## কচুরিপানা দিয়ে বাচ্চাদের খেলনা পুতুল তৈরী।

in Steem For Bangladeshlast year

20230724_173045_0000.png
Created by canva apps

আসসালামুওয়ালাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। দীর্ঘদিন পরে আজ আপনাদের সাথে গল্প করতে চলে এসেছি।নিজের শারীরিক অসুস্থতা আর পারিবারিক কিছু জটিলতার কারনে অনেক দিন হলো আমি এই কমিউনিটির বাহিরে ছিলাম।আবারও আলহামদুলিল্লাহ এখন সকল সমস্যার সমাধান হয়েছে।তাই আবারও চলে এসেছি, আপনাদের মাঝে।আমি আশাবাদি আপনারা আমাকে পূর্বের মতোই সাপোর্ট করবেন। আর পাশে থাকবেন।

হঠাৎ আমার নানু ভাই অসুস্থ হয়ে পরেছে।এই সন্দেশ পেয়ে হাসবেন্ড এর অনুমতি নিয়ে গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট এর মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ছুটে যাই।আমি আমার নানু ভাইকে একটু বেশিই ভালোবাসি।আগেই বলেছিলাম আমার মা নেই।সেই সূত্র ধরে নানু বাড়িতেই বেড়ে ওঠা আমার।যাইহোক একটা সময় পৌঁছে গেলাম আমার গন্তব্যে। বাড়িতে সবার মন খারাপ নানু অসুস্থ। নিরাবতায় আচ্ছন্ন এক পরিবেশ।খুব মাথা ধরেছে আমার।একটি চা খেতে পারলে ভালো লাগতো।কিন্তু এমন পরিবেশে চা এর কথা বলতে পারি এমন কাউকেই পাশে পেলাম না।বাসায় অনেক মানুষ।একটু শারীরিক প্রশান্তির জন্য বাড়ির সামনের রাস্তা ধরে হাটছি।এমন সময় আমার চোখ আটকে গেল গ্রামের ছোট ছোট কিছু বাচ্চাদের উপর।দূর হতে দেখেই বুঝতে বাকি রইলো না।ওরা কচুরিপানা দিয়ে পুতুল তৈরী করছে।

ছোট বেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল।নিজেকে ওই স্থানে যেন দেখতে পাচ্ছি। কিছু সময়ের জন্য মাথা ব্যাথার কথা ভুলেই গেলাম।ভুলেই গেলাম আমি একটু আগে মাথা ব্যাথা থেকে উপশম পাবার জন্য চা খুজেছি।ধীরে ধীরে হেটে বাচ্চাদের কাছে গেলাম।ওদের কাছে যেতেই বাচ্চারা দৌড়ে কাছে এলো।কেউ কেউ বলছে আম্মু পুতুল নিবা? কেউ বলছে আপু পুতুল নিবা?
ওরা আমাকে কেন জানি না খুব পছন্দ করে।নানু বাড়িতে যতোদিন ছিলাম ওরাই ছিল আমার সঙ্গি সাথী।
এবার তবে একে একে কচুরিপানা দিয়ে পুতুল তৈরীর প্রক্রিয়া বলি,,,,,

IMG_20230717_174702-01.jpeg

প্রথমে ওরা সবাই মিলে আমাকে নিয়ে গেলো একটি কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি একটি পুকুরের কাছে।ওরা এতোটাই আগ্রহ নিয়ে আমাকে সব কিছু বলছে।যাতে করে ওরা ভেবেই নিয়েছে আমি এই পুতুল বানাতে পারি না।তার কারন মনে হয় আমি শহরে থাকি।যাইহোক ওদের আগ্রহ দেখে আমি কোন ভাবেই প্রকাশ করিনি যে এটাতে আমার শৈশবের স্মৃতি জড়িয়ে আছে।ভালোই লাগছে সব কিছু।এবার একজন বলছে আম্মু এবার এখান হতে একটি সুন্দর টগর তুলতে হবে।আপনাদের একটু বলে রাখি।ঐ এলাকায় কচুরিপানাকে টগর বলে।একজন সামনের দিকে এগিয়ে গেল।কচুরিপানা তুলতে।

IMG_20230717_174741-01.jpeg

খুবই সতর্কতার সাথে ভালো দেখে একটি কচুরিপানা তুলেছে।যাতে করে কচুরিপানাটির পাতা ফ্রেস থাকে।এমন কয়েকটি কচুরিপানা তুলে নিয়েছে।ওর নাম বলতে ভুলে গিয়েছি।ওর নাম সেতু।যদিও পদ্মা সেতুর নামে নাম করন করেনি। পদ্মা সেতুর সৃষ্টির অনেক আগেই বিধাতা ওকে সৃষ্টি করেছেন।সুতরাং ও কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা পায়নি।অন্য সকলের মতোই অতি সাধারণ একটি মেয়ে সেতু।

IMG_20230717_174502-01.jpeg

এবার ফ্রেস আর সুন্দর পাতাটি বাচাই করার সময় চলে এসেছে। সে এরমধ্যে থেকে নিজের ইচ্ছা মতো পাতা বাচাই করে নিয়েছে।

IMG_20230717_174237-01.jpeg
এই পর্যায়ে একটি পাতা নিয়েছে সে।আর সাথে নিয়েছে একটি ব্লেড এর এক টুকরো ভাংঙ্গা অংশ। আমরা সবাই অধির আগ্রহ নিয়ে তার পানে তাকিয়ে আছি।সে খুবই খুশি আমি তার সামনে ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।তার ছবি তুলছি।এতে সে যেমন খুশি তেমনি সাথে তার মা ও খুশি।ওর মা আমার ভাবি হয় সম্পর্কে। ভাবি তার মেয়েকে বলছে ছবি তুলবে একটু সেজে আসতি।

সত্যি তারা সামান্য একটি ক্যামেরার সামনে আসতে পেরেই অনেক খুশি।আর আমরা😔! এদের থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।

IMG_20230717_174330-01.jpeg

ব্লেড দিয়ে খুবই সাবধানতার সাথে পুতুল তৈরী করছে সে।চিকন চিকন করে কেটে পুতুলের চুল তৈরী করছে।এর সাথে অন্যরাও আছে।চলুন তাদের দেখে আসি।

IMG_20230717_173950-01.jpeg
সাথে আরও অনেকেই আছে।তারা আমার ক্যামেরার বাহিরে।এবার আমাদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে কখন শেষ হয়। পুতুল তৈরীর কাজ।পুতুল কিছুটা তৈরি হয়েছে।এবার পুতুলের চোখ নাক দিবার বাকি।

IMG_20230717_174350-01.jpeg
অবশেষে তৈরি হয়ে গেলো তার পুতুল।এই হলো আমাদের ছোট বেলার তৈরি করা কচুরিপানা দিয়ে পুতুল। ওর একার ছবি তুলছি বলে বাকিদের মন খারাপ মনে হলো। তাই সবার সাথে আমি,,,,,

IMG_20230717_174453-01.jpeg

যদিও সবাই এখানে নেই।তাও আজ অনেক বছর পরে পুরনো সেই স্মৃতিতে ফ্রেমে আটকে পরা আমি।খুবই ভালো সময় পার করেছি বাচ্চাদের সাথে।মাথা ব্যাথা কখন জানি সেরে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি।

মাঝে মাঝে মনের প্রশান্তি মন্ত্রের মতো কাজ করে।☺️

মনের প্রশান্তি একমাত্র ছোট বেলার স্মৃতির পূর্নরাবৃত্তি করেই পাওয়া সম্ভব। এটি একান্ত আমার মতামত।
আপনারাও চাইলে ফিরে যেতে পারেন এমন সব শৈশবে। এতে লাগবে শুধু বাচ্চাদের সাথে বাচ্চাদের মতো করে মেশার মন মানসিকতা। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আমার আজকের কন্টেন্ট কেমন লাগলো সবাই কমেন্ট করে জানাবেন।সবাই ভালো থাকবেন।আমার সাথে থাকবেন।আর আমার জন্য দোয়া করবেন।আল্লাহ হাফেজ।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। ☺️☺️

received_2186105011599550.jpeg

শুভেচ্ছায়,
@sirinaa02

Sort:  

This post has been upvoted through Steemcurator09.


Team Newcomer- Curation Guidelines For July 2023
Curated by - @goodybest

 last year 

Thank you so much for your support sir. I hope you always support me. ☺️

আসসালামু আলাইকুম আপু কেমন আছেন ? আপু আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ছোটকালের কথা মনে পড়ে যায়। খুব সুন্দর হয়েছে আপু বিশেষ করে ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে। আপু এই মেয়েটা কে??

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।মেয়েটি আমার এক ভাইয়ের মেয়ে।

অনেক সুন্দর তাই বললাম আপু ওই মেয়েটি আপনাকে ধন্যবাদ ।

 last year 

Again thanks

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 63570.02
ETH 3400.95
USDT 1.00
SBD 2.56