★নিলুফা নামের অসহায় মেয়েটি★
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি । আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কাহিনী নিয়ে এক একটা গল্প তৈরি হয় । সেখান থেকে আমি আশেপাশের একটা কাহিনী নিয়ে একটা গল্প আকারে লিখে ছিলাম । সেই গল্পের আজকে শেষপার্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এসেছি । আমি শেষ করেছিলাম যে নিলুফার হাসবেন্ডের বিদেশে মারা যায় সেখান থেকে তার লাশ দেশে এনে তারপর দাফন করা হয় । এরপর থেকে আমার গল্পটার দ্বিতীয় অংশ শুরু ।
এরপর শুরু হল নিলুফার নতুন জীবন । স্বামী থাকতে তার স্বামীই সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করত তারপরও সংসারে তার কোন মূল্য ছিল না তাকে পরিবারের লোকজন অনেক কষ্ট দিত । যার কারণে নিলুফার স্বামী সন্তান থাকা সত্ত্বেও ওই পরিবার ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিল । কারণ সে জানতো তার স্বামী তার সাথে আছে । এখন তো তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেল , এখন নিলুফা বাবার বাড়িতেও দুটি সন্তান নিয়ে স্থায়ীভাবে যেতে পারছে না । কারণ তার বাবার বাড়ির অবস্থাও তেমন একটা ভালো না । তিনটি মানুষকে লালন পালন করা তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব না । যে কারণে তাকে ও বাড়িতে থেকে যেতে হয়েছিল । এখানে তার অশান্তি আরো বেড়ে গিয়েছিল । সংসারে যাবতীয় কাজকর্ম তাকেই করতে হতো । এদিকে নিলুফার হাতেও কোনো পরিমাণ টাকা-পয়সা থাকতো না ইচ্ছা করলে সে তার সন্তানদেরকে কিছু কিনে দিতে পারতো না । এদিকে তার ইচ্ছা যে সে তার সন্তানদেরকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবে । নিলুফার স্বামী যখন তাদেরকে ছেড়ে চলে যায় তখন তার ছেলেটা ক্লাস সেভেনে পড়ে এবং মেয়েটা সিক্সে পড়ে । অনেক কষ্টের ভিতর নিলুফা তাদের লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে ।
দুইটি সন্তান নিয়ে ও তার বাবার বাড়ির অল্প কিছু সহযোগিতায় ও নিজের কিছু কাজকমের দ্বারা দুটি সন্তান নিয়ে নিলুফা অনেক কষ্টে দিন পার করছিল । তার শাশুড়ির কাছে দেবরদের কাছে কোন টাকা পয়সা চাইলে তারা দিত না । হাতে টাকা থাকলেও তারা তাকে বলতো নাই তোকে কোন খরচ দিত না ।এভাবে করে নিলুফা কষ্ট করে চারটা বছর সেই ফ্যামিলিতে ছিল । তারপর নিলুফা তার সন্তান দুটোকে ওখানে রেখে ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় । এখানে এসে সে বাসা বাড়িতে কাজ নেই এবং সেখান থেকে নিজের জন্য কিছু রেখে টাকা পাঠাতে থাকে তার সন্তানদের খরচের জন্য । দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর পেরিয়ে যায় । সন্তানরা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে থাকে । মেয়েটা এইবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে এবং ছেলেটা ডিগ্রিতে পড়ছে । সাথে কম্পিউটার শিখছে এবং সেখানে থাকে কাজকাম করে সেখান থেকে সে কিছু পায় ।
এভাবে করে সন্তানদের মানুষ করে চলছে । এখন তার একটাই স্বপ্ন মেয়েটাকে একটা ভালো ফ্যামিলিতে বিয়ে দেওয়া আরো একটু শিক্ষিত করা এবং ছেলেটা যাতে লেখাপড়া শিখে কম্পিউটার শিখে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কোন কাজ কাম করে খেতে পারে । আর কিছুদিন গেলে সে তার মেয়েটাকে তার কাছে নিয়ে আসবে । নিজের কাছে রেখে যাতে সে মেয়েটার সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারে । আসলে নিজের স্বামী পাশে না থাকলে তখন আর কেউ পাশে থাকে না । শ্বশুর বাড়ির লোকজন শাশুড়ি সবাইতো এমনিতেই তার আপন বলে ছিলই না তার স্বামী মারা যাওয়ার পর আরো পর হয়ে গিয়েছিল তারা ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
নিলুফা নামের অসহায় মেয়েটির গল্প অসাধারণ ছিল। আমাদের চারপাশে এমন অনেক ঘটনা জড়িয়ে আছে। যারা আসলেই পরিবারের মাঝে কোন সম্মান পায় না। বিশেষ করে যারা বিদেশী স্বামীরা থাকেন বউকে দেশে রেখে যান। কিন্তু রহিমা অবশেষে স্বামী হারা হলেন নির্যাতন আরো বেড়ে গেল। অবশেষে সন্তানদেরকে মানুষ করতে সক্ষম হলেন শুনে অনেক ভালো লেগেছে। গল্পটি দারুন শেয়ার করলেন ধন্যবাদ।
অনেক কষ্ট করে সন্তানগুলোকে মানুষ করে যাচ্ছে এটাই বড় কথা ।
নিলুফার জীবনটা আসলেই অনেক কষ্টের। এরকম অনেক ঘটনা আমাদের আশেপাশে ও সমাজে দেখতে পাওয়া যায়। স্বামী থাকলেও অনেক ফ্যামিলিতে নীলুফার মত মেয়েদের কপালে সুখ জুটে না। আর যদি স্বামী মারা যায় তাহলে তো অনেকের কপালে দুঃখ দুর্দশা আরো বেড়ে যায়।যাইহোক নিলুফা তার ছেলে মেয়েকে এবার মানুষের মত মানুষ করতে নিজেকে অনেক সংগ্রাম করতে হবে। ধন্যবাদ গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিকই বলেছেন এরকম ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ ঘটে থাকে । স্বামী হারা এসব মহিলাদের সত্যি অনেক কষ্ট করে বাঁচতে হয় ।