"আলোর উৎসব দীপাবলি" ঘরে আলোকসজ্জার কিছু সুন্দর মুহূর্ত

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। কিছুদিন আগে দীপাবলি বা কালী পূজা ও ভাই ফোঁটার মধ্যে দিয়ে উৎসবের আমেজ শেষ হয়ে গেল। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ঘরে প্রদীপ দিয়ে আলোকসজ্জা। দীপাবলির দিন প্রতি বাড়ীতে প্রদীপ জ্বালিয়ে সাজানো হয়। আবার ফুলের আলপনা দেওয়া হয়। আমার ছেলেবেলা থেকে ঘর সাজাতে ও আলপনা দিতে ভালো লাগে। তাই আমি প্রতি নিজের মতো করে ঘর সাজাই ও আলপনা দেই। আমি প্রতিবার ঘরে লাইটিং করার জন্য প্রচুর পরিমাণে লাইট কেনা হয়। আমার প্রিয় মানুষটিকে বললে সঙ্গে সঙ্গে এনে দেয়। আসলে ও আমার কোন কাজে বাঁধা দেয় না।তাই একটু বেশি বেশি করে ফেলি।আর আমি নিজের হাতে সবকিছু করতে ভালোবাসি। আপনারা সবাই জানেন দীপাবলির দিন প্রাকৃতিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না। সেদিন বাংলাদেশের উপর দিয়েই চলে গেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। তার হালকা কিছু প্রভাব আমাদের উপর ও পড়েছিলো। তাই সারাদিন মেঘলা, বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া হয়েছিলো। তাই অনেক কিছু করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি। প্রতিবছর প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার বাজি কেনা হয়। ঠিক এবার ও তাই। আর এবার বাজি আমার দেবোর ও স্বাগতা এনেছিলো। আর একবার আমি ও আপনাদের দাদা বাজি কিনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কষ্ঠের কথা আমরা সেদিন ঠিক করে বাজি পোড়াতে পারিনি।

IMG-20221029-WA0030.jpg

IMG-20221029-WA0024.jpg
একবার ভেবেছিলাম দীপাবলিতে একটু রাত করে ঠাকুর দেখতে বেরোব। আপনারা জানেন আমাদের এখানকার কালী পূজা নামকরা হয়।আমাদের এখানে কালী পূজার জন্য বিখ্যাত। তাই কালী পূজার ৫ দিন প্রচন্দ লোখের ভিড় হয়।কিন্তু আবহাওয়া খুবই খারাপ থাকার জন্য বেরোনো বাতিল হয়ে গেলো। তাই ভাবলাম ঘরে আলপনা দেই। আলপনা দেওয়ার অভ্যাসটা আমার ছেলেবেলা থেকে। আগে দুপুরে খেয়েই বসে যেতাম আলপনা দিতে। আমি আলপনা দিতাম আর ভাই দুষ্টুমি করে সেগুলো মুছে দিতো।যাতে করে আমি দুইবার দিতে পারি এবং কষ্ট বেশি হয়। আর আমি তো চিৎকার শুরু করে দিতাম। আজ সেই দিন গুলো খুব মনে পড়ে আলপনা দিতে গেলেই। আমার ভাই প্রচন্ড পিছনে লাগতো আমার। তবে আমি কোনদিন ওকে বকাবকি করতাম না। আজ ও আমি ওকে কিছু বলতে পারিনা হাজার অন্যায় করলেও। থাক সেসব কথা এখন। কিন্তু আমার বাবুর দুষ্টুমির জন্য আলপনা শেষ করতে পারিনি।

IMG_20221024_174612.jpg

IMG_20221024_175118.jpg

IMG_20221024_175516.jpg

IMG_20221024_181252.jpg

IMG_20221024_192421.jpg
তাই আমার এখানেই সমাপ্ত করে দিতে হলো। আর একটু করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু ওই যে দুষ্টু বাবু আছে তো। যাই হোক এবার প্রদীপ সাজিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার সময় দরজা খুললে এত হওয়া আসছিলো যে প্রদীপ ও মোমবাতি গুলো কিছুই জ্বালাতে পারছি না। যতবার জ্বালাচ্ছি ততবারই হওয়া এসে নিভিয়ে দিচ্ছে। পুরো এক ঘন্টা ধরে শুধু এটাই করছি। আমি প্রতিবছর আমাদের ছাদে ও ব্যালকনিতে, সিড়িতে প্রদীপ ও মোমবাতি দিয়ে সাজাই। কিন্তু এবার সবকিছু নষ্ঠ করে দিল।

IMG-20221029-WA0025.jpg

IMG-20221029-WA0029.jpg

IMG-20221029-WA0026.jpg
আমার এতটা রাগ হচ্ছিলো পড়ে রাগ করে ছবি তোলা হয়নি। আমার সারাদিনের কষ্টের কোন মূল্য হলো না। আসলে প্রাকৃতিক দূর্যোগ তো আমাদের হাতে থাকে না। পরে আপনাদের দাদা আমাকে বুঝিয়ে বললো তুমি শুধু আনন্দ করতে পারছো না। এদিকে ঝর বৃষ্টির জন্য কত মানুষের কত ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তারা কিভাবে আছে এখন এগুলো আগে ভাবো তারপর নিজেরটা ভাববে। আসলে মানুষটার এই দিক গুলো আমার খুব ভালো লাগে।ও যেমন আমারটা নিয়ে ভাবে তেমনি পরের টা নিয়ে ও ভাবে। তারপর ও নানান সমস্যার ভিতর দিয়ে গেলেও দীপাবলি অনেক আনন্দ ফুর্তিতে কেটে গেছে। এর পরের দিন থেকে শুরু হয়ে গেল ঠাকুর দেখা।
আজ এই কাল আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Sort:  

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 2 years ago 

আপনার যেমন প্রদীপ জ্বালিয়ে আলপনা এঁকে ঘর সাজাতে ভালো লাগে, আমার কিন্তু এগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে। সামনাসামনি তো কখনো দেখিনি সব সময় টিভিতে দেখেছি। আপনি কত সুন্দর করে আলপনা গুলো আঁকলেন। আর দাদাও আপনার সব আদবার পূরণ করে এটা শুনে আরো ভালো লাগলো। আপনি আলপনা দিলে আপনার ভাই নষ্ট করে ফেলতো এটা শুনে ভালই লাগলো, এটার মধ্যেও এক ধরনের মজা ছিল এগুলো এখন শুধু মিস করা ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন আবার ভাই নষ্ট করছে না তবে ছোট্ট বাচ্চাটা নষ্ট করছে এটা আর এক ধরনের আনন্দ। সত্যিই ভালো লাগলো বৌদি আপনার আলপনা গুলো। তবে ঝড়ের কারণে আপনি প্রদীপ জ্বালাতে পারছেন না বারবার নিভে যাচ্ছে এটা আসলেই দুঃখজনক। কি আর করার প্রকৃতির উপরে তো কারো হাত নাই।

 2 years ago 

হুম বৌদি ঠিক বলেছেন সেদিন আসলে খুবই অবস্থা খারাপ ছিল ৷ বিশেষ করে সকাল থেকে বৃষ্টি সারাদিন এরপর যে বাতাস খুব একটা আনন্দ করতে পারি নি ৷ যা হোক সবই ঈশ্বরের কৃপা এখানে আসলে কারো হাত নেই ৷
তবুও ঘরের মধ্যে যে আলোকসজ্জা করছেন এটাই অনেক বড় ব্যাপার৷ আমরা ও তো ঘরের মধ্যে আলোকসজ্জা ছাড়া বাইরে করতে পারি নি ৷
বৌদি আপনার হাতের আলপনা গুলো সত্যি অনেক সুন্দর ছিল ৷
সর্বোপরি আগামী বছর ভালো ভাবে দীপাবলী পালন করবো এমনটাই প্রত্যাশা ৷

 2 years ago 

জ্বী সেদিন বেশ কঠিন সময় পার করেছিলাম আমরা সবাই, অনেকেই প্রায় 24 ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এর প্রভাবটা আপনাদের ওখানেও পড়েছিলো। মাঝে মাঝে বাড়তি খরচও ভালো লাগে সেটা যদি আনন্দের হয় আর যেহেতু সব কিছু আপনি নিজের হাতে করেন তাই দাদার কাছেও সেটা ভালো লাগে। আলপনাগুলো দারুণ হয়েছে, বাঙালিয়ানার একটা ছোঁয়া ছিলো।

 2 years ago 

আলোর উৎসব দীপাবলী। দীপাবলীর দিন রঙ্গোলি ও আল্পনা দিতে অনেকেই দেখেছি। আপনার আল্পনা ও প্রদীপ গুলো বেশ সুন্দর। সাজিয়েছেনও খুব ভালো ভাবে। তাই দেখতে খুব ভালো লাগে। এবছর খারাপ আবহাওয়ার জন্য প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালাতে খুবই কষ্ট হয়েছে। আমার বেশিরভাগ মোমবাতি হাওয়াতে খুব তাড়াতাড়ি নিভে গেছে।

 2 years ago 

এবারের দীপাবলির মাঝে যে দুর্যোগ গেল এমন টা বিগত কয়েক বছরের মধ্যে মনে হয় দেখিনি। এবার মনে হয় কেউই ঠিক করে প্রদীপ জ্বালাতে পারে নি। তবে দিদিভাই আপনার হাতে করা আলপনা দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম 👌। কি মিষ্টি করে দিতে পারেন! সবাই এই কাজ গুলো পারে না। এক সময় ভাই দুষ্টুমি করতো, আর এখন টিনটিন 😀। তবে যেটুকু যা আয়োজন করেছেন তাতেই অনেক সুন্দর লাগছে। খুব ইচ্ছে আছে আপনাদের ওখানে পূজোর সময় যাব একবার। এত গল্প শুনেছি! সামনে থেকে দেখার ভীষণ ইচ্ছে। দেখা যাক মা কবে কৃপা করেন 🙏🙏🙏🙏

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60704.11
ETH 2452.38
USDT 1.00
SBD 2.62