"আমার বাংলা ব্লগ "প্রতিযোগিতা -৩৩ ।। "টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ "
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে নতুন একটি পোস্টে শুভেচ্ছা জানাই।বর্তমান এই খড় চৈত্র মাসে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া। আবার মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। এরই মাঝে ঘরে বসে নানা ধরনের চপ খেতে খুবই ভালো লাগে। এরই ভিতর রমজান মাস উপলক্ষে "আমার বাংলা ব্লগ " অনেক মজার একটি আয়োজন করেছে ইউনিক চপের রেসিপি। প্রতিবারই "আমার বাংলা ব্লগ" বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। আর এসব প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন কিছু শিখতে পারি। তাই প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই সকল এডমিন আপু ও ভাইয়াদের। বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের সকলের প্রিয় হাফিজ ভাইয়াকে যিনি এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার জন্য।
এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা অনেক নতুন চপ তৈরি করা শিখতে পারবো। আবার এই রমজান মাসে বাড়ীতে বা রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের চপ তৈরি করতে দেখা যায়। তেলে ভাজা বা চপ জাতীয় কোন খাবার দেখলেই সবারই একটু আধটু লোভ হয়। তাই মাঝে মধ্যে বাড়িতে অনেক সময় সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে চপ ও পকোড়া তৈরি করা হয়। আমি বাড়ীতে নিজে প্রায়ই চপ তৈরি করি। আপনারা অনেকেই জানেন ঝাল ঝাল খাবার খেতে খুবই পছন্দ আমার প্রিয় মানুষটি। তাই তার জন্য মাঝে মধ্যে বাড়িতে তৈরি করতে হয়। বাইরের খাবার আমরা খেতে না পারলে খাই না।তাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো "টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ"। এমন একটি চপ তৈরি করার পিছনে ও একটা কারণ আছে। আমি কোন কিছু করার আগে মাথায় আছে আমার পরিবার ও আমার প্রিয় মানুষ গুলো। আমার প্রিয় মানুষ গুলো কে কোন জিনিস পছন্দ করে এটাই আমি আগে চিন্তা করি।আর আপনারা তো জানেন আমার প্রিয় মানুষটি তেঁতুল খেতে খুবই পছন্দ করে। আর সে সব সময় নতুন নতুন খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে।তাই শুধু তার কথা চিন্তা করেই এমন একটি চপ তৈরি করা। তবে আমি এসব খাবার খুব একটা পছন্দ করি না।
শুনেছি রমজান মাসে প্রায়ই বাড়ীতে মজার মজার চপ তৈরি করে। ইফতারের সময় নাকি বিভিন্ন ধরনের চপ , পকোড়া ও বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। চপ ছাড়া নাকি ইফতারের কথা ভাবাই যায়না। তাই আমি ও মাঝে মধ্যে তৈরি করি। এটি তৈরি করার আগে ভীষণ ভয় লাগছিলো যে খেতে জানি কেমন হবে। তাই ভয়ে ভয়ে তৈরি করেছিলাম। এক পিস তৈরি করে আমার প্রিয় মানুষটিকে টেস্ট করতে দিয়েছিলাম। যে আসলে কেমন হয়েছে খেতে।খেয়ে বলে খেতে অনেক মজা হয়েছে নাকি। পরে আমার ভাই খেয়ে দিদি সত্যি অনেক মজার হয়েছে। সে চপ তৈরি করে ছবি তোলার আগেই প্রায় সব খেয়ে ফেলেছিলো। পরে আমার নিজের খাওয়ার জন্য একটাও ছিলো না। তাহলে বুঝতে পারছেন এটা কতটা স্বাদের ছিলো। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা মূল রেসিপিতে যাই।
উপকরণ:
১.আলু - ৪ টি
২.তেঁতুলের কাথ - হাপ্ কাপ
৩.মাংসের কিমা - ১ কাপ
৪.বেসন -১ কাপ
৫. লবণ -২ চামচ
৬. হলুদ - ২ চামচ
৭. জিরা গুঁড়া -১ চামচ
৮.শুকনো মরিচ গুঁড়া - ২ চামচ
৯. কালো গোল মরিচের গুঁড়া -১ চামচ
১০.কাঁচা মরিচ কুচি - পরিমান মতো
১১.অলিভ ওয়েল - ২ কাপ
১২.গোটা জিরা - হাপ্ চামচ
আলু
তেঁতুলের ক্বাথ
মাংসের কিমা
বেসন
লবণ, হলুদ, জিরা গুড়া, শুকনো মরিচ গুঁড়া ও গোটা জিরা
তেল
গোল মরিচের গুঁড়া ও কাঁচা মরিচ কুচি
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রথমে আলু গুলো কেটে নিয়ে কড়াইতে পরিমান মতো জল সেদ্ধ বসিয়ে দিলাম। তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হওয়ার জন্য আলু কেটে নিয়েছি। সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে নিলাম। এবার আলু থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিলাম।
২. এবার সেদ্ধ আলু মেখে নিতে হবে।
৩. চুলার উপর একটা ফ্রাই প্যান বসিয়ে দিতে হবে। ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে দিতে হবে।তেল গরম হয়ে গেলে গোটা জিরা দিতে হবে। জিরা ভাজা হলে হাপ্ কাপ ক্বাথ দিতে হবে। এবার একে একে পরিমান মতো লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া, শুকনো মরিচ গুঁড়া ও কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে জ্বাল দিয়ে জল শুকিয়ে নিতে হবে। তেঁতুল ক্বাথের জল শুকিয়ে গেলে সেদ্ধ আলু দিয়ে দিতে হবে।
৪. এবার আলুর সাথে মাংসের কিমা দিয়ে কিছুক্ষন মিডিয়াম আঁচে রান্না করে নিতে হবে। রান্না করতে করতে যখন ফ্রাই প্যানের থেকে আলু ছেড়ে দেবে সেই সময় চুলার আঁচ বন্ধ করে নামিয়ে নিতে হবে।
৫.এরপর গরম পুর ঠান্ডা হয়ে গেলে হাত দিয়ে ছোট ছোট চপের আকারের বানিয়ে নিতে হবে।
৬.এবার বেসনের বেটার গুলে নিতে হবে। একটা পাত্রে পরিমান মতো বেসন নিতে হবে। বেসনের ভিতর একে একে পরিমান মতো লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া, ও শুকনো মরিচ গুঁড়া দিয়ে অল্প অল্প জল দিয়ে হালকা গাড় করে গুলে নিতে হবে।
৭.এবার চুলার উপর কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াইতে একটু বেশি পরিমাণে তেল দিয়ে দিতে হবে।তেল গরম হয়ে গেলে। বেটারে তেতুঁলের চপ একটা একটা করে চুবিয়ে গরম তেলে ছেড়ে দিতে হবে। এবার মিডিয়াম আঁচে চপ গুলো বাদামি রংয়ের ভেজে নিতে হবে।
৮.চপ গুলো ভাজা হয়ে গেলে তেল থেকে উঠিয়ে নিতে হবে। এরপর কিছু পেঁয়াজ ও গাজর কেটে একটা টমেটো দিয়ে গোলাপ ফুল বানিয়ে দিলাম। বাবু খাওয়ার জন্য বিরক্ত করছিলো তাই দ্রুত সাজিয়ে দিলাম।
তাড়াহুড়োর জন্য খুব একটা ভালো সাজাতে পারিনি। টিনটিন বাবু এই সব খাবার খুব পছন্দ করে।
আজ এই পর্যন্তই কাল আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।আশা করি, এই রেসিপিটি আপনাদের ভালো লাগবে।
টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ রেসিপি দারুন হয়েছে। নতুন একটি রেসিপি শিখতে পারলাম। ইফতারিতে এই রেসিপি খেতে সত্যি ভালো লাগবে। একদিন অবশ্যই তৈরি করতে হবে। বৌদি আপনি অনেক পরিশ্রম করে এই রেসিপিটি তৈরি করেছেন এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে সত্যিই ভালো লাগলো। দারুন লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ওয়াও বৌদি এটা কি দেখালেন দেখেইতো জিভে জল আটকে রাখতে পারছিনা।চপ আমার কাছে অনেক ভালো লাগে ।কিন্তু এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এত ধরনের ভিন্ন ভিন্ন চপ দেখে মাথা ঘুরে যাচ্ছে ।বুঝে উঠতে পারছি না পুরো ৩০ রমজান কি একেকবার একেক চপ বানিয়ে খাওয়াবো পরিবারের সবাইকে। আপনার চপ গুলো তেঁতুল দেওয়ার কারণে কিছুটা টক ঝাল সব একসাথে দারুন হবে কিন্তু। আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপিটি ধন্যবাদ আপনাকে।
দিদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে অনেক ভাল লাগলো। আপনি মজার চপের রেসিপি নিয়ে এলেন।ঝাল,টক মাংসের চপ।ঝাল আর টক দুটোই খুব ভাল লাগে খেতে।একটি খাবারে দুটোর স্বাদ পাওয়া গেলে তো অনেক বেশি মজার হয়।আপনার বানানো চপ বেশ লোভনীয় লাগছে। খেতেও বেশ মজার হবে বেশ বুঝতে পারছি। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি।একদিন করব বাসায় অবশ্যই।শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
জাস্ট অসাধারণ। সেদিন দাদা বলেছিলেন আপনি তেতুলের চপ করেছিলেন,অন্য কেউ করলে কপিরাইট ক্লেইম করে দেবে, হাহাহা।কিন্তু আমার সেদিনই ইচ্ছে করছিলো খেতে,কারণ তেতুলের কথা শুনলেই মুখে পানি এসে যায়।এটাতো মাংশ আর তেতুলের টক ঝাল চপ।অসাধারণ বৌদি,আপনার গুণের প্রশংসা যতই করি কম হয়ে যাবে।দাদা তো ইচ্ছেমতই খেয়েছে মনে হয়।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি বৌদি। টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ দেখে জিভে জল চলে এলো বৌদি। দেখেই বুঝা যাচ্ছে চপ গুলো খেতে খুব সুস্বাদু হয়েছে। এই রেসিপিটা রমজানের সময় একদিন ট্রাই করে দেখব। রেসিপির উপস্থাপনা ও পরিবেশনাও দুর্দান্ত হয়েছে। এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হুম দেখেই বুঝা যাচ্ছে সেই স্বাদের হয়েছে। সত্যি বলতে বেশ কিছুটা চাপে আছি একটা বিষয় নিয়ে, তাই কয়েক দিন যাবত আপনার পোষ্টগুলো চেক করা হচ্ছে না, মাত্র দাদাকে জিজ্ঞেস করে তারপর চেক করলাম। ধন্যবাদ অংশগ্রহণ করার জন্য বৌদি।
জি বৌদি রমজান মাসে চপ তৈরি করা হয় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। সারাদিন রোজায় থেকে ইফতারিতে চপ খেলে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। বৌদি আপনার এই টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ তৈরীর প্রক্রিয়াটি পড়ে আমি সম্পূর্ণরূপে মুগ্ধ হয়ে গেছি। খুবই ইউনিক ভাবে আপনি চপ তৈরি করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আপনার তৈরি টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ গুলো তেলে ভাজতে দিয়ে কিছুটা পোড়া পোড়া হয়ে গেছে। যাহোক অতি চমৎকার এবং খুবই লোভনীয় একটি চপ এর রেসিপি শেয়ার করার জন্য প্রিয় বৌদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দিদি ধারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। টক ঝাল মাংসের তেঁতুলের চপ । তেঁতুলের চপ কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটা ধারুন হয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করার জন্য শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ দিদি।