বাসার দারোয়ান নিয়ে বিড়ম্বনা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। শহরের বাসাগুলোতে ধারণের ভূমিকা অনেক। একজন দারোয়ান একটি বাসার সকল সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করে। তাছাড়া বাসার লিফ্ট চালু থেকে শুরু করে পানির মেশিন চালানো, গ্যারেজ পরিষ্কার করা এগুলোর দায়িত্বও তার থাকে। বাসায় কে ঢুকলো, না ঢুকলো এগুলো দেখা, গাড়ি আসলে গেট খুলে দেওয়া সবকিছুর তাকে দেখাশুনা করতে হয়। সেই দারোয়ান ছাড়া যদি বাসা একদিন দুইদিন থাকে তাহলে সেই বাসার অবস্থা কতটা শোচনীয় হতে পারে তা চিন্তা করে দেখুন। এরকম এক সমস্যায় আমরা কিছুদিন ধরে পড়েছি।
ঢাকা শহরের ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।মশা উপরের দিকে তেমন একটা না থাকলে নিচের দিকে বেশ মশা রয়েছে। তাছাড়া দারোয়ানদেরকে সব সময় নিচেই থাকতে হয়। বিশেষ করে দেখা যায় আশেপাশের কয়েক বিল্ডিং এর দারোয়ান এক হয়ে রাস্তার সাইডে বসে গল্প করে বেশিরভাগ সময়। তখনই রাস্তায় প্রচুর মশা থাকে।
কিছুদিন আগে আমাদের দারোয়ানের জ্বর এসেছে। জ্বর অবস্থায় দুই তিন দিন সে ডিউটি পালন করেছে। যেহেতু সে একাই থাকে রান্নাবান্না সহ যাবতীয় কাজ তার একাই করতে হয়। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পর জ্বরের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় ডেঙ্গু টেস্ট করানো হয়েছে তাকে। তার ডেঙ্গু পজেটিভ এসেছে। এই অবস্থায় তার কেয়ার দরকার। কিন্তু কে করবে। খাবার-দাবারের ব্যবস্থা আমরা বিল্ডিং এর লোকজন করছিলাম। কিন্তু তাকেও তো দেখাশোনা করতে হবে। তাছাড়া তার কাজগুলো তো পড়ে আছে। এজন্য সে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে যায় এবং একজন ছেলেকে রেখে যায় তার বিকল্প হিসেবে।
ছেলেটি আসার কিছুদিন পর ছেলেটির জ্বর আসে। দুইদিন জ্বর থাকার পর ভালো হয়ে যায়। তারপর বেশ ভালই ছিল ছেলেটি। আমাদের দারোয়ান ও মোটামুটি সুস্থ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গুর প্রকোপ এখনো রয়েছে জন্য সে এই মাসে আর আসবে না। যদি আবার ডেঙ্গু হয়। নতুন ছেলেটির কিছুদিন পর আবারো জ্বর আসে। এবার ভয় পেয়ে বাড়ির মালিককে বলে চলে যায়।বাসার গেট এখন একদম ফাঁকা। হুট করেই তো পুরো একটি বাড়ির দায়িত্ব ও কাউকে দিয়ে দেয়া যায় না। দারোয়ান খোঁজা হচ্ছে। আপাতত বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভাররা গেটে এক এক সময় থাকছে। তাছাড়া বেশিরভাগ সময় গেট খোলাই থাকছে। আশেপাশের বাসার দারুণদেরকে বলে রাখা হয়েছে তারা যেনো একটু খেয়াল রাখে।
এ অবস্থায় নিচে গাড়ি রাখা সেভ না। তাই হাসবেন্ডকে বলেছি গাড়ি যেন বাসায় না রেখে অফিসে নিয়ে যায়। এমনিতে অফিস কাছেই হওয়ার কারণে প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে যায় না। এই সিকিউরিটির অভাবে এখন প্রতিদিন অফিসে গাড়ি নিয়ে যেতে হচ্ছে। দুইদিন গেটে কেউ নেই। চাবিটা এমন জায়গায় রাখা হয়েছে যাতে মাঝ রাতে আমাদের বিল্ডিং এর কারো প্রয়োজন হলে তারা সেখান থেকে নিয়ে খুলে বাইরে যেতে পারে।
কালকে আবার নতুনদার দারোয়ানকে ফোন দেওয়া হয়েছিল। তার জ্বর সেরেছে সে আসতে রাজি হয়েছে। এখন আগামীকাল সে আসবে। এই কয়দিন দারোয়ান ছাড়াই ইনসিকিউরিটিতে থাকতে হচ্ছে। সবথেকে বড় সমস্যা এমন পরিস্থিতি আমরা ইন্ডিয়া ঘুরতে যাচ্ছি। তাই বাসা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত। এমনি সময় বাসা থেকে দূরে কোথাও গেলেও কখনো বাসায় জিনিসপত্র নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। এবার কিছুটা চিন্তা করতে হচ্ছে। যদি দারোয়ান ঠিকমত না থাকে তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হলেও হতে পারে ফাঁকা বাসা। আশা করছি নতুন দারোয়ান পুরোনো দারোয়ান না আসা পর্যন্ত এই কয়দিন যেন থাকে।
এই ডেঙ্গুতে সবকিছুই ওলট-পালট করে দিচ্ছে। যেমন মানুষ মারা যাচ্ছে তেমনি যাদের ডেঙ্গু হচ্ছে তাদের অবস্থাও একেবারে খারাপ করে দিচ্ছে। সহজে কাজে ফিরতে পারছে না। আশা করি আমাদের পুরনো দারোয়ান খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। যাই হোক সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
ঢাকার শহরে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আপনাদের বাসার দারোয়ান ডেঙ্গু চরে আক্রান্ত হয়ে বাসায় ফিরে গিয়েছে যার কারণে আপনাদের সবার অনেকটাই বিরম্বনা হচ্ছে । তবে সে এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে গিয়েছে আর কালকে আবার আসতে চেয়েছে দেখুন সমস্যার কোন সমাধান হয় কিনা।
পুরনো দারোয়ান এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। নতুন যে দারুন এসেছিল সেই আবার এসেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
আপু তাহলে বিল্ডিং এর সবাই বেশ উৎকন্ঠার সাথে দিন পার করছেন বোঝাই যাচ্ছে। আসলে ঢাকা শহরে সিকিউরিটি একটা বিশাল ইস্যু। এছাড়া বিল্ডিং এর লিফট থেকে শুরু করে পানির ইস্যু, গাড়ি, এছাড়া কে কার লাছে আসছে-যাচ্ছে এসব দেখার লোক না থাকলে তো সর্বক্ষণ টেনশনে থাকাটাই স্বাভাবিক। বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হওয়াও অসম্ভব না। যাই হোক নতুন দারোয়ান থাকতে থাকতে আগের দারোয়ান সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফরে আসুক এই শুভকামনা।
নতুন দারোয়ান আবারও এসেছে কালকে। এজন্য একটু স্বস্তি পাওয়া গিয়েছে। ধন্যবাদ আপু আপনার গঠনগুলো মন্তব্যের জন্য।