ইন্ডিয়ান ভিসা করার অভিজ্ঞতা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। সেদিন গিয়েছিলাম যমুনা ফিউচার পার্কে ইন্ডিয়ান ভিসা করতে। ইন্ডিয়ান ভিসা করতে দেয়া যে এত কষ্ট আগে জানা ছিল না। কারণ এর আগে যতবারই ভিসা করেছি রাজশাহী থেকে করেছি। রাজশাহীতে ইন্ডিয়ান হাই কমিশনার পরিচিত ছিল জন্য খুব সহজে অল্প সময়ে ভিসা হয়ে যেত। আমাদের যেতেও হতো না। আমার হাসবেন্ড গিয়ে সবারটা করে নিয়ে আসতো। তাছাড়া একেবারে এক বছরের ভিসা দিয়ে দিত। করোনার জন্য কোথাও আর ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তাছাড়া আমার ছোট ছেলেরও পাসপোর্ট করা হয়েছিল না জন্য আরো কোথাও যাওয়া হচ্ছিল না। এবার সবার পাসপোর্ট রিনিউ করে ছোট ছেলের পাসপোর্ট করলাম। তারপর ভিসার জন্য দাঁড়াতে গিয়ে একেবারে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য সকালবেলা লম্বা লাইন হয়। এজন্য আমরা বারোটার দিকে গিয়েছিলাম যাতে একটু ফাঁকা থাকে। কিন্তু আমাদের একটা ভুল হয়েছে যে আমরা বৃহস্পতিবারে গিয়েছিলাম। ঈদের আগে তারপর বৃহস্পতিবার হওয়ার কারণে মনে হয় আরো বেশি ভিড় হয়েছিল। যদিও আমার হাসবেন্ড লাইনে আগেই দাঁড়িয়ে ছিল। তাছাড়া বিপদ যেদিন হয় সব দিক দিয়েই হয়। আমার বাসা থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে যেতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট লাগে। সেই দিন এত বেশি জ্যাম ছিল যে পুরা এক ঘন্টা লেগেছে যেতে। আমি তো ভেবেছিলাম যে সময়ের আগে হয়তো পৌঁছাতেই পারবো না। তারপর কাছাকাছি গিয়ে রিকশা থেকে নেমে হেঁটে গিয়েছি যাতে সময়ের আগে পৌঁছাতে পারি।
প্রথমে বিশাল লাইন দিয়ে ঢোকার পরে টোকেন নিয়ে আরো এক বিপদে পরার মত অবস্থা। ভিতরে বসার জায়গা তো নেই দাড়ানোর পর্যন্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। এত মানুষ ছিল ওই দিন। আমরা যখন টোকেন নিলাম আমাদের টোকেন ২৪৩৯ আর তখন মাত্র ১৮০০ চলছিল। আমি তো আমার হাসবেন্ডকে বললাম যে চলো আজকে আর না করাই। বাচ্চাদের নিয়ে এত সময় দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব না। তারপর মনে হলো যে যদি টোকেন নিয়ে বাইরে চলে যাওয়া যায়। বাইরে থেকে খাওয়া-দাওয়া করে এসে দুই ঘন্টা পর আবার চেষ্টা করলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম একবার ভেতরে ঢুকলে আর বের হওয়া যাবে না। পরে দেখলাম যে বের হওয়া যাচ্ছে। এই ফাঁকে আমরা ফুড কোর্টে গিয়ে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিলাম।
বাচ্চারা যেহেতু চিকেন পছন্দ করে সেজন্য আমরা কেএফসিতে গিয়েছিলাম। কেএফসিতে গিয়ে একটি চিকেন বান্ডেল অর্ডার দিলাম। তাতে দুই বাটি ফ্রাইড রাইস এবং চার পিস চিকেন ফ্রাই ও সাত পিস চিকেন ললিপপ ছিলো। ভিতরে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকার থেকে এখানে এসে আমাদের খাওয়া-দাওয়া টা হয়ে গেল। খাওয়া-দাওয়া করতে করতে প্রায় এক ঘন্টা চলে গিয়েছে। এক ঘন্টা পরে গিয়ে দেখি যে সিরিয়াল চলে এসেছে প্রায়। এক ঘন্টার প্রায় ৪০০ হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী ২০০ হতে আরো এক ঘন্টা লেগেছে। কারণ তারা লাঞ্চ ব্রেকে গিয়েছিল কিছু কিছু লোকজন। এজন্য খুব স্লো হচ্ছিলো। অবশেষে আমাদের কাঙ্ক্ষিত টোকেন নাম্বার আসলো। প্রথমে এক জায়গায় গিয়ে সব পাসপোর্ট জমা দিলাম। তারপরে আবার আরো এক লাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে হল। এত কষ্ট করে ভিসা করতে দাঁড়িয়ে বারবার মনে হচ্ছিল যে ঘুরতে না যাওয়াই ভালো অথবা রাজশাহী গিয়ে ভিসা করিয়ে নিয়ে আসি। যাই হোক কষ্ট করে হলেও পাসপোর্ট জমা দিয়ে এসেছি। এখন দেখা যাক ভিসার কি হয়। আগস্ট এর ৮তারিখ ডেট দিয়েছে।
সব কাগজপত্র ঠিকঠাক মতো জমা দিয়েছি। আশা করি ভিসা হয়ে যাবে। মিনিমাম ছয় মাসের হলেই অনেক। যেহেতু এক বছর এখন আর দেয় না। যাইহোক সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
Photographer | @tania |
---|---|
Phone | i phone11 |
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
প্রতিদিন অফিস আসার পথে যমুনার সামনে দিয়ে যাওয়া হয়। সকাল থেকেই বিশাল লাইন দেখি। খুব ভালো প্যারা খেয়েছেন দেখা যায়। টোকেন এর নাম্বার যেনো আমি শিহরিত। এতো মানুষ কিভাবে সামলায় এরা। আশা করি আপনার ভিসা হয়ে যাবে।
বাইরের লাইনে অবশ্য আমাদের দাঁড়াতে হয়নি। আমার হাজব্যান্ডই দাঁড়িয়ে ছিল। ভিতরে গিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে সবাই বলে থাকে বিপদ একদিক দিয়ে আসলে সবদিক দিয়ে আসে। আর আপনারা ইন্ডিয়ান ভিসা করতে গিয়ে অনেক খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। আসলে এরকম সময় লাগলে কিছুই ভালো লাগেনা করতে। অবশেষে করতে পেরেছিলেন এটা জেনে ভালো লাগলো। আর দুপুরের খাওয়া-দাওয়া কেএফসিতে গিয়ে করেছিলেন নিশ্চয়ই বেশ মজা করে খাওয়া হয়েছিল।
মাঝখানে বের হয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করেছি জন্যই বিরক্তি কম লেগেছে। তা না হলে তো আরো খারাপ অবস্থা হতো।
আপু, এখন ঢাকা রাজশহী বগুড়া সব খানেই একই অবস্থা। আর নিজে উপস্থিত থাকতেই হবে। রিসেন্ট কিছু মাস এত ভিড় হওয়ার কোন কারণ ই খুঁজে পাই না আমি। আমি যেবার যমুনা তে করতে দেই সেবারও এমন ভিড় ছিল। তবে আমার কেন যেন ৩০ মিনিটের মাঝেই হয়ে গিয়েছিল। বাচ্চা নিয়ে এত সময় দাড়িয়ে থাকা সত্যিই অসম্ভব কষ্টকর। ভালো যে দুপুরে বের হয়ে খাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ভিসা যেদিন আনতে যাবেন ঐ দিনেও মারাত্মক লম্ব লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আমি প্রায় দুই ঘণ্টা টানা রোদে দাড়িয়ে ছিলাম। আপনাদের ভিসা হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত। আমার টা নিয়েই ভয়ে আছি। আমি তো আরো স্টুডেন্ট হিসেবে করতে দিয়েছি 🤪। ভালো মত খোঁজ নিলে নগদে রিজেক্ট 😅। এর আগেও অবশ্য এমন করেই দুই বার পাইছি। দেখা যাক কপালে কি আছে।
আপনি যতবার ইন্ডিয়া গিয়েছেন আপনার ভিসা গুলো দেখলেই আপনাকে ভিসা দিয়ে দিবে। দু-একবার তো এমন হতেই পারে।
সত্যিই আপু আপনার পোস্টটি পড়েই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে আপনাকে। এত বড় সিরিয়াল আমার তো শুনেই মাথা ঘুরাচ্ছে !!ভালোই করেছেন মাঝখানে সুযোগ করে আপনারা খাওয়া-দাওয়া করে এসেছেন। কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক ও জমা দিতে পেরেছেন শুনে খুবই ভালো লাগলো। আশা করি আগস্ট ৮ এ তারিখে ভিসা পেয়ে যাবেন।
সিরিয়াল দেখে আমিও তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। একবার ভাবছিলাম যে বাসায় চলে যাই। পরে দেখলাম যে খুব দ্রুতই সিরিয়াল গুলো পার হয়ে যাচ্ছে।
ভিসা করার মধ্যে অনেক ঝামেলা রয়েছে আপু। এখানে করার কারণে হয়তো আরো বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল আপনাদের। যদি রাজশাহীতে গিয়ে করতেন তাহলে খুব সহজে হয়তো ভিসা করা হয়ে যেত। যেহেতু আপনার চেনা পরিচিত রয়েছে সেখানে। যেহেতু এখন এক বছর দেয় না তাই হয়তো ছয় মাসের হবে ভিসা। রেজাল্ট কি আসলো তা আশা করছি জানাবেন আমাদের।
ইন্ডিয়ান ভিসা করতে এই বারই এত ঝামেলা পোহাতে হলো। এখন দেখি কত দিনের ভিসা দেয় । ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনার আজকের এই পোষ্টের মধ্য থেকে আমি কিন্তু নতুন কিছু বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলাম। কারণ ইতো পূর্বে আমার এই বিষয়ে মোটেও ধারণা ছিল না। আপনার পোস্ট সম্পূর্ণ পড়ার পরে আমি বেশ কিছু বিষয়ে জানতে পেরেছি। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে নতুন কিছু জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পোস্টটি পড়ে আপনি ইন্ডিয়ান ভিসা করা সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।