গল্প "বাস্তবতা পর্ব-২"
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আবার হাজির হয়ে গেলাম "বাস্তবতা" গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। এই গল্পটি আমারে কাছের মানুষের বাস্তব জীবন থেকে লেখা। খুব কাছ থেকে ওর জীবনের প্রতিটি সময় আমি দেখেছি। তাই ভাবলাম যে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি। গত পর্বে শশীর বিয়ে ঠিক হয়ে যায় সেখানেই শেষ করেছিলাম। আজকে দেখা যাক শশীর আসলেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল কিনা। তাহলে কথা না পাড়িয়ে পরবর্তী পর্ব শুরু করি।
বাস্তবতা
এর মাঝে শশী মিজানকে জানিয়ে ব্রেকআপ করে ফেলে। মিজান তখন খুব কষ্ট পায় এবং অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে যেন বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু শশী রাজি হয়ে গিয়েছে এখন সে আর তার পরিবারকে বলতে পারবে না।
শশী--তোমাকে অনেকবার বলেছি তুমি কখনোই গুরুত্ব দাওনি। আমাকে বোঝার চেষ্টাও করনি।
মিজান-- আমি তো কখনোই ভাবি নি যে বিষয়টি এতটা সিরিয়াস হয়ে যাবে।
শশী--তাছাড়া আমি ইনডাইরেক্টলি মাকে অনেকবার তোমার কথা বলার চেষ্টা করেছি। মা হয়তো কিছুটা বুঝতে পেরেছে। সেজন্য আমাকে ইনডাইরেক্টলি বুঝিয়ে দিয়েছে সে কখনোই তোমার আমার সম্পর্ক মেনে নেবে না।
মিজান-- আমরা চেষ্টা তো করতে পারতাম।
শশী-- তুমি সেরকম কোন আশ্বাসই আমাকে দাও নি। তাই আমি সবদিক বিবেচনা করি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ কথাগুলো বলার সময় যদিও শশীর অনেক কষ্ট হয়েছে।
দুইদিন পর শশীর কাবিন হয়ে যায় রাজীবের সঙ্গে। শশী আর রাজীব কাবিনের পরপরই সারারাত জেগে মোবাইলে গল্প করত। এভাবে দুজনের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। মাঝে মাঝে মিজানের জন্য কষ্ট হয়। তারপরও তাকে ভুলার চেষ্টা করে। মিজানের কথা কোনোভাবেই রাজিব যেনো বুঝতে না পারে। মাঝে মধ্যে মিজান ও শশীকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেয়। দুজন বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে লাইন কেটে দেয়।
কয়েকদিন পর শশী আর রাজীবের বিয়ে হয়ে যায় এবং শশীকে রাজিবদের বাসায় ঢাকাতে নিয়ে যায়। শশী তখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শশীরকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ট্রান্সফার করে ঢাকার একটি কলেজে ভর্তি করে দেয়। প্রথম কিছুদিন বেশ ভালই কাটছিল তাদের। বিয়ের পর দুজন বেশ ভালো সময় কাটাতে থাকে। কিন্তু রাজীব মাঝে মধ্যে ব্যাক পেইন এর জন্য অসুস্থ হয়ে যেত। শশী প্রথমে যে বিষয়টি নরমাল ভাবে নিয়েছিল। বিভিন্ন ডাক্তার দেখানোতেও যখন রাজীবের কোমরের ব্যথা ঠিক হচ্ছিল না তখন শশী একটি আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের খোঁজ পায় এবং সেখানে রাজীবকে নিয়ে যায়। রাজীবই শশীকে নিয়ে যেতে বলে। তারপর দুজনে মিলে সেখানে ট্রিটমেন্ট শুরু করে।
এই ট্রিটমেন্ট করানোর পর রাজিবের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায় এবং সে পুরোপুরি বিছানায় পরে যায়। তখন শশী বুঝতে পারে যে রাজিবের এই সমস্যা অনেক আগে থেকেই। সেজন্যই তার পরিবারের লোকজন তাড়াহুড়া করে তাকে বিয়ে দিয়েছে এবং রাজীব এর মাঝে তার চাকরিও ছেড়ে দিয়েছে। সে চাকরিতে ঢুকেছিল শুধুমাত্র বিয়েতে দেখানোর জন্য। শশীর কাছে সবকিছু পরিষ্কার হতে থাকে। কিন্তু শশীর শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্নভাবে শশীর উপরে দোষ চাপাতে থাকে। শশী এই ডাক্তারের কাছে নিয়ে রাজীবের এই অবস্থা করেছে। রাজীবের সমস্যার জন্য শশীই দায়ী। শশী অনেক নরম মনের মানুষ জন্যই বিষয়টি তেমনভাবে গুরুত্ব দেয়নি। সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করেছে।
ধীরে ধীরে রাজিবের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। সে বিছানা থেকে একদমই উঠতে পারে না। তারপর নার্সিং বেড এনে তাতে রাখা হয় রাজিবকে। তার যাবতীয় কাজ তখন শশী করে। এমনকি সে বাথরুমে পর্যন্ত যেতে পারে না। বিছানাতেই সব করতে হয়। সেগুলো পর্যন্ত পরিষ্কার করতো শশী। শশীর অনেক কষ্ট হলেও কখনো তার বাবা-মার প্রতি কোন অভিযোগ তুলেনি। অনেকেই শশীকে বুদ্ধি দিয়েছে যেন রাজিবকে ছেড়ে চলে আসে। তাকে ধোঁকা দিয়ে বিয়ে করেছে রাজিব। কিন্তু শশী তা করতে পারেনি। এভাবেই দিন যাচ্ছিলো শশীর।
শশীর সেবায় রাজিব কি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে? আবারও কি তাদের সুখের সংসার হবে? জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। খুব দ্রুতই আবার হাজির হবো পরবর্তী পর্ব নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ
@tania
| Photographer | @tania |
|---|---|
| Phone | oppo reno5 |
| আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
|---|
VOTE @bangla.witness as witness 
OR SET @rme as your proxy
শশীর সাথে বিয়ের কিছুদিন পরই রাজিবের কোমরের ব্যথাটা যখন দেখা দিল তখনই এটা ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিলে হয়তো রাজিবের বিছানায় পড়ে যেতে হতো না। যাহোক শশী কিভাবে তার স্বামী রাজিবকে সুস্থ করে সেটা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।
রাজিবের এই সমস্যা অনেক পুরনো ছিল। এজন্যই তো পরবর্তীতে আরো বেশি হয়েছিল। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
জানিনা রাজিব সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে কিনা? তবে আমার কেন যেন রাজিব এর প্রতি জেদ হচেছ। মনে হচেছ মিজানের সাথেই শেষের মিলটা হলে ভালো হবে। কারন শশীরা কেন সারা জীবন এমন করে সেক্রিফাইস করে যাবে? শশীদের কি মন বলতে কিছু নেই। আপু প্লিজ রাজিব কে মেরে ফেলেন আর শশী আর মিজানের মিলন ঘটিয়ে দেন। আমার শশীর জন্য কান্না পাচ্ছে। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের।
আপনার মত আমারও খুব জিদ উঠেছিলো। এটাতো বানানো গল্প না যে রাজিবকে মেরে ফেলবো। এটা একজনের জীবনের সত্যি ঘটনা। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
আপু তবুও গল্পের মধ্যে মেরে ফেলেন।
আপনি বাস্তবতা গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে, গল্পটা পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। শশীকে ঠকিয়ে বিয়ে করা হয়েছিল এটা দেখে খারাপ লেগেছে। কিন্তু রাজীবের এরকম অবস্থায় শশী তাকে ছেড়ে যায়নি, এ বিষয়টা খুব ভালো লেগেছে। আশা করছি শশীর সেবা যত্নে রাজিব পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে উঠবে। শেষ পর্যন্ত কি হয় এটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
শশী তার দায়িত্বের কাছে বাঁধা পড়েছিল। এজন্য রাজীবকে ছেড়ে যেতে পারেনি। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
এই গল্পের শশী চরিত্রের মেয়েটি আসলেই অনেক ভালো কেননা গল্পের চরিত্রে তার যে ভূমিকা সেটা আসলে অনেক মেয়েই মানতে চায় না। যাই হোক শশীর সেবায় রাজিব সুস্থ হবে কিনা সেই পর্বটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
শশী মেয়েটি বাস্তবে আসলেই অনেক ভালো। কিন্তু ভালো মেয়েদের জীবনেই খারাপ কিছু ঘটে। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
রাজীবের ফ্যামিলি খুব তাড়াতাড়ি রাজীবকে বিয়ে দিয়ে দিতে চেয়েছিল তার এই সমস্যার কারণেই। তারা শশীদের কাছ থেকে রাজিবের এই সমস্যাটার কথা লুকিয়ে ছিল। তবে আমার মনে হচ্ছে রাজীবের প্রতি ভালোভাবে খেয়াল রাখলে এবং তার ট্রিটমেন্ট ভালোভাবে করলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। আপনি বাস্তবতা গল্পটার দ্বিতীয় পর্ব আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। যেটার প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম। আর আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ভালোই লেগেছে। এই গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
ঠিক বলেছেন আপু রাজিবের এই সমস্যার কারণে হয়তো তাড়াহুড়া করে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। ভুল করেছিল শশীর ফ্যামিলি খোঁজখবর না নিয়েই বিয়ে দিয়ে।
মিজানের জন্য আফসোস হচ্ছে, কারণ শশীর মতো এতো ভালো মনের একজন মানুষকে হারিয়েছে। রাজীবের পরিবার অবশ্যই রাজীবের অসুস্থতার কথা লুকিয়ে, শশীর সাথে রাজীবের বিয়ে দিয়েছে। কিন্তু শশী সবকিছু জানা সত্ত্বেও রাজীবের সেবা করে যাচ্ছে দিনরাত। শশীর মতো এমন মেয়ে পাওয়াটা আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
আমারও তাই মনে হয় মিজান অনেক ভালো একটি মেয়েকে হারিয়েছে। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।