স্বরচিত নতুন একটি কবিতা " হেমন্তের দিন "

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমার প্রিয় ঋতু নিয়ে একটি কবিতা লিখবো। অনেকের কাছে ঋতুরাজ বসন্ত প্রিয়। বসন্ত আমার ও ভালো লাগে। তবে হেমন্তকাল খুব ভালো লাগে। আসলে সবার ভালো লাগা তো এক না ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। শরতের শ্বেত শুভ্র আকাশ যখনই মলিন হয়ে পড়ে কাশফুল মাটিতে নুয়ে পড়ে। তখনই হেমন্তের েে শুরু হয়। হেমন্ত ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু। শিশির স্নাত ভোরের মধ্য দিয়ে বাংলার কোলের নামে হেমন্ত। কার্তিক ও অগ্রহায়ন এ দুই মাস হেমন্ত।ে এ সময় বাংলার প্রকৃতি কিছুটা ধূসর ও বিবর্ণ থাকে ফলে প্রকৃতির জন্য ভিন্ন রূপে প্রকাশ পায়। গাছের পাতা ঝরতে শুরু করে। ভরে আবছা কুয়াশায় ঢাকা থাকে বাংলা চারিদিক। শিশির ভেজা দূর্বা ঘাস গুলো দেখতে যেন বেশ লাগে। হেমান্তের ছোঁয়ায় প্রকৃতির যেন এক অন্যরূপে সাজে। ভোরের আলোয় বর্ণ ছটায় গাছের পাতা ঝলমলিয়ে ওঠে। গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে মিষ্টি রোদ খেলা করে। এ সময় বলে ঝিলে পদ্মা শালুক দেখা যায়। হেমন্তের প্রকৃতিতে আলো ছায়ার বিচিত্র খেলা থাকে।যা প্রকৃতিকে যেনো অন্য মাত্রা এনে দেয়। গ্রামে না থাকলে এর কোন কিছুই উপভোগ করা যায় না। যাই হোক সে সব কথা রেখে আমরা কবিতায় ফিরে যাই।

IMG_20210315_162955.jpg

হেমন্তের দিন

কুচি ধানের পাতার ডগায় শিশির ভেজা ছুইছে আবেশ,
দূর্বা ঘাসের ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ে শীতের আমেশ।
দুপুর বেলার রোদে আজ গগনে নাইরে ছিরে,
শরৎকালের আকাশ খানিক ভাঙছে মেঘের দুয়ার ঘিরে।
সকাল বেলার পা ধুয়ে দেয় রাতের জমা হাজার নিশি,
সরিষার ক্ষেত কলোই খেতের মাঠ পেরিয়ে আবাদ কৃষি।

নেইকো কোথায় বৃষ্টি ঝরায় ঝরঝরিয়ে মেঘের বারি,
কোথায় থেকে চুপিচুপি শীতের পাটির বিছানা খানি অঝোরে এলো হেমন্তের কুঁড়ি মাঠ পেরিয়ে,
সকাল বেলার রসের পিঠা খাইতে বসি হাত বাড়িয়ে।
হঠাৎ করে বদলে যাওয়ার হিমেল ছোঁয়া বাতাস ছোটে,
বাংলা নতুন করে ডেকে উৎসবের নাম গন্ধ তেরে।

রাতের বেলার চাঁদের হাসি বড় মধুর বেশি,
কানায় কানায় পাখি সুরের নীল আকাশের রং বিলাসী।
ঘুঘু ডাকার টিয়ে ডাকার ভর দুপুরের ক্ষণে ক্ষণে,
হেমন্তকে দেখেছে মাঠ ডাকছে শীতের আগমনে।
খই মুড়ি আর চিড়া খেতে খেজুর গাছের মাথা খুঁড়ে,
মিষ্টি রসে মন ভরে দেয় খেজুর গাছের তৈরি করে।

Sort:  

নেইকো কোথায় বৃষ্টি ঝরায় ঝরঝরিয়ে মেঘের বারি,
কোথায় থেকে চুপিচুপি শীতের পাটির বিছানা খানি অঝোরে এলো হেমন্তের কুঁড়ি মাঠ পেরিয়ে,
সকাল বেলার রসের পিঠা খাইতে বসি হাত বাড়িয়ে।

এই লাইনগুলো পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল বৌদি। যখন গ্রামের বাড়ি ছিলাম তখন চুলোর পাশে বসে থাকতাম আর মা নানা রকম পিঠা পুলী বানিয়ে দিত সকালবেলা। সেই দিনগুলো এখনও মিস করি। তবে চাইলেও সেই সময় বা সে সুন্দর মুহূর্তগুলো আর ফিরে আসবেনা কখনো। খুব সুন্দর লিখেছো তুমি ।

 2 years ago 

রাতের বেলার চাঁদের হাসি বড় মধুর বেশি,
কানায় কানায় পাখি সুরের নীল আকাশের রং বিলাসী।
ঘুঘু ডাকার টিয়ে ডাকার ভর দুপুরের ক্ষণে ক্ষণে,
হেমন্তকে দেখেছে মাঠ ডাকছে শীতের আগমনে।
খই মুড়ি আর চিড়া খেতে খেজুর গাছের মাথা খুঁড়ে,
মিষ্টি রসে মন ভরে দেয় খেজুর গাছের তৈরি করে।

লাইনগুলো পড়ে মনে হলো কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম, মনের কল্পনায় কিছু চেনা দৃশ্য ভেসে উঠলো। মনে হলো বাংলার প্রকৃতির রূপের কিছু চমৎকার মুহুর্ত কবিতার ছন্দে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ

 2 years ago 

হেমন্ত ঋতুর চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন বৌদি। অসাধারণ লেগেছে আপনার লেখাটি পড়ে ।হেমন্ত ঋতু আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগে ।আপনার লেখা কবিতার প্রতিটি লাইনে মনে হল হেমন্ত ঋতুর দারুন চিত্র ফুটে উঠেছে । বেশ ভালো ছিল । ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

একদম সঠিক বলছেন আমারও প্রিয় ঋতু হেমন্তকাল৷ এ সময়ে গ্রামের পরিবেশ এক নতুন রুপ ধারন করে ৷ সকালে শীতের আকাশে সূর্য উকি ৷ বিকেলে এক ধূসর আবরন৷ এর এ সময় গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে নতুন ধান কাটা ৷ আবার পিঠে পুলি খাওয়ার ধুম ৷
সত্যি বলতে আপনার লেখা কবিতাটি অনেক সুন্দর ছিল ৷
ধন্যবাদ

 2 years ago 

শিশির ভেজা ঘাস গুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনি হেমন্তের প্রকৃতি সেজে ওঠে নতুন সাজে। আসলে প্রকৃতির সৌন্দর্য এক এক সময় একেক রূপ ধারণ করে। হয়তো প্রকৃতি তার বিভিন্ন রূপ বিভিন্ন ঋতুতে প্রদর্শন করে। বৌদি আপনার লেখা কবিতা দারুন হয়েছে। কবিতার লাইন গুলো পড়ে মনে হচ্ছিল যেন প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। এক কথায় অসাধারণ হয়েছে বৌদি।

 2 years ago 

কুচি ধানের পাতার ডগায় শিশির ভেজা ছুইছে আবেশ,
দূর্বা ঘাসের ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ে শীতের আমেশ।
দুপুর বেলার রোদে আজ গগনে নাইরে ছিরে,
শরৎকালের আকাশ খানিক ভাঙছে মেঘের দুয়ার ঘিরে।

এইজন্যে হেমন্ত কাল আমারও সবচেয়ে বেশি প্রিয়।আর কিছুদিন পর হয়তো ধানকাটা শুরু হবে সাথে শুরু হবে উৎসবের ঘনঘটা।যাইহোক দিদি মনের কথাগুলোই কবিতায় তুলে ধরণেছেন,ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কি যে ভালো লাগলো কবিতাটা বৌদি। এখন হেমন্তকাল চলছে বলেই যেনো আরো রিলেট করতে পারলাম।যদিও শীত আমার প্রিয় ঋতু তবে হেমন্ত বি বসন্তও ভালো লাগে।

 2 years ago 

হেমন্তের দিনে কবিতাটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনি খুবই সুন্দর কবিতা লিখেছেন বৌদি। আসলে আপনার কবিতা পড়ে আমার অনেক ভালো লাগে, আজকের কবিতাটি অসাধারণ ছিল।

 2 years ago 

এই দেশে রূপ বৈচিত্রের কোন শেষ নেই ।এক একটি ঋতু একেক রকম সৌন্দর্য নিয়ে আগমন করে তেমনি সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য আজ আপনি হেমন্তের একটি কবিতা লিখেছেন আমাদের মাঝে ।কবিতার প্রতিটি লাইনে হেমন্তের অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। খুবই ভালো লাগলো আপনার কবিতাটি পড়ে।

 2 years ago 

এতো সুন্দর করে কখনোই হেমন্তকে অনুভব করা হয়নি।এতো মধুরভাবে যে কি করে ভাবতে পারেন আর লিখতে পারেন বৌদি।আপনি সত্যি অনেক ভালো কবিতা লিখেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64029.44
ETH 2756.43
USDT 1.00
SBD 2.65