গল্প:- হঠাৎ শর্ট সার্কিট। ( শেষ পর্ব)
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি চলে এসেছি শর্ট সার্কিট গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্ব নিয়ে। আগের পর্বে অনেক কিছুই লেখা হয়েছে। আজকে আমি মূল বিষয়টা নিয়ে হাজির হলাম। আপনারা আগামী পর্বটি পড়ে আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছেন মন্তব্যের মাধ্যমে। অনেক উৎসাহিত হয়েছি আপনাদের মন্তব্য পেয়ে। তাই আজকে চলে আসলাম গল্পটির দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব নিয়ে। আশা করছি এই পর্বটাও আপনারা খুবই সুন্দর ভাবে পড়বেন এবং আগামী পর্বের মতো ভালো ভালো মন্তব্য করে আমার পাশে থাকবেন। গল্প আমি লিখি আমার কাছে গল্প লিখতে অনেক বেশি ভালো লাগে। তাইতো আর বেশি দেরি করলাম না পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসার জন্য।
আমি হঠাৎ করেই দেখলাম খাম্বা একটি উপরের অংশে আগুন জ্বলতেছে। এই বিষয়টা দেখে আমি অনেক অবাক হয়েছিলাম আবার অনেক ভয়ও পেয়েছিলাম। কিছুই বুঝতে পারতেছিলাম না কি করব। তাই আমার হাজব্যান্ড কে ডাকি। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো আমার কিছু হয়েছে। তাই তিনি এবং আমার পরিবারের সবাই তাড়াতাড়ি করে ছাদের উপরে যায়। এরপর সবাই আমাকে অনেক বার জিজ্ঞেস করেছিল কি হয়েছে। আমার এত ভয় লাগতেছিল যে আমি কিছুই বলতে পারতেছিলাম না। এরপর আমি অনেক কষ্টে বললাম খাম্বায় আগুন লেগে গিয়েছে। এটা শুনে সবাই খাম্বার দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি খাম্বাই আগুন লেগেছে এবং আস্তে আস্তে বেশি হয়ে যাচ্ছে।
তারপরে আমরা কি করবো কিছুই বুঝতে পারতেছিলাম না। যে লাইনটা খাম্বার মধ্যে ছিল ওইটা আমাদের কারেন্টের লাইনের সাথে যুক্ত এবং ওই লাইনটা বাজারের লাইনের ছিল। তাই আমার হাজব্যান্ড আমার দেবরকে তাড়াতাড়ি করে বলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। এরপর আমার দেবর তাড়াতাড়ি করে নিচে গিয়ে মেইন সুইচ বন্ধ করে দেয় যেন আমাদের ঘরের এখানে আগুন না আসে। আসলে খাম্বার মধ্যে আগুন লেগেছিল শর্ট সার্কিট হওয়ার কারণে। তখন আমার হাজব্যান্ড তাড়াতাড়ি করে মেইন অফিসে ফোন দেয় যেখানে এই লাইনগুলোর সংযোগ রয়েছে। প্রথমে ওনারা বলছিলেন এখনও কি আগুন জ্বলতেছে কিনা।
তারপর তিনি বললেন হ্যাঁ এখনও আগুন জ্বলতেছে এবং কি আস্তে আস্তে বেড়ে যাচ্ছে। তারপর ওনারা মেইন লাইন বাজার থেকে বন্ধ করে দেয়। তারপরে হঠাৎ করে কিছুক্ষণ পর সবাই দেখলাম আগুন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আগুন বন্ধ হওয়ার পরে আমরা লাইট দিয়ে ভালো করে দেখেছিলাম। দেখলাম ফেলার যেহেতু কাঠের ছিল তাই উপরের কিছুটা অংশ একেবারে পুড়ে গিয়েছে। অনেক বেশি পুড়ে গিয়েছিল সেই অংশ। আমার হাজব্যান্ড কে অফিসের লোকগুলো বলেছিল ওনারা কিছুক্ষণের মধ্যেই আসতেছে। তাই তিনি বললেন আচ্ছা ঠিক আছে আমরা ছাদের উপরে অপেক্ষা করতেছি। তারপরে আমাদেরকে বলেছিল নিজে চলে আসার জন্য। আমরা সবাই চলে আসি নিচে।
যেহেতু লাইন বন্ধ করে দিয়েছিল তাই কারেন্ট ছিল না ঘরে আমরা এমনিতে বসে ছিলাম। নিচে আসার কিছুক্ষণ পরে আমরা দেখলাম কয়েকজন লোক এসেছে লাইন ঠিক করার জন্য কি হয়েছে তা দেখার জন্য। এরপর আমার হাজব্যান্ড ওনাদেরকে ছাদে নিয়ে গিয়েছিলেন নিচ থেকে যেহেতু দেখা যাবে না ছাদের উপর থেকে খুবই স্পষ্ট দেখা যাবে তাই। ওনারা চার-পাঁচজন এসেছিলেন। তারপরে নিচে এসে একটা লোক খাম্বার উপরে উঠে লাইন ঠিক করে দিয়েছিলেন। ওনারা বলেছিলেন শর্ট সার্কিট হওয়ার কারণে আগুন লেগেছিল। আমাদেরকে বলেছিল সাবধানে থাকার জন্য। এরকম কোন সমস্যা পরবর্তীতে যদি হয় তাহলে সাথে সাথে ওনাদেরকে ফোন দেওয়ার জন্য বলেছিল।
আমাদেরকে ওনারা বলে এই আগুনটা যদি কোন মতে আমাদের লাইনে চলে আসতো তাহলে আমাদের পুরো ঘরে আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ওনারা ঠিক করে দেওয়ার পরে ঘরে আবার কারেন্ট চলে এসেছিল। তারপরে আমার হাসবেন্ড ওনাদেরকে বিদায় দিয়ে ঘরে চলে আসে। আসলে শর্ট সার্কিট অনেক জায়গায় অনেক সময় হয়। শুধু শর্ট সার্কিট না অনেক বিপদ অনেক সময় চলে আসে যা জানা সম্ভব না। তাই আমাদের সচেতন থাকা উচিত। যদিও সবাই অনেকবার বলছিল আমি যদি ছাদের উপরে না যেতাম এবং এই দৃশ্যটা যদি না দেখতাম তাহলে ঘরে আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যাইহোক আমি সবশেষে করব সবাই যেন সাবধানে থাকেন। এই শর্ট সার্কিট থেকে অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমত ছিল আমাদের উপর তাই কিছুই হয়নি। এইসব কিছু বলতে বলতে রাত ১১:০০ বেজে গিয়েছিল। যাইহোক আশা করছি ভালোই লাগবে পড়তে। আপনারা সবাই সাবধানে থাকবেন। এরকম সমস্যা যেন কোথাও না হয় সেই কামনা করি।
( সমাপ্ত )
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
আপু, হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই মুহূর্তে মানুষের মস্তিষ্ক বোধ হয় কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আর তাই হয়তো আপনার চিৎকারে সবাই চলে আসলেও আপনি তাদেরকে কিছুই বলতে পারছিলেন না। ভাগ্যিস আপনি ছাদে গিয়েছিলেন, তা না হলে হয়তো অনেক বড় বিপর্যয় ঘটতে পারতো। শর্ট সার্কিট কিংবা কোন অবাঞ্ছিত দুর্ঘটনা সামনে আসলে আমাদের অবশ্যই মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করা উচিত।
আপনি ঠিক বলেছেন মাথা ঠান্ডা রাখার খুব দরকার কিন্তু মাথা ঠান্ডা রাখা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার শেয়ার করার শর্ট সার্কিটের প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম তবে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে বুঝতে পারলাম আসলে বিপদ বলে আসেনা। এই ধরনের বিপদ থেকে অনেক বড় ধরনের বিপদ হয়ে যেতে পারে আপু। তবে সাবধানে থাকবেন সব সময় দোয়া রইলো সবার জন্য।
তাহলে আমরা সবাই সব সময় সাবধানে থাকা প্রয়োজন। আপনাদের সবার জন্য দোয়া করি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য