আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 75

আসসালামুআলাইকুম

'হাজার দশেক।'
'এহ্মা, এত কম। আমি ভেবেছিলাম অনেক টাকা পায়।' বউদি অবাক।
'সিরিয়ালে অভিনয় করলে তাই পাওয়া যায়। তা ছাড়া বলতে পারো, আমাদের মতো অনার্স গ্রাজুয়েট আর কোন চরিত্রে করলে এই টাকা মাইনে পাব।'
'চাকরি আর এই রোজগার কি এক হল?'
'একই। সম্মানের সঙ্গে কাজ করে মাইনের মতো টাকা পাচ্ছে। এটা কম কথা নয়।'
মা বলল, 'এসব ক'দিন করবে? বিয়ে থা করতে তো হবে ।' 'অভিনয় করলে বিয়ে করতে অসুবিধে কোথায়।' তিতির জিজ্ঞাসা করল।
'যাকে বিয়ে করবে সে মেনে নেবে?' বউদি পাশে এসে দাঁড়াল। 'তেমন মানুষকে ও বিয়ে করবে কেন যে মেনে নেবে না।'
'এ কী বলছ তিতির! তা হলে তো সেই পুরুষমানুষকে স্ত্রীর কথায় ওঠবোস করতে হবে। বউদি বলতে বলতে শব্দ করে হেসে ফেলল।
হঠাৎ খুব রাগ হয়ে গেল তিতিরের। সে শান্ত গলায় বলল, 'মা যে বইটা পড়ছে। সেটা তুমি
কি পড়েছ বউদি।'
সঙ্গে 'বারে, পড়ব না কেন? ও. ওই কথা বলছ? বইতে তো অনেক কিছু লেখা থাকে, জীবনে তার
একটা মেলে! বলুন মা।' বউদি হাসল।

For work I use:

---

মোবাইল	Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার	@taskiaakther
লোকেশন	ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ
ছবি তোলা	বাহিরে

'যদি মিলত তা হলে কি ভাল লাগত না। এই যে আজ বেশিরভাগ মেয়ে বিয়ের পর স্বামীর মুখ চেয়ে বসে থাকে, স্বামী কিছু দিলে তবে খরচ করতে পারে, এটা কি তারা মন থেকে মেনে নিতে পারে? টানাটানির সময় তাদেরও কি মনে হয় না কিছু রোজগার করলে স্বামীর পাশে দাঁড়ানো যেত। তোমরা বোধহয় এসব নিয়ে ভাবনি, কিন্তু আমরা ভাবি। সুবর্ণা যাকে বিয়ে করবে সে ওর কথায় ওঠবোস করবে কেন? বন্ধুর মতো থাকবে।' কথা শেষ করে আর দাঁড়াল না তিতির। নিজের ঘরে চলে এল। বউদি তার থেকে বয়সে বড়জোর বছর পাঁচেকের বড়। কিন্তু কথাবার্তা শুনলে মনে হয়। মা ওঁর থেকে ছোট।
'রাতের খাবারের আগে দাদা ওর ঘরে এল, 'কীরে কী খবর?'
তিতির অবাক হল। দাদা সচরাচর তার ঘরে আসে না। বই রেখে উঠে বসল তিতির, 'এই
তো। তুমি?'
'কী হয়েছে বল তো? তুই হঠাৎ তোর বউদিকে রোজগার করার জন্য ইন্সপায়ার করছিস
কেন?' দাদা চেয়ারে বসল।
'আমি তো বউদিকে কিছু করতে বলিনি।'

For work I use:

---

মোবাইল	Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার	@taskiaakther
লোকেশন	ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ
ছবি তোলা	বাহিরে

'সে কী! ও থমথমে মুখে বসে আছে। এ ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি?' 'হয়েছে। আমার এক বান্ধবী সিরিয়ালে অভিনয় করে। সে কেন বিয়ে করছে না এই নিয়ে মা
প্রশ্ন করেছিল। কথায় কথায় বলেছিলাম, এখন মেয়েদেরও রোজগার করা উচিত। স্বামীকে সাহায্য করা ছাড়াও ওতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।'
'বাপস। তুই দেখছি প্রচুর জ্ঞান অর্জন করেছিস।' দাদা হাসল। 'কেন? আমি যা বলছি তা তোমার পছন্দ হচ্ছে না?'
'না। তা বলছি না। ধর, এদেশে যারা প্রচুর রোজগার করে তাদের স্ত্রীরা কেউ চাকরি করে না। বড়জোর স্বামীর ব্যবসা দেখাশোনা করে। যারা তা করে না তাদের কি আত্মবিশ্বাস নেই?'
'আমি তাদের চিনি না দাদা। যাদের দেখেছি তারা আমাদের মতো সাধারণ ঘরের মানুষ। এই
যে বউদি, ক'দিন আগে একটা মিক্সি কেনার কথা হলে বলল, 'দাঁড়াও, তোমার দাদাকে বলি। অর্থাৎ
তুমি সম্মতি দিলে কেনা হবে নইলে নয়। আমি বউদিকে বলিনি রোজগার করতে। ব্যাপারটা ব্যক্তিগত সমস্যা নয়। বাংলাদেশের যে কোনও মেয়ে যদি রোজগার করত তা হলে প্রয়োজনীয় জিনিসটা সে নিজেই কিনে ফেলতে পারত।'
দাদা উঠে দাঁড়াল, 'যাক গে। তোর বউদি এতসব বোঝে না। কী দরকার ওর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করার।'
'বউদিই কিন্তু প্রসঙ্গ তুলেছিল।'
'কী প্রসঙ্গ?'
'আমার বান্ধবীর সিরিয়ালে অভিনয় করা নিয়ে।'

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।