জীবন, মৃত্যু ও পরকাল - পর্বঃ ৯
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি। জীবন, মৃত্যু ও পরকাল নিয়ে ৯ম পর্বে হাজির হয়ে গেলাম।আজকের পর্বে আমাদের সাথে আলোচনা করব জাহান্নাম নিয়ে। যদিও আমরা এ বিষয়গুলো আমরা সকলেই কম বেশি জানি কিন্তু আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা এগুলো যত শুনব এবং জানবো ততই আমাদের মনগুলো নরম হবে এবং আল্লাহর দিকে বেশি ঝুঁকে যেতে পারব।তাই আমার এই প্রচেষ্ঠা। আসলে শয়তান সবসময়ই চায় ভাল কাজ হতে আমাদেরকে দূরে রাখতে। আমরা প্রতিনিয়ত তার সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছি। কেউ কেউ এ যুদ্ধ জয়ী হয় আবার কেউ কেউ হেরে যায়।তাই যতই ধর্মীয় জ্ঞান আহরন করা যায় ততই খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা যায় এবং মনে অনেক শান্তি পাওয়া যায়। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের ভাল লাগবে।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।
গত পর্বে আপনাদের সাথে পুলসিরাত নিয়ে আলোচনা করেছিলাম।পুলসিরাত পার হওয়ার পরে এক পাশে থাকবে দুঃস্বপ্নময় জীবন জাহান্নাম এবং আরেক পাশে থাকবে অতি শান্তির স্থান জান্নাত। আজকের পর্বে জাহান্নাম নিয়ে আলোচনা করব।জাহান্নাম এই নামটি শুনলেই কেমন যেন বুকের ভেতর করে উঠে যা চিরন্তন সত্য এবং যা থেকে আমরা সকলেই দূরে থাকতে চাই।কুরআন মজীদে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নাম সম্পর্কে বারবার বর্ণনা করে আমাদেরকে মনে করিয়ে দিয়েছেন জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব সম্পর্কে।বারবার আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আল্লাহতালা জাহান্নাম সৃষ্টি করেছেন অবিশ্বাসী, মুনাফিক মানুষদের জন্য এবং বিশ্বাসীদের মধ্যে যারা অগনিত পাপ করেছে। জাহান্নামের আছে সাতটি স্তর, যে যত পাপ করেছে তার পাপের পরিমাণের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন স্তরে রাখা হবে।যে যত নিচের স্তরে থাকবে তার পাপের পরিমানও ততো বেশি থাকবে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন তার চাচা আবু তালেবকে জাহান্নামের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু স্তরে রাখা হবে অর্থাৎ তাকে সবচেয়ে কম শাস্তি দেওয়া হবে।তাঁর শাস্তি হচ্ছে তার পায়ে একজোড়া আগুনের জুতো পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মস্তিষ্ক ফুঁটে গলে গলে পড়তে থাকবে।তাহলে চিন্তা করা যায় সবচেয়ে কম শাস্তি যে পাবে তার যদি এই অবস্থা হয় তাহলে বেশী সাজাপ্রাপ্তদের অবস্থা কি হবে? জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে মুনাফিক, তাদের শাস্তি হবে খুবই ভয়ানক।
জাহান্নামের বাতাস থাকবে উত্তপ্ত, জাহান্নামের পানি থাকবে ফুটন্ত। গলিত পুঁজ আর যাক্কুম ফল হবে তাদের খাদ্য যা ক্ষুধা নিবারণ করতে পারবে না এবং পিপাসাও মেটাতে পারবে না।জাহান্নামের আগুনের তাপ থাকবে পৃথিবীর আগুনের 70 গুণ বেশি। পৃথিবীর আগুনে সামান্য একটু পুড়ে গেলে যে তীব্র ব্যথা ও জ্বালা অনুভূত হয় তাহলে জাহান্নামের আগুনে কি অবস্থা হবে? জাহান্নামের প্রতিনিয়ত শাস্তি বাড়তেই থাকবে অর্থাৎ কেউ অভ্যস্ত হতে পারবেনা। প্রতিদিন নতুন করে আরো বেশি পরিমাণে শাস্তি পেতে থাকবে এবং যা কয়েক মাস বা কয়েক বছর নয় অনন্ত কাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। আর এই শাস্তি যেন তারা বেশি ভোগ করতে পারে এ কারণে তাদের শরীরকে বিশাল বড় আকৃতিতে তৈরি করা হবে। মৃত্যুযন্ত্রণা হবে কিন্তু মৃত্যু হবেনা। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে ক্ষমা করেন জাহান্নামের আজাব থেকে আমাদের দূরে রাখেন।
যারা এক আল্লাহকে বিশ্বাস করে, কোন শিরক করেননি তারা জাহান্নামের কিছুকাল শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহ চাইলে তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে।কিন্তু সেই ভয়ানক জাহান্নাম যেখানে আমাদের এক সেকেন্ডও থাকা সম্ভব নয় আর সেখানে হাজার হাজার বছর কিভাবে থাকবো। তাদের শাস্তির পরিমাণ এর উপর নির্ভর করবে তারা জাহান্নামে কতদিন থাকবে। আর কিছু কিছু মানুষ অনন্তকালের জন্য জাহান্নামে জ্বলতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা কিছুকিছু মানুষের শাস্তি দুনিয়াতেই দিয়ে থাকেন এবং কিছু শাস্তি মৃত্যুর সময়, কিছু শাস্তি কবরের আজাব দিয়ে গোনাহ ক্ষমা করে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন। কিন্তু যাদের গুনাহের পরিমাণ এত বেশি যে তাদের কোনভাবেই গোনাহ ক্ষমা করার আর কোন পথ থাকে না, তারাই হবে জাহান্নামী। আমরা যেন বারবার জাহান্নামকে স্মরণ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।আল্লাহ যেন আমাদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করেন এটিই আমাদের সকলেরই একমাত্র চাওয়া।
আজকে তাহলে এইটুকুই। আগামী পর্বে এর শেষ পর্ব জান্নাত নিয়ে আলোচনা করব।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিসর থেকে এতোটুকুই আলোচনা করলাম।আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।
ধন্যবাদ,

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR



আল্লাহ আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন। জাহান্নামের কথা শুনতেই যেন মনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই পোস্ট যারা পড়বে তাদের মন অনেকটাই নরম হবে কারণ তাদের জাহান্নামের শাস্তির ভয় মনে ঢুকে যাবে।
গত পর্বে আপনি পুলসিরাত নিয়ে আলোচনা করেছেন। আর এই পর্বে আপনি জাহান্নাম নিয়ে আলোচনা করছেন। মানুষের হিসাব-নিকাশ শেষে তাকে হয় জান্নাতে অথবা জাহান্নামে যেতে হবে। জাহান্নাম এমন একটা ভয়াবহ জায়গা যেখানে মানুষকে তার ভিতরে ফেলে দিলে মুহূর্তের মধ্যে তার কোন চিহ্ন থাকবে না। জাহান্নামের মধ্যে উপর থেকে একটি পাথর ফেলে দিলে সত্তর বছর লাগে নিচে যেতে। জাহান্নাম বিশাল এক আজাবের জায়গা। এই জাহান্নামকে কেউ যদি মন থেকে অনুভব করতে পারে তাহলে সে পৃথিবীর সমস্ত কিছু ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর পথে চলবে। তবে মানুষ যদি প্রতিনিয়ত জাহান্নাম এবং মৃত্যুর কথা চিন্তা করে তাহলে সমস্ত পাপ কাজ থেকে সে নিজেকে বিরত রাখতে পারবে। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইল।
আমাদের বেশি বেশি মৃত্যু নিয়ে ভাবতে হবে।এই ভাবনা ভাবলে তখন আর আমরা আল্লাহর পথ থেকে সরে যাব না।মৃত্যুর কথা দিনে একবার হলেও ভাবা উচিত।আপনি আজ খুব সুন্দর করে জাহান্নামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। মনটা অনেক বেশি নরন হয়ে গেলো। আল্লাহ আমাদেরকে ভাল কাজ করার, ভাল পথে চলার তৌফিক দান করুন, আমিন।অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। জাহান্নাম নিয়ে এবং জাহান্নামের শাস্তি নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার এই লেখার মাধ্যমে আমাদের সবার মনে ভয় জাগ্রত হবে এবং আমরা নিজেকে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব। খুবই শিক্ষনীয় বিষয়গুলো আপনি আপনার লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
মহান আল্লাহ তায়লা ভালো জানেন আমাদের পরিণতি কী হবে। জাহান্নাম সম্পর্কে শুনলেই শরীরের মধ্যে একটা শিহরণ সৃষ্টি হয়ে যায়। তবে বর্তমানের মানুষের মধ্যে মনে হয় না এই ভয় কাজ করে। জাহান্নামের ভয় থাকলে মানুষ এতো পাপ এতো অনাচার করতো না। আপনার লেখাটা চমৎকার ছিল আপু।