প্রথম মেট্রোরেলে উঠার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব প্রথম মেট্রোরেলে চলার অনুভূতি । আমাদের ঢাকাতে মেট্রোরেল চালু হয়েছে বেশ কিছুদিন হয়ে গিয়েছে । অথচ আমরা মেট্রোরেলে চলার সুযোগ করে এই উঠতেই পারিনি ।নতুন নতুন যখন চালু হয়েছে তখন দেখি মানুষজন কোন কারণ ছাড়াই মেট্রোরেলে করে এখান থেকে ওখানে ঘুরে বেড়ায় সেটা দেখে ভালো লেগেছিল । অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ মেট্রোরেলের জন্য এসেছিল । আর মেট্রোরেল প্রথম আগারগাঁও থেকে উত্তরা ছেড়েছিল যার কারণে আমারা মেট্রোরেলে চড়ার তেমন একটা আগ্রহ দেখায়নি । কারণ আমাদের এখান থেকে আগারগাঁও যেতে হলে একটা উবার নিয়ে যেতে হবে অনেকটা সময় লেগে যাবে । আবার উত্তরা যেতে হবে খামাখা এ কারণে আমরা তেমন একটা গুরুত্ব দেইনি । এখন আমাদের এলাকার আশেপাশ দিয়ে মেট্রোরেল হয়ে গিয়েছে যার কারণে ক'দিন ধরে চড়বো চড়বো ভাবছিলাম তবে সময় সুযোগ করে উঠতে পারিনি ।
এই তো কদিন আগে আমার এক বোন ফরিদপুর থেকে এসেছিল ও আসার কারণে তানিয়া ওর বাসা থেকে আমার বাসায় দুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছিল ।তখন ওই তিনটা দিন আমরা যে কি পরিমাণ পরিমাণ ঘোরাফেরা করেছি তা বলে বোঝাতে পারবো না । একটা মুহূর্ত আমরা বাসায় থাকেনি শুধু ঘোরাফুরার উপর দিয়ে কেটেছে । অনেকদিন পরে এই সময়টা আমরা খুব উপভোগ করেছি । সেই যে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছে আমরা সবাই ভাই বোন ও খালাতো ভাই বোনরা মিলে অনেক মজা করে ঘুরে বেড়াতাম সেই দিনগুলো আমি উপভোগ করেছি । এই তিনটা দিনের মধ্যে আমরা একদিন ঠিক করলাম যে আমরা সরওয়ার্দী উদ্যানে যাব । সেখানে গেলাম সেখানে ঘুরতে ঘুরতে প্রায় রাত হয়ে গেল ।
সেখান থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা হাজী বিরিয়ানি খেতে যাব এবং ওখান থেকে হাজী বিরিয়ানির জায়গাটা যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না রিক্সা করে অল্প সময়ের মধ্যে চলে যাওয়া যাবে । কিন্তু হঠাৎ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা এখান থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে করে যাব ।এবং সেদিনই আমাদের নতুন মেট্রোরেলে চলার সুযোগ হবে ।সেজন্য আমরা কেউ না করলাম না । ওয়াহিদা যদিও আগে চড়েছে আমি আর তানিয়া ঢাকা থাকলেও আমরা আগে উঠিনি এজন্য আমরা রাজি হয়ে গেলাম । আমরা ওখান থেকে মেট্রোরেলে করে মতিঝিল আসলাম এবং সেখান থেকে আবার আমরা রিক্সা করে চলে গিয়েছিলাম হাজী বিরিয়ানি খেতে ।
আমরা যখন রেলের স্টেশনে ঢুকলাম তখন আমাদের ভেতরে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছিল । যে দিকে তাকায় এত সুন্দর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং মনে হচ্ছিল আমরা যেন দেশের বাইরে কোথাও চলে এসেছি । প্রত্যেকটা জায়গায় এত সুন্দর ঝকঝকে চকচকে করে রেখেছে এবং দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগছে । মেট্রোরেলে উঠার জন্য লোকজন লাইন ধরে টিকিট কাটছে আমরাও লাইন ধরে দাঁড়িয়ে পড়লাম । সবার টিকিট কাটা হলো আমাদের যে ছোট পিচ্চিটা ছিল সেটার ওরও টিকিট নিল । পরে জানলাম যে অত ছোট মানুষের টিকিট কাটা হয় না তারপরও আমরা টিকিট আগেই কেটে নিয়েছিলাম । এরপর যার যার টিকিট পাঞ্চ করে আমরা ভেতরে ঢুকলাম । টিকিট ছাড়া যেমন ভেতরে ঢোকা যায় না আবার টিকিট ছাড়া বাইরে আমরা বের হতেও পারব না । এর জন্য যার যার টিকিট যত্ন করে নিজেদের কাছে রেখে দিতে হয়েছিল ।
আমরা পরপর দুদিন মেট্রোরেলে উঠেছি । প্রথমবার যখন উঠলাম তখন মোটামুটি ভেতরে ফাঁকা ছিল আমরা বসতে পেরেছিলাম । একেবারে অল্প সময়ের ভেতরে শাহবাগ থেকে মতিঝিলে চলে এসেছিলাম । তবে আমরা আরো একদিন ট্রেনে চরে ছিলাম সেই টাইমটা অফিস টাইম ছিল যার কারণে অনেক বেশি ভিড় ছিল । আমাদেরকে অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল । পরে আমরা জানলাম যে মহিলাদের জন্য আলাদা কেবিন এবং পুরুষদের জন্য আলাদা কেবিন রয়েছে । আমরা যখন উত্তরা থেকে ফিরে আসলাম সেখান থেকে আসার সময় আমরা মহিলারা যারা ছিলাম তারা মহিলা কেবিনে উঠলাম এবং মহিলা কেবিনে খুব সুন্দর ভাবে বসার ব্যবস্থা রয়েছে । মহিলারা অত বেশি থাকে না যার কারণে ফাঁকা থাকে আপনি একটু পর পর বসার সুযোগ পাবেন । আর যেখানে গাড়িতে করে শাহবাগ থেকে উত্তরা যেতে আমাদের কতটা সময় লাগে সেখানে আমরা মাত্র কয়েক মিনিটে উত্তরা পৌঁছে গিয়েছিলাম কোন প্রকার কোন জ্যাম ছাড়াই । মেট্রোরেলে উঠার মজাই আলাদা । বিশেষ করে রাস্তার ধুলাবলি থেকে বাঁচা যায় এবং রাস্তার জ্যাম থেকে বাঁচা যায় । আমাদের ঢাকা বাসির জন্য বিশেষ করে যারা রেগুলার চলাফেরা করে তাদের জন্য মেট্রোরেল আসলে একটা বিরাট বড় সুযোগ । অল্প সময়ে তারা এই এক প্রান্ত থেকে সহজে চলে যেতে পারে । আমরা ঘোরাফেরা করতে গিয়েছিলাম তবে আমাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছিল ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
আমার এখনো সৌভাগ্য হয় নাই, মেট্রোরেলে চড়ার জন্য। আপনার এই স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে তার জন্য অভিনন্দন!আপনারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে হাজী বিরানী খেতে যাবেন। যাক বেশি ভালো কথা হাজী বিরিয়ানিটা খেতে ভীষণ ভালো লাগে। কেবিন গুলা বেশ সুন্দর করে সাজানো গোছানো। সত্য কথা বলতে এগুলা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে বেশ সুবিধা হবে মানুষের জন্য।
আমি অনেকদিন পরে সৌভাগ্য করতে পেরেছি । আপনি একদিন সময় করে উঠে পড়ুন ভালো লাগবে ।
মেট্রো ট্রেনে ওঠার অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে আমার ওঠার খুবই ইচ্ছা তবে এই ইচ্ছাটা কবে পূরণ হবে বলতে পারছি না। কারণ ঢাকা তো যেতে হবে। যাই হোক আজকে আপনার অনুভূতি জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। আসলে প্রত্যেকের ইচ্ছা আছে এই মেট্রোরে এনে একবার হলেও ওঠার।
ঢাকা আসলে অবশ্যই একদিন ইচ্ছাটা পূরণ করে ফেলবেন ।খুবই সহজ ইচ্ছাটা পূরণ করা শুধু মন থাকতে হয় ।
কথায় আছে গাঙ্গে গাঙ্গে দেখা হয় কিন্তু বোনে বোনে দেখা হয় না। আর সেই বোন কে যখন এত কাছে পাওয়া যায় তখন কি আর সময় নষ্ট করা যায়? দারুন কিছু সময় পার করেছেন তিন বোন মিলে। আবার নাকি মেট্রো রেলেও উঠেছেন। খুব সুন্দর করে হাজির বিরিয়ানী খাওয়া সহ সমস্ত সময়টুকু আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সেটাই ভাইবোনরা যখন একসাথে হয় তখন সময় গুলো খুব দ্রুত পার হয়ে যায় অনেক ভালো কাটে ।
মেট্রোরেল চালু হওয়ার পরে বেশ কয়েকবার ঢাকায় গিয়েছি কিন্তু সময় পায়নি ভ্রমণ করার।
পরপর দুদিন মেট্রোরেল ভ্রমণ করেছেন জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
মেট্রোরেল চালু হওয়াতে সময় এবং অর্থ দুটোই বেঁচে যাচ্ছে মানুষের বিশেষ করে সময়ের ব্যাপারটা না বললেই নয়।
আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেও বেশ ভালো লাগলো।
আমারা ঢাকায় থেকে এতদিন পরে উঠলাম ভালো লেগেছে
আপনার সময় সুযোগ হলে অবশ্যই ঘুরে দেখবেন ।
মেট্রোরেলে ওঠার অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন দেখে খুশি হলাম। আমারও খুব ইচ্ছে রয়েছে করার জন্য কিন্তু আমরা তো ঢাকা থেকে অনেক দূরে আর ভবিষ্যতে কবে হবে সেটাও জানি না। তবে আমারও এই রেলে ওঠার চিন্তা রয়েছে। খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো আপু।
কোন না কোনদিন হয়তো ঢাকা আসবেন তখন ঘুরে দেখার চেষ্টা করবেন ভালো লাগবে।