জেনারেল রাইটিং :-শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার একটি ঘটনা।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
হেমন্ত কাল শেষ হতে না হতেই শীতের একটু হালকা বাতাস গায়ে লাগে। বাতাস গায়ে লাগার সাথে সাথে বোঝা যায় শীতের আগমন। শীতের সময়টা অনেকের কাছে ভালো লাগে আবার অনেকের কাছে বিরক্ত লাগে। শীতের সময় মানুষের রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। যাদের এলার্জি সমস্যা তাদের তো আরও বেশি কষ্ট করতে হয়। তারপরও শীত যেন অন্য ঋতুর থেকেও একটু ভিন্ন। শীতের সময় আসলে মানুষের মধ্যে পিঠা পুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। শীতের সময় অন্যতম প্রধান আকর্ষণ খাবার খেজুরের রস। শীত আসলে সবাই চায় একটু খেজুরের রস খেতে। খেজুরের রস দিয়ে পিঠা সবার অনেক প্রিয়। আর আজ আমি খেজুরের রস নিয়ে একটি ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো আশা করি ভালো লাগবে।
সবাই একটি করে রসের ভাড় খেজুরের গাছ থেকে নিচে নিয়ে আসলো। ওই ভাড়ের রসগুলো আমরা যে ঘড়াটি নিয়ে গেছিলাম তার মধ্যে ঢেলে নিলাম। আমাদের মধ্যে মিঠুন বলে একটা ছেলে ছিল। এই ছেলেটিকে আমরা টাল বলে আখ্যায়িত করতাম। আসলে কখন কি যে সে করত তার কোন ঠিক ছিল না। কোন সময় আমাদের কথা শুনতো আবার কোন সময় তার নিজের খেয়াল মত কাজ করত। যারা খেজুরের গাছ কেটে ছিল তারা এই ভাড়ের মধ্যে এক ধরনের গাছ দিয়েছিল। যেটাকে আমরা বলে থাকি এটা দিলে নাকি মানুষ ওই রস খেলে পাগল হয়ে যায়। এই বিষয়টি ওই ছেলেটার জানা ছিল। তার হাতে ভাড় রয়েছে, আমি কেবল একটি কথা বলেছি এসব ভাড় গুলো ভেঙে ফেলা দরকার। আমার মুখের কথা শেষ না হতেই ওই ছেলেটা ভাড় মাটিতে ফেলে ভেঙে ফেলল। প্রথমে অবশ্য আমরা একটু রাগ করছিলাম কিন্তু পরে সবাই হেসে ফেললাম। হাসার কারণ ছিল তার কাজ কর্ম দেখে। আমরা জানতাম তার মধ্যে একটু পাগলাটে স্বভাব রয়েছে।
যাহোক খেজুরের রস নিয়ে আমরা আমাদের বোডিংএ ফিরে আসলাম। আসার পরে যারা শুয়েছিল তাদেরকে ডেকে উঠালাম। যেহেতু অনেক রস এনেছি সবাই খেয়ে শেষ করতে পারবে না। আমাদের এখানে বয়স্ক লোক ছিল তার নাম আল আমিন। তিনি আমাদের সম্পর্কে মামা চাচা হয়। আমাদের মধ্যে একটা ছেলে ছিল নাম আশরাফুল। সে তাকে ডেকে বলছে চাচা ওঠেন রস খাবেন। সে এই কথা শুনে একবার বলল যে, না রস খাওয়া যাবে না। এত ঠান্ডায় রস খেয়ে থাকা যায়। সবাই অনেকবার তাকে বলা সত্বেও সে রস খেতে চাইলো না। আমি বললাম যে মামা একটু খেয়ে দেখেন রসগুলো খুব মিষ্টি। তখন এই কথা শুনে উঠলো। উঠে বলে আচ্ছা ঠিক আছে এক গ্লাস দাও। এখানে মজা শুরু হয়ে গেলো, এক গ্লাস খাওয়ার কথা বলে প্রায় ছয় গ্লাস খেয়েছিল। আসলে খেজুরের রসটি এতটাই মিষ্টি ছিল উনি লোভ সামলাতে পারছিল না। পরবর্তীতে এতটাই বেশি খেয়ে ফেলেছে শেষ পর্যন্ত বাইরে গিয়ে বমি করে থুয়ে আসে।
এরপরে যথারীতি আমরা সবাই খেজুরের রসগুলো খেলাম। যার যতটুকু পেটে ধরেছিল সেই পরিমাণে সবাই খেয়েছিল। এখন পানি পান করলে যা ঘটে থাকে। শীতের রাত বারবার বাইরে ওঠাও অনেক বিরক্তকর একটা বিষয়। আপনারা হয়তোবা অনুভব করেছেন একবার কম্বলের বাইরে গেলে আবার ভিতরে আসলে কেমন ঠান্ডা লাগে। যেহেতু আমরা সবাই এক জায়গায় শুয়ে থাকতাম। পাঁচ মিনিট দশ মিনিট পর পরে কেউ না কেউ বাইরে যাচ্ছে। আপনারা বুঝতেই পারছেন কেন তারা বাইরে যাচ্ছে বারবার। শীতের রাতে শুধু মজা করে রস খাওয়ায় খাওয়া না। এর প্যারাটা কিন্তু অনেক বেশি। সত্যি বলতে ওই রাত্রে আমরা সবাই রস খাওয়ার পরে সারারাত খুব ভালো ভাবে ঘুমাতেই পারি নাই। অতিরিক্ত রস খাওয়ার ফলে সবার প্রসাবের চাপ এতোটাই বেড়েছিল প্রতিটা মুহূর্তে কেউ না কেউ নিজের এই কাজটি শেষ করার জন্য বাইরে যাচ্ছে। কারো চোখে ঘুম নেই আমরা সবাই রীতিমতো হাসাহাসি করছি। এভাবে রাত কেটে গেল। এর মধ্যে সবথেকে বেশি মজা পেয়েছিলাম আমাদের ওই মামা। সে যে ঘটনা ঘটিয়েছিল সে কথা বলা সম্ভব না।
বয়সের সাথে সাথে মানুষের অনেক কিছু পরিবর্তন ঘটে। যখন আমাদের ওই রকম একটা বয়স ছিল তখন আমরা এমন অনেক মজা করেছি। আমরা প্রায় প্রায় এমন কাজ করতাম। আসলে সব আমরা মজা ছলেই করতাম। কিন্তু বর্তমান যুগের ছেলেরা এমন সময় কখনো তারা চিন্তাই করতে পারে না। অতীতে সময় গুলো ছিল সত্যিই অনেক মধুময়। দিন যত যাচ্ছে তত যুগের পরিবর্তন হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রামের সাংস্কৃতি। আমরা যদি দেড় যুগ আগে ফিরে যায় তাহলে বুঝতে পারবো সেই সময়টা কতটা সুন্দর ছিল। আর এখন বর্তমান সময়টা ততটাই বিরুপ অবস্থা। পুরনো সেসব স্মৃতি গুলো মনে পড়লে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে। ইচ্ছে হয় ওই সব স্মৃতিগুলো বা ওই সব সময় গুলো আবারও যদি ফিরে পেতাম। কিন্তু বাস্তবতা তো অনেক কঠিন একবার যে সময় চলে যায় সেই সময়টা আর ফিরে আসে না।
ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1742740599722361133?t=osN5WGQX2mm0H81NJomUHw&s=19
একদম ছোটবেলা ফিরে পেলাম ভাই এই গল্পের মধ্য দিয়ে। খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন ছোটবেলার খেজুরের রস খাওয়ার এই দারুন ঘটনাটা। আসলে আমাদের স্মৃতিগুলো যদি এভাবে শেয়ার করতে পারি তাহলে একদিকে লিখিত থাকবে আরেকদিকে পুনরায় পোস্ট আকারে জীবিত হবে আমাদের শৈশব।
সত্যি বলেছেন ভাই শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় মনে রাখার মত। আর এই সব স্মৃতি গুলো কখনোই ভোলা যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার গল্পের মাধ্যমে পুরানো সেই বোর্ডিংয়ের কথা মনে পড়ে গেল। যদিও এই বোর্ডিং এর সাথে আমার তেমন কোনো স্মৃতি জড়িয়ে নেই। তারপরও আপনার শেয়ার করা ঘটনা পড়ে বেশ মজা পেলাম। ঘটনাটা পড়ে আমার মনে হচ্ছিল আমি যদি সেখানে থাকতে পারতাম তাহলে খুব মজা করতে পারতাম।
জীবনে যে অংশটুকু সেখানে আমি কাটিয়েছি অর্থাৎ বোর্ডিংয়ে, ওই সময়টা সারা জীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে। ওই মুহূর্তটা ছিল জীবনের সব থেকেও উত্তম মুহূর্ত।