নাটকের রিভিউ :- "টোনা টুনির সংসার "
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম। আপনাদের নাটক রিভিউ দেখে আমার কাছেও এখন নাটক রিভিউ দিতে অনঅনেক ভালো লাগে। তারজন্য গত সপ্তাহে একটি নাটক রিভিউ দিয়েছিলাম আর আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লেগেছিল। আপনারা সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিতও করেছিলেন। তারজন্য আজ আবারও একটি নাটক রিভিউ নিয়ে আসলাম। এমন কিছু নাটক থাকে যেখান থেকে অনেক কিছু শেখার থাকে।
মানুষ জন্ম থেকে চোর হয়না পরিস্থিতি তাকে চোর বানিয়ে দেয়। এই নাটকের কাহিনি অনেকটা তেমন। ছেলেমেয়ে দুটো বাবা মা হারা আর তাদের এই পৃথিবীতে কেউ নেই। তারজন্য তারা অনাদর অবহেলায় বড় হয়ে চুরি করার রাস্তায় চলে যায়। তারা যদি স্বাভাবিক মানুষের মতো একটা ভালো পরিবার পেত তাহলে হয়তো তাদের জীবন অন্য রকম হতো। এই কথাটা তারা একটা সময় কিছু মানুষের ভালো ব্যবহারে বুঝতে পারে। তখন তারা তাদের জীবন পরিবর্তন করার কথা চিন্তা করে। বাস্তব জগতে এমন অনেক ঘটনা আছে আর আমরা যদি সেই মানুষ গুলোর পাশে দাড়াতে পারতাম তাহলে হয়তো এই পৃথিবীটা অন্য রকম হতো। যাই হোক আশা করি নাটকের রিভিউ পড়ে আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে।
নাটক সম্পর্কে কিছু তথ্য :-
নাম | টোনা টুনির সংসার |
---|---|
রচনা | অর্ণব জাকির |
চিত্রগ্রহণ ও পরিচালনা | মামুন অর রশিদ |
অভিনয়ে | মিরাজ খান, আরহি মিম, আব্দুল্লাহ রানা, সম্পা নিজাম, রহমান মাহিন, জ্যোতিসহ আরও অনেকে। |
সহকারী পরিচালক | শাকিল হোসেন |
প্রধান সহকারি পরিচালক | ফারুক আল ফারাবি |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে আমরা দেখতে পাচ্ছি আরহি মিরাজকে রাস্তায় পেয়ে দাঁড়াতে বলছে। তখন আরহি মিরাজকে বলে আমাকে চুরি করতে নিয়ে যাবি। তখন মিরাজ বলে তুই এসব পারবি না। এই কথা শুনে আরহি রেগে যায় আর তার প্রমাণ দেওয়ার জন্য সে মিরাজের শার্টের কলার চেপে ধরে। তখন চিৎকার দিয়ে বলে এই ভাই আমাকে বাঁচান। এই ছেলে আমাকে ইভটিজিং করতেছে।
তখন কিছু ছেলে এসে মিরাজকে অনেক মারধর করতে থাকে। এই সময় আরহি সবার পেন্টের পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে যায় আর এই কথা কেউ বুঝতেও পারেনি। সবার মানিব্যাগ নেওয়া শেষ হলে আরহি তাদের ধমক দিয়ে চলে যেতে বলে। তারপর মানুষ গুলো আরহির কথায় বিরক্ত হয়ে চলে যায়। এরপর মিরাজকে সে মানিব্যাগ দেখায় আর তারা সমান ভাবে ভাগ করে নেয়। এরপর তারা চিন্তা করে ছোট চুরি করে লাভ নেই। বড় কিছু করতে হবে আর এই বলেই পিছনের এক বাড়ির দিকে তাদের নজর পড়ে।
তারা দু'জন সেই বাড়ির গেটের কাছে গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করে।কিন্তু কোনো মানুষের খুঁজ খবর না পেয়ে রাস্তার একটি ছেলেকে জিজ্ঞেস করাতে সে বললো তারা বিদেশে থাকে। এই কথা শুনে তারা দু'জন খুব খুশি হয়। এরপর তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে আর এত বড় বাড়ি দেখে অবাক হয়ে যায়।
এরপর মিরাজ দু'ভাগ করে আর আরহিকে বললো দু'জন দু'দিকে যাবে। কেউ কারো ভাগে আসতে পারবে না। আরহি গিয়ে তার যা পছন্দ সব চুরি করে নিয়ে আসে আর এসে দেখে মিরাজ ফ্রিজ থেকে দই বের করে বসে বসে খাচ্ছে। তুই কি এখানে থাকবি নাকি যাবি। মিরাজ বলে বাড়ির মালিক ছয় মাসে আসবে না তাহলে চল আমরা এখানে কিছু দিন থাকি। এখানে অনেক আরামে কিছু দিন কাটিয়ে দেই। কিন্তু আরহি বললো তুই থাক আমি যাই। মানুষ যখন চোর বলে মারধর করবে তখন বের হবি।
এই বলে আরহি চলে যায় আর রাস্তায় একটি বড় লোক মেয়েকে আরহি কিছু কথা জিজ্ঞেস করাতে তার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। তারপর আরহি মেয়েদিকে বলে তুই দাঁড়া আমিও এমন নতুন ড্রেস পরে আসছি।এই বলে আরহি আবার সেই বাড়িতে চলে যায় আর গিয়ে মিরাজ কে সুট কোট পড়া অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে যায়।
এরপর আরহি আর মিরাজ বাড়ির মালিক আর তার বউয়ের জামা কাপড় পরে আর তখনি কলিং বেলের শব্দ হয়। তারা দু'জনে সেই শব্দে ভয় পেয়ে যায়। তারা বুঝতে পারেনি বাড়িওয়ালা চলে আসবে। বাড়িওয়ালা আর তার বউ তাদের সাথে মজার করার জন্য পুলিশকে ফোন দেয়নি। মিরাজ আর আরহি কখনো তাদের দেখেনি তাই গেট খুলে দু'জন মানুষকে দেখে বলে আপনারা কাকে চান। তখন বাড়িওয়ালা বলে চৌধুরী সাহেব আছে। এই কথা শুনে মিরাজ বলে না বাবা তো বিদেশে থাকে।
তারপর লোকটি বলে আমি চৌধুরী সাহেবের বন্ধু গ্রাম থেকে এসেছি একটা জমি কিনবো বলে। আমার এই ব্যাগে দশ লক্ষ টাকা আছে।এই কথা শুনে আরহি আর মিরাজ অনেক খুশি। তারপর তাদের ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর তারা সেই ব্যাগ চুরি করার জন্য অনেক কিছু বলতে থাকে।কিন্তু বাড়িওয়ালা মিটমিটিয়ে হাসে আর বলে এই ব্যাগ খুব যত্ন করে রাখতে হবে।
এরপর লোকটি মিরাজকে বলে যাও বাজার করে নিয়ে আসো। তখন মিরাজ মিথ্যে কথা বলে। আমার কাছে তো টাকা নেই কিছুদিন আগে আমি বিদেশ থেকে এসেছি তো তাই ব্যাংক থেকে টাকা তুলা হয়নি। এই বলে আমতা আমতা করতে থাকে। তখন লোকটি বলে আরে চিন্তা করো না আমি টাকা দিচ্ছি বাজার করে নিয়ে আসো।এরপর দু'জনে বাজার করে নিয়ে আসে আর আরহি রান্না করে।তারপর সবাই একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া করে।
এভাবে তাদের দিন ভালো যাচ্ছে কিন্তু একদিন মিরাজ বলে আমরা কি এজন্য আসছি। কালকেই আমরা টাকার ব্যাগ চুরি করে পালাবো। তখন আরহি বলে আমার যেতে ইচ্ছে করছে না। তারা আমাদের কত ভালোবাসে। আজ যদি আমার বাবা মা বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো এমনি হতো। এরপর তারা নিচে চলে যায় আর মিরাজ বাড়িওয়ালার মাথা টিপে দেয়। তখন বাড়িওয়ালা বলে তোমাকে মার্কেটে নিয়ে যাব।কিছু ড্রেস কিনে দিতে হবে আর তোমার বাবা আসলে না হয় সুধ করে দিও। এভাবে তাদের দিন ভালোই চলতে থাকে। এরপর মিরাজ আর আরহি চিন্তা করলো তারা আর কখনো চুরি করবে না। তাদের কাছে সব বলে দেব। এরপর এখান থেকে বের হয়ে তারা সুখের সংসার করবে।
এদিকে বাড়িওয়ালার কোনো ছেলে মেয়ে নেই আর তাদের দু'জনকে ভালো লেগেছে বলে সবসময় তাদের কছে রেখে দিতে চায়। তখন তারা দু'জন মিরাজ আর আরহিকে টাকার ব্যাগ দিয়ে বাহিরে চলে যায়। টাকার ব্যাগ পেয়ে দু'জনে অনেক খুশি। বাড়িওয়ালা আর তার বউ তাদের পরীক্ষা করার জন্য এই কাজ করেছে। এরপর বাড়িওয়ালা আর তার বউ বাড়ির পাশে একজায়গায় সারাদিন কাটিয়ে দেয়।
এরপর সন্ধ্যা হয়ে গেলে তারা বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতে মিরাজ আর আরহি দরজা খুলে। তাদের দু'জনকে দেখে বাড়িওয়ালার অনেক ভালো লাগে। এরপর ভিতরে গিয়ে বাড়িওয়ালা তাদের সব খুলে বলে আর এটাও বলে তারা দু'জনই এই বাড়ির আসল মালিক। এই কথা শুনে মিরাজ আর আরহি অনেক ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু বাড়িওয়ালা আর তার বউয়ের ব্যবহার তারা দুজন ভালো হয়ে যায়। এরপর বাড়িওয়ালা বলে আমাদের কোনো ছেলেমেয়ে নেই তোমরাই আজ থেকে আমার সন্তান।
এখন থেকে তোমরা আমার বাড়িতে আমার সন্তানের মতো থাকবে। এই কথা শুনে তারা অনেক খুশি হয়।এরপর আরহি আর মিরাজ তাদের কথায় রাজি হয়ে যায় আর এখানে তাদের সংসার করার চিন্তা করে। সম্পূর্ণ নাটক দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ব্যক্তিগত মতামত
আমার কাছে এই নাটক দেখতে অনেক ভালো লেগেছে। এই নাটকের কাহিনী খুবই শিক্ষনীয়। বাড়ির মালিক যদি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে পুলিশে দিয়ে দিত তাহলে হয়তো পরবর্তীতে তারা আরও খারাপ কাজে লিপ্ত হতো। কিন্তু তিনি তা না করে তাদের ভালো পথে ফিরিয়ে এনেছে। কিন্তু বাস্তব জগতে এর উল্টো হয় বলেই ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। যাদের বাবা-মা বেঁচে নেই তাদের মতো অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা রাস্তায় বড় হয়েছে। তারা অনেকে ভাবে তাদের কোনো জীবন নেই। তারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে। কিন্তু আমরা সবাই যদি তাদের পাশে দাঁড়াই তাহলে অবশ্যই কিছু ছেলে মেয়েকে হলেও ভালো রাস্তায় আনা যাবে।
ব্যক্তিগত রেটিং
১০ /১০
নাটকের লিংক
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
অসাধারণ একটি নাটকের রিভিউ করেছেন আপু। নাটকটির বড় একটি শিক্ষা রয়েছে। যদি মানুষকে ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধা যায় তাহলে সে খারাপ থেকে ভালো হতে বাধ্য। এখানেও তাই ঘটেছে, বাড়ির মালিকের ভালোবাসা পেয়ে তারা ভালো জীবন বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দারুন লাগলো নাটকটি, খুব তাড়াতাড়ি দেখবো ভাবছি।
হ্যাঁ ভাইয়া আমাদের ভালোবাসার হাত যদি বাড়িয়ে দেই তাহলে খুব সহজে একজন খারাপ মানুষকে ভালো পথে নিয়ে আসতে পারবে। ভাইয়া সময় পেলে দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে।ধন্যবাদ।
আরোহী মিরাজের নাটকগুলো আমার কাছে দেখতে খুবই ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে দেখা হয়। কিছুদিন আগে এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম। নাটকটি আমার কাছে দেখতে খুবই ভালো লেগেছে। এখানে তারা বাড়ির মালিকের ভালোবাসা পেয়ে ভালো একটি জীবন বেছে নিতে পেরেছে। অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন আপনি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু তারা বাড়ির মালিকের ভালোবাসা পেয়ে ভালো একটি জীবন বেছে নিতে পেরেছে।ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
বাহ খুব চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন খুব মজা লাগলো নাটকটি। তবে এর আগে নাটকটি দেখিনি। আপনি যখন রিভিউ করেছেন তারপর নাটকটি দেখলাম।
ধন্যবাদ আপু আমার রিভিউ দেখে সাথে সাথে নাটকটি দেখে নিয়েছেন। নিশ্চয়ই অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে টোনা টুনির সংসার এর নাটকটি অনেক সুন্দর ভাবে রিভিউ করে শেয়ার করেছেন। আপনার নাটক দেখে বোঝা যাচ্ছে নাটকটি বেশ মজার ছিল আপু। আমিও যদি নাটক দেখি তাহলে মিরাজ খান ও আরহি মিম এর নাটক সব থেকে বেশি দেখে থাকি। এদের নাটক গুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগে আপু। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া এর গল্প যেমন মজার তেমনি শিক্ষনীয়। যদি সময় পান তাহলে একবার দেখবেন।ধন্যবাদ।
আপু মিরাজের নাটক দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনি আজ অনেক সুন্দর একটি নাটক শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে ।টোনাটুনির গল্প নামটি আমি এই প্রথম শুনেছি দেখে মনে হচ্ছে খুবই চমৎকার হবে নাটকটি আমি একসময় দেখে নেব।
আপু সময় পেলে একবার দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ আপনি আমাদের মাঝে দারুন একটি নাটক করে দেখিয়েছেন, যে নাটক দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর আপনার নাটকের দক্ষতা অনেক সুন্দর ছিল যার জন্য খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আসলে ইদানিং তেমন নাটক দেখা হয় না। আজকে আপনার নাটকের ভিডিওটা দেখে মনে হচ্ছে টুনটুনি সংসার নাটকের দেখতেই হবে। বেশ সুন্দর করেছেন আপু।
হ্যাঁ আপু খুব সুন্দর একটি নাটক। আপনি দেখেছেন যেন ভালো লাগলো।ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।নাটকটা আমি দেখেছি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আরোহী ও মিরাজের নাটকগুলো সময় পেলে আমি দেখি অনেক সুন্দর সুন্দর নাটক অভিনয় করে।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনি এই নাটক দেখেছেন আর আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।