ছোটবেলার একটি মজার ঘটনা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে ছোটবেলার একটি কাহিনী শেয়ার করবো। এই ব্লগে সবাই সবার ছোটবেলার কাহিনী শেয়ার করে। সেগুলো পড়লে নিজের ছোটবেলার অনেক কাহিনী মনে পড়ে যায়। সেরকম একটি মজার কাহিনী আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। কাহিনীটি এখন মনে পড়লে মজা লাগে। কিন্তু তখন খুবই ভয় পেয়েছিলাম। ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে বারবার ছোটবেলায় ফিরে যেতে মন চায়। তা তো আর সম্ভব নয়। কিন্তু যখন ছোট ছিলাম তখন শুধু মনে হতো যে কবে বড় হবো। আর এখন বড় হওয়ার পর ছোটবেলায় ফিরে যেতে মন চায়।
আমরা চার বোন এক ভাই। আমাদের ভাই তখন ছোট। তাছাড়া পাশে খালার বাসা হওয়ার কারণে খালাতো বোনরাও ছিল। সবাই একসঙ্গে বসে বিকেল বেলায় বেশ আড্ডা দিতাম। আমাদের বাসায় ঢিসের লাইন ছিলো। তাই টিভিতে কোনো সিনেমা হলে সবাই একসঙ্গে দেখতে বসতাম। সেই সময়কার আনন্দ গুলো মনে পড়লে এখন খুবই খারাপ লাগে। এখন একেক জন একেক জায়গায় চলে গিয়েছি। সবার সঙ্গে খুব কম দেখা হয়। কিন্তু এক সময় এই বোনরা মিলেই সারাদিন কেটে যেত।
যাই হোক আসল ঘটনায় আসি।
আমরা চার বোন এবং আমার দুই খালাতো বোন সহ একটি সিনেমা দেখছি। আমাদের ড্রয়িং রুম দিয়ে ঢোকার দরজা ছিল। আমরা বেডরুমে বসে সবাই সিনেমা দেখছিলাম। মফস্বল হওয়ার কারণে দিনের বেলায় দরজা খোলাই থাকতো। আমরা সবাই খুবই মনোযোগ সহকারে সিনেমা দেখায় মগ্ন ছিলাম। আর আমার ছোট ভাই তখন একদমই ছোট। কয়েক মাসের হবে। ও ঘুমাচ্ছে আর আম্মা রান্না করছে। এমন সময় হঠাৎ করে পাশের রুম থেকে কারো একজনের আওয়াজ পেলাম। প্রথমে আমি দেখতে গেলাম কে এসেছে। গিয়ে দেখি যে একটা পাগলি ঘরে ঢুকেছে এবং সে আমাদের বিছানার উপরে টানটান হয়ে শুয়ে আছে। আর জোরে জোরে বলছে "তোমরা অনেকদিন আমার বাসায় রাজত্ব করেছো। এখন সবাই আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাও। এটা আমার বাসা।"
এরকম দৃশ্য দেখার পর আমি তো ভয় গিয়ে ভিতরে সবাইকে জানালাম। সবাই এসে পাগলিকে দেখে যে যার মত দৌড়। একেকজন একেক দিকে দৌড় দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। শুধু বড় আপু ঘরের ভিতরে ছিল। তাছাড়া আমরা বের হয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিলো যে আমাদের ভাই তো বিছানায় ঘুমাচ্ছে। পাগলি যদি ওকে কিছু করে। আম্মা তো রান্না করছে। কিন্তু পাগলির ভয়ে ঘরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না। পরে আপু জানালা দিয়ে বাইরের এক রিকশাওয়ালাকে ডাক দেয়। রিক্সাওয়ালা ঘরে এসে দেখে এই কাহিনী। প্রথমে পাগলিকে যেতে বলে কিন্তু পাগলি কিছুতেই যেতে রাজি হয় না। পরে বাইরে থেকে একটি লাঠি এনে লাঠি দেখালে পাগলি পরে পালিয়ে যায়। ততক্ষণে আম্মাও চলে এসেছে।
পাগলি চলে যাওয়ার পর আমরা দেখছিলাম যে পাগলি কার বালিশে শুয়েছে। পরে দেখলাম যে তৌহিদা আপুর বালিশে শুয়েছে। তাড়াতাড়ি আমরা বিছানার চাদর এবং বালিশের কাভার সবকিছু চেঞ্জ করে ফেললাম। তখন কি যে ভয় পেয়েছিলাম পাগলের এই কাণ্ডে। এখন মনে পড়লে খুবই হাসি পায়। ছোটবেলায় পাগল দেখে খুবই ভয় পেতাম।
যাই হোক এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
গল্পটা অনেক মজার ছিল, হুট করে ঘরে ঢুকে পাগলী আপনাদের বাড়িটাই নিয়ে নিতে চেয়েছিল হা হা হা। তবে রিক্সাওয়ালা যদি এসে পাগলিটাকে বের করে না দিত তাহলে আপনারা তো মনে হয় সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতেন যে পরিমাণে ভয় পেয়েছিলেন।
এখন গল্পটা মজার লাগলেও সে সময় চরম ভয় পেয়েছিলাম। যাইহোক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
আসলে আমাদের সবার জীবনে ছোটবেলার অনেক মজার মজার কিছু স্মৃতি রয়েছে। সেই সাথে কিছু বেদনাদায়ক স্মৃতিও রয়েছে। তবে আপনার ছোটবেলার মজার স্মৃতিময়ী গল্পটা পড়ে ভালো লেগেছে। আপনাদের বাড়িতে তো দেখছি হুট করে পাগলিটা ঢুকে গিয়েছিল, আর আপনাদের বাড়িতে সে নিতে চেয়েছিল। আসলে পাগলের এরকম কান্ড দেখলে ভয় পাওয়ার কথা। তবে ওই রিক্সাওয়ালা এসে পাগল টাকে বাইরে বের করেছিল।
ছোটবেলায় পাগল দেখলে খুবই ভয় পেতাম। এখনো তেমনি ভয় পাই। এদের কান্ডকলাপ দেখলেই ভয় লাগে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
সত্যি সেদিন খুবই ভয় পেয়েছিলাম।আপনার পোস্টের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর সেই কাহিনীটা আবার মনে পড়লো।ভাগ্য ভালো আপু বুদ্ধি করে রিকশাওয়ালা কে দিয়ে পাগল টিকে বের করেছিল। তা না হলে কি যে হতো।পাগলী টি দেখতেও উদ্ভট ছিল। যাই হোক বেশ ভালো লাগলো পুরনো কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন আপু রিক্সাওয়ালাকে ডাক না দিলে কি যে হতো। যাই হোক ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
সবাই বড় হলে তখন চিন্তা করে ছোটকালের স্মৃতিগুলো। আসলে এরকম ঘটনাগুলো যে সময় ঘটে ওই সময় অনেক ভয় লাগে। আপনারা সবাই মিলে সিনেমা দেখতেছি অথচ একটি পাগলি আপনাকে বাসায় ঢুকে শুয়ে শুয়ে আবোল তাবোল কথা বলতেছে। এই পরিস্থিতি দেখলে সবাই ভয় পাবে। আপনার ছোট ভাইটি রুমের মধ্যে ছিল ভাগ্য ভালো পাগলি তাকে কিছু করে নাই। তবে আপনার আপু ভালো করেছে রিক্সাওয়ালার হেল্প নিয়ে পাগলিকে তাড়িয়েছে। তবে আপু এখন বড় হয়েছেন এই কারণে স্মৃতিটি মনে পরলে হাসি আসে। যাই হোক মজার স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আর ছোটবেলায় সবাই চিন্তা করে বড় কবে হব। যাইহোক ভাইয়া ধন্যবাদ আমার ছোটবেলার গল্পটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বাপরে বাপ আপনার ছোটবেলার স্মৃতির গল্পটি পড়ে আমি নিজেও ভয় পেয়ে গেলাম। কারণ আমি পাগলকে অনেক বেশি ভয় পাই। আপনারা যখন ছোট ছিলেন তখন পাগলটি আপনাদের রুমের ভিতর এসে শুয়ে কথা বলতেছে। যদিও ওই সময় আপনারা সবাই সিনেমা দেখতেছেন। সত্যি বলতে আপনার বড় বোন রিক্সার ড্রাইভারকে ঢাকার কারণে পাগল থেকে বাইর করতে পারলেন। এরকম পরিস্থিতি হলে সত্যিই আমি ওখানেই মারা যেতাম। এবং আপনার ছোট ভাইটি ওই সময় রুমের মধ্যে শুয়ে আছে। যদিও আপনার ছোট ভাইটি একদম ছোট ছিল ওই সময়।তবে এখন সবাই বড় হয়ে গেছেন এই কারণে স্মৃতিগুলো মনে পড়লে হাসি আসে। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমরাও তখন খুবই ভয় পেয়েছিলাম এই জন্যই তো দৌড়ে সবাই পালিয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।