মালিয়ার ভালোলাগা
হাসিবের এই প্রশান্ত প্রতিক্রিয়া মালিয়াকে আরও খেপিয়ে তুলল। মালিয়া আরও উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে ভয়ংকর একটি প্রশ্ন করল, ‘নাকি কোনো মেয়ে নিয়ে ফূর্তি করতে যাচ্ছ?’
সরাসরি এমন কথায় রকি হতভম্ব হয়ে গেল! অনেকটা আমতা আমতা সুরেই বলল, ‘ম-ম-মানে?’
‘মানেও বলে দিতে হবে?’
‘কীসব আজেবাজে বকছো!’ হঠাৎ হাসিবের কণ্ঠে ঝাঁজ চলে এসেছে।
মালিয়াএকদম হাসিবের চোখ বরাবর তাকাল। মালিয়া চোখে ভালোবাসার ছিটেফোঁটাও নেই; বিন্দুমাত্র ভয় নেই; তাতে দাউদাউ করে জ্বলছে সর্বনাশের আগুন! ‘দেখো রকি, তোমার গতিবিধি আমার কাছে ভালো লাগছে না! স্বামী কেন আসামীর মতো থাকবে? কেন ছিঁচকে চোরের মতো সবসময় নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করবে? ইদানিং তোমার দিকে তাকালেই মনে হয় তুমি আমার কাছ থেকে তোমার আসল অনুভূতিগুলো লুকাচ্ছ।’
রকি কিছুটা নরম সুরে বলল, ‘তোমার কাছে আমার কী লুকানোর থাকতে পারে? আর বুঝতে পারছি না, অন্য মেয়ের প্রসঙ্গই হঠাৎ তুললে কেন? তোমাকে তো আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি, তাই না?’
‘যারা প্রেমের কাঙাল, তারা সামনে যা দেখে তারই প্রেমে পড়ে!’
রকি বিরক্তি আটকে রাখতে পারল না। ‘ধ্যাৎ! কী শুরু করলে?’
‘আমি কথাগুলো এমনি এমনি বলছি না। গতরাতে তোমার শার্টে অন্য মেয়ের চুল পেয়েছি। শার্টে মেয়েদের পারফিউমের গন্ধও ছিল।’
‘তুমি কী আমাকে সন্দেহ করছ?’
‘সত্যি বলতে শুধু সন্দেহ না; অবিশ্বাস করছি। তুমি তো জানোই, লুকোছাপা আমার একদম পছন্দ না। কিছুদিন হলো তোমাকে আমার সম্পূর্ণ অন্য মানুষ মনে হচ্ছে। আগে তুমি মাসের বেতন এনে আমার কাছে দিতে। দুই মাস হলো তুমি সংসার নিজে চালানোর নাম করে আমার হাতে কিছুই দিচ্ছ না। টাকা চাইলে তোমার কাছে কোনো টাকা থাকে না; অথচ সংসার যে রাজার হালে চালাচ্ছ, তা-ও না। কোথাও টাকা জমাচ্ছও না। ভেবো না, আমি টাকার জন্য কথাগুলো বলছি। এখানে টাকার প্রশ্ন না রকি; এত টাকা দিয়ে তুমি করছটা কী? কোন বেশ্যার পেছনে খরচ করছ?’