গল্প "নীতির জীবন"-শেষ পর্ব
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম
"নীতির জীবন" গল্পটির শেষ পর্ব নিয়ে। গল্পটিও একজনের বাস্তব জীবন থেকে নেয়া। আসলে বানিয়ে গল্প লেখার থেকে বাস্তব জীবনের গল্প গুলো লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। কারণ বানানো গল্পতে অনেক কিছু অবাস্তব থাকে। কিন্তু সত্যিকারের জীবন কাহিনী থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। যাই হোক গত পর্বে নীতির হাসবেন্ড চাকরি ছেড়ে বিদেশ চলে যাওয়া পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম। আজকে তার পর থেকে শুরু করছি। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের ভালো লাগবে।
নীতির জীবন
বিদেশে যাওয়ার পর সে কিছুদিন খুব কষ্ট করে। তারপর বুদ্ধি করে কোম্পানি চেঞ্জ করে। এই কোম্পানিতে বেশ ভালোই কাজ করছিল। তারপর কোম্পানি থেকে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাচ্ছিলো তাদের কোম্পানির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য। এই দেশের মধ্যে বাংলাদেশেও ছিল। নীতির হাসবেন্ড বেশ চালাক ছিলো। সে বসকে ম্যানেজ করে প্রথমে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছিল আসার জন্য।
প্রথমে দেশে এসে কোম্পানির প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বেশ ভালোভাবে সাপ্লাই দিতে পারছিল। এজন্য তার বসও তার প্রতি খুব খুশি ছিল। বড় বড় অনেক ডিল নীতির হাসবেন্ডকে দিয়ে করাচ্ছিলো। আর তার থাকা খাওয়া সব মিলিয়ে বেতন ও বেশ ভালোই দিচ্ছিলো। তাই নীতিকেও ঢাকায় নিয়ে আসে। এভাবে এক বছর বেশ ভালো টাকা পয়সা ইনকাম করে। কিন্তু নীতির শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করতে করতেই তার সেসব টাকা পয়সা শেষ করে ফেলে এবং তার কোম্পানির মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
ওই দেশের টাকার মান কমে যাওয়ায় বেতন কমে যায়। তাই তার হাজবেন্ড আর বিদেশে যায় না। কোম্পানি থেকে তার ভালো কাজের জন্য তাকে বারবার ডাকতে থাকে। কিন্তু সে আজ যাবে কাল যাবে করতে থাকে। সে এখন বাড়িতে থাকে। তার টাকা-পয়সার এখন সমস্যা। এত টাকা ইনকাম করেছে কিন্তু কোন সেভিংস নেই। পরিবারের জন্য সব টাকা খরচ করলেও এখন পরিবারের কাছে এসে বোঝা হয়ে গিয়েছে। এরই মাঝে নীতির একটি মেয়ে হয়েছে। মেয়ের পড়ালেখার খরচ হাজবেন্ড দিতে পারে না। কারণ সে তো কোন ইনকামই করে না। সে বিদেশ যাবে যাবে করে বসে আছে। এই নিয়ে নীতির সঙ্গে তার মাঝেমধ্যে ভালো ঝামেলা হয়। এমনকি নীতির হাসবেন্ড ওর গায়ে হাত পর্যন্ত তুলে।
নীতি প্রায় সময় রাগ করে বাবার বাড়িতে এসে থাকে। আবার তার হাসবেন্ড বুঝিয়ে তাকে নিয়ে যায়। তাছাড়া নিজের টুকটাক খরচ তার বাবা-মায়েরা পূরণ করে। নীতির মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে সেই খরচ নীতির বোন দেয়। এভাবেই নীতি অশান্তির মধ্যে বসবাস করছে।
আসলে বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে সন্তানরা কখনো সুখী হতে পারে না। নীতিই তার বাস্তব প্রমাণ। যদিও তার বাবা-মা তাকে মেনে নিয়েছে কিন্তু যে অপমান এবং কষ্টের মাঝে নীতি তার বাবা-মাকে ফেলেছিল তারই শাস্তি হয়তো এখন ভোগ করছে। কিছুদিন হল নীতির হাসবেন্ড আবারও বিদেশে গিয়েছে। এখন কি নীতির সুখের দিন ফিরে আসবে কিনা দেখার বিষয়।
আমাদের কারোরই উচিত না বাবা-মাকে এভাবে কষ্ট দেওয়া। অনেক মেয়েরা ভালোবাসার টানে বাবা-মাকে এভাবে কষ্ট দিয়ে চলে যায়। দিনশেষে তারা কি আদৌ সুখী হতে পারে?
আজ এ পর্যন্তই। সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবে। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আগের পর্বগুলো পড়েছিলাম তাই শেষ পর্ব পড়ার প্রতি আগ্রহটা বেশি ছিল। হ্যাঁ এটা বাস্তব বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে কখনোই কেউ সুখী হতে পারে না এমনকি বাস্তবে অনেক ঘটনা দেখেছি।
সেজন্যই হয়তো নীতির জীবনে এখন পর্যন্ত সেরকম সুখ আসেনি। ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব আমি পড়েছিলাম। আজকে এর শেষ পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ আসলে পিতা মাতার মনে কষ্ট দিয়ে কেউ কখনো সুখী হতে পারেনি৷ নীতও তার পরিবারকে কষ্ট দিয়েছে, যা তার জন্য মোটেও ভালো বেপার নয়৷
আপনি আমার গল্পটি সবগুলো পর্ব পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। এভাবে উৎসাহ দিয়ে পাশে থাকবেন আশা করি।
আসলে বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে কোন কিছুর সিদ্ধান্ত একা নিলে সেটা আমাদের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, একথা একদম সত্যি। এই গল্পে নীতি কে তার বাস্তব উদাহরণ হিসাবে দেখতে পেলাম। টাকা না থাকলে নীতির হাজবেন্ড কি করে বা মেয়ের পড়ালেখার খরচ দেবে আপু! টাকা না দিতে পরিবারও তখন বোঝা মনে করে, এটা ঠিক। যাইহোক, যেহেতু নীতির হাজবেন্ড আবার নতুন করে বিদেশ গেছে, এখন দেখা যাক তাদের অবস্থার উন্নতি হয় নাকি।
নীতির হাজব্যান্ড একসময় অনেক টাকা পয়সা ইনকাম করেছে। কিন্তু সেভাবে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। তাই এখন সে হারে হারে নেটের পাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
টাকা পয়সা ইনকাম করে সেগুলো ঠিক করে কাজে লাগাতে না পারলে যে কি দশা হতে পারে তার জলজ্যান্ত উদাহরণ নীতির হাজব্যান্ড।