গল্প "বিশ্বাসঘাতকতা" পর্ব-৩

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটির তৃতীয় পর্ব নিয়ে। একজন মেয়ে তার সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য সব ধরনের সেক্রিফাইস করতে রাজি থাকে। বিশেষ করে সন্তানদের দিকে তাকিয়ে নিজে শত কষ্ট সহ্য করতেও প্রস্তুত থাকে। ঠিক তেমনটি হয়েছিল প্রীতির ক্ষেত্রেও। এখন দেখা যাক কি হয়েছিল প্রীতির সাথে। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের ভালো লাগবে।


kiss-mark-5654536_1280.jpg

Link



বিশ্বাসঘাতকতা


গোপনে কলি আর জুয়েলের প্রেম চলতে থাকে। হঠাৎ একদিন প্রীতি জুয়েলের চালচলনে পরিবর্তন দেখতে পায়। জুয়েল আগের মত প্রীতিকে ভালোবাসে না। কেমন যেন এড়িয়ে চলে। তাছাড়া মাঝেমধ্যে কার সঙ্গে যেন কথা বলে। বাসায় ঠিকমতো থাকে না। প্রীতিকে একদমই সময় দেয় না। কেমন যেনো প্রীতির সব বিষয়ে ভুল ধরতে থাকে। এভাবে তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। জুয়েলের বাবা মা প্রীতিকেই দোষ দিতে থাকে। তারা ছেলের কোন দোষই দেখতে পায় না। ছেলে যত কিছুই করুক সব প্রীতির দোষ।

এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর প্রীতির কিছুটা সন্দেহ হয়। সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে জুয়েল আর কলি মধ্যে সম্পর্কের কথা। প্রীতির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। তাদের প্রায় আঠারো বছরের সংসার। জুয়েল কিভাবে তার সঙ্গে এমন করতে পারলো। প্রীতি প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাসই করতে চায় না। কিন্তু আস্তে আস্তে বিষয়টি আর গোপন থাকে না। জুয়েল ও সব স্বীকার করে নেয়। প্রীতি জুয়েলের সঙ্গে রাগারাগি করে বাপের বাড়িতে চলে আসে মেয়েদের কে রেখে। কিন্তু কিছুদিন পর প্রীতি থাকতে না পেরে ছোট মেয়েকে তার কাছে নিয়ে আসে। এভাবেই প্রীতি কয়েক মাস বাপের বাড়িতে থাকে। প্রীতি ভেবেছিলো জুয়েল তার অভাব বুঝতে পারবে। কিন্তু এতে জুয়েলের আরো সুবিধা হয়। সে ওই মেয়েকে এই ফাকে বিয়ে করে ফেলে।

একদিন জুয়েল কলির বাসায় আছে খবর পেয়ে প্রীতি ওই বাসায় যায়। প্রীতির আসা দেখে জুয়েল পালিয়ে যায়। ওই মেয়ের বাসায় গিয়ে প্রীতি জানতে পারে জুয়েল কলিকে আসলেই বিয়ে করেছে। কলি ওর হাসবেন্ডকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে। তখন কলির সঙ্গে প্রীতির অনেক ঝগড়াঝাটি হয়। জুয়েলের সঙ্গেও অনেক ঝগড়াঝাটি হয়। এভাবে আরও বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। প্রীতি শুধু ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছিল। বড় মেয়েটি তার সঙ্গে আসেনি। এভাবে চলতে চলতে প্রীতি ভেবেছিল জুয়েল হয়তো তার ভুল বুঝতে পারবে এবং তাকে নিতে আসবে কিন্তু জুয়েল আর প্রীতিকে নিতে আসে না।

তারপর একদিন প্রীতির নামে কোর্ট থেকে চিঠি আসে। প্রীতির আর বুঝতে বাকি থাকে না যে তাতে কি আছে। প্রীতি সে চিঠিটি আর খোলার সাহস পায় না। কিছুদিন ওভাবেই রেখে দেয়। তারপরে একদিন সাহস করে খুলে দেখে জুয়েল তাকে ডিভোর্স পাঠিয়েছে। প্রীতির পরিবারের লোকজন চাচ্ছিলো যেন বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলা যায়। এর জন্য তারা উকিলের শরণাপন্ন হয়। উকিল এবং এলাকার কিছু গণ্যমান্য লোকজন মিলে একসঙ্গে মিটিংয়ে বসে। সবাই মিলে জুয়েল প্রীতিকে অনেক বোঝায়। জুয়েল এবং জুয়েলের ফ্যামিলি প্রীতিকে সব দোষ দিতে থাকে। জুয়েলের সঙ্গে সংসার করতে চায় জন্য সব মুখ বুজে সহ্য করে প্রীতি। সবাই প্রীতিকে বোঝায় যে তুমি জুয়েলদের কাছে মাপ চেয়ে ফিরে যাও। প্রীতিও সবার কাছে মাফ চেয়ে নেয় এবং সবকিছু ঠিক হয়। জুয়েল একমাস পরে প্রীতিকে নিতে আসবে।



জুয়েল কি আসলেই প্রীতিকে নিতে এসেছিলো? প্রীতি কি আবারও জুয়েলের সঙ্গে সুখের সংসার করতে পেরেছে? জানতে চাইলে পরবর্তী পর্ব অবশ্যই পড়তে হবে। আশা করি আজকের পর্বটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।


আমার লেখা গল্প || "বিশ্বাসঘাতকতা" এর দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন.



ধন্যবাদ

@tania

আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

আমি হলে সবসময় প্রীতির পক্ষে কথা বলতাম। আর জুয়েলের বিবেক কেমন যে তার সন্তান থাকতেও অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায়। যাইহোক গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আসলেই ক্ষমা চাইতে এসেছিল কিনা সেটা জানতে ইচ্ছে করছে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জুয়েল যে কাজ করেছে তাতে জুয়েলের পক্ষে থাকার কোন কারণই নেই। যাইহোক ভাইয়া ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

যদিও এই গল্পটির এর আগের পর্ব পড়া হয়নি, তবে আজকের পর্বটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটির তৃতীয় পর্ব আপনি আজকে অনেক সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন। প্রীতি কিন্তু চেয়েছিল জুয়েলের সাথে সুখে শান্তিতে ঘর করতে কিন্তু জুয়েল প্রীতিকে ঠকিয়েছে। আসলে এরকম মানুষগুলোর বিবেক কিভাবে এরকম হয় এটা বুঝি না। একটা মানুষকে এভাবে কষ্ট দিয়ে কিভাবে অন্য আরেকজনের সাথে সুখে থাকতে পারে। পরবর্তীতে দেখার অপেক্ষায় থাকলাম জুয়েল প্রীতিকে নিয়ে গেল কিনা।

 last year 

একজনের চাওয়াতে কি আর সুখের সংসার হয়। দুজনকেই চাইতে হয়। সেজন্যই তো তাদের সংসার এখন ভাঙ্গার পথে।

 last year 

বেশিরভাগ মানুষ এরকম বিশ্বাসঘাতকতা করে থাকে। তারা প্রথমে একজনের সাথে সংসার করে আবার অন্যজনকে বিয়ে করে। প্রীতির কোন দোষ না থাকা সত্ত্বেও সেই তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এখন তো আমি ভাবছি তার হাজবেন্ড তাকে আবারো নিয়ে যাবে নাকি নিয়ে যাবে না? পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

প্রীতি সংসারটা টিকিয়ে রাখার জন্য সব মেনে নিতে রাজি ছিল। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে আপু আপনার গল্পটি পড়তে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। এখন আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষ এমন বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখা যায় আপু। তাদের সংসারে ছেলে মেয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও তারা আবারও অন্য জায়গায় বিয়েতে লিপ্ত হয় আসলে এই বিষয়টি আমার কাছে বেশ খারাপ লাগে। আমি মনে করি তিনি তার পরিবারের প্রতিটা মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বর্তমান সমাজের পরকীয়ার জন্য অনেক সংসার ভেঙে যাচ্ছে। যাই হোক ভাইয়া পরবর্তী পর্ব অবশ্যই পড়বেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

প্রীতির ভাগ্য খুবই খারাপ। নয়তো জুয়েলের মতো এমন অমানুষের সাথে বিয়ে কেনো হবে। এতো বছরের সংসার জুয়েল পরকীয়ায় জড়িয়ে শেষ করে দিলো। সুযোগে কলিকে বিয়েও করে নিলো। কলি মেয়েটাও খুব খারাপ। নয়তো বিবাহিত পুরুষকে কেনো বিয়ে করবে। তবে এতো কিছুর পর জুয়েলের কাছে ফিরে যাওয়াটা মোটেই ঠিক হবে না প্রীতির। কারণ জুয়েলের মধ্যে কোনো অনুশোচনা আসেনি। তাই ভবিষ্যতে জুয়েল আবারো এমন করতে পারে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

জুয়েলকে আমার ব্যক্তিগতভাবে কখনোই পছন্দ ছিল না। ভেবেছিলাম এত বছর ধরে যেহেতু ভালো আছে তাহলে হয়তো ভালোই হবে। শেষমেষ ওর আসল চেহারা ঠিকই দেখা গেল।

 last year 

আসলে জুয়েলের মতো মানুষেরা কখনোই কারো স্বামী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। যাইহোক ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আমি বুঝলাম না, এমন একটা ছেলের সাথে সংসার করতে কেনই বাহ্ বাড়ির মানুষ প্রীতিকে জোর করছিল! আর প্রীতি ও তো চাকরি করে, তাহলে কেনই বাহ্ এমন নোংরা মানসিকতার একটা ছেলের সাথে মানিয়ে নিতে চাইবে! কুকুরের লেজ তো কখনো সোজা হয় না। তাই প্রীতি যদি সব ছেড়ে বাচ্চাদের নিয়ে একা থাকে তাহলেই মনে হয় মাথা উচু করে বাঁচতে পারবে। দেখা যাক পরবর্তিতে কি অপেক্ষা করছে।

 last year 

প্রীতির মেয়ে দুটির কথা চিন্তা করে সবাই চাচ্ছিলো যে তাদের মধ্যে যেন সবকিছু মীমাংসা হয়ে যাক।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65725.56
ETH 2673.18
USDT 1.00
SBD 2.90