স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। স্কুল জীবন সম্পর্কে কিছু কথা লিখবো আজকে। প্রতিটি মানুষের জীবনে স্কুলের দিনগুলো সব থেকে বেশি আনন্দময় থাকে। কিন্তু আমরা যখন স্কুলে পড়ালেখা করতাম তখন সেই লাইফটাকে অনেক বেশি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে হতো। তখন স্কুলের নিয়ম-কানুন, রুটিন এগুলো খুব কষ্টকর মনে হতো। কিন্তু যখনই আমরা এই স্কুল পার হয়ে কলেজের গণ্ডিতে পৌঁছাই তখনই বুঝতে পারি যে আসলে স্কুল লাইফটা কত বেশি আনন্দের ছিল। তাছাড়া বড় হওয়ার পর যদি কাউকে বলা হয় যে আপনি কোন লাইফে ফেরত যেতে চান তাহলে সবাই চোখ বন্ধ করে বলে দেবে যে স্কুল লাইফ।
আমার নিজের কথাই বলি আমি মর্নিং সিফট এ পড়ালেখা করেছি। এজন্য দেখা যেত যে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হতো স্কুলে যাওয়ার জন্য। তাছাড়া সকালবেলায় আরবির হুজুর আসতো। তার কাছে পড়ে স্কুলে যেতে গেলে খুব কষ্ট হয়ে যেত। সকাল ছয়টায় বা তার ও আগে উঠতে হতো। ৩০-৪০ মিনিট হুজুরের কাছে পড়ে তাড়াহুড়ো করে স্কুলের জন্য রওনা দিতে হতো। আবার স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে গেলে পানিশমেন্ট পেতে হতো। দেখা যেত ক্লাসের বাইরে দাড় করিয়ে রাখত। এগুলো তখন খুব কষ্টকর মনে হতো। কিন্তু এখন মনে পড়লে ওই বিষয়গুলো বেশ আনন্দের লাগে।
আবার যখন স্কুলে পড়া অবস্থায় কলেজের ড্রেস পড়া মেয়েদেরকে দেখতাম তখন কলেজের ড্রেসটাকে পাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি বড় হতে চাইতাম। কিন্তু যখনই স্কুল পার হয়ে কলেজে ভর্তি হলাম তখন স্কুলের ড্রেসটা দেখে এত বেশি মন খারাপ হত যে বলে বোঝাতে পারবো না। আমার মনে হয় সবারই নিজের স্কুলের ড্রেস পরা ছেলে-মেয়েদের দেখলে অনেক ইমোশনাল লাগে। আমার তো খুব কষ্ট লাগে স্কুল ড্রেস পড়া কাউকে।
আমার স্কুলের টিফিনের বিষয়টা খুব মনে পড়ে। আমাদের টিফিন টাইমে স্কুল থেকে টিফিন দিত। এজন্য বাসা থেকে খুব একটা নিয়ে যাওয়া হতো না। সকালবেলায় খুব ভোরে স্কুলে যাওয়া জন্য টিফিন টাইম আসতে আসতে ক্ষুধা লেগে যেত। যেদিন পছন্দমত টিফিন পেতাম সেদিন খুব ভালো লাগতো। আর যেদিন দেখা যেত টিফিন পছন্দ হয়নি সেদিন খুবই মন খারাপ লাগতো। তাছাড়া দেখা যেত টিফিন টাইম শুরু হওয়ার আগে পানি খাওয়ার বাহানা করে নিচে গিয়ে দেখে আসতাম যে আজকে টিফিন দিচ্ছে। সেই মুহূর্তগুলো এখনো চোখের সামনে ভাসে। মনে হয় এইতো সেদিন। কিন্তু তারপর কতগুলো বছর পার হয়ে গিয়েছে।
এখন বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠানোর সময়। বাচ্চাদের স্কুলের টিফিন রেডি করার সময় নিজের স্কুলের স্মৃতিগুলো বারবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আর মনে হয় যদি একবার সেই সময়ে ফিরে যেতে পারতাম। আমার মনে হয় আমার আজকের পোস্টটি পড়ে সবারই স্কুল লাইফের কথা মনে পড়ে যাবে।
স্কুল জীবনের কিছুটা স্মৃতিচারণ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
আপনার কথাগুলো শুনে আমার বেশ খারাপ লাগছে আপু। আমি নিজেও যে এই সময় টা ইতিমধ্যে পেছনে ফেলে এসেছি। বৃহস্পতিবার সকাল আমার কাছে সবচাইতে পছন্দের দিন ছিল। আগামীকাল ছুটি এই আনন্দ নিয়ে স্কুলে যেতাম। যেটার অনূভুতি অন্য কোন অনূভুতির চেয়ে ভালো। স্কুলের সেই দিনগুলো আমিও অনেক মিস করি। দেখতে দেখতে কলেজ টাও শেষ। আফসোস দিনগুলো তে আর ফিরে যেতে পারব না।।
আমার কাছে অবশ্য শুক্রবারের সকালটা বেশি ভালো লাগতো। কারণ সকাল বেলায় ঘুম থেকে ওঠার ঝামেলা থাকত না। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হয় যেন সেই স্কুল জীবনে ফিরে গেলাম। সত্যি চমৎকার ছিল সেই দিনগুলি ।মনে হয় যেন এই তো সেদিন। কিন্তু মাঝখান দিয়ে কতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। দারুন সময় পার করেছি। সে দিনগুলো যা এখন শুধুই স্মৃতি ।ধন্যবাদ আপনাকে পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেবার জন্য।
এই পোস্টটি লেখার সময় আপনার কথা বারবার মনে হচ্ছিলো। আমরা দুজন একসাথে স্কুলে যেতাম সেই স্মৃতি মনে পড়ছিল। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
আসলে স্কুল লাইফের জীবনটা সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকে শুধু টিফিন টাইমের কথা নয় সব মুহূর্তগুলোই স্মরণীয়। তবে আমরা বাসা থেকে টিফিন নিয়ে যেতাম আর টিফিন টাইমে সবাই একসাথে বসে খেতাম কি মজা হত এখন শুধু মিস করি।
স্কুল লাইফে থাকা অবস্থায় বোঝা যায় না। স্কুল লাইফ পার করে আসলেই মনে হয় কি মিস করে ফেললাম। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
সবার জীবনে স্কুল লাইফের দারুন দারুন কিছু মুহূর্ত থেকে থাকে এবং ঘটনা থেকে থাকে। আজকে আপনি আপনার স্মৃতির পাতা থেকে দারুন ঘটনা উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। আমাদের প্রাইমারি লাইফে স্কুল থেকে বিস্কুট দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সম্ভবত সেটা বিএনপি সরকারের আমলে। যাইহোক সুন্দর কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন তাই ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া প্রতিটি মানুষের জীবনে স্কুলের বিভিন্ন স্মরণীয় ঘটনা থাকে। সেগুলোই উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
স্কুল লাইফ মনে হয় বেশির ভাগ মানুষের ই খুব পছন্দের সময়। বই না আনলে পানিশমেন্ট, হোমওয়ার্ক এর খাতা ভুলে না আনলে পানিশমেন্ট, কাড়াকাড়ি করে টিফিন খাওয়া, প্রতিদিন সকালে পিটি- ড্রিল, জাতীয় সংগীত গাওয়া, পরীক্ষা সব মিলিয়েই জীবনের সেরা সময় স্কুল লাইগ।
ঠিক বলেছেন আপু বেশি কড়াকড়ি থাকে জন্য সেই লাইটটাকে বেশি মিস করা হয়। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
প্রতিটি মানুষের জীবনে স্কুল লাইফ শ্রেষ্ঠ একটি অধ্যায়। এই লাইফটা বড় হয়ে যাওয়ার পরেও সবাই মিস করে। সহপাঠীদের সাথে টিফিন টাইমে খাওয়া দাওয়া করা, খেলাধুলা করা,মাস্তি করা সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটতো। পিটি করতে আমার কিছুটা বিরক্ত লাগতো। মনে হতো যে শুরু হলে আর শেষ হতো না। শপথ পাঠের পর জাতীয় সংগীত শুরু হতো,আর আমার কাছে মনে হতো জাতীয় সংগীত এতো বড় কেনো,শেষ হয় না কেনো😂। যাইহোক আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই স্কুল লাইফের কথা মনে পড়ে গেল। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
পিটি করতে মনে হয় সবারই বিরক্ত লাগতো। তাছাড়া জাতীয় সংগীত তো গাইতামইনা শুধু ঠোঁট মিলাতাম। এখন মনে পড়লে হাসি পায়। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।