দিন বদলের গল্প (প্রথম পর্ব)

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


শুভ সকালে ঘুম থেকে উঠে তার বাবা-মার ঘরে প্রবেশ করে। বাবাকে জানায় তার অনার্সের প্রথম বর্ষের ফরম ফিলাপের টাকা লাগবে। তার বাবা তার কাছে জিজ্ঞেস করে ফরম ফিলাপের লাস্ট ডেট কবে? সে জানায় আর মাত্র দুদিন বাকি আছে। তখন তার বাবা বলে আচ্ছা দেখি আমি টাকার ব্যবস্থা করে দেবো। কিন্তু বাবার চিন্তিত মুখ দেখে শুভর খুব খারাপ লাগে। সুভোদের ছোট্ট পরিবার বাবা মা আর শুভরা দুই ভাই। শুভর ছোট একটা ভাই আছে যে স্কুলে পড়ে। শুভর বাবা একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। তার বেতনের অল্প টাকা দিয়ে কোন রকম কষ্ট সৃষ্টে তাদের সংসার চলে যায়।

Black and Gold Fancy New Year Card_20240425_145440_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

তাদের জমানো টাকা বলতে কিছুই নেই। অবশ্য নুন আনতে পান্তা ফুরোয় যাদের অবস্থা তাদের জমানো কিছু থাকেও না। বাবার চিন্তিত মুখ দেখে শুভর নিজের কাছেই খারাপ লাগতে লাগলো। শুভ জানে তার ফরম ফিলাপের টাকা যোগাড় করতে তার বাবাকে অনেক কাটখর পোড়াতে হবে। এই টাকার জন্য হয়তো তার কারো কাছে ধার চাইতে হবে। কিন্তু আমাদের সমাজে দরিদ্র মানুষকে টাকা ধার দেয়ার মানুষের অভাব। অনেক আগে শুভদের গ্রামে সামান্য কিছু জমজমা ছিলো। শুভর বাবা একবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় সেই জমিজমা বিক্রি করে তার চিকিৎসা করা হয়। তারপর থেকে তারা শহরের একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকে। তার বাবার যে ইনকাম তাতে করে তাদের পক্ষে এর থেকে ভালো কোথাও থাকা সম্ভব না। বাবার ঘর থেকে বের হয়ে শুভ তৈরি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। শুভদের বাড়ি থেকে কলেজের দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। এই রাস্তাটুকু শুভ হেঁটেই যাতায়াত করে।


যদিও তার অনেক বন্ধু-বান্ধব কলেজে মোটরসাইকেল নিয়ে আসা-যাওয়া করে। অনেকে আবার রিকশায় করে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু সেগুলো শুভর জন্য শুধুই বিলাসী চিন্তাভাবনা। তবে শুভর খুব শখ ছিলো একটা সাইকেল কেনার। সাইকেল কিনতে পারলে সে কলেজে একটু আরামে যাতায়াত করতে পারতো। কিন্তু শুভ জানে তার বাবার পক্ষে তাকে সাইকেল কিনে দেয়া কিছুতেই সম্ভব না। নিজেদের এই সীমাবদ্ধতা শুভ অনেক আগেই মেনে নিয়েছে। শুভ কলেজে যাওয়ার পথে চিন্তা করতে থাকে। সে যদি কোনো একটা ছোটখাটো কাজ বা ব্যবসা করতে পারতো তাহলে আর পড়ালেখার খরচের জন্য বা তার নিজের খরচের জন্য বাবা মায়ের কাছে হাত পাততে হোতো না। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 last month 

খুব সুন্দর একটি ধারাবাহিক গল্প আমাদের মাঝে উপহার দিচ্ছেন। আজকের প্রথম পর্বটি পড়েই পরবর্তী পর্বগুলো পড়ার অপেক্ষা রইলাম। যে পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সে পরিবারের সন্তানদের শখ আহ্লাদ গুলো সত্যিই একটি স্বপ্ন। যদিও শুভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ৪ কিলোমিটার দূরে, তার একটি মোটরসাইকেল হলে যাতায়াতে অনেকে সুবিধা হতো। কিন্তু তার বাবার দ্বারা তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। খুব সুন্দর একটি শিক্ষনীয় গল্প আমাদের মাঝে উপহার দিচ্ছেন, তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68523.63
ETH 3260.51
USDT 1.00
SBD 2.66