একুশে বইমেলায় একদিন

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ২১শে বইমেলায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করার মুহূর্ত । একুশে বইমেলা সাধারণত খুব একটা যাওয়া হয় না । কারণ বই মেলাতে গেলে অনেক বেশি হাঁটাহাঁটি করা লাগে যার কারণে তেমন একটা যাওয়ার প্রতি ইচ্ছা পোষণ করি না । কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম আজকেও যাওয়ার কোন ইচ্ছা ছিল না হুট করেই যাওয়া । কিন্তু গিয়েই একেবারে বিপাকে পড়েছিলাম হাঁটতে হাঁটতে একেবারে অবস্থা কাহিল হয়ে গিয়েছিল । আজকে পহেলা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইনস ডে তাই মনে মনে চিন্তা করেছিলাম একটু বাইরে যাবো ঘোরাঘুরি করব । আগের দিন যাওয়ার জন্য মনে মনে ঠিক করেছিলাম কিন্তু পরেরদিন আর যাওয়ার ইচ্ছা হলো না । কিন্তু বিকালবেলা দেখলাম যে আমার হাজবেন্ড রেডি হয়ে একা একা হাঁটতে যাচ্ছে তখন আবার ইচ্ছে হলো । মনে হলো আমরাও যাই একটু গিয়ে ঘুরে আসি । রেডি হয়ে বাইরে যাওয়ার পরে সে বলল যে কোথায় যাবে আমি বললাম যে তুমি যেখানে নিয়ে যাবা সেখানেই যাব । তারপর সে আমাদেরকে বইমেলায় নিয়ে যেতে চাইলে আমরা ও রাজি হলাম ।

20240214_194418.jpg


বাসা থেকে তেমন একটা রেডি হয়ে যায়নি । কারণ আমি ভেবেছিলাম নিচ দিয়েই ঘোরাফেরা করে বাসায় চলে আসব । আমার তেমন একটা যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না ছেলে আর ছেলের বাবা দুজনে মিলে যাচ্ছিল তখন আমাকে বলল যে তুমিও চলো এর জন্য খুব তাড়াহুড়ো করে কোন রকমে রেডি হয়ে বের হয়েছিলাম । আজকে পহেলা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইনস ডে হওয়ার কারণে মানুষজন এত পরিমাণে সেজেছে যদি সাজগোজ করে বের না হওয়া যায় তখন নিজের কাছেই খারাপ লাগে । কি আর করার তারপরও সাজগোজ ছাড়াই চলেই গেলাম । কিন্তু রাস্তায় আজকে এতটা পরিমাণে জ্যাম ছিল যে যা বলার অপেক্ষা রাখে না ।যেতে যেতে আমাদের অনেকটাই সময় লেগে গিয়েছিল । তখন আমি মনে মনে চিন্তা করলাম যে না আসলে হয়তো ভালো হতো । তারপরও জ্যাম ঠেলে আমরা বইমেলায় পৌঁছে গেলাম ।

20240214_193934.jpg


প্রথমে নেমে আমরা চানাচুর মাখা খেলাম তারপর হাঁটতে হাঁটতে মেলার ভেতরে ঢুকে গেলাম । সেখানে ঢুকতেই প্রথমে দেখলাম যে একটা স্টেজ সাজানো হয়েছে এবং সেখানে সুন্দর দেশাত্ববোধক গান চলছে শিল্পীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গান গাইছে সেটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমরা শুনলাম ।

20240214_194552.jpg

20240214_195035.jpg

এখানে দাঁড়িয়ে কবিদের কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় ।

20240214_195345.jpg

20240214_195114.jpg

20240214_195045.jpg


তারপর আবার আমরা হাঁটাহাঁটি করতে থাকলাম এবং ঘুরে ঘুরে সব স্টল গুলো দেখছিলাম । বইমেলায় এত পরিমাণে ভিড় থাকে যার জন্য যেতে তেমন একটা ইচ্ছা করে না ।মানুষজন বই কেনার থেকে এখানে ঘোরাফেরা করতেই বেশি আসে । বই তেমন একটা কিনতে দেখলাম না লোকজনের । আমরা যদিও একটা বই কিনেছি কারণ আমার দেবর একটি কবিতার বই লিখেছে এবং বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছিল । আমরা এখান থেকে তার বইটা কিনে নিলাম এবং একটা বই কেনার কারণে আমার ছেলেটাকে ওরা আরও একটি ছোটদের কবিতার বই গিফট করল ।

Polish_20240215_004153945.jpg

20240214_201937.jpg


তারপর আরো কিছুদূর ভিতরে যাওয়ার পরে দেখলাম যে এখানে বাচ্চাদের জন্য একটা খেলার জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এখানে অনেক বাচ্চারা ভেতরে গিয়ে লাফালাফি করছে । সেটা দেখে আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম যে এখানে ফানাকে পাঠাবো লাফালাফি করার জন্য । কিন্তু ভিতরে বাচ্চাদের অনেকটাই ভিড় লেগেছিল এই কারণে ফানার ভিতরে ঢুকতে চাইল না ।

20240214_200932.jpg

20240214_203209.jpg


বইমেলার ভেতরে আশেপাশে কোথাও কোন খাওয়ার জায়গা পেলাম না । এদিকে ক্ষিদায় পেটের ভিতর চোচো করছে তারপর আবার হাঁটতে হাঁটতে কাহিল । আমরা হাঁটতে হাঁটতে বাইরের দিকে বের হয়ে আসলাম । বাইরের দিকে ছোটখাটো ফুচকার দোকান ছিল অনেক তবে এতটা পরিমাণে ভিড় এবং বাইরে ধুলাবালি পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে আমরা সেখানে আর না দাঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করলাম । আশেপাশে কোথাও কোন রিক্সা গাড়ি কিছুই পেলাম না যার কারণে আমরা হাঁটতে হাঁটতে সামনে আগাতে থাকলাম । আমরা হাঁটতে হাঁটতে একেবারে বেইলি রোডের কাছাকাছি পর্যন্ত চলে এসেছিলাম কিন্তু রাস্তায় একটাও কোন রিক্সা পেলাম না । আর রাস্তাটা এতটা পরিমাণে জ্যাম ছিল বিশেষ করে গাড়ি ভর্তি ছিল । ঢাকা শহরে যত মানুষজন রয়েছে সবাই মনে হয় গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে পড়েছে যার কারণে সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে । আমাদের মত অনেকেই হাঁটতে হাঁটতে এগোচ্ছে । মাঝপথে আমরা এক জায়গায় বসে চা বিস্কিট খেয়ে নিলাম । আবার আমরা একটু রেস্ট নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম । তারপর আমরা একেবারে বেইলিরোডের কাছাকাছি এসে একটা রিকশা পেলাম এবং সেই রিকশা টা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম । এরপর বাসায় এসে আমরা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 4 months ago 

২০২৪ সালের বই মেলা উৎসবের সুন্দর এক মুহূর্তে অংশগ্রহণ করার বর্ণনা আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আর বাইরের পরিবেশে গেলে অবশ্যই তো এটা সেটা খেতে ভালো লাগে। পাশাপাশি আনন্দঘন মুহূর্তটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আর বিভিন্ন বইয়ের কালেকশন অনুষ্ঠান সবকিছুই মোটামুটি শেয়ার করার চেষ্টা করেছেন এই পোস্টের মাঝে। বেশ ভালো লাগলো আপু আপনার আজকের একুশের বইমেলা বিষয় পড়ে।

 4 months ago 

মুহূর্তটা মোটেও আনন্দঘন ছিল না হাঁটতে হাঁটতে জীবনে শেষ হয়ে গিয়েছে । সবাই ঘুরতে আসে বই কেনা তো দেখলাম না কারো ।

 4 months ago 

বইমেলা আমার অনেক ভালো লাগে। প্রতিবছর আমি বিভিন্ন ধরনের বইমেলায় অংশগ্রহণ করে থাকি৷ তবে এই বছর একটু ব্যস্ততার কারণে এখনো বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি৷ তবে আজকে যেভাবে আপনি এই বইমেলার খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন ও খুব সুন্দর মুহূর্তও শেয়ার করেছেন৷ আপনার কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 4 months ago 

এখনো সময় আছে যদি বই কিনতে চান তাহলে ঘুরে আসবেন । শুধু ঘোরার জন্য গিয়ে কি লাভ ।

 4 months ago 

আপু বই মেলা আর বানিজ্য মেলা দুটো ই ভীষন কষ্টের। যেমন হাঁটতে হয়,আবার বের হলে গাড়ি ও পেতে কষ্ট হয়।এজন্য আসলে কোন মেলাতেই আর যাওয়া হয় না।আপনি যাবেন না বলে ও গেলেন।আপনার দেবরের একটি বই বের হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আপনি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন।আবার ক্ষুধাও পেয়েছিল।কিন্তু কোন দোকান ছিল না।বাইরে যে দোকান গুলো ছিল তাও ভীড় ছিল।এরপর এক দোকান থেকে চা বিস্কিট খেয়ে বাসায় গিয়ে বাঁচলেন।অনুভূতি গুলো ছিল কষ্টের।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

আসলে বই মেলায় অনেক বেশি হাঁটাহাঁটি করা লাগে আর দেবরের বই বের হয়েছে দেখেই আগ্রহ নিয়ে গিয়েছি । একটা বই কিনে নিয়ে এসেছি ভালোই লেগেছিল ।

 4 months ago 

ছুটির দিনে কোন দর্শনীয় জায়গায় একেবারে যাওয়া যায়না মানুষজনের ভিড়ের জন্য। তাছাড়া এরকম জায়গায় খাবার দাবার এর দোকানে অনেক ভিড় থাকে। মনে হয় যেন সবাই খাওয়া দাওয়া করতেই এসেছে।আপনারা তো অনেক দূর রাস্তা হেঁটে এসেছেন। ছেলেটা এত দূরে হেটে আসতে পারলো? একদম বাড়ির কাছে এসে রিক্সায় উঠেছেন। ওঠার দরকার ছিল কি? হেঁটেই তো যেতে পারতেন।

 4 months ago 

বইমেলায় যাওয়ার ইচ্ছা আমারও মাঝে মাঝে থাকে না, ওই একটাই কারণ সেটা হল প্রচন্ড ভিড় আর হাঁটাহাঁটি করতে হয় অনেক। এই বছর আমি নিজেও আমাদের কলকাতার বই মেলায় যায়নি। আপনি যেহেতু পরিবার সাথে নিয়ে বই মেলায় গেছেন তার মানে ভিড় হলেও টুকটাক মজা করেছেন। তারপর আবার দেখছি খাওয়া দাওয়াও করেছেন টুকটাক। তবে একদম শেষের জায়গাগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম যে, আপনাদের যথেষ্ট ভোগান্তি হয়েছিল ট্রাফিক জ্যাম থাকার কারণে। এটা সব জায়গাতে হয় আপু। আমাদের এখানেও বেশ দেখা যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 65230.32
ETH 3477.92
USDT 1.00
SBD 2.37