শখের পোষা বিড়াল হারানোর বেদনা

আজ আবারও নতুন ব্লগ নিয়ে চলে এসেছি। আমরা শখের বসে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি পোষী। যখন অনেক বছর তাদের আদর যত্ন দিয়ে বড় করে তুলা হয় তখন তাদের প্রতি আলাদা একটা মায়া কাজ করে। সেটা যেকোনো পশু পাখি ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। ২০১৯ সালে আমার ছোট ভাইয়ার শখ হয় বিড়াল পালার। এরপর মা যে বাসায় ছিল সেই বাসার দু'তালায় একজন মহিলা ছিলেন যিনি বিড়াল পোষে। সেই আন্টির সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। তখন মা উনাকে একটা বিড়ালের বাচ্চা দিতে বলে। তখন আন্টির কাছ থেকে সাদা কালার দেখে একটা বাচ্চা আনা হয়। সেই থেকে আমার মা আর ভাই বিড়াল পালা শুরু করে।

এরপর তারা এই বাচ্চা কে অনেক আদর যত্নে বড় করে। বিড়ালের জন্য আলাদা মাছ মাংস সহ সব ধরনের খাবার আনা হতো। এভাবেই ছোট্ট বিড়ালের বাচ্চা বড় হয়ে উঠে। এমন কি এতটাই পোষা প্রাণীতে পরিণত হয় যে তার সামনে যদি খাবার রান্না করে রেখে দেয় তারপরও মুখ দিবে না। এরপর এই বিড়ালের চারটি বাচ্চা হয়। কিন্তু এতগুলো কি করবে আর তারা যেহেতু বিড়াল পালে সেজন্য বাহিরে ফেলে আসতেও কষ্ট হয়। এরপর চিন্তা করলো একটু বড় হলে চিন্তা করা যাবে। তারপর যখন চারটি বাচ্চা বড় হয়ে উঠলো তখন ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। এরপর দুটি মেয়ে এসে তিনটি বাচ্চা নিয়ে যায়। তারপর থেকে বড় বিড়াল আর একটি বাচ্চা পালতে থাকে।

সোর্স

এভাবেই বিড়াল কিছুদিন পর পর বংশবিস্তার করতে থাকে। কিন্ত কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা এসব পছন্দ করে না। মা যেই ফ্ল্যাটে ছিল তার সামনের ফ্ল্যাটে একজন খারাপ মহিলা ছিল। যিনি আমাদের বিড়াল একদমই সহ্য করতে পারতো না। তারা বলেছে যদি কখনও সুযোগ পায় তাহলে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। একদিন মা বাড়ি গিয়েছে আর আমি মায়ের বাসায় ছিলাম। বিড়ালদের খাবার দিতে হয় বলে থাকতে হতো। কিন্তু হঠাৎ করে বিড়াল বিকালে যে বাসা থেকে বের হয়েছে এরপর আর আসেনি। তখন দু'টো বিড়াল ছিল আর একটা হারিয়ে যাওয়াতে মা খুব কষ্ট পায়।

এরপর থেকে মা বাড়ি গেলে বিড়াল সাথে করে নিয়ে যায়। এভাবেই সময় যেতে থাকে। যেই বিড়াল হারিয়ে গিয়েছিল সেটা মা বিড়াল ছিল আর খুব ভালো ছিল। কিন্তু বাচ্চা বিড়ালও ভালো তবে মা বিড়ালের মতো নয়। এই বিড়াল গ্ৰামের বাড়িতে নিয়ে মানুষের মুরগির বাচ্চা ধরে খেয়ে ফেলে। এটা নিয়ে বাড়ির সবাই খুব রাগ হতো। বিড়াল মুরগি খায় বলে মা সবসময় খেয়াল রাখতো। তারপরও সুযোগ পেলে মুরগি ধরে নিয়ে আসতো। কিন্তু কিছুদিন আগে রাতের বেলা মা যখন বিছানা ঝাড়ু দেওয়ার জন্য ঝাড়ু বের করলো, তখন বিড়াল ভয় পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

এরপর থেকে বিড়াল আর বাড়িতে আসেনি। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে মা আর ভাইয়া বাড়ির আশেপাশে সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু কোথাও খুঁজে পায়নি। আমার মা বিড়াল হারিয়ে যাওয়াতে খুব কষ্ট পেয়েছেন। তার শখের জিনিস হারিয়ে গিয়েছে। প্রায় ১০ দিন হয়ে গিয়েছে, তারপর আমার মা এখানে ওখানে বিড়াল কে খুঁজে বেড়ায়। পোষা প্রাণী হারিয়ে গেলে যারা পশুপাখি পোষে তারাই একমাত্র বলতে পারে কেমন লাগে। মা বারবার বলে হারিয়ে যায়নি কেউ হয়তো মেরে ফেলেছে,নয়তো ফিরে আসতো। যাই হোক আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টের মাধ্যমে।

আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।