বাস্তবিক গল্প: শাহানার জীবনে কষ্টের শেষ নেই।(২য় পর্ব)
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।
গত সপ্তাহে যে গল্প শেয়ার করেছিলাম তার ২য় পর্ব নিয়ে চলে আসলাম। গত পর্বে বলেছিলাম শাহানার স্বামীর সাথে তার ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর সে বেশ কিছু দিন বাড়িতে থাকে। তারপর শহরে একটি গার্মেন্টসে এক বছর চাকরি করে। এক বছর পর একজন ঘটক শাহানার বাবা কে বলে একজন ভালো ছেলে আছে তোমার মেয়েকে বিয়ে দিবা। তখন শাহানার বাবা বলে ঠিক আছে ছেলেকে নিয়ে আসেন। এরপর একদিন বিকাল বেলা তারা শাহানাকে দেখতে আসে। যেহেতু শাহানা দেখতে খুব সুন্দর ছিল সেজন্য সাথে সাথেই তাদের পছন্দ হয়ে যায়।
এর মাঝে আরেকটি কথা বলি ডিভোর্সের পর শাহানার ফুফাতো ভাইয়ার সাথে একটা সম্পর্ক হয়। কিন্তু শাহানার ফুফু এই সম্পর্কে রাজি ছিল না। তারজন্য শাহানার ফুফাতো ভাইকে অন্য জায়গায় বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসে। যাই হোক যখন শাহানাকে দেখে ছেলে পক্ষের পছন্দ হয়ে যায় তখন তারা বলে রাতের বেলাই বিয়ে হবে। কিন্তু শাহানার বাবা বলে এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সম্ভব। ছেলে সম্পর্কে কিছু না জেনে কিভাবে বিয়ে দেবো।
এরপর তারা বলে ঠিক আছে আপনারা ছেলের সম্পর্কে খুঁজ নেন আর আমরা বিয়ের আয়োজন করি। তবে আমরা বেশি লোকজন আসবো না। ছয় থেকে সাত জন এসে বিয়ে পড়িয়ে বউ নিয়ে যাবো। এরপর তারা খুঁজ নিয়ে জানতে পারে ছেলে অনেক বছর বিদেশে থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসেছে। এছাড়া ছেলে আগে একটি বিয়ে করেছিল আর সেই ঘরের একটি মেয়ে রয়েছে। তবে মেয়েটি খুব ছোট আর ছেলেরা দুই ভাই আর পাঁচ বোন। এর মধ্যে তিন বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
প্রথম বউ ভালো ছিল না আর তাদের বাড়ির একজনের সাথে সম্পর্ক ছিল। এসবের জন্য তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। ছেলের বাড়ি শাহানাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে নয়। তাদের বাড়িতে যেতে দশ মিনিটের মতো সময় লাগে। যেহেতু সম মিলিয়ে আশেপাশের মানুষ তাদের ভালো বলেছে তাই শাহানার পরিবার বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায়। এরপর যেদিন দেখতে এসেছিল সেদিন রাতেই তাদের বিয়ে হয়। এরপর শাহানাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
যেহেতু ছেলের বাড়ির অবস্থা ভালো ছিল তাই তাদের ভালোই দিন যাচ্ছিল। যেহেতু শাহানার মা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল আর এখন সেও তার মতো এমন একটি মেয়েকে খুঁজে পেলো। তখন শাহানা চিন্তা করলো আমি তাকে কখনো কষ্ট পেতে দিবো না। আমি সবসময় নিজের মেয়ের মতো আদর করবো। আমি যেই কষ্টে বড় হয়েছি সেই কষ্ট তাকে কখনো পেতে দিবো না। কিন্তু কথায় আছে না "নাড়ী ছেড়া ধন রক্তের বাঁধন"। সেই মেয়েটি তাকে আপন করে নিতে পারে নি।
শাহানার স্বামী তাকে রেখে আবার বিদেশে চলে যায়। এরপর বেশ ভালোই চলে তাদের দিন কাল। কিন্তু শাহানার সংসারে শাহানার কোনো ভূমিকা ছিল না। তাদের সম্পূর্ণ সংসার চালাতো তার তৃতীয় ননদ। সে খুবই বুদ্ধিমতী ছিল আর শাহানার স্বামী তার একাউন্টে সব টাকা পাঠাতো। শাহানার কিছু দরকার হলে ননদের কাছে হাত পেতে নিতে হতো। তারপরও শাহানা খুশি ছিল। এরপর পাঁচ মাস কেটে যায় আর শাহানার স্বামী দেশে এসে শাহানার বাবা কে বলে তখন তো চুপচাপ বিয়ে করতে হয়েছে কাউকে জানাতে পারিনি তবে এখন বড় অনুষ্ঠান করে আবার শাহানাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো।
আপনার কোনো খরচ করতে হবে না যা টাকা লাগে আমি দিবো। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারবেন না। এই কথা শুনে সবাই ভাবলো জামাই খুবই ভালো। তখন বড় অনুষ্ঠান করে শাহানাকে আবার উঠিয়ে নেওয়া হলো। এরপর তাদের খুব ভালো সময় কাটতে থাকে। শাহানার স্বামী পাঁচ মাসের ছুটি নিয়ে এসেছিল আর সময় শেষ হওয়াতে আবারও শাহানাকে রেখে বিদেশ চলে যায়। এরপরেই শুরু হয় শাহানার নতুন যুদ্ধ।
সেই যুদ্ধে শাহানা জয়ী হতে পারলো নাকি দুঃখের সাগরে ভেসে যায় তা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। কথায় আছে তাড়াহুড়োর ফল তেতো হয়। দেখা যাক শাহানার বিয়ে আবারও এভাবে দেওয়াতে শাহানার বাবা ভুল করেছে নাকি ঠিক করেছে। কপালে যদি খারাপ লেখা থাকে তাহলে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে হোক আর বাবা মায়ের পছন্দ মতো বিয়ে হোক দু'টোই খারাপ হবে। যাই হোক আজ অনেক গল্প করেছি আর নয়। আবার দেখা হবে পরবর্তী পর্বের মাধ্যমে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
আসলে এটা খুব খারাপ লাগলো কারণ হচ্ছে ননদের কাছে সবসময় টাকা পাঠায় বউকে রেখে ! এমন ঘটনা আসলেই খুব দেখা যায় আপু । আপনার গল্পের প্রেক্ষাপট আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । দেখা যাক সাহানার সামনে নতুন কি যুদ্ধ অপেক্ষা করছে । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
হয়তো শুনতে খারাপ লাগে কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ মেয়ের সাথে এমনি হচ্ছে তারজন্য তাদের সংসার ভেঙ্গে যায়। ধন্যবাদ।
শাহানার জন্য সবচেয়ে ভালো হতো, যদি তার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে হতো। কিন্তু তার ফুফুর জন্য সেটা সম্ভব হয়নি। এতো তাড়াহুড়া করে শাহানার দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি। শাহানার দ্বিতীয় স্বামী ভালো হলে কি হবে, সে তো বিদেশে থাকে। তার ননদ এবং তার স্বামীর মেয়ের জন্য মনে হচ্ছে শাহানার কপালে দুঃখ আছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বে আশা করি সবকিছু জানতে পারবো।