গল্প-"বাস্তবতা পর্ব-১"

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করবো। এটিকে গল্প বললে ভুল হবে। কারণ আমার এক কাছের মানুষের বাস্তব জীবনের গল্প। বাবা-মা সন্তানদের ভালোর জন্য সবরকম সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সব সময় যে বাবা-মা সিদ্ধান্ত ঠিক হয় তা কিন্তু না। বড় বড় বিষয়ের ক্ষেত্রে বাবা-মার সিদ্ধান্ত কে চোখ বন্ধ করে ভরসা না করে নিজের সিদ্ধান্তও জানানো উচিত। যার গল্পটি বলবো তার জীবনের কাহিনী দেখে আমার তাই মনে হয়েছে। তাহলে কথা না বাড়িয়ে গল্পটি শুরু করি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।


ball-1845545_1280.jpg
Link


বাস্তব জীবনের কাহিনী নিয়ে গল্পটি লিখেছি জন্যই গল্পটির নাম দিয়েছি বাস্তবতা।


বাস্তবতা



শশীরা তিন বোন । শশী তিন বোনের মধ্যে বড়। তিন বোনই প্রায় সমবয়সী। দেড়/দুই বছরের বয়সের পার্থক্য। শশী যখন ক্লাস টেনে পড়ে তখন তার মেজো বোন নাইনে এবং ছোট বোন ক্লাস সেভেনে পড়ে। শশীর বাবা-মা দুজনে চাকরি করে। বাবা ব্যাংকে এবং মা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। এজন্য শশী ছোটবেলা থেকেই সংসারের দায়িত্ব অনেকটা নিজেই সামলায়। এভাবে স্কুল জীবন শেষ করে কলেজ জীবনে উঠেছে শশী।

বান্ধবীদের নিয়ে বেশ ভালই পার হচ্ছিলো কলেজ জীবন। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে থাকাকালীন সময় শশীর এক বন্ধু কিন্তু বয়সে বড় তাকে প্রপোজ করে। ছেলেটির নাম মিজান। দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম। এক দেখাতেই পছন্দ হওয়ার মত ছেলে। শশীর মায়ের কলিগের ছেলে। পারিবারিক ভাবে পরিচয় তাদের। মনে মনে শশীও তাকে পছন্দ করত। শশীকে প্রপোজ করার সঙ্গে সঙ্গে শশীও রাজি হয়ে যায়। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। এভাবে শশী ইন্টার পাশ করে অনার্সে ভর্তি হয়। কলেজের বন্ধুরা মিলে বেশ ভালো সময় পার করছিল। মাঝেমধ্যে শশীর বয়ফ্রেন্ড কলেজে আসতো, সবার সঙ্গে একসঙ্গে আড্ডা দিত। আবার দুজন বিভিন্ন সময়ে ঘুরতে যেত।

তিন বোনের মধ্যে শশী বড় জন্য তার পরিবার থেকে শশীকে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র দেখা শুরু করলো। শশী ওর বয়ফ্রেন্ডকে জানালো। মিজান তেমন একটা গুরুত্ব দিলো না।
শশী-- আমার বাসা থেকে তো আমার জন্য ছেলে দেখছে।
মিজান-- ধুর এই বয়স আসলেই সব বাবা মায়েরাই মেয়েদের জন্য পাত্র দেখা শুরু করে।
শশী-- তাহলে আমি কি বলবো বাসায়।
মিজান-- তুমি বলে দাও যে তুমি এখন বিয়ে করবে না।
শশী--আমি একথা বললে কি তারা শুনবে।
মিজান-- কিছুদিন চেষ্টা তো করো। আর আমিও মাত্র পড়ালেখা শেষ করেছি। একটা কিছু না করলে তো বাড়িতে বিয়ের কথা বলতেও পারবো না।

এভাবে আরও কিছু দিন কেটে যায়। শশীর পরিবার থেকে বিয়ের কথা বলে। শশীও বিভিন্নভাবে তা কাটানোর চেষ্টা করে। মাঝেমধ্যে মিজান কেউ জানায়। মিজান তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না। এভাবে চলতে চলতে হঠাৎ করে শশীর পরিবার থেকে একজন ভালো ছেলে পেয়ে যায়। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। ঢাকা শহরের নিজেদের ফ্ল্যাট, বাড়ি সবই আছে। তাছাড়া গ্রামের বাড়িতেও বেশ ভালো অবস্থা। পাত্রপক্ষ শশীকে দেখতে এসে পছন্দ করে ফেলে এবং তারা ২/১ দিনের মধ্যেই কাবিন করে ফেলতে চায়। শশী কি করবে খুঁজে পায় না। বাবা-মার অবাধ্য সে হতে পারছে না। এদিকে মিজানেরও তাকে বিয়ে করার খুব একটা তারা নেই। হেলাফেলায় পার করছে সময়। শশী আর কতদিন এভাবে আটকে রাখবে। সেজন্য শশী কোন কিছু চিন্তা না করে মিজানের উপর কিছুটা রাগ হয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়।


আজ এ পর্যন্তই। শশী কি মিজানের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে রাজীবকে বিয়ে করবে? তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তীতে পর্ব পড়তে হবে। খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হবো। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।


ধন্যবাদ

@tania

আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 9 months ago 

শশী এবং মিজান একে অপরকে ভালোবাসলেও, মিজান দেখছি শশীর বিয়ের এরকম কথাগুলো শুনেও খুব একটা পাত্তা দেয়নি। আমার তো মনে হচ্ছে শশী বিয়েতে রাজি হয়ে যাবে এবং কি ওই ছেলেটার সাথে সে বিয়ে করে নিবে। আসলে অনেক ছেলে রয়েছে যারা নিজেরাই মেয়েদেরকে পছন্দ করে আবার রিলেশন করে। কিন্তু যখন মেয়েরা ছেলেদেরকে বিয়ের কথা বলে তখন তারা তেমন একটা পাত্তা দেয় না। এখন দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।

 9 months ago 

মিজান ভেবেছিল শশীকে বিয়ে দিবে না। এজন্যই খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছিলো না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 9 months ago 

মিজান ছেলেটা প্রেমের ব্যাপারে সিরিয়াস না। শশী মেয়েটা যথেষ্ট চেষ্টা করলো কিন্তু তার গুরুত্ব না পেয়ে রাগ করা খুব স্বাভাবিক। তবে ঘটনার মোড় কোনদিকে যায় বোঝা যাচ্ছে না। সামনের পর্বে হয়তো অনেকটাই পরিষ্কার বোঝা যাবে। তবে যাইহোক আমি শশীর সাপোর্টে।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া শশী অনেক চেষ্টা করছে মিজানকে রাজি করানোর। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 9 months ago 

কিছু কিছু ছেলে আছে মেয়েদেরকে প্রপোজ করে প্রেম করবে ঠিকই, কিন্তু বিয়ের কথা বললেই পিছপা হয়ে যায়। মিজানও সেই দলের লোক। আসলে যে ছেলে মন থেকে ভালোবাসে,সে কখনো এতো অজুহাত দেয় না। তার উদ্দেশ্য থাকে যেকোনো বিনিময়ে নিজের ভালোবাসার মানুষকে পেতে হবে। মিজান তো পড়াশোনা শেষ করেছে, অনেক ছেলেরা ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য ছাত্র জীবনেই বিয়ে করে ফেলে। যাইহোক শশীর উচিত পরিবারের কথামতো বিয়ে করে নেওয়া। মিজানের মতো এমন ছেলের জন্য অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করার কোনো মানে নেই। যাইহোক বাস্তব গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো আপু। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 9 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এমন ছেলেদের ভালোবাসলে কষ্ট পেতে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

 9 months ago 

যেহেতু শশী প্রতিনিয়ত মিজানকে তার বিয়ের ব্যাপারে কথাগুলোও বলতো কিন্তু মিজান কোন গুরুত্বই দিত না। তাই এখানে শশীর কোন দোষ নেই, যাই হোক পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত পড়ে ভালোভাবে মন্তব্য করতে পারব।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়ে সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 9 months ago 

গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।শশীও মিজান এর প্রেমকাহি কিন্তুু মিজান উদাসী। শশীর যে সত্যি সত্যি বিয়ে দিতে চাচ্ছে কিংবা পাত্র দেখা শুরু করেছে সেসব উরে দিয়ে সম্ভবত ভুল করছে মিজান। পরবর্তী পোস্টে মিজান ও শশীর ভাগ্যে কি আছে।শশীকি মিজানকে ভুলে রাজিবকে বিয়ে করবে। সেসব জানার অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টে শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

পড়ে কি হয়েছিল জানার জন্য পরবর্তী পর্বের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59032.15
ETH 2518.27
USDT 1.00
SBD 2.46