জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া এক নারীর গল্প(পর্ব-১)
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।
আজ আবারও নতুন আরেকটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। গল্প পড়তে যেমন ভালো লাগে তেমনি লিখতেও ভালো। তারজন্য মাঝে মাঝেই গল্প নিয়ে হাজির হই। এমন কিছু গল্প রয়েছে যেগুলো অনেক সময় বাস্তব থেকে নেওয়া হয়। মানুষের জীবন কতইনা কঠিন। এই এক জীবনে যেমন সুখ থাকে তেমনি দুঃখও থাকে। সুখ আর দুঃখ মিলেই মানুষের জীবন। আপনারা কখনো কি শুনেছেন কারো জীবনে শুধু সুখ রয়েছে দুঃখ নেই কিংবা দুঃখ রয়েছে কিন্তু সুখ নেই। সৃষ্টিকর্তা কখনো একটি জিনিস দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করেনি। আজ আমি তেমনি এক নারীর গল্প শেয়ার করবো। যার জীবনে সুখ দুঃখ দু'টোই ছিল কিন্তু তারপরও সে হেরে গিয়েছে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
আজকের গল্প যাকে নিয়ে লেখা তার নাম তমা। সে খুবই মিষ্টি একটি মেয়ে। তার বাবা একজন কৃষক। তাদের সুখী পরিবার। সংসারে একটু অভাব থাকলেও তারা খেয়ে পড়ে খুব ভালোই দিন যাপন করছে। তমা তাদের একমাত্র সন্তান। তমার বাব- মায়ের বিয়ের প্রায় পনেরো বছর পর জন্ম হয়েছে। তাই তারা তমাকে খুব ভালোবাসতো। কখনো চোখের আড়াল হতে দিতো না। এভাবে দিন যেতে থাকে আর তমা বড় হতে থাকে।
তমা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার সুন্দর ব্যবহার। সে কখনো কাউকে কষ্ট দেয় না। তমা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আবার একটু পর্দায় থাকে। সে কখনো কারো সামনে যায় না আর বাবা মাকে খুব সম্মান করে। তমা এখন ক্লাস নাইনে পড়ে। একদিন স্কুল থেকে আসার পথে একজন লোক তমাকে দেখে খুব পছন্দ করে। তখন সেই লোকটি তার ছেলের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তমার বাবা মায়ের কাছে আসে।
লোকটির অবস্থা ভালো। সে শহরে থাকে আর তার দুই ছেলে। লোকটি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসলে তমার বাবা বলেন ছেলেকে নিয়ে আসেন আমরাও দেখি ছেলেও মেয়েকে দেখুক তাহলে খুব ভালো হবে। তখন ছেলের বাবা বলে সমস্যা নেই আমি যা বলি আমার ছেলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। এরপর লোকটির কথায় তমার বাবা মা রাজি হয়ে যায়। তমার বাবা মা খুবই সহজ সরল ছিল তাই সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলে। এদিকে লোকটি বলে আমার ছেলে ব্যবসার কাজে বাহিরে আছে আর আসতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।
আমরা চাই মোবাইলে বিয়ে পরিয়ে বউমাকে বাড়ি নিয়ে যেতে। লোকটি তার অন্য ছেলে আর বউকে নিয়ে আসে। তমার বাবা মা যার সাথে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে তাকে ভিডিও কলে দেখেছে আর দেখতেও খুব সুন্দর। এরপর বিয়ের সব কিছু সম্পূর্ণ হলো আর তারা তমাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিয়ে যায়। তমার তার বাবা মা আর গ্ৰাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে এই কথা মনে হতেই খুব কান্না করে। যাই হোক তারা বিকালে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। বাসায় যেতে যেতে প্রায় রাত নয়টা বেজে যায়।
এরপর যখন তমা শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করে তখন সে তার স্বামীকে দেখে আশ্চর্য হয়ে যায়। আপনারাও শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। তমা যাকে বিয়ে করেছে সে পঙ্গু ছিল আর এজন্য তাকে বিয়ে করাতে পারে না। সেজন্য তমার বাবাকে মিথ্যে বলে নিয়ে আসে। যখন তমা সব কিছু জানতে পারে তখন সে খুব কান্না করে। তখন তার শ্বশুর শাশুড়ি তমাকে হাত জোর করে বলে বউমা আমার ছেলেকে একা রেখে যেওনা। আমরা জানি তুমি খুবই ভালো মেয়ে তারজন্যই তোমাকে বউ করে নিয়ে এসেছি।
এরপর তমা ভাগ্যের লিখন বলে মেনে নেয়। এরপর যখন তমার বাবা মা তাকে দেখতে আসে তারা এই ঘটনা জেনে খুব কষ্ট পায় আর তমাকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তমা তার বাবা মা কে বলে মেয়েদের জীবনে একবারই বিয়ে হয়। এখন আমি আর আমার স্বামীকে ছেড়ে যেতে পারবো না। তোমরা আমার জন্য দোয়া করো যেন ভালো ভাবে সংসার করতে পারি। এরপর থেকে তমার জীবনে নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়।
আমার গল্পের প্রথম পর্ব এখানেই শেষ করলাম। এরপর তমার জীবনের যুদ্ধ কেমন ছিল জানতে হলে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। আজ এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
এখন যত দিন যাচ্ছে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ের প্রবণতা বেড়ে চলেছে, কিন্তু অনেক সময় বাবা-মা ভুল করে থাকে। এভাবে বিয়ে দিয়ে তার মেয়ের ভবিষ্যত নষ্ট করে ফেলছে অনেক ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ দেখা যায় বিদেশি বা দূরে থাকা ছেলেদের সাথে এভাবে বিয়ে দেয়ার নামে অনেককে প্রতারিত হচ্ছে। তবে তমার জীবনটা সুন্দরভাবে গড়ে উঠেছিল হয়তো আজকের এই বিষয়টা তার জন্য জীবন একটি এক্সিডেন্ট বয়ে আনছে। পরবর্তী পর্বের বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ ভাইয়া পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকেন। ধন্যবাদ।
আসলে শেষটা খুবই খারাপ ছিল। এইভাবে মিথ্যা কথা বলে একটি সম্পর্ক তৈরি করা যেটা আমি খুবই সমর্থন করি না। পৃথিবীতে কেউই সমর্থন করবে না। এই ধরনের কাজকে ধিক্কার জানাই। মেয়েটির স্বভাব চরিত্র সব দিক দিয়ে ভালো ছিল। অন্য আরেকটি জায়গায় ভালো পরিবেশে বিয়ে হত। সত্যি খারাপ লাগলো এটা ভাগ্যের মেনে নেয়া নয় একটা ভাগ্যকে নষ্ট করে দেওয়া।
কিন্তু ভাইয়া এই কাজগুলো ঘটে যাচ্ছে নিষ্পাপ মেয়েদের সাথে। দেখা যাক কি হয়। ধন্যবাদ।
একজন তমার জীবন কাহিনী নিয়ে লেখা গল্পটি বেশ গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছেন। তবে গল্পটি পড়ে আমার কাছে যা মনে হল তাতে তমার জীবনে সামনে ঘোর অন্ধকার নেমে আসছে। এখানে তমার পিতা-মাতার আর একটু দেখে শুনে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। শেষ পর্যন্ত কিভাবে এগিয়ে চলে তমার জীবন সেটাই দেখার বিষয়।
আশা করি সামনের পর্বে সবকিছু বোঝা যাবে। ধন্যবাদ আপু আপনার গল্পের প্রথম পর্ব উপস্থাপন করার জন্য।
তমার জীবনে সামনে কোন যুদ্ধ অপেক্ষা করছে দেখা যাক। ধন্যবাদ।
সত্যি সব মানুষের জীবনে সুখ দুঃখ দুটোই রয়েছে। জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া এক নারীর গল্পের প্রথম পর্ব আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তবে শেষের দিকটা পড়ে খুব কষ্ট লেগেছে তমার জন্য। তার শশুর শাশুড়ি মিথ্যা কথা বলেছিল বিয়ের আগে। তমার স্বামী ছিল পঙ্গু, যার কারণে তাকে কেউ বিয়ে করছিল না। যাইহোক সবশেষে তমা তার ভাগ্যের লিখন মেনে নিয়েছে এখন তার জীবনে কোন যুদ্ধে সে নামে, এটাই দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
হ্যাঁ ভাইয়া তমার ভাগ্যে কি লেখা রয়েছে দেখা যাক। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
তমার বাবা-মায়ের উচিত ছিল, বাবা ভালোভাবে ছেলের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে, তারপরে তাকে বিয়ে দেওয়া। তমা ভালোভাবে পড়ালেখা করে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতো এবং ভালো একটা ছেলের সাথে তার বিয়ে হত। যাইহোক ভাগ্যের লিখন কেউই বদলাতে পারে না। তমা দেখছি ওই পঙ্গু ছেলেটাকে ছেড়ে আসেনি। তমা তার জীবন যুদ্ধে সকল হবে কিনা এটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। তার জীবনে পরবর্তীতে কি হয় এটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
আপু তারা গ্ৰামের মানুষ খুব সহজ সরল তাই অল্পতেই মানুষকে বিশ্বাস করে নিয়েছিল। হ্যাঁ আপু তমার জীবন যুদ্ধে সফল হয়েছে কিনা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। ধন্যবাদ।
আপু আপনার গল্পটা পড়ে সত্যি তমার জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলে তমার বাবার আর একটু দেখে নেওয়া উচিত ছিল। তবে তমা এখন ঠিক বলেছে মানুষের জীবনে বিয়ের মতো বিয়ে একবারি হয়।আসলে কথায় আছে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। দেখা যাক পরবর্তী পর্ব কি হয়?
আপু তমার বাবা মা সহজ সরল ছিল বলে বুঝতে পারেনি। তবে এটা ঠিক বলেছেন ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। ধন্যবাদ।
গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো এভাবেই প্রতারিত হয়! তমার ভাগ্যে হয়তো পঙ্গু জামইয়ের কথায় লিখা ছিল! দেখা যাক সামনের পর্বে কি হয়
ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্ৰামের সহজ সরল মানুষ এভাবেই প্রতারিত হয়। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
ফোনের মাধ্যমে বিয়ে পড়ানো, এটা মোটেও পছন্দ হয় না আমার। কারণ এতে করে পরবর্তীতে অনেক সমস্যা দেখা দেয় অনেক সময়। বর এবং কনে একে অপরকে সামনাসামনি দেখার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সবচেয়ে ভালো হয়। কিন্তু কিছু কিছু মা-বাবার বোকামির কারণে অনেক সন্তানদের কষ্ট পেতে হয়। তমার সাথে প্রতারণা করেছে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তমার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে থাকলে সাথে সাথেই নিজেদের বাসায় চলে আসতো। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।