গল্প "জীবনের হিসাব" পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করবো। এই গল্পটিও একজন মানুষের সত্যিকারের জীবন কাহিনী। আসলে গল্প বানিয়ে লেখার থেকে বাস্তব কাহিনী লেখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। মানুষের বাস্তব জীবন কাহিনী থেকে অনেক কিছু শিখার রয়েছে। গল্পতো মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখলেই হয়ে যায়। যাই হোক আজকের গল্পটি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।


leaves-1076307_1280.jpg

Link


আমরা আমাদের জীবন নিয়ে অনেক কিছু চিন্তা করি। কিন্তু দেখা যায় জীবনের হিসাব থাকে অন্যরকম। হুট করে আমাদের হিসাবের সঙ্গে জীবনের হিসাব এলোমেলো হয়ে যায়। তখনই বিপত্তিটা ঘটে। তাই জীবন নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করা উচিত না। ভাগ্যে যা আছে তা হবেই।


জীবনের হিসাব


রিনারা চার বোন। রিনা চার বোনের মধ্যে মেঝ। তাদের কোন ভাই নেই। ছোট বেলা থেকেই তাদের একটি ভাইয়ের খুব শখ ছিলো। কিন্তু আল্লাহ না চাইলে কী আর সম্ভব? বড় বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে অনেকদিন হলো। বড় দুলাভাই কে পেয়ে রিনাদের ভাইয়ের চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়েছে। কারণ রিনার বড় বোনের যখন বিয়ে হয়েছে তারা তখন স্কুলে পড়ে। এজন্য রিনার দুলাভাই ছোট ছোট শ্যালিকাদের পেয়ে নিজের বোনের মতনই আদর করতো।

রিনা ইন্টার পাশ করার পর ঢাকায় অনার্সে ভর্তি হয় ইডেন কলেজে। তাই সে বড় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করে। বড় বোনের মোহাম্মদপুরে নিজেদের বাড়ি রয়েছে। তাছাড়া ছোট ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে পেরে ওঠে না। সেজন্য সেও রিনা কে তার কাছে রেখে দিয়েছে। পরিবার থেকে রিনার বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। কারণ তার ছোট দুটি বোন রয়েছে। এখন রিনাকে বিয়ে না দিলে বাকিদের বিয়ে দিতে দেরি হয়ে যাবে সবাই পাশাপাশি বয়সের। কিন্তু রিনা পড়ালেখা শেষ না করে বিয়ে করবে না। এজন্য অনেক পাত্র আসলেও সে তাদেরকে নিষেধ করে দিচ্ছিলো।

এভাবে রিনা একদিন পড়ালেখা শেষ করলো এবং তার পরিবার থেকে দেখে শুনে তাকে একটি বিয়ে দেয়া হলো। ছেলের নাম সুজন। সুজন ছেলে হিসাবে অনেক ভালো। ব্যাংকে চাকরি করে। শহরে নিজেদের বাড়ি আছে। বাবা-মায়ের একটি মাত্র সন্তান। খুব ধুমধাম করে রিনার বিয়ে হয়ে গেল। বেশ ভালই কাটছিল দুজনের সংসার। তাদের সংসারে দুটি ছেলে সন্তান হলো। একটির বয়স সাত বছর এবং আরেকজনের চার বছর ।

প্রথমে রিনা অন্য জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। পরে তার বোনের বিল্ডিং এর বাসা ফাঁকা হওয়াতে সে বোনের বিল্ডিং এর একটি ফ্ল্যাটে উঠেছে। কারণ সে অনেক বছর এই বড় বোনের সঙ্গে থেকেছে। তাই কাছাকাছি থাকার জন্য তার বিল্ডিংয়ে ভাড়া নিয়েছে। এরই মাঝে সুজনের বাবা এবং রিনার বাবা দুজনই মারা গিয়েছেন। সুজন মায়ের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। যেহেতু তার আর কোন সন্তান ছিল না ।

সুজন মাঝেমধ্যে অসুস্থ হচ্ছিলো। পেটে ব্যথা হত। সে ভাবছিল যে হয়তো বাইরের খাওয়া-দাওয়া করার কারণে গ্যাসের প্রবলেম হয়েছে। গ্যাসের ওষুধ খাচ্ছিলো। ঔষুধ খেলে সেরে যেত। এভাবে অনেকদিন চলছিলো। মাঝেমধ্যেই তার ব্যথাটা হতো এবং সে গ্যাসের ঔষুধ খেতো। সাধারণত পেটে ব্যথা হলে সবাই গ্যাসের প্রবলেমই মনে করে। রিনার হাসবেন্ডও তাই মনে করেছিলো। এভাবে অনেকদিন অবহেলার পর যখন দেখলো যে ব্যথাটা কিছুতেই যাচ্ছে না এবং দিনকে দিন বাড়ছে তখন রিনা হাসবেন্ডকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলো। ডাক্তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলো। পরীক্ষার রিপোর্টে দেখলো সুজনের লিভার ক্যান্সার হয়েছে।


আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে সুজনের কি হয়েছিল তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।


ধন্যবাদ

@tania

Photographer@tania
Phoneoppo reno5
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

আসলেই আপু জীবন নিয়ে খুব বেশি চিন্তা ভাবনা না করাই ভালো। কারণ আমার ভাবি একটা, অনেক সময় হয়ে যায় আরেকটা। আসলে ভাগ্যের উপর কারো হাত থাকে না। যাইহোক রিনা পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করে বেশ সুখেই ছিলো। কিন্তু রিনার হাসবেন্ডের লিভার ক্যান্সার হয়েছে, এটা জেনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা বলে উড়িয়ে দেই। এতে করে পরবর্তীতে আরো বেশি ঝামেলায় পড়তে হয়। যাইহোক পরবর্তীতে সুজনের কি হলো সেটা জানার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন আমাদের মাঝে। গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

কিন্তু এইভাবে কয়জন ভাবে। সবাই আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে রাখি। কোন বছরে কি করব। যেখানে আমাদের একদিনের ভরসা নেই । যাইহোক ভাইয়া ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

 10 months ago 

বাস্তবিক জীবন গুলোকে কেন্দ্র করে গল্প লিখলে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি অনেক সুন্দর করে গল্প লিখে থাকেন এখন, যেগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। রিনার হাজবেন্ড ভেবেছিল হয়তো এমনিতেই পেট ব্যথা করছে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন হসপিটালে নিয়েছিল তখনই বুঝতে পেরেছিল তার আসল সমস্যা কি। তাদের উচিত ছিল প্রথমেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।

 10 months ago 

বাস্তবিক বিষয়গুলোকে নিয়ে গল্প লিখলে অনেক কিছু শেখা যায়। সেজন্য এগুলো নিয়ে লেখার চেষ্টা করি। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 10 months ago 

আরে কি করলেন আপনি? এমন জায়গায় কেউ থামে? আপনি তো দেখছি একজন দক্ষ লেখিকা। কোথায় থেমে পাঠকদের ধরে রাখতে হবে সেটা বেশ ভালোই জানেন। কি হবে তাহলে রিনার স্বামীর? আসলে আমাদের কার ভাগ্যে যে কখন কি হয় কেউ তা বলতে পারবে না। অপেক্ষায় রইল গল্পটির পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।

 10 months ago 

এমনিতেই লেখা জাতীয় পোস্ট কেউ পড়তে চায় না। তারপরে টুইস্ট না রাখলে তো আরো পড়বে না। এজন্যই এখানে শেষ করেছি আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আপনি এমন একটা জায়গায় গল্পটা শেষ করেছেন, যেটার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম শুরু থেকে। সুজনের দেখছি লিভার ক্যান্সার হয়েছে, কিন্তু তারা প্রথমে পেট ব্যাথা থাকে নরমালি নিয়েছিল। এখন এর পরবর্তীতে কি হয় এটা জানার আগ্রহ অনেক বেশি বেড়েছে। আশা করছি এই গল্পটার পরবর্তী পর্ব শীঘ্রই আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন আপনি।

 10 months ago 

জ্বী ভাইয়া পেট ব্যথাকে বেশি গুরুত্ব দেয়নি জন্যই এমন হয়েছে। অনেকেই আমরা এমন করি। পেট ব্যথা হলে গ্যাসের ব্যথা মনে করি। এমন করা আসলে ঠিক না।

 10 months ago 

তবে আপু অনেক ফ্যামিলিতে যখন ভাই থাকে না তারা একটি ভাইয়ের জন্য অনেক আশা করে। যাই হোক রিনার বড় বোনের হাজব্যান্ড তাদেরকে অনেক আদর করে এই কারণে বড় ভাইয়ের মতো তারা ও তাকে সম্মান করে। যদিও রিনা ফ্যামিলির মেজো মেয়ে। এবং তার ভাল জায়গা বিয়ে হল । তবে অনেক সুখের ফ্যামিলির মধ্যে মাঝেমধ্যে কোন অসুখ বা এক্সিডেন্টের কারণে সব উলটপালট হয়ে যায়। যদিও রিনা এবং সুজনের ঘরে দুটো ছেলে সন্তান আছে। এবং সুজনের পেট ব্যথা নিয়ে প্রথম থেকে ভালো ট্রিটমেন্ট নেওয়া দরকার ছিল। এবং সুজনের লিভার ক্যান্সার হয়েছে তা যেন অনেক খারাপ লাগলো।যাই হোক পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম সুজনের কি হয় তা জানতে পারবো।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া যাদের ফ্যামিলিতে ভাই নেই তারা বড় দুলাভাই কি ভাইয়ের মতো সম্মান করে। ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45