আমার লেখা প্রথম গল্প
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প শেয়ার করবো। এটি আমার লেখা প্রথম গল্প। এই ব্লগে কাজ করতে করতে যে কত কিছু শিখছি তার শেষ নেই। যা জীবনে কোনোদিন কল্পনাও করিনি তা এখন করতে পারছি। নিজের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য এর চেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্ম আর হয় না। জানি না গল্পটি কেমন হয়েছে। আশা করি আপনাদের ভালোই লাগবে। তাহলে শুরু করি।
পথ চলা
জিয়াউল ইসলাম। সদ্য মাস্টার্স কমপ্লিট করে ইউনিভার্সিটি টিচার হয়েছেন। অনেক ভালো রেজাল্টের কারণে ইউনিভার্সিটি তাকে ছাড়তে চায়নি। এজন্য তাকে এই ইউনিভার্সিটি টিচার করে রেখে দিয়েছেন। আজ তার প্রথম ক্লাস ফার্স্ট ইয়ার এর। মাত্র পড়ালেখা শেষ করলেও তার মধ্যে এখনো স্টুডেন্ট একটা ভাব রয়ে গিয়েছে। তাই তো ক্লাসে ঢুকেই সবথেকে সুন্দরী মেয়েটার দিকে গিয়ে চোখ আটকে গেলো। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেলো মেয়েটির।
মেয়েটির নাম রিয়া। সুন্দর হওয়ার কারণে ক্লাসে বেশ নাম ডাক রয়েছে।
স্যার খুব চেষ্টা করছেন ক্লাসে একটি গুরুগম্ভীর ভাব বজায় রাখার। যাতে স্টুডেন্টরা সবাই তাকে সমীহ করে চলে। খুব ভালোভাবে আজকের ক্লাসটি শেষ করলেন স্যার। তারপরও মাঝে মাঝে রিয়ার দিকে চোখ চলে যেতেই চোখ সরিয়ে নিত। যাতে কেউ দেখে না ফেলে। এভাবেই বেশ কিছুদিন চলে গেল।
রিয়া ক্লাসের যেমন সুন্দরী তেমনি পড়ালেখায় অনেক মেধাবী। এজন্য ইউনিভার্সিটির অনেকেই চাইতো তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার। কিন্তু সে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া খুব বেশি কারো সঙ্গে মিশতো না।
হঠাৎ একদিন তার মোবাইলে অন্য নাম্বার থেকে ম্যাসেজ আসলো। এরকম ম্যাসেজ মাঝেমধ্যেই তার কাছে আসে। এজন্য সে খুব একটা পাত্তা দিল না। এভাবেই প্রতিদিন রাতে নির্দিষ্ট সময়ে তার কাছে ম্যাসেজ আসা শুরু করলো। নরমাল, বিভিন্ন ফানি, রোমান্টিক সব ধরণের ম্যাসেজ। তারপরে সে একদিন ভাবল যে কে এমন করছে সে ওই নাম্বারে ফোন দিবে। ফোন দেয়ার পর প্রথমে সে খুব রাগারাগি করল ছেলেটির সঙ্গে। এভাবে মাঝেমধ্যেই সে ছেলেটিকে ফোন দিয়ে খুব রাগ হয় এভাবে ম্যাসেজ দেয়ার জন্য।
ছেলেটি নাম রোহান। এভাবেই ঝগড়াঝাঁটি করতে করতে এক সময় রোহানের সঙ্গে রিয়ার অনেক ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। দুজন রাত জেগে গল্প করে। তাদের সবকিছু শেয়ার করে।
এদিকে স্যার ক্লাসের মধ্যে মাঝেমধ্যেই রিয়ার দিকে আড়চোখে তাকায়। কিন্তু স্যার হয় জন্য কিছু বলতেও পারে না।
রিয়া আর রোহান দুজনে খুনসুটি করতে করতে একসময় একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় দেখা করার। কিন্তু রোহান কিছুতেই দেখা করতে রাজি হয় না। বিভিন্নভাবে সে দেখা করার ডেট পেছাতে থাকে। রিয়া প্রতিনিয়ত খুব জোর করতে থাকে। এভাবে একসময় রিয়ার জোরাজোরির কাছে হার মানতে হয় রোহানকে। রোহান রাজি হয় দেখা করতে। একটি রেস্টুরেন্টে তারা দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
রিয়া সেদিন খুব সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে সেজেগুজে রেস্টুরেন্টে যায়। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখে তাদের জিয়াউল স্যার রেস্টুরেন্টে বসে আছে। রিয়া খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় সে থাকবে না চলে আসবে। এমন সময় স্যার তাকে ডাকে। রিয়াকে এত সুন্দর লাগছিল যে স্যার কিছুক্ষণ রিয়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারপর রিয়ার কথায় তার হুঁশ ফিরে আসে।
স্যার-- বসো রিয়া
রিয়া-- না স্যার আমার এক ফ্রেন্ড আসার কথা তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।
স্যার-- সমস্যা নেই তোমার ফ্রেন্ড আসলে চলে যেও।
রিয়া খুব অস্বস্তি তে পড়ে যায়। স্যারকে নাও বলতে পারছে না বাধ্য হয়ে বসতে হলো। বসে বসে রোহানকে ম্যাসেজ করছে কেন এত দেরি হচ্ছে। স্যার-- কি খাবে বলো।
রিয়া-- না স্যার আমার ফ্রেন্ড আসলে তার সঙ্গেই খাওয়ার প্লান আছে।
স্যার-- সমস্যা নেই তোমার ফ্রেন্ড আসলে না হয় আবার খেও।
রিয়া মহা বিপদে পরে যায় স্যারকে নিয়ে।
স্যার-- তোমার পছন্দের থাই স্যুপ আর চিকেন ফ্রাই অর্ডার দেই।
এই কথা শুনে রিয়া একটু অবাক হয়। তার পছন্দের খাবার স্যার কিভাবে জানলো। তারপর সে রোহানকে ফোন দেয়। আর সঙ্গে সঙ্গে স্যার এর মোবাইল বেজে ওঠে।
আজ এ পর্যন্তই। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
অনেক সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন তো আপু আপনার গল্পটি পড়ে আসলেই অনেক ভালো লাগলো । প্রথম লেখাতেই বাজিমাত করে দিয়েছেন । আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে রোমান্টিক প্রেমের গল্প । স্যার আর ছাত্রীর ভিতরে প্রেমটা জমে গেলে ভালই লাগবে পড়ে মজা পেলাম ।
আপনার কাছে আমার রোমান্টিক প্রেমের গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ উৎসাহমূলক মন্তব্য করার জন্য।
রিয়া আর রোহানের ভালবাসার গল্পটা বেশ ভালো লাগলো। প্রথমে মজার মজার সব মেসেজ আর তারপরে বন্ধুত্ব। তবে বিশেষ করে শেষের দিকে গল্পটার এক্সাইটমেন্ট জমে ছিল যখন রোহানকে ফোন দেওয়ার পরে স্যারের মোবাইল ফোন বেজে ওঠে তখন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
এক্সাইটমেন্টটা ধরে রাখার জন্য এখানে শেষ করেছি। পরবর্তী পর্ব অবশ্যই পড়বেন ভাইয়া ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার বাংলা ব্লগ সবারই মাঝে থাকা সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে নিয়মিত অবদান রেখে যাচ্ছে। আপনার জীবনের প্রথম গল্পের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
আসলেই ভাইয়া এখানে আসার পর নিজের মধ্যের অনেক কিছুর বিকাশ ঘটেছে যা আগে কখনো কল্পনা করিনি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এই প্লাটফর্মে আমরা অনেকেই অনেক কিছু শিখেছি। আর আমরা নিজেদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সৃজনশীলতা গুলোকে ও প্রকাশ করতে পারছি। আপনার লেখা প্রথম গল্পটা পড়ে আমার কাছে তো খুবই ভালো লেগেছে। আমি সব কিছু পড়ে যা বুঝেছি আমার তো মনে হয় রোহান হচ্ছে স্যার। রিয়া তো রোহনকে ফোন দিচ্ছিল কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে স্যারের ফোনে কল আসলো। এর ধারা বুঝা যায় রোহান হচ্ছে স্যার। কিন্তু রিয়া এটা একেবারেই জানে না। পরবর্তী পর্বে কি হয় তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
জি আপু আপনার আন্দাজ ঠিক হয়েছে। পরবর্তী পর্ব অবশ্যই পড়বেন তাহলে বাকিটাও জানতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এই প্ল্যাটফর্মে এসে যত কিছু শিখেছি তত কিছু আগে কল্পনাও করতে পারতাম না। তবে দেখুন তো আমরা যখন থেকে এই প্লাটফর্মে অংশগ্রহণ করেছি তখন থেকে কিছু না কিছু শিখে আসছি প্রত্যেকটা দিন। আর এত কিছু শিখতে পেরে নিজেদের কাছেও খুব ভালো লাগছে। আপনি সর্বপ্রথম একটা গল্প লিখেছেন যা পড়তে খুব ভালো লেগেছে। আমার তো একেবারেই বিশ্বাস হচ্ছে না এই গল্পটা আপনি সর্বপ্রথম লিখেছেন। পর্বের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। রিয়া এবং স্যারের পরবর্তীতে কি হয় তা জানতে অপেক্ষায় আছি।
আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিল না যে এই গল্পটি আমি লিখেছি আর আপনার কিভাবে বিশ্বাস হবে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমাদের এই প্লাটফর্মে সবাই কমবেশি গল্প শেয়ার করে। তবে আপনার প্রথম গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। জিয়াউল ইসলাম স্যার প্রথম দেখাতে রিয়াকে পছন্দ করে ফেলেছে। রিয়া যে অপরিচিত ছেলের সাথে কথা বলতে বলতে ভালো লেগেছে রোহান। মনে হয় সেই হচ্ছে তাদের জহিরুল ইসলাম স্যার। তবে অনেক ইয়াং শিক্ষক আছে তারা ছাত্রীর প্রেমে পড়ে যায়। যাইহোক পরে রেস্টুরেন্ট দেখা করতে গিয়ে কিছুটা বুঝতে পারে তার শিক্ষকই হচ্ছে রোহান। পরের পর্বে কি ঘটে সে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি গল্পটি শেয়ার করবেন।
পরে কি হলো জানতে হলে ভাইয়া পরের পর্ব পড়তে হবে। খুব দ্রুতই পরের পর্ব শেয়ার করবো। আশা করি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
রোমান্টিক গল্প পড়তে বরাবরই আমার ভীষণ ভালো লাগে। স্যারের ফোন যেহেতু বেজে উঠেছে, তার মানে স্যার রোহান সেজে কথা বলতো রিয়ার সাথে। স্যারের বুদ্ধিটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। যেহেতু রিয়াকে এতো পছন্দ করেছে, তাহলে তাকে পেতে তো টেকনিক বের করতে হবেই। গল্পটি তো বেশ ইন্টারেস্টিং। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।