গল্প "পথ চলা" শেষ পর্ব
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম মিষ্টি প্রেমের গল্প "পথ চলা" এর চতুর্থ এবং শেষ পর্ব নিয়ে। গল্পটি লিখতে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। ভেবেছিলাম গত পর্বে শেষ করে দিব। কিন্তু মনে হল যে ওখানে শেষ করলে কেমন যেন অপূর্ণ থেকে যায়। এজন্য আরো কিছুটা বাড়ালাম গল্পটা। এখন গল্পটার পূর্ণতা পেয়েছে আমার কাছে মনে হলো। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
এভাবে বেশ কিছুদিন রিয়া আর রোহানের ভালোই দিন কাটছিলো। ইউনিভার্সিটিতে দেখা হলে কেউ কারো সাথে প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা কথা বলে না। যাতে কেউ বুঝে না ফেলে। সারাদিন ফোনে কথা বলে তারা দুইজন। ক্লাসে আড়চোখে দুজন দুজনকে দেখে। এভাবে চলতে চলতে রিয়া ফোর্থ ইয়ার এ উঠে যায়। রোহানের বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। রোহান রিয়াকে বিয়ের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে রিয়া একবারে না করে দেয়। রোহান খুবই অবাক হয় রিয়ার এমন আচরণে।
রোহান-- তুমি কি আমাকে বিয়ে করতে চাও না?
রিয়া-- অবশ্যই চাই।
রোহান--তাহলে?
রিয়া-- আমি ইউনিভার্সিটি তে পড়া অবস্থায় তোমাকে বিয়ে করতে পারব না। তোমাকে বিয়ে করলে সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।
রোহান-- হাসাহাসি করার কি আছে?
রিয়া-- স্যারের সঙ্গে বিয়ে হলে সেই ক্লাসে এসে কি আর ক্লাস করা যায়। তাছাড়া...
রোহান--তাছাড়া কি?
রিয়া--তুমি জানো না ক্লাসের অনেক মেয়েরাই তোমার জন্য পাগল। তোমার পিঠ পিছে তোমাকে নিয়ে অনেক কথা বলে। মাঝেমধ্যে তো আমার খুব রাগ হয়। কিন্তু কিছুই বলতে পারি না। তাদের সঙ্গে আমাকেও সায় দিতে হয়। আর ওরা যদি জানতে পারে তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক তাহলে তো কথাই নেই।
রোহান-- শুধুমাত্র এই জন্য তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছ না?
রিয়া-- আরতো মাত্র অল্প কিছুদিন আমার ফাইনাল পরীক্ষাটা শেষ হলেই আমরা বিয়ে করতে পারবো।
রিয়া আর রোহানের মধ্যে অনেক কথা হয়। কিন্তু রিয়া কিছুতেই রাজি হয় না। রোহানও কিছুটা রাগ হয় রিয়ার উপরে। এভাবেই মান-অভিমানে আরো কিছুদিন কেটে যায়। অবশেষে রিয়ার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। এখন আর তাদের মিলনের পথে কোন বাধা নেই।
অবশেষে তাদের দুজনের বিয়ে হয়ে যায়।
রিয়া এখানেই শেষ করে তার নাতি নাতনিদের কাছে গল্প। রিয়ার নাতি নাতনিরা জানতে চায় যে গল্পটা কার? কিন্তু রিয়া কিছুই বলে না এই বয়সেও লজ্জা রাঙা মুখ দেখে তার নাতি নাতনিরা ঠিকই বুঝে যায় এটি তাদেরই প্রেম কাহিনী। ঠিক এমন সময় রোহান সেখানে চলে আসে । আর সবাই হাসতে হাসতে সেখান থেকে চলে যায়। রোহান রিয়াকে জিজ্ঞাসা করে
রোহান-- তুমি আমাদের গল্প করছিল ওদের কাছে তাই না?
রিয়া খুবই অবাক হয়।
রিয়া--তুমি কিভাবে বুঝলে?
রোহান-- তোমাকে যদি নাই বুঝতে পারি তাহলে এত বছর তোমার সঙ্গে কিভাবে কাটালাম। আমাদের এই পথ চলা তো অনেক আগেই তাহলে শেষ হয়ে যেত।
রিয়া এই বয়সেও লজ্জা পেয়ে যায়। রোহানের কথা শুনে মুখ লুকায়।
সত্যিকারের ভালোবাসাগুলো এমনই হয়। শত মান-অভিমান ঝগড়া করেও বছরের পর বছর একসঙ্গে কাটিয়ে দেয়। এ পথ চলা যেন শেষ হতে চায় না। ভালোবাসায় মান অভিমান না থাকলে ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। এমন ভালোবাসাগুলো যুগ যুগ বেঁচে থাকুক।
আমার লেখা প্রথম গল্প || পথ চলা এর তৃতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন.
আমার লেখা প্রথম গল্প || পথ চলা এর প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন.
আজ এ পর্যন্তই। আশা করি আমার লেখা প্রথম গল্পটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
এই গল্পটার শেষের অংশ কিন্তু সত্যি অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে। পথ চলা গল্পটার শেষের পর্ব আপনি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন অন্য পর্ব গুলোর মত। এই গল্পটির আগের পর্বগুলো ও আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকে শেষের পর্ব পড়ে সত্যি খুব ভালো লেগেছে। রিয়া তো দেখছি এই বয়সেও অনেক লজ্জা পায়। আর তার নাতি নাতনিদের কাছেও। নাতি নাত্নিরা ও বুঝতে পেরেছিল এটা তার প্রেম কাহিনী। অনেক সুন্দর করে শেয়ার করলেন আপনার পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।
আমার গল্পটি সবগুলো পর্ব পড়ে সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
পথ চলা গল্পটা কিন্তু সত্যি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। আমার কাছে তো আপনার লেখা পথ চলা গল্পটির প্রত্যেকটা পর্ব পড়তে অনেক ভালো লেগেছে। রিয়া এবং রোহানের এরকম একটা গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অবশেষে তাহলে তাদের দুজনের বিয়ে হয়েছিল এবং নাতির নাতনিদেরকেও তাদের গল্পটা শুনিয়েছিল রিয়া। নাতি-নাতনিরা বুঝতেই পেরেছিল এটা তার প্রেমের কাহিনী। তাদের ভালোবাসাটা সত্যি অনেক বেশি সুন্দর ছিল।
এরকম মিষ্টি প্রেমের গল্প পড়তে আমার কাছেও ভালো লাগে। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।।
আপু প্রথম গল্প হিসেবে গল্পটা কিন্তু আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন । আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে প্রত্যেকটা পর্বই আমি পড়েছি । গত পর্বে শেষ করে দেওয়ার থেকে আজকে আবার নতুন করে একটু বাড়িয়েছেন সেটাই ভালো লেগেছে । রোহান আর রিয়া একসাথে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছে শেষ বয়সে এসে নাতি-নাতনির কাছে গল্প করছে এটাই তো সত্যিকারের ভালোবাসা । সত্যি ভালো লাগলো আপু গল্পটা পড়ে ।
গত পর্বে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম। তারপরে ভাবলাম যে না আরো একটু বাড়াই। এজন্য এ পর্বটি বাড়িয়েছি। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।