জেনারেল রাইটিং:- অনেক আগের একটা ছোট্ট ঘটনা।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
অনেকদিন আগের কথা, তখন আমরা সপ্তমত বা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি। আমরা প্রায় ১২-১৪ টা ছেলে একত্রে বোর্ডিং এ থাকতাম। অবশ্য আমরা সবাই ছিলাম ছাত্র এবং পড়াশোনার জন্য সেখানে থাকতাম। আমাদের সেখানে দুইটা রুম ছিল। দুইটা রুমের দুইটা বাল্ব এবং একটা ফ্যান চলতো। সেখানে কারেন্ট বিল দেওয়ার সময় আমরা ১০০ টাকা করে দিতাম। যদিও ১০০ টাকা কারেন্ট বিল উঠতো কিনা সেটা সন্দেহ। দিনের বেলায় বাল্ব বন্ধ থাকতো। শুধু একটা ফ্যান চলত। তবুও সব সময় না যখন আমরা স্কুলে যেতাম সারাদিনই বন্ধ থাকতো ফ্যান। এভাবে চলতে থাকতো আমাদের দিনগুলো। সত্যি কথা বলতে সেইসবের স্মৃতিগুলো এখনো মনে করলে মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আজ বৃষ্টির দিন হঠাৎ করে সেই দিনের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে ওই সময়র সেই স্মৃতির একটি স্মৃতি শেয়ার করি।
এভাবে চলতেছিল আমাদের পড়াশোনা। আমার সকাল আটটার সময় প্রাইভেট থাকতো তাই খুব সকাল সকালই বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া করে স্কুলে বের হয়ে যেতাম। প্রতিদিনের মতো ঐদিনও আমি একইভাবে রুটিন মাফিক কাজ করে যাচ্ছিলাম। একদিন আমার আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়, কারণ স্কুল ছুটির পরও একটা প্রাইভেট থাকে। আসতে আসতে ঐ দিন বিকেল পাঁচটা বেজে যায়। যেহেতু আমরা অনেকেই এখানে থাকতাম তার মধ্যে লিডারশি হিসেবে আমি থাকতাম। রুমে পা দিতেই এক ছোট ভাই বলল, ভাই আজকে আমাদের কারেন্ট কেটে দিয়েছে। আমাদের বোর্ডিং এর পাশে ছিল আমাদের মসজিদ। সেই মসজিদে ক্যাশিয়ার ছিলেন আমাদের একজন চাচা। অবশ্য তিনি স্কুলের শিক্ষক। আমি বললাম কেন আমাদের কারেন্টের তার কেটে দিল। তোরা কেউ কি বেয়াদবি করেছিস। ওখানে বড় ভাইও ছিল তারা বলল না এমন কিছু না। হঠাৎ করে দেখি তার কেটে দিয়েছে। এরপরে একজন আসলো সে বলল কেন তার কেটেছে আমি সেটা জানি। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কেন কেটেছে বলো? তখন সে বলল, আমাদের বিল বাড়িয়ে দিতে হবে। আমি বললাম সারা মাসের কত টাকা বিল ওঠে তখন সে বলছিল ৩৫০ টাকা বিল ওঠে। আমাদের মসজিদে আটটা ফ্যান চলত বাল্ব চলতে চার-পাঁচটা। পাশাপাশি আমাদের একটা ফ্যান দুইটা বাল্ব এতেই টাকা উঠতো ৩৫০ টাকা। আমি তাকে বললাম আমাদের বলতে পারতো তিনি কত টাকা বিল বাবদ আমাদের কাছ থেকে নিবেন।
তখন সে বলল ভাই মসজিদ পক্ষ থেকে ১০০ টাকা আমাদের দিতে হবে আড়াইশো টাকা। আমি বললাম এটা কেমন কথা যদিও সেটা মসজিদ উনারা যদি আমাদেরকে বলে মসজিদ তোমাদের দিতেই হবে সেটা একটা কথা থাকে কিন্তু এভাবে জুলুম করা তো উচিত নয়। কারণ যেখানে আটটা ফ্যান চলছে সেখানে পাচটা বাল্ব চলে সেখানে আমাদের একটা ফ্যান দুইটা বাল্ব চলে। হিসাব অনুযায়ী তিনারা দেবেন আড়াইশো টাকা আমরা দিবো ১০০ টাকা। আর আমরা তো ১০০ টাকা দিয়েছিলাম এতে আবার কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমাদের এখানে বড় ভাইরা ছিল, তারা তিনার সাথে কথা বলেন তবুও তিনি রাজি হন না। তিনার কথা যে আমরা কারেন্ট দিতে পারব না। সন্ধ্যা হলো সবাই একত্রিত হলাম। আমি সবার সাথে কথা বললাম যে ঠিক আছে কারেন্ট নেওয়ার দরকার নাই উনি এমনিই কারেন্ট আমার দিয়ে যাবে। বড় ভাই পাশে ছিল তখন উনি বলল কিভাবে এটা সম্ভব? আমি বললাম আমি যা বলব তাই করা লাগবে সবার রাজি আছেন। আমাদের মধ্যে আমরা বন্ধুরা বেশি কয়েকজন ছোট ছেলেরা দুটি বড় ভাই। যে চাচা আমাদের কারেন্ট কেটে দিয়েছিল উনার বাড়িতে খুব বড় বড় মুরগি পালন করতো। আমি বললাম তোরা পারবি আজকে আমার সাথে যেতে, উনার বাড়িতে যে মুরগী আছে সেই মুরগি চুরি করে নিয়ে আসবো। তারাও সবাই বলে এটা কি করে সম্ভব আমি বললাম সবকিছু আমি করব তোরা শুধু পাশে থাকবি।
যেহেতু আমরা সবাই খাওয়া দাওয়া করে এসেছি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। রাত যখন দশটা বাজে তখন আমরা বেরিয়ে পড়লাম। বাড়িতে পাচির ছিল আমরা পাচিরকে টপকে তারপর বাড়ির ভেতরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় কিছু পেঁয়াজ এবং পেঁপের নল নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি একজনাকে বললাম ঘরটা খুলে পেঁয়াজটা ওর মধ্যে রসগুলো ছিটিয়ে দে। আর একজনকে বললাম তুই হচ্ছে পেঁপে নল দিয়ে ফু দিবি। ওরা এই ধরনের কাজগুলো করতে থাকলো আমি দুইটা মুরগি হাতা মেরে বের করে নিয়ে চলে আসলাম। অবশ্যই পেঁপের নলের ফু দিলে মনে করে হয়তো সাপ এসেছে বা অন্য কোন জিনিস এসেছে তাই তারা কোন শব্দ করছিল না। খুব সহজে মুরগি দুটো আমরা ধরে আমাদের বোডিং এ নিয়ে চলে আসলাম। এরপরে ওই রাত্রে পিকনিক শুরু করে দিলাম। পিকনিক শেষ হতে হতে রাত দুইটা বেজে যায়। খাওয়া দাওয়া করে শেষ হওয়ার পরে আমরা যখন ঘুমাতে যাই তখন প্রায় রাত ৩ঃ০০ টা বেজে ত্রিশ মিনিট। এরপর আমরা ঘুমিয়ে থাকি যেহেতু রাত জাগা হয়েছে তাই সকাল সকাল উঠতে পারি নাই।
যখন দশটা বাজে তখন আমরা ঘুম থেকে উঠলাম। উঠেই শুনছি যে আমাদের কারেন্টের লাইন জুড়ে দিয়ে গেছে। আর বলে গেছে সমস্যা নেই তোমরা এখানে থাকো তোমরা মাসে ১০০ টাকা করে দিবে। তারপর আমরা বিষয়টা বুঝতে পারলাম যে উনি জানতে পেরেছে যে আমার এই মুরগি চুরি করে এই ছেলেরাই খেয়েছে। এখানে একটা বিষয় রয়েছে আপনি যদি অপরাধী হন আপনার মনকে জিজ্ঞাসা করলে আপনি বুঝতে পারবেন। উনি ঠিক জানতো যে ছেলেদের সাথে আমার অপরাধ করা হয়েছে। তাই কোন কিছু না বলেই আমাদের কারেন্ট লাগিয়ে দিয়ে গেল পাশাপাশি আবার ১০০ টাকা কারেন্ট বিল দিতে হবে সেটাও পারমিশন দিয়ে গেল। যেমন লোক তেমন তাকে শায়েস্তা করা হয়েছে। একেই বলে সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে বাঁকা করতে হয়।
ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1732746496297296199?t=1tLM-ndAKvHGxH298Zu2iQ&s=19
বেশ ভালোই একটা কাজ করেছেন। ওই লোকটা আপনাদের সাথে অপরাধ করেছিল তা তিনি শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছিলেন। আচ্ছা একটা কথা বলুন তো, মুরগির নিশ্চয় অনেক সুস্বাদু হয়েছিল? রান্না করার পর আর আপনারা অনেক মজা করে খেয়েছিলেন তাই না? 😜 একদিকে আপনাদের পিকনিকটা হয়েছিল, আবার অন্যদিকে কারেন্টের বিল ও কম হয়ে গিয়েছে। সেই সাথে কারেন্টের তারও জোড়া লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
ভাই দেশী মুরগি সুস্বাদু না হয়ে পারে। দুইটা মুরগি সাড়ে ৪ কেজি ওজন হয়েছিল। 12 জন লোক ছিল শুধু গোশত খেয়েছিলাম।
আপনি তো দেখছি আজকে অনেক আগের একটা ছোট্ট ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ওই লোকটার কিন্তু একেবারেই উচিত হয়নি, এভাবে আপনাদের উপরে এতগুলো কারেন্টের বিল ছাপিয়ে দেওয়া। ওই লোকটার এই কাজের জন্য আপনি এবং আপনার সব বন্ধুরা ওনার মুরগি চুরি করে নিয়ে এসেছিলেন এবং সেগুলো দিয়ে পিকনিক করেছিলেন জেনে, আমার কাছে কিন্তু ইন্টারেস্টিং লেগেছে ব্যাপারটা। জমি খাওয়া হয়েছিল মনে হয় সেই মুরগী গুলো। পরবর্তীতে লোকটা আপনাদের কারেন্টের তার জোড়া লাগিয়ে দিয়েছিল জেনে ভালোই লেগেছে।
আসলে আপু পিকনিক মানে আনন্দ। ওই লোকটার মুরগি এনে বেশ মজা করে খেয়েছিলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। তবে ভিতরে কিছু বানান ভুল আছে আপু।