনো দিয়েছিল। যে ডাক্তার আলট্রাসনো করছিল উনি বারবার বলছিল যে উনার নাড়ীতে এখনো পাথর রয়েছে। অথচ আমি যে ডাক্তারকে দেখেছিলাম উনি বললো যে, না তার পাথরটা নেবে গেছে। আমি উনার কাছে এর আগে একবার এসেছিলাম আর এটা ছিল আমার দ্বিতীয়বার আশা। আমি ডাক্তার কে বারবার বলেছিলাম যে ডাক্তার আপনি ঠিক ভাবে বলেন কেননা আমার মনের ভিতরে যেন বলছিল যে পাথরটা এখনো নেমে যায়নি। যদি তাই হতো তাহলে আমার রুগী এখন পর্যন্ত অসহ্য যন্ত্রণায় ভুক্ত না। তারপরও ডাক্তার যখন বলেছে সেটাই মেনে নিলাম। এর মধ্য দিয়ে এক মাস কেটে গেল অথচ আমার রোগীর অবস্থা ঠিক ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে তো ভালো হচ্ছে না। তাই পুনরায় কয়েকদিন আগে আবারও গিয়েছিলাম সেই সনো টাওয়ারে। অবশ্য এবার ওই ডাক্তার না দেখিয়ে অন্য একটি ডাক্তারকে দেখেছিলাম। যখন আমি এই ডাক্তারকে দেখেছিলাম তখন তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন প্রথম কাকে দেখিয়েছিলেন আমি উনার নাম বলতে তিনি একটু রাগ করলেন।
আমার রোগীকে যখন আলট্রাসনো করতে যায় তখন সনো-১, আলট্রাসোনো কাগজ জমা দিতে তিনি বলেন ১২৫ তম সিরিয়াল আপনার। তখন সিরিয়াল চলে মাত্র ৮৫। এদিকে বাড়িতে চার মাসের ছোট বাবু রেখে এসেছি। এমনিতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। আমি তখন রিসিপশনে গিয়ে বললাম আচ্ছা আপু সনো -২ তো একটা ম্যাডাম আল্ট্রাসনো করে উনাকে কি আমরা পাবো এখন। উনি বললো পাবেন ভাই আপনারা চলে যেতে পারেন। এরপরে আমি এবং আমার রোগীকে নিয়ে ওখানে চলে গেলাম। উনি আলট্রাসোনো করাতেন সাত তলায়। আমরা ভুলক্রমে চলে গিয়েছিলাম ছয় তলায়। আর এখানে ডাক্তার নাসরিন জাহান রোগী দেখেন। দিনটা ছিল বুধবার, দেখলাম ওনার রুমের সামনে তেমন কোন মানুষ জন নেই, একেবারেই ফাঁকা পড়ে আছে। আসলে বুঝতে পারলাম না যে এখন উনার আসার সময় হয়নি, না আজকে উনি রোগে দেখেন না। তখন সময় ছিল সাড়ে পাঁচটা ছয়টা। হয়তোবা এমনও হতে পারে এই দিনে তিনি রোগী দেখা বন্ধ রাখেন। তবে আমি শুনেছি ডাক্তার নাসরিন জাহান খুব ভালো মানের ডাক্তার। আমাদের মহিলার দেখার জন্য কুষ্টিয়াতে বেশ কিছু ডাক্তার রয়েছেন তার মধ্যে নাজনীন আক্তার, রুমিন ফারহানা এবং এই নাছরিন আক্তার এরাই সবথেকে ভালো।
নিশ্চয়ই আপনার ফটোগ্রাফির মধ্য দিয়ে বুঝতে পেরেছেন যে আমি কোথায় এসেছি। ইনি হলো সোনোলোজিস্ট। ডাক্তার সুরাইয়া পারভীন সুমনা। প্রথমবার যখন আমি সনো করতে এসেছিলাম, তখন এই ম্যাডামের দ্বারাই করেছিলাম। এবং আমার রুগীকে দুইবার করে সনো করেছিল এবং বারবার দেখার পরে তিনি একটা কথাই বলেছিলেন যে আপনার পেশেন্টের পেটে নাড়িতে একটি পাথর রয়েছে। এর আগে এই সম্পর্কে কিছুটা আপনাদের সামনে আমি আলোচনা করেছিলাম। এই ম্যাডাম বলেছিল পাথর আছে অথচ আমি যে ডাক্তারকে দেখেছিলাম উনি বলেছিল এই পাথরটি নেমে গেছে। এবারও যখন সনো করতে আসি তখন উনি পরপর দুইবার সনো করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ওই একই বিষয়ে ধরা পড়ছিল। এর জন্য উনি আমাদেরকে একটা পরামর্শ দিলেন। বললেন আপনারা সনো:-১ ফিরে যান এবং দ্বিতীয় তলায় একজন আছে উনি খুবই ভালো এবং আমার শিক্ষক আপনি ওখানে যান উনি দেখেন কি বলে। ওনার কথামতো আমরা আসলাম এসে উনি পুনরায় সনো করলেন। সনো করার পরে দেখা গেল যে এই একই সমস্যা। বর্তমান সময়ে যদি আপনি সঠিক ডাক্তারকে না দেখাতে পারেন তাহলে আপনার রোগী অনেক সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারে। আমার এ রোগীকে একদিনে চারবার সনো করতে হয়েছে। শুধু তার এই রিপোর্টটি সঠিক করার জন্য। আর বুঝতেই পারছেন একবার সনো করলেই ৯০০ টাকা করে দিতে হবে। বর্তমানে চিকিৎসার ক্ষেত্রে হয়ে গেছে একটা ব্যবসা যারা চিকিৎসা দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। যাদেরকে আমরা অন্ধের মত বিশ্বাস করি। আমাদের চিকিৎসা নেয়ার জন্য যাচ্ছি তারা প্রতি পদে পদে আমাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে। জানিনা এর শেষ কোথায়? তবুও বারবার তাদের কাছে আমাদের যেতে হয় চিকিৎসার জন্য কিছুতো করার নেই।
ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | https://w3w.co/perceivers.recruited.reworks |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1701809098130616717?t=woK5ZOjDHM4-D_SjdHfkoQ&s=19
উপর ওয়ালা সুস্থতা দান করুন।
আসলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যাবসা কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। যাইহোক অনেক কষ্ট করে রোগ ধরা পরেছে এটাই বড় বিষয়। এবার সঠিক ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা চালু রাখুন, ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবে।
সঠিক রোগ ধরতে পেরেছে এবং সেই রোগের ঔষধ দিয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ এই কয়দিনের মধ্যে আমার রোগী অনেক ভালো আছে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
কি বলবো ভাই এটা আমাদের দেশ ও জাতির জন্য অনেক লজ্জা জনক। যেখানে নিজের দেশের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করবে।সেখানে টেস্টের নামে ধান্দাবাজি করছে যতসব হসপিটাল গুলো। ডাক্তারের কাছে গেলে সে রোগ ধরতে পারবে না সে দিয়ে দিবে দুই তিনটা টেস্ট। এতে করে রোগীর সামান্য রোগ হোক বা বড় রোগ হোক, কিন্তু হাসপাতালে এবং ডাক্তারের ঠিকই ইনকাম রয়েছে।আবার আরেক দল ডাক্তারের মধ্যে রয়েছে রোগী দেখার আগে ওষুধ কোম্পানির লোকজনের সাথে মিটিং। রোগী দেখার পর তার স্লিপটা নিয়ে ফটো উঠানোর একটা প্রতিযোগিতা।এই যেন এক অসুস্থ মানসিকতার পরিচয়। পরিশেষে এতোটুকুই বলবো মানবিক বিশ্ব রাষ্ট্র ব্যবস্থা না ঘড়লে কোন সেক্টরেই যথাযথ সেবা পাওয়া যাবে না।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
আমি লাস্ট ৪-৫ বার গিয়েছি ডাক্তারের কাছে। প্রত্যেকবার আমার চারটা করে টেস্ট দিয়েছে। আর প্রতিবার শুধু টেস্টের পেছনে আমার খরচ ৪ হাজার ৫ হাজার করে। ওষুধ কোম্পানির লোক ডাক্তারকে হাত করে এই ধরনের ধান্দাবাজি চালাচ্ছে বাংলাদেশ। আফসোস দেশের প্রশাসন সরকার কিছুই বলতেছে না। ডাক্তারের কাছ থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে আপনার প্রেসক্রিপশন এর চার-পাঁচটা ছবি তুলে নিয়ে চলে যাবে। এই হল চিকিৎসা ব্যবস্থা বাংলাদেশের।
আমিও শুনেছি সন্তান প্রসবের পর থেকে মায়েরা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা যায় । কিন্তু সেটি হয়তো আগে কখনোই ছিল না। তবে একজন ডাক্তার দেখানোর পর তিনি অসুখটা ঠিকভাবে ধরতে পারলেন না, পাথরটা নেমে গিয়েছে বলে বললেন। কিন্তু আসলেই পাথরটা যে নামেনি, সেটা চারবার সোনো করার পর আপনারা বুঝতে পারলেন। কিন্তু আপনারা যদি প্রথম ডাক্তারের কথামতোই সেটি মেনে নিতেন তাহলে হয়তো আপুকে দীর্ঘদিন এই যন্ত্রণা আর শিকার হতে হতো । এখন যেহেতু সঠিক জিনিসটা ধরা পড়েছে তাই,সঠিক চিকিৎসার ফলে আপুর সুস্থতা কামনা করি।
ডাক্তারের এই ভুলের জন্য প্রায় দুই মাস কষ্ট করছে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবান শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে এবং ঠিক ঔষুধটাও পড়েছে। এখন আল্লাহর রহমতে বেশ ভাল আছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
আসলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানে হচ্ছে ভোগান্তির স্বীকার। বর্তমান সময়ে মানুষের জটিলতার কোন শেষ নেই। আপনি তো দেখছি বেশ ভালোই ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। আর বর্তমান সময়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানে হচ্ছে টেস্ট বেশি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। তবে রোগীর জন্য দোয়া রইল খুব তাড়াতাড়ি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন।
আমার মনে হয় বাংলাদেশের বর্তমানে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত জায়গা হল ডাক্তারখানা। টেস্ট দেয়ার নামে প্রত্যেকটা মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।